Wednesday 13 March 2019

কষ্টিপাথরে ব্রাদারহুড, ইখুয়ানুল মুসলিমীনের (জামাতী ইসলামী) ব্যাপারে সালাফী আলেমদের ফতোয়া। পর্ব-০৪

·Image may contain: text
শাইখ পরিচিতি:


‘আল্লামাহ মুহাম্মাদ বিন সা‘ঈদ রাসলান (হাফিযাহুল্লাহ)
‘আল্লামাহ মুহাম্মাদ বিন সা‘ঈদ রাসলান (হাফিযাহুল্লাহ) মিশরের একজন প্রখ্যাত মুহাদ্দিস এবং ফাক্বীহ। তিনি ১৯৫৫ খ্রিষ্টাব্দে মিশরের মনুফিয়া গভর্নোরেটে জন্মগ্রহণ করেছেন। তিনি আল-আযহার বিশ্ববিদ্যালয় থেকে মেডিসিন এবং সার্জারির উপর স্নাতক ডিগ্রি অর্জন করেছেন। এছাড়াও তিনি আল-আযহার থেকেই ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের আওতাধীন ডিপার্টমেন্ট অফ দ্য অ্যারাবিক ল্যাঙ্গুয়েজ থেকে স্নাতক ডিগ্রি অর্জন করেছেন। এরপর তিনি আল-আযহার থেকে হাদীসের উপর মাস্টার্স ও পিএইচডি সম্পন্ন করেছেন। তিনি অসংখ্য মৌলিক কিতাবের দারস দিয়েছেন। তিনি একাধারে তাফসীর, উসূলে তাফসীর, হাদীস, উসূলে হাদীস, ফিক্বহ, উসূলে ফিক্বহ, ‘আক্বীদাহ, মানহাজ, ফারাইদ্ব, সীরাত প্রভৃতি বিষয়ে অসংখ্য কিতাবের দারস দিয়েছেন। বিভিন্ন বিষয়ে তিনি প্রায় দেড় শতাধিক গ্রন্থ রচনা করেছেন।
‘আল্লামাহ হাসান বিন ‘আব্দুল ওয়াহহাব (হাফিযাহুল্লাহ) [জন্ম: ১৯২৫ খ্রি.] বলেছেন, “মিশরে যারা সালাফী দা‘ওয়াতের উপর প্রতিষ্ঠিত রয়েছেন, তাঁরা হলেন—সম্মানিত শাইখ ‘আলী হাশীশ, সম্মানিত শাইখ মুহাম্মাদ সা‘ঈদ রাসলান...।” [আজুর্রি (ajurry) ডট কম]
কুয়েত বিশ্ববিদ্যালয়ের শারী‘আহ অনুষদের অধ্যাপক শাইখ ড. ফালাহ বিন ইসমা‘ঈল আল-মুনদাকার (হাফিযাহুল্লাহ) [জন্ম: ১৯৫০ খ্রি.] শাইখ মুহাম্মাদ রাসলানের ব্যাপারে বলেছেন, “আমি শাইখের সান্নিধ্যে থাকার, তাঁর দারস শ্রবণ করার এবং তাঁর থেকে ফায়দা গ্রহণ করার নসিহত করছি। আল্লাহ’র কসম! আমি তাঁকে দেখেছি যে, তিনি সুন্নাহ, সালাফিয়্যাহ, শার‘ঈ শিষ্টাচারের ব্যাপারে প্রবল আগ্রহী। আমি তাঁকে দেখেছি যে, তিনি একজন দুনিয়াবিমুখ পরহেজগার মানুষ। আমরা আল্লাহ’র কাছে প্রার্থনা করছি, তিনি যেন আমাদেরকে ও তাঁকে দ্বীনের উপর সুদৃঢ় রাখেন এবং আমাদেরকে ও তাঁকে (সৎকর্মের) তাওফীক্ব দান করেন।” [sahab.net]
শাইখ ড. ফালাহ বিন ইসমা‘ঈল আল-মুনদাকার (হাফিযাহুল্লাহ) আরও বলেছেন, “তোমাদের জন্য আকাবির তথা বড়োদের আঁকড়ে ধরা আবশ্যক। আল্লাহ’র রহমতে মিশরে তোমাদের কাছে আছেন আশ-শাইখ হাসান বিন ‘আব্দুল ওয়াহহাব আল-বান্না এবং আশ-শাইখ মুহাম্মাদ সা‘ঈদ রাসলান (হাফিযাহুমাল্লাহু তা‘আলা)। তোমাদের জন্য এই বড়োদের আঁকড়ে ধরা আবশ্যক। তাঁদের কাছে ভাইদের একত্রিত করো এবং তোমাদের সমস্যাগুলো এই বড়োদের কাছে উপস্থাপন করো। বড়োদের দিকে ফিরে যাওয়ার মধ্যে বিরাট কল্যাণ এবং মহান উপকারিতা রয়েছে।” [প্রাগুক্ত]
‘আল্লামাহ সুলাইমান বিন সালীমুল্লাহ আর-রুহাইলী (হাফিযাহুল্লাহ) কে মিশরের কোন শাইখের দারসে উপস্থিত হওয়া যাবে—মর্মে প্রশ্ন করা হলে তিনি শাইখ রাসলানকে সাজেস্ট করেন এবং বলেন, “আমি শাইখ রাসলানকে চিনি তাঁর বক্তব্য শোনার মাধ্যমে। তিনি স্বীয় ‘আক্বীদাহ ও মানহাজে শক্তিশালী ব্যক্তি।” [দ্র.: https://m.youtube.com/watch?v=_6F744sSM-M (অডিয়ো ক্লিপ)]
এতদ্ব্যতীত ইমাম রাবী‘ আল-মাদখালী-সহ আরও অনেক ‘আলিম ও শাইখ ‘আল্লামাহ মুহাম্মাদ রাসলানের এবং তাঁর দা‘ওয়াতী কার্যক্রমের প্রশংসা করেছেন। আল্লাহ তাঁর অমূল্য খেদমতকে কবুল করুন এবং তাঁকে উত্তমরূপে হেফাজত করুন। আমীন। সংগৃহীত: rslan.com ও sahab.net
·
১ম বক্তব্য:
আশ-শাইখুল ‘আল্লামাহ মুহাম্মাদ বিন সা‘ঈদ রাসলান (হাফিযাহুল্লাহ) [জন্ম: ১৯৫৫ খ্রি.] বলেছেন,
الإخوان المسلمون جماعةٌ بدعية، وفِرقةٌ من الثنتين والسبعين فرقة التي ذكرها الرسول -صلى الله عليه وسلم- في حديث الافتراق. الإخوانُ المسلمون ليس عندهم منهجٌ اعتقاديّ! فهم يجمعون كلَّ مَن طار ودَرَجَ! وهَبَّ ودَبَّ! معهم المعتزلية، والأشعرية، والصوفية ولو كان اتحاديًا حُلوليًا!، ومعهم دون ذلك، بل ومعهم النصارى! فما عندهم من منهجٍ اعتقاديٍّ!
ومعلومٌ أنّ الإصلاحَ لا يبدأ إلا بالعقيدة، وأنتَ عندما تدعو الناس إلى الدين لا تقول لهم: نُطبِّق عليكم شريعة الله –وهم لا يعرفونه–! ولا تقول لهم: اتَّبِعُوا رسولَ الله –وهم يجهلونه–!
فلابد من بيان العقيدة أولاً؛ إذ الشريعةُ مؤسسة على عقيدتها.
فهذه الخُدعة الكبرى التي يُروِّجُ لها قومٌ من جلدتنا يتكلمون بلساننا، وينطقون بكلامنا ولغتنا، ويأخذون من الليل كما تأخذون. هذه الخُدعة الكبرى التي يُرَوِّج لها أولئك زائفةٌ مكشوفة! واضحةٌ مفضوحة!
مَن مِن الأنبياء بدأَ الدعوةَ بغير العقيدة؟! مَن مِن الأنبياء والمرسلِين بدأَ قومَه بغير الدعوة إلى توحيد رب العالمين؟! مَن؟ كلُّهم! كلُّ المرسلِين من نوحٍ إلى محمدٍ يدعون أقوامهم إلى إخلاص العبادة لله، إلى توحيد الله رب العالمين وحده، ولا يلتفتون إلى النتائج، ويأتي النبيُّ يومَ القيامة وليس معه أحدٌ! لم تُزَيَّف العقيدة، ولم تُبَدَّل الشريعة، ولم تُغَيَّر معالم الملة، وإنما كان الأمرُ واضحًا مكشوفًا.
“মুসলিম ব্রাদারহুড একটি বিদ‘আতী দল। এটি (পথভ্রষ্ট) ৭২ দলের অন্তর্ভুক্ত, যে দলগুলোর ব্যাপারে রাসূল ﷺ হাদীসুল ইফতিরাক্বে [যে হাদীসে রাসূল ﷺ স্বীয় উম্মাহ’র ৭৩ দলে বিভক্ত হওয়ার কথা বলেছেন, সে হাদীসকে ‘হাদীসুল ইফতিরাক্ব’ বা ‘উম্মাহ বিভক্তির হাদীস’ বলা হয়। – সংকলক] আলোচনা করেছেন। মুসলিম ব্রাদারহুডের ‘আক্বীদাহগত আদর্শ নেই। তারা সবাইকে তাদের দলে জমা করে। তাদের সাথে মু‘তাযিলীরা আছে, আশ‘আরীরা আছে, এমনকি সূফীরাও আছে, যদিও সে সর্বেশ্বরবাদী সূফী হয়! তাদের সাথে আরও অনেকে রয়েছে। এমনকি তাদের সাথে খ্রিষ্টানরাও আছে। তাদের কোনো ‘আক্বীদাহগত আদর্শ নেই। আর একথা সুবিদিত যে, সংস্কার (ইসলাহ) স্রেফ ‘আক্বীদাহর মাধ্যমেই শুরু করতে হয়। তুমি যখন মানুষকে দ্বীনের দিকে আহ্বান করবে, তখন তুমি তাদেরকে বলো না যে, আমরা তোমাদের উপর আল্লাহ’র আইন বাস্তবায়ন করব, অথচ তারা তা জানেই না। তুমি তাদেরকে বলো না যে, তোমরা আল্লাহ’র রাসূলের আনুগত্য করো, অথচ তারা রাসূলকেই চিনে না।
অবশ্যই প্রথমে ‘আক্বীদাহ বর্ণনা করতে হবে। যেহেতু শরিয়ত ‘আক্বীদাহর উপরই প্রতিষ্ঠিত। এই মহাপ্রতারণা প্রচলিত করেছে এমন সম্প্রদায়, যারা আমাদের মতো ত্বকেরই মানুষ, আমাদের মতো জবান দিয়েই কথা বলে, আমাদের ভাষাতেই কথা বলে। তারা রাত থেকে তাই লাভ করে, যা তোমরা করে থাক। ওদের চালুকৃত এই মহাধোঁকা সুস্পষ্ট প্রতারণা এবং স্পষ্ট কুৎসা।
নাবীদের মধ্যে কে ‘আক্বীদাহ ব্যতীত অন্য বিষয়ের মাধ্যমে দা‘ওয়াত শুরু করেছেন? নাবী ও রাসূলগণের মধ্যে কে স্বীয় সম্প্রদায়কে বিশ্বজগতের প্রতিপালক মহান আল্লাহ’র তাওহীদের দিকে দা‘ওয়াত দেওয়া বাদ দিয়ে অন্য বিষয়ের দা‘ওয়াত দিয়ে শুরু করেছেন? কে? বরং তাঁরা সবাই, নূহ থেকে মুহাম্মাদ পর্যন্ত সকল রাসূল তাঁদের সম্প্রদায়কে একনিষ্ঠভাবে আল্লাহ’র ইবাদত করার দিকে তথা এক আল্লাহ’র তাওহীদের দিকে আহ্বান করেছেন। তাঁরা পরিণতির দিকে তাকাননি। কেননা কেয়ামতের দিন এমন নাবীও আসবেন, যার সাথে তাঁর অনুসারী থাকবে না। ‘আক্বীদাহ জাল করা হয়নি, শরিয়ত পরিবর্তিত হয়নি, উম্মাহ’র রূপরেখাও পরিবর্তিত হয়নি। সুতরাং বিষয়টি সুস্পষ্ট ও উদ্ভাসিত।” [“মাযা লাও হাকামাল ইখওয়ানু মিসর”– শীর্ষক খুত্ববাহ; খুত্ববাহ’র তারিখ: ৪ই রজব, ১৪৩৩ হিজরী মোতাবেক ২৫শে মে, ২০১২ খ্রিষ্টাব্দ; খুত্ববাহ’র অনুলিপির লিংক: www.ajurry(এখানে একটি ডট বসিয়ে লিংকটি ব্যবহার করুন)com/vb/showthread.php?t=28027.]
·

২য় বক্তব্য:
আশ-শাইখুল ‘আল্লামাহ মুহাম্মাদ বিন সা‘ঈদ রাসলান (হাফিযাহুল্লাহ) আরও বলেছেন,
حقوق المسلمين كبيرة جدًا، وحرمة المسلم عند الله أعظم من حرمة الكعبة، وحرمة المسلم عند الله جلّ وعلا أعظم من حرمة الكعبة، فماذا تنتظر؟ لو هدمت بنيان المسلم لكان أعظم إثمًا عند الله وأكبر ذنبًا من أن تأخذ مِعولا ثم تصعد الكعبة من أجل أن تهدمها حجرًا حجرًا، فهدم الكعبة أقلّ إثمًا عند الله من قتل المسلم، تقتل مسلمًا بغير حق! ومع ذلك فقد استحل أقوام قتل المسلمين، قتلًا أشوائيا من غير تفرقة، وكنا نجادلهم قديمًا في منتصف السبعينيات وما حولها، فكان التكفيريون يقولون: إنه يجوز أن يقتل الواحد منهم مفجرًا المركبةَ التي تحمل الناس، القطار الذي يستقله الناس، الموطن الذي يكون الناس فيه مجتمعين، فكنا نتعجب، نقول: قد يكون مع هؤلاء المقتولين الذين حكمتم بكفرهم، قد يكون معهم من هو مثلكم، من هو معكم على طريقتكم الباطلة واعتقادكم الفاسد، فكانوا يقولون: يموتون على ذلك ويبعثون على نياتهم، عندهم لكل مسألة تأويل عندهم لكل معضلة تخريج، عندهم لعب بالنصوص، كالخراطين في الأسواق، يلعبون بالنصوص وهم ليسوا من أهل العلم أصلًا، لأن الخوارج لا علمَ عندهم ولا فهمَ لكتاب الله، كما قال رسول الله ﷺ: يتلون كتاب الله لا يجاوز تراقيهم، أي لا يجاوز حناجرهم كما في رواية عن النبي ﷺ، فهؤلاء يرتلون أيات الله، يتلون كتاب الله ولا يفهمون المعاني ولا يتدبرون في المقاسد، ولا تنزل هذه الآيات الشريفات إلى قلوبهم، فتحدث فيها ذكرًا وذكرًا، لأنهم لا يفقهون ولا يعون، الخوارج هذا شأنهم كما قال رسول الله ونحن نعلمهم علم يقينٍ، ما أكثر ما رأينا مثل أولئك الخوارج، وهم المنتشرون تحت أسماء شتى: القاعدة، الجماعة الإسلامية، الإخوان المسلمون، كل هؤلاء من الخوارج، الذين قال فيهم رسول الله ﷺ: هم كلاب النار، هم كلاب النار، هم كلاب النار، وهم يتعودونكم يوم الجمعة المقبل بالخراب، جمعة خراب مصر، جمعة حرق مصر، ما ذنب ما يحرق؟ ما ذنب ما يخرب؟ ما هي المشكلة؟ ومع من؟ هذه المشكلة مع من؟ ثم من الذي يفتعلها؟ سيقول لك: لإقامة الدين وتطبيق الشريعة، قد كنتم في الحكم عامًا، فما الذي طبقتموه من الشريعة؟ كانت الكباريهات في شارع الحرم وغيره، لا تتحصلوا على الرخصة إلا كل عامَين، وفي عهد الإخوان جعلوها كل ثلاثة أعوام، كانت الخمور تفرض عليها الضرائب، ولا يعلم الناس أسمائها، فنزلت القائمة بالأسماء فعلم الناس أنواعًا من الخمور لم يكونوا يعلمونها، في كتاب «التربية القومية» للسنة الثانية الثانوية –وارجع إليه في الصفحةِ الحادية والثانية أو الرابعة والستين– تجد الحديث هكذا، في كتاب كتب، بمعرفة وزارة التربية والتعليم في ذلك العام، ماذا كتب؟ كتب يقول: من بدل دينه فاحترموه، والرسول يقول: من بدل دينه فاقتلوه، وهم يكتبون في عهد الإخوان: من بدل دينه فاحترموه، وتحتها –إرجع إليه– في كتاب «التربية القومية» للسنة الثانية الثانوية –وارجع إليه في الصفحةِ الحادية والثانية أو الرابعة والستين– إلى غير ذلك من النصوص من التوراة والإنجيل، فجعلوا ذلك مبثوثًا في ذلك الكتاب، وكتب تحت قوله: من بدل دينه فاحترموه، لأن لكل إنسان الحق في أن يختار من الدين ما يشاء، ما شاء الله، هذا كفر، هذا هو الدين؟! الحدود، كما قال الرئيس الإخواني في أثناء الفترة التمهيدية لأمور الرئاسة وقبل الإنتخابات، يقول: الحدود ليس لها وجود في الشريعة، هذه عمليات ديناميكية، من أنكر الحدود كفر، أي شيء هذا؟ تلعبون بالدين؟! تتاجرون ببشائر الوسطاء المساكين؟! ما الذي يريدون أن يصنعوا يوم الجمعة؟ قالوا: سنخرب مصر، سنحرق مصر، سيخرجون بعد صلاة الفجر، هنا وهنالك في مصر، ويريدون فجورًا، أن ينفصلوا بالصعيد: جمهورية مصر العليا، مصروع الإنفصال، وهذا الأمر معلوم، والإستمارات موجودة وكانت توزع جهارًا نهارًا، من أجل إنفصال الصعيد من مصر، نعم، مينا موحد القطرين، ومحمد مرسى مفرق القطرين.
“মুসলিমদের সুবিশাল অধিকার রয়েছে। একজন মুসলিমের মর্যাদা আল্লাহ’র কাছে কা‘বাহগৃহের মর্যাদার চেয়েও বেশি। একজন মুসলিমের মর্যাদা মহামহিমান্বিত আল্লাহ’র কাছে কা‘বাহগৃহের মর্যাদার চেয়েও বেশি। সুতরাং তুমি কী প্রত্যাশা করছ? তুমি যদি একজন মুসলিমের বাড়ি ধ্বংস করো, তবে তা আল্লাহ’র কাছে অধিক পাপের এবং অধিক গুনাহর কাজ হবে এই কাজের চেয়ে যে, তুমি একটি কুঠার নিয়ে কা‘বাহগৃহের উপর আরোহন করবে, তা পাথরের মতো টুকরো টুকরো করে ভেঙে ফেলার জন্য! কা‘বাহ ধ্বংস করা আল্লাহ’র কাছে একজন মুসলিম হত্যার চেয়ে অধিকতর কম পাপের কাজ। অথচ তুমি অন্যায়ভাবে মুসলিমকে হত্যা করছ?! এতৎসত্ত্বেও একদল লোক মুসলিমদের হত্যা করা বৈধ করে নিয়েছে। কোনো বাছবিচার ছাড়াই যথেচ্ছভাবে হত্যাকাণ্ড সংঘটিত করা বৈধ মনে করছে।
আমরা এদের সাথে বহুপূর্বেই ৭০ দশকের মাঝের দিকে বিতর্ক করেছি। তখন তাকফীরীরা বলত, ‘তাদের যে কারও জন্য মানুষ বহনকারী গাড়িতে, মানুষ আরোহন করে এমন ট্রেনে এবং মানুষ জমায়েত হয়েছে এমন জায়গায় বোমা বিস্ফোরণ করে মানুষ হত্যা করা জায়েয।’ আমরা অবাক হয়ে বলেছিলাম, ‘যেই নিহত ব্যক্তিদেরকে তোমরা কাফির ফাতওয়া দিয়েছ, তাদের সাথে তো তোমাদের মতাদর্শে বিশ্বাসী ব্যক্তিরাও থাকতে পারে। তাদের সাথে তোমাদের বাত্বিল পন্থা ও নষ্ট ‘আক্বীদাহর উপর প্রতিষ্ঠিত ব্যক্তিবর্গও থাকতে পারে।’ তখন তারা বলেছিল, ‘তারা এই অবস্থায় মারা যাবে, আর তাদের নিয়্যাতের ভিত্তিতে পুনরুত্থিত হবে।’ তাদের কাছে প্রত্যেকটি মাসআলাহ’র তা’উয়ীল (অপব্যাখ্যা) রয়েছে, প্রত্যেকটি সমস্যার একটি সমাধানপূর্ণ ব্যাখ্যা আছে। তারা ক্বুরআন-সুন্নাহ’র নস (টেক্সট) নিয়ে খেলা করে। যেমনভাবে বাজারগুলোতে কেঁচো নিয়ে খেলা করা হয়। তারা ক্বুরআন-সুন্নাহ’র নস (টেক্সট) নিয়ে খেলা করে।
প্রকৃতপক্ষে তারা ‘আলিমদের অন্তর্ভুক্ত নয়। কেননা খারিজীদের ‘ইলম নেই, আল্লাহ’র কিতাবের সমঝ নেই। যেমন রাসূলুল্লাহ ﷺ বলেছেন, “এরা ক্বুরআন পাঠ করে, কিন্তু ক্বুরআন তাদের কণ্ঠনালী অতিক্রম করে না।” (সাহীহ বুখারী, হা/৩৬১০; সাহীহ মুসলিম, হা/১০৬৪) তারা আল্লাহ’র আয়াতসমূহ পাঠ করে। তারা আল্লাহ’র কিতাব তেলাওয়াত করে। কিন্তু তারা অর্থ বোঝে না, তারা এর উদ্দেশ্য নিয়ে গভীরভাবে চিন্তা করে না। আর এই মহান আয়াতসমূহ তাদের অন্তরে প্রবেশ করেনি। ফলে তাদের অন্তরে এগুলো উপদেশ তৈরি করেনি। কেননা তারা এগুলো বুঝেও না, আর উপলব্ধিও করে না। খারিজীদের এই অবস্থা সম্পর্কে রাসূলুল্লাহ ﷺ বলেছেন। আর আমরাও তাদের ব্যাপারে দৃঢ়ভাবে জানি। আমরা তাদের মধ্যে কত খারিজীই না দেখেছি!
তারা বিভিন্ন নামে ছড়িয়ে পড়েছে। যেমন: আল-কায়েদা, জামায়াতে ইসলামী, মুসলিম ব্রাদারহুড; এরা সবাই খারিজী। যাদের ব্যাপারে রাসূলুল্লাহ ﷺ বলেছেন, “তারা জাহান্নামের কুকুর, তারা জাহান্নামের কুকুর, তারা জাহান্নামের কুকুর।” (ইবনু মাজাহ, হা/১৭৩; সনদ: সাহীহ)
তারা (ব্রাদারহুড) আগামী শুক্রবার (মিশরে) ধ্বংসাত্মক কার্যক্রমের হুমকি দিয়েছে। মিশর ধ্বংসের শুক্রবার, মিশরকে জ্বালিয়ে দেওয়ার শুক্রবার। যা জ্বালিয়ে দেওয়া হবে তার অপরাধ কী? যা ধ্বংস করা হবে তার অপরাধ কী? কী সমস্যা? আর কাদের সাথে? এই সমস্যা কাদের সাথে? আর এই সমস্যা সৃষ্টি করেছে কে বা কারা? তারা তোমাকে বলবে, এগুলো দ্বীন প্রতিষ্ঠা ও শরিয়ত বাস্তবায়নের জন্য করা হচ্ছে। তোমরা এক বছর শাসনক্ষমতায় ছিলে। কিন্তু তোমরা শরিয়তের কী বাস্তবায়ন করেছ? আল-হারাম স্ট্রিট ও অন্যান্য জায়গায় ক্যাবারেটস [রেস্তোরাঁ, নাইটক্লাব প্রভৃতিতে পানাহাররত অতিথিদের সামনে আয়োজিত বিনোদনমূলক অনুষ্ঠান – সংকলক] ছিল। প্রত্যেক দুবছরের মেয়াদ ছাড়া তোমরা এর অনুমতি লাভ করতে পারতে না। আর ব্রাদারহুডের শাসনামলে তারা প্রত্যেক তিন বছরের মেয়াদে অনুমতি নেওয়ার নিয়ম চালু করে।
মদের উপর ট্যাক্স নির্ধারিত ছিল। মানুষ বিভিন্ন ধরনের মদের নাম জানত না। অথচ বিভিন্ন ধরনের মদের নাম-সহ লিস্ট বের করা হলো, ফলে মানুষ এগুলোর নাম জানতে পারল, যা তারা আগে জানত না। উচ্চ মাধ্যমিক ২য় বর্ষের “আত-তারবিয়াতুল ক্বাওমিয়্যাহ” বইয়ে –আপনি ৬১, ৬২ বা ৬৪ পৃষ্ঠায় দেখুন– আপনি এরকম কথা পাবেন। সে বছর (মিশরে ব্রাদারহুডের শাসনামলে) শিক্ষা ও শিক্ষাদান বিভাগ সম্পর্কে জানার জন্য যেই বইটি লেখা হয়েছিল, সেই বইয়ে এমন কথা আছে। কী লিখেছে? বইয়ের লেখক লিখেছে, “যে ব্যক্তি তার দ্বীন পরিবর্তন করে, তাকে তোমরা সম্মান করো।” অথচ রাসূল ﷺ বলেছেন, “যে ব্যক্তি তার দ্বীন পরিবর্তন করে, তাকে তোমরা হত্যা করো।” (সাহীহ বুখারী, হা/৩০১৭)
তারা ব্রাদারহুডের শাসনামলে লিখেছে, “যে ব্যক্তি তার দ্বীন পরিবর্তন করে, তাকে তোমরা সম্মান করো।” উচ্চ মাধ্যমিক ২য় বর্ষের “আত-তারবিয়াতুল ক্বাওমিয়্যাহ” বইয়ে –আপনি ৬১, ৬২ বা ৬৪ পৃষ্ঠায় দেখুন– এই কথার নিচে তাওরাত ও ইনজীল থেকে বেশ কিছু নস (টেক্সট) নিয়ে আসা হয়েছে। তারা এগুলো ওই বইয়ে প্রচার করছে। ওই বইয়ের লেখক তার এই কথা—“যে ব্যক্তি তার দ্বীন পরিবর্তন করে, তাকে তোমরা সম্মান করো”– এর নিচে লিখেছে, “কেননা প্রত্যেক মানুষের স্বীয় ইচ্ছা অনুযায়ী নিজের জন্য যে কোনো ধর্ম পছন্দ করার অধিকার রয়েছে।” মাশাআল্লাহ। এটা কুফর! এটা কি দ্বীন?!
শরিয়তের দণ্ডবিধির ব্যাপারে ইখওয়ানী প্রেসিডেন্ট (মুরসী) নেতৃত্বের বিষয়াদি প্রস্তুত করার সময় এবং নির্বাচনের পূর্বে বলেছেন, “শরিয়তে হুদূদ তথা দণ্ডবিধির কোনো অস্তিত্ব নেই। এগুলো প্রগতিশীল কর্মাবলি।” অথচ যে ব্যক্তি দণ্ডবিধি অস্বীকার করবে, সে কাফির হয়ে যাবে। তাহলে এসব কী? তোমরা দ্বীন নিয়ে খেলা করছ?! তোমরা সাধারণ দরিদ্র মানবতার ইমোশন নিয়ে বাণিজ্য করছ?! তারা শুক্রবারে কী করতে চায়? তারা বলে, আমরা মিশর ধ্বংস করব, আমরা মিশর জ্বালিয়ে দিব। তারা ফজরের নামাযের পর মিশরের এখানে-ওখানে বের হবে। তারা অন্যায় কর্ম সম্পাদন করতে চায়। তারা নিজেদের ভূমি ‘দ্য সুপ্রিম রিপাবলিক অফ ইজিপ্ট’– কে আলাদা করতে চায়। ভূমি আলাদা করার প্রজেক্ট।
এটি সুবিদিত বিষয়। বিবরণপত্র মজুত রয়েছে, যা প্রকাশ্য দিবালোকে বিলি করা হয়েছে, মিশরের জমিনকে আলাদা করার জন্য। মেনেস [প্রাচীন মিশরের রাজা, যিনি ৩১০০ খ্রিষ্টপূর্বে মিশরের রাজা হয়েছিলেন – সংকলক] হলেন মিশরের দুই অংশকে একত্রিতকারী। আর মুহাম্মাদ মুরসী হলেন দুই অংশকে আলাদাকারী।” [দ্র.: https://m.youtube.com/watch?v=8EIAwSNESkU (ভিডিয়ো ক্লিপ)]
·
৩য় বক্তব্য:
আশ-শাইখুল ‘আল্লামাহ মুহাম্মাদ বিন সা‘ঈদ রাসলান (হাফিযাহুল্লাহ) আরও বলেছেন,
معلوم أن جماعة الإخوان تكفيرية لحمة وصداء، بدأت كذلك وهي تنتهي إلى ذلك وما بين البدأ والمنتهى تكفيرية صليبة، إن سعيد حوى –هو أكبر المنظرين الإخوانيين السوريين– في كتابه الذي كتبه عن جماعة الإخوان بمناسبة مرور خمسين عامًا على تأسيسها، راح يعدد في ذلك الكتاب مواصفات وصفات جماعة المسلمين التي من شذّ عنها كان كافرًا والتي من خرج عن إطارها لم يكن مسلمًا، فراح يعدد الصفات التي ينبغي أن تتوفر في جماعة ما، من أجل أن يقال عنها جماعة المسلمين، ثم بعد أن فرغ من ذلك قال: وإذا نظرنا في الجماعات العاملة إلى الإسلام اليوم لم نجد تلك الشروط توفرتْ إلا في جماعة الإخوان المسلمين، إذًا جماعة الإخوان هي جماعة المسلمين، وليست جماعة من المسلمين، قد يقول قائل: إن الخطاب المعلن منهم من قادتهم ومن المخدوعين من أتباعهم إن الخطاب المعلن أنهم ليسوا سوى جماعة من المسلمين، وإنهم لا يكفرون المسلمين، وهذا وَهْمُ وَاهِمٍ.
“এটি সুবিদিত যে, ব্রাদারহুড অকারণে তাকফীরকারী সম্প্রদায়। এভাবেই এদের যাত্রা শুরু হয়েছে এবং এদিকেই তা শেষ হচ্ছে। শুরু ও শেষের মধ্যে যা রয়েছে, তা হলো—এই দলটি কঠিন তাকফীরকারী। সা‘ঈদ হাওয়া –ইখওয়ানী মতবাদের সবচেয়ে বড়ো সিরিয়াবাসী প্রবর্তক– ব্রাদারহুড প্রতিষ্ঠার ৫০ বছর পূর্তি উপলক্ষে ব্রাদারহুড সম্পর্কে একটি বই লিখেছে। সে ওই বইয়ের মধ্যে জামা‘আতুল মুসলিমীনের বৈশিষ্ট্য ও বিস্তারিত বিবরণ গণনা করেছে। যেই জামা‘আত থেকে কেউ বের হয়ে গেলে কাফির হয়ে যায়, যেই জামা‘আতের আওতা থেকে খারিজ হয়ে গেলে ব্যক্তি মুসলিম থাকে না। সে ওই বৈশিষ্ট্যগুলো গণনা করেছে, যা সেই জামা‘আতের মধ্যে পূর্ণরূপে থাকা জরুরি। অতঃপর এই কাজ শেষ করার পর সে বলেছে, আমরা যদি ইসলামের কাজ করছে এমন দলগুলোর দিকে তাকাই, তবে দেখতে পাই যে, এই শর্তগুলো স্রেফ মুসলিম ব্রাদারহুডের মধ্যেই বিদ্যমান রয়েছে।
সুতরাং কেবল ব্রাদারহুডই হলো জামা‘আতুল মুসলিমীন, জামা‘আতুল মুসলিমীনের অন্তর্ভুক্ত একটি দল নয়। কেউ বলতে পারে, ব্রাদারহুডের নেতৃবর্গ এবং তাদের ধোঁকাগ্রস্ত অনুসারীদের পক্ষ থেকে যে কথা ঘোষিত হয়েছে, তার অর্থ এই যে, তারা মুসলিমদেরই একটি জামা‘আত ভিন্ন আর কিছুই নয়। তারা মুসলিমদেরকে তাকফীর করেনি। (আমি বলি,) এটি অনুমানকারীর একটি অনুমান মাত্র।” [“আল-ইরতিবাত্বুল বান্না বাইনাল ইখওয়ান ওয়াল আমরীকান”– শীর্ষক খুত্ববাহ থেকে সংগৃহীত ভিডিয়ো ক্লিপ; খুত্ববাহ’র তারিখ: ২০শে জুমাদাল উলা, ১৪৩৫ হিজরী মোতাবেক ২১শে মার্চ, ২০১৪ খ্রিষ্টাব্দ; ভিডিয়ো ক্লিপের লিংক: https://m.youtube.com/watch?v=r_nduOAXYgo.]
·
৪র্থ বক্তব্য:
আশ-শাইখুল ‘আল্লামাহ মুহাম্মাদ বিন সা‘ঈদ রাসলান (হাফিযাহুল্লাহ) আরও বলেছেন,
ما الذي يريده الإخوان المسلمون وأشياعهم وأتباعهم من التكفيريين وغيرهم؟ ما الذي يريده هؤلاء بأفعالهم التي يفعلون من مصر خاصةً؟ الجواب في جملة واحدة: يريدون هدم الدولة، يريدون إسقاط الدولة، يريدون أن تصير مصر دولة فاشلة، هذا ما يريدونه.
“মুসলিম ব্রাদারহুড এবং তাদের তাকফীরী অনুসারী ও ভক্তবৃন্দ কী চায়? ওরা তাদের কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে কী চায়, বিশেষত তারা মিশরে যা করছে তার মাধ্যমে? এক বাক্যে এর জবাব হলো—তারা রাষ্ট্রের বিনাশ চায়, রাষ্ট্রকে ধ্বংস করতে চায়। তারা চায় যে, মিশর একটি অকেজো রাষ্ট্রে পরিণত হোক। তারা এটাই চায়।” [দ্র.: https://m.youtube.com/watch?v=YPEHpzgj5iY.]
·
৫ম বক্তব্য:
‘আল্লামাহ মুহাম্মাদ বিন সা‘ঈদ রাসলান (হাফিযাহুল্লাহ) আরও বলেছেন,
ألا ساء ما يزرون، وثقل ما يحملون، كما أنهم يدعون إن فلانا يغلو في التبديع وعجب هذا والله من القول، آلذي يُبدع من يسب الأصحاب ويقع في عرض الانبياء يكون غاليا في التبديع!
الذي يُبدع الجماعات التي حادت عن الصراط والمنهاج! الذي يُبدع الروافض يكون غاليا في التبديع؟ فما هو التبديع إذاً؟ ومن هم المبتدعة؟
إن لم يكن القطبيون والإخوان والروافض ومن على شاكلتهم ممن مزقوا الأمة وجعلوا بأسها بينها، إن لم يكونوا مبتدعة فمن المبتدعة إذاً؟ وإذا قال الرجل من أهل العلم : هؤلاء من أهل البدعة يكون قد غلا في التبديع؟
فما هو التبديع إذاً وما هو الغلو في التبديع؟ نحن إنما نُركز على البدعة الاعتقادية، فإذا دارات البدعة بلفظها ومشتقاتها في كلامنا فهو إنما تحذير من البدعة الاعتقادية، من انتحال بدعة الخوارج، أو بدعة المرجئة، أو بدعة الجماعات المعاصرة، فكل هذه بدع تلحق بالبدع الاعتقادية يُحَذّر منها، ويُرَغّبُ عنها، ويُدل على صراط الله المستقيم، فهذا نموذج ومثال لفعل هؤلاء والله المستعان.
“তাদের পাপ কতইনা নিকৃষ্ট, তাদের পাপ কতইনা বড়ো! তারা দাবি করছে যে, অমুক ব্যক্তি বিদ‘আতী বলার ব্যাপারে গুলু (চরমপন্থা) করেছে। আল্লাহ’র কসম, এটা বড়োই আশ্চর্যের কথা! এক ব্যক্তি সাহাবীদের গালি দেয়, নাবীগণের সম্ভ্রম নষ্ট করে, এমন ব্যক্তিকে যে বিদ‘আতী বলে, সে বিদ‘আতী বলার ব্যাপারে চরমপন্থি?!
যেসব দল সঠিক পথ ও মানহাজ থেকে বিচ্যুত হয়ে গেছে, সেসব দলকে যে বিদ‘আতী বলে, রাফিদ্বী শী‘আদেরকে যে বিদ‘আতী বলে, সে বিদ‘আতী বলার ব্যাপারে চরমপন্থি?! তাহলে তাবদী‘ (বিদ‘আতী হুকুম লাগানো) কী? আর বিদ‘আতীই বা কারা?
ক্বুত্বুবী, ইখওয়ানী, রাফিদ্বী শী‘আ এবং তাদের মতো দল, যারা উম্মাহকে বিভক্ত করেছে এবং উম্মাহ’র ক্ষতিসাধন করেছে, তারা যদি বিদ‘আতী না হয়, তাহলে বিদ‘আতী কারা? ‘আলিমগণের কেউ যদি বলেন, তারা বিদ‘আতী, তাহলে কি তিনি তাবদী‘র ক্ষেত্রে গুলু করলেন?
তাহলে তাবদী‘ কী? আর তাবদী‘র ক্ষেত্রে গুলু তথা চরমপন্থাই বা কী? আমরা ‘আক্বীদাহগত বিদ‘আতের ব্যাপারে জোর দিই। বিদ‘আত যখন শব্দগতভাবে আমাদের কথায় আবর্তিত হয়, তখন তা ‘আক্বীদাহগত বিদ‘আত থেকে সতর্ক করা উদ্দিষ্ট হয়। যেমন: খারিজীদের বিদ‘আত, বা মুরজিয়াদের বিদ‘আত, বা আধুনিক দলসমূহের বিদ‘আত। এসব বিদ‘আত ‘আক্বীদাহগত বিদ‘আতের অন্তর্ভুক্ত, যা থেকে সতর্ক করতে হবে, এগুলো বর্জন করতে বলা হবে এবং আল্লাহ’র সঠিক পন্থার দিকে পথনির্দেশ করা হবে। এগুলো তাদের কর্মের নমুনা ও দৃষ্টান্ত মাত্র। আল্লাহ সহায় হোন।” [দ্র.: www.ajurry(এখানে একটি ডট বসিয়ে লিংকটি ব্যবহার করুন)com/vb/showthread.php?t=40998 (শাইখের কথার অনুলিপি)]
·
৬ষ্ঠ বক্তব্য:
‘আল্লামাহ মুহাম্মাদ বিন সা‘ঈদ রাসলান (হাফিযাহুল্লাহ) অন্যত্র বলেছেন,
والإخوان المسلمون يقولون: إنهم يسعون إلى الحكم؛ لإقامة منهج الله في أرض الله على خلق الله.. هكذا يقولون.
فما حقيقة منهج الله عندهم؟! منهج الله عندهم هو منهج الإخوان المسلمين، وهو مبادئ الإخوان المسلمين، قال الشيخ (البنا) في رسائله، في الصفحة الثمانين بعد المائة مخاطبًا الإخوان: «على أن التجارب في الماضي والحاضر قد أثبتت أنه لا خير إلا في طريقكم ولا إنتاج إلا في خطتكم، ولا صواب إلا فيما تعملون».
فهم يحتكرون الصواب! فكل مَن خالفهم يكون مخطئًا على أحسن تقدير وخاطئًا على التقدير العام. يكون مخطئًا من الخطإ، ويكون خاطئًا من الخطيئة. ولقد كان يعتقد أن كمال الدعوة الإسلامية هو الكمال الذي تتضمنه دعوة الإخوان على فهم قائدها وأنّ كل نقص في عقيدة الإخوان هو في الحقيقة نقص من الإسلام.
وقد راعى كبار عقيدة الإخوان رمزًا لهذا المنهج ثم قال كما في مذكراته في الصفحة الرابعة والخمسين بعد المائتين: «وعلى كل مسلم أن يعتقد أن هذا المنهج كله من الإسلام، وأن كل نقص منه نقص من الفكرة الإسلامية الصحيحة».
بل أوجب في الرسائل في الصفحة التسعين بعد الثلاثمائة على الشباب أن يفهموا الإسلام كما فهمه هو. فأوجب في الرسائل في ذلك الموضع على الشباب أن يفهموا الإسلام كما فهمه هو؛ فقال في تفسير ركن الفهم الذي هو أحد أركان بيعته: «إنما أُريد بالفهم أن تُوقن بأن فكرتنا إسلامية صحيحة وأن تفهمَ الإسلام كما نفهمه في حدود هذه الأصول العشرين الموجزة كلَّ الإيجاز».
وأن تفهمَ الإسلام كما نفهمه! وهذا مرفوض، وإنما نفهم الإسلام كما فهمه أصحاب الرسول صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَعَلَى آلِهِ وَسَلَّمَ؛ لأنهم هم الذين عاصروا نزول الوحي، وهم الذين عاصروا وقائع التنزيل، وهم الذين عاصروا أسباب الورود، وهم الذين كانوا مع الرسول في الحَلِّ والترحال، وكانوا مع الرسول في الحرب والسلم، والمنشط والمكره؛ فعرفوا الإسلام كما أنزله الله على رسوله صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَعَلَى آلِهِ وَسَلَّمَ.
فقال الرسول صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَآلِهِ وَسَلَّمَ في بيان الناجين من النار الذين أسعدهم الله رب العالمين بالاتباع في الدنيا وبالجنة في الآخرة: «مَن كان على مثل ما أنا عليه اليوم وأصحابي».
وقد وصف (البنا) هذا الفهم بالكمال؛ فقال في الرسائل في الصفحة السادسة والعشرين بعد الثلاثمائة: «واذكروا جيدًا أيها الإخوان أن الله قد مَنَّ عليكم، ففهمتم الإسلام فهمًا نقيًا صافيًا شاملاً كافيًا وافيًا يساير العصور ويفي بحاجات الأمم».
وردد المرشدون من بعد (البنا) وكذلك القياديون ما قاله، فقال (حَسَن الهُضَيْبِيّ) كما في «قافلة الإخوان» في الصفحة الثامنة والتسعين بعد المائتين: «دعوة الإخوان هي لا غيرُها الملاذُ والإنقاذ والخلاص، وعلى الإخوان ألا يُشركوا بها شيئًا!».
وعلى الإخوان ألا يُشركوا بها شيئًا!
وقال (محمد مَهْدِي عَاكِف) كما في «موقع الإخوان» في الثاني والعشرين من الشهر الرابع من السنة السادسة بعد الألفين: «وليس هناك أحقُّ من أن يقول الحقَّ كما أُنزل على قلب محمد - صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ - إلا الإخوانُ المسلمون!».
صار الدينُ ما يعتقده الإخوان، وصار الإسلامُ ما يعرفه الإخوان، وما لا يعرفه الإخوان فليس بإسلامٍ، وليس هناك أحق من أن يقول الحق كما أُنزلَ على قلب محمد صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ إلا الإخوانُ المسلمون! وقال (سعيد حَوَّى) في «تربيتنا الروحية» في الصفحة الخامسة والأربعين بعد المائة: «ونعتقد أنه لا جماعةَ كاملة للمسلمين إلا بفكر الأستاذ (البنا) وإلا بنظرياته وتوجيهاته».
وقال في «آفاق التعاليم» في الصفحة الثالثة والثلاثين: «والبيتُ المسلم الكامل هو البيت الملتزم بمبادئ الإخوان المسلمون». والبيتُ الملتزم بالكتاب والسنة؟! ليس ببيت مسلم كامل، وإنما البيت المسلم الكامل هو البيت الملتزم بمبادئ الإخوان المسلمين! ما هي مبادئ الإخوان المسلمين؟! وما هي عقيدة الإخوان المسلمين؟! وما هو اتباع الإخوان المسلمين؟! ما هو معرفة الإخوان المسلمين بحقيقة الدين الذي أنزله الله على النبي الأمين؛ حتى يتم هذا الحجر على هذا النحو. وعليه فمن حق المسلم أن يعرف إذا حُكم بحكم الإخوان المسلمين ما هي العقيدة الصحيحة، وما هو الاتباع الحق، وما هو الدين الصراح، فكل ذلك فيما يقولونه فإنْ خالفت فقد خرجت!
(سعيد حَوَّى) يعتقد هذا الكمال؛ لاعتقاده بأن اجتهاد (البنا) اجتهاد ولي من أولياء الله -عز وجل؛ قال في «تربيتنا الروحية» في الصفحة الخامسة والأربعين بعد المائة: «إننا نملك بفضل الله البداية الصحيحة، وهي نقطة الانطلاق من اجتهاد إنسانٍ لا يشك عارفوه أنه وليٌّ من أولياء الله -عز وجل- وهو الأستاذ (حسن البنا)».
ونحن أهلَّ السنة نملك البداية الصحيحة صحةً مطلقة؛ لأن نقطةَ الانطلاق هي من الوحي المنزل على خير الأنبياء صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَآلِهِ وَسَلَّمَ، وليست نقطةُ الانطلاق من اجتهاد إنسان لا يشك عارفوه أنه وليٌّ من أولياء الله -عز وجل- وهو الأستاذ (حسن البنا).
ماذا يصنع أهل السنة -أهل الحق- إذا وضعوا كلام هؤلاء بإزاء كلام شيخ الإسلام -رحمه الله- كما في «مجموع الفتاوى» في المجلد الثالث في الصفحة الخامسة والأربعين بعد الثلاثمائة، قال: «فَأَهْلُ الحَقِّ وَالسُّنَّةِ لَا يَكُونُ مَتْبُوعُهُمْ إلَّا رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ الَّذِي لَا يَنْطِقُ عَنْ الهَوَى إنْ هُوَ إلَّا وَحْيٌ يُوحَى؛ فَهَذَا الَّذِي يَجِبُ تَصْدِيقُهُ فِي كُلِّ مَا أَخْبَرَ، وَطَاعَتُهُ فِي كُلِّ مَا أَمَرَ، وَلَيْسَتْ هَذِهِ المَنْزِلَةُ لِغَيْرِهِ مِنْ الأَئِمَّةِ، بَلْ كُلُّ النَّاسِ يُؤْخَذُ مِنْ قَوْلِهِ وَيُتْرَكُ إلَّا رَسُولَ اللهِ.
فَمَنْ جَعَلَ شَخْصًا مِنْ الأَشْخَاصِ غَيْرَ رَسُولِ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، مَنْ أَحَبَّهُ وَوَافَقَهُ كَانَ مِنْ أَهْلِ السُّنَّةِ وَالجَمَاعَةِ، وَمَنْ خَالَفَهُ (أي: خالف ذلك الشخص الذي هو سوى الرسول صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ) كَانَ مِنْ أَهْلِ البِدْعَةِ وَالفُرْقَةِ - كَمَا يُوجَدُ ذَلِكَ فِي الطَّوَائِفِ مِنْ اتِّبَاعِ أَئِمَّةٍ فِي الكَلَامِ فِي الدِّينِ وَغَيْرِ ذَلِكَ - كَانَ مِنْ أَهْلِ البِدَعِ وَالضَّلَالِ وَالتَّفَرُّقِ».
مَن نصب للأمة شخصًا يُوالى على كلامه ويُعادى سوى النبي صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَآلِهِ وَسَلَّمَ، فهو من أهل البدع والضلال والأهواء والتفرق. ليس سوى النبي صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَآلِهِ وَسَلَّمَ يُوالى على كلامه ويُعادى، ويُوالى عليه ويُعادى - صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَآلِهِ وَسَلَّمَ -، وليس ذلك لأحد من الخلق سواه.
“মুসলিম ব্রাদারহুড বলে, তারা আল্লাহ’র জমিনে আল্লাহ’র সৃষ্টির উপর আল্লাহ’র মানহাজ প্রতিষ্ঠা করার জন্য শাসনক্ষমতা পাওয়ার চেষ্টা করছে। তারা এভাবেই বলে। কিন্তু তাদের কাছে আল্লাহ’র মানহাজের প্রকৃতত্ব কী? তাদের কাছে আল্লাহ’র মানহাজ মানে হলো মুসলিম ব্রাদারহুডের মানহাজ। আর তা হলো মুসলিম ব্রাদারহুডের মূলনীতি। শাইখ আল-বান্না তাঁর “রাসাইল” গ্রন্থের ১৮০ পৃষ্ঠায় ব্রাদারহুডকে উদ্দেশ্য করে বলেছেন, “অতীত ও বর্তমানের অভিজ্ঞতা অনুযায়ী প্রমাণিত হয়েছে যে, তোমাদের পথ ভিন্ন অন্য কোনো পথে কল্যাণ নেই। তোমাদের প্রকল্প ছাড়া অন্য কোনো প্রকল্পে উৎপাদন নেই। তোমাদের কর্ম ব্যতীত অন্য কারও কর্মে সঠিকতা নেই।”
তারা সঠিকতাকে একচেটিয়া করে নিচ্ছে! সুতরাং যে ব্যক্তিই তাদের বিরোধিতা করবে, সে-ই বিশেষ হিসাব অনুযায়ী ভুলকারী এবং ব্যাপক হিসাব অনুযায়ী পাপী বলে গণ্য হবে। ভুল করার কারণে হবে ভুলকারী, আর পাপ করার কারণে হবে পাপাচারী। সে মনে করছে, ইসলামী দা‘ওয়াতের পূর্ণতা কেবল সেটাই, যে পূর্ণতা ব্রাদারহুডের দা‘ওয়াত তার প্রধান নেতার বুঝ অনুযায়ী ধারণ করে। আর ব্রাদারহুডের ‘আক্বীদাহর অপূর্ণতা মূলত ইসলামেরই অপূর্ণতা! ইখওয়ানী ‘আক্বীদাহর শীর্ষনেতারা এই মানহাজের প্রতীককে রক্ষণাবেক্ষণ করেছে। আল-বান্না তাঁর “মুযাক্কিরাত” গ্রন্থের ২৫৪ পৃষ্ঠায় বলেছেন, “প্রত্যেক মুসলিমের এই বিশ্বাস পোষণ করা উচিত যে, এই মানহাজের সবই ইসলাম থেকে গৃহীত। আর এই মানহাজের যাবতীয় ত্রুটি মূলত বিশুদ্ধ ইসলামী মতাদর্শের ত্রুটি।”
এমনকি তিনি “রাসাইল” গ্রন্থের ৩৯০ পৃষ্ঠায় যুবকদের উপর সেভাবে ইসলাম বুঝা আবশ্যক করেছেন, যেভাবে তিনি নিজে ইসলাম বুঝেছেন। তিনি “রাসাইল” গ্রন্থের ওই জায়গায় যুবকদের ওপর সেভাবে ইসলাম বুঝা আবশ্যক করেছেন, যেভাবে তিনি নিজে ইসলাম বুঝেছেন। ‘আল-ফাহম’ তথা বুঝ তাঁর কাছে বাই‘আত নেওয়ার একটি রুকন (খুঁটি, স্তম্ভ), যে রুকনের ব্যাখ্যা করতে গিয়ে তিনি বলেছেন, “আমি আল-ফাহম (বুঝ) দ্বারা এই উদ্দেশ্য করেছি যে, তুমি দৃঢ়ভাবে জানবে যে, আমাদের আদর্শ বিশুদ্ধ ইসলামী আদর্শ, আর তুমি ইসলামকে সেভাবে বুঝবে, যেভাবে আমরা সংক্ষিপ্ত বিশটি মূলনীতির আওতায় থেকে ইসলামকে বুঝি।”
তুমি ইসলামকে সেভাবে বুঝবে, যেভাবে আমরা ইসলাম বুঝি! এটা বাত্বিল কথা। আমরা ইসলামকে সেভাবে বুঝব, যেভাবে রাসূল ﷺ এর সাহাবীগণ ইসলাম বুঝেছেন। কেননা তাঁরা ওয়াহী নাযিলের যুগের মানুষ ছিলেন। তাঁরা ওয়াহী অবতীর্ণের প্রেক্ষাপট জানতেন। তাঁরা ওয়াহী অবতীর্ণের কারণ জানতেন। বিভিন্ন সমস্যা সমাধানে এবং সফর ও ভ্রমণে তাঁরা রাসূল ﷺ এর সাথে ছিলেন। যুদ্ধ ও শান্তিতে এবং সুখে-দুঃখে তাঁরা রাসূলের সাথে ছিলেন। তাঁরা ইসলামকে সেভাবে জেনেছিলেন, যেভাবে তা আল্লাহ তাঁর রাসূলের ﷺ উপর অবতীর্ণ করেছিলেন।
জাহান্নাম থেকে মুক্তিপ্রাপ্ত দল, যাদেরকে বিশ্বজগতের প্রভু মহান আল্লাহ দুনিয়ায় (তাঁর) অনুসরণের অনুগ্রহ দিয়ে এবং পরকালে তাঁদের জন্য জান্নাত প্রস্তুত রেখে সৌভাগ্যবান করেছেন, তাদের ব্যাপারে রাসূল ﷺ বলেছেন, “আজকের দিনে আমি ও আমার সাহাবীরা যে মতাদর্শের উপর প্রতিষ্ঠিত আছি, সে মতাদর্শের উপর যারা প্রতিষ্ঠিত থাকবে (তারাই মুক্তিপ্রাপ্ত দল)।” (তিরমিযী, হা/২৬৪১; সনদ: সাহীহ)
আল-বান্না তাঁর এই বুঝকে পরিপূর্ণ বলে আখ্যা দিয়েছেন। তিনি “রাসাইল” গ্রন্থের ৩২৬ পৃষ্ঠায় বলেছেন, “হে ইখওয়ান, তোমরা উত্তমরূপে স্মরণ করো যে, আল্লাহ তোমাদের উপর দয়া করেছেন। তোমরা ইসলামকে এমন স্বচ্ছ, সঠিক, পরিপূর্ণ ও পূর্ণাঙ্গরূপে বুঝেছ, যা যুগের সাথে সঙ্গতিপূর্ণ এবং উম্মাহ’র প্রয়োজন পূর্ণকারী।”
মুসলিম ব্রাদারহুডে আল-বান্না’র পরবর্তী প্রধানরা এবং নেতৃস্থানীয় ব্যক্তিবর্গ বান্না’র কথাই পুনরাবৃত্তি করেছে। হাসান আল-হুদ্বাইবী বলেছেন, যেমনটি “ক্বাফিলাতুল ইখওয়ান” গ্রন্থের ২৯৮ পৃষ্ঠায় রয়েছে, “স্রেফ ব্রাদারহুডের দা‘ওয়াতেই রয়েছে মুক্তি, পরিত্রাণ ও নিষ্কৃতি। সুতরাং ভ্রাতৃমণ্ডলীর উচিত, এই দা‘ওয়াতের সাথে কাউকে শরিক না করা।”
সুতরাং ভ্রাতৃমণ্ডলীর উচিত, এই দা‘ওয়াতের সাথে কাউকে শরিক না করা! মুহাম্মাদ মাহদী ‘আকিফ বলেছেন, যেমনটি ব্রাদারহুডের ওয়েবসাইটে ২০০৬ সালের ২২শে এপ্রিল তারিখে বলা হয়েছে, “মুহাম্মাদ ﷺ এর অন্তরে যেভাবে সত্য দ্বীন অবতীর্ণ হয়েছে, তা বলার ব্যাপারে মুসলিম ব্রাদারহুডের চেয়ে বড়ো হকদার আর কেউ নেই।”
সুতরাং দ্বীন ওই বিষয়েই পরিণত হয়েছে, যা স্রেফ ব্রাদারহুড বিশ্বাস করে। ইসলাম ওই বিষয়ে পরিণত হয়েছে, যা স্রেফ ব্রাদারহুডই জানে। আর যা ব্রাদারহুড জানে না, তা ইসলামই নয়। আর তাই মুহাম্মাদ ﷺ এর অন্তরে যেভাবে সত্য দ্বীন অবতীর্ণ হয়েছে, তা বলার ব্যাপারে মুসলিম ব্রাদারহুডের চেয়ে বড়ো হকদার আর কেউ নেই!
সা‘ঈদ হাওয়া “তারবিয়াতুনার রূহিয়্যাহ” গ্রন্থের ১৪৫ পৃষ্ঠায় বলেছেন, “আমরা বিশ্বাস করি যে, উস্তায বান্না’র আদর্শ, মতবাদ ও দিকনির্দেশনা ব্যতীত মুসলিমদের কোনো জামা‘আত পরিপূর্ণ হতে পারে না।” তিনি “আফাক্বুত তা‘আলীম” গ্রন্থের ৩৩ পৃষ্ঠায় বলেছেন, “আর পূর্ণাঙ্গ মুসলিম গৃহ হলো মুসলিম ব্রাদারহুডের মূলনীতি পালনকারী গৃহ।”
তাহলে কিতাব ও সুন্নাহ পালনকারী গৃহ কী?! তা পূর্ণাঙ্গ মুসলিম গৃহ নয়। বরং পূর্ণাঙ্গ মুসলিম গৃহ হলো মুসলিম ব্রাদারহুডের মূলনীতি পালনকারী গৃহ! মুসলিম ব্রাদারহুডের মূলনীতি কী? মুসলিম ব্রাদারহুডের ‘আক্বীদাহ কী? মুসলিম ব্রাদারহুডের ইত্তিবা‘ (অনুসরণ) কী? বিশ্বস্ত নাবী’র উপর আল্লাহ যে দ্বীন অবতীর্ণ করেছেন, তার হকিকত অনুযায়ী মুসলিম ব্রাদারহুডের পরিচয় কী, যাতে করে এই গৃহ এভাবে পূর্ণতা পায়?
যখন মুসলিম ব্রাদারহুডের হুকুম অনুযায়ী কোন মুসলিমকে হুকুম দেওয়া হবে, তখন তার এটা জানার অধিকার রয়েছে যে, বিশুদ্ধ ‘আক্বীদাহ কী, প্রকৃত ইত্তিবা‘ (অনুসরণ) কী, সুস্পষ্ট দ্বীন কী প্রভৃতি। তারা যা বলছে, তার বিরোধিতা করলে তুমি দলত্যাগী। সা‘ঈদ হাওয়া এই পূর্ণতায় বিশ্বাস করেন। যেহেতু তিনি মনে করেন যে, আল-বান্না’র ইজতিহাদ হলো মহান আল্লাহ’র একজন ওয়ালী’র ইজতিহাদ। তিনি “তারবিয়াতুনার রূহিয়্যাহ” গ্রন্থের ১৪৫ পৃষ্ঠায় বলেছেন, “আমরা আল্লাহ’র অনুগ্রহে বিশুদ্ধ মূলনীতি লাভ করেছি। এটা হলো একজন মানুষের ইজতিহাদ থেকে গৃহীত যাত্রার কেন্দ্রবিন্দু। যে মানুষকে যারা চেনে, তারা নিঃসন্দেহে মনে করে, তিনি একজন আল্লাহ’র ওয়ালী। আর তিনি হলেন উস্তায হাসান আল-বান্না।”
আমরা আহলুস সুন্নাহ’র লোকেরা নিঃশর্তভাবে বিশুদ্ধ মূলনীতি লাভ করেছি। কেননা এর যাত্রার কেন্দ্রবিন্দু গৃহীত হয়েছে সর্বশ্রেষ্ঠ নাবী ﷺ এর উপর নাযিলকৃত প্রত্যাদেশ থেকে। এর যাত্রার কেন্দ্রবিন্দু কোনো মানুষের ইজতিহাদ থেকে গৃহীত হয়নি। যেই মানুষকে যারা চেনে, তারা নিঃসন্দেহে মনে করে, তিনি একজন আল্লাহ’র ওয়ালী। আর তিনি হলেন অধ্যাপক হাসান আল-বান্না!
আহলুস সুন্নাহ –যারা হলো আহলুল হাক্ব– কী করবে, যখন ওই ব্যক্তিদের কথা শাইখুল ইসলাম (রাহিমাহুল্লাহ)’র কথার সামনে পেশ করা হবে? শাইখুল ইসলাম (রাহিমাহুল্লাহ) “মাজমূ‘উল ফাতাওয়া”-র ৩য় খণ্ডের ৩৪৫ পৃষ্ঠায় বলেছেন, “যারা হকপন্থি আহলুস সুন্নাহ, তাদের অনুসৃত ব্যক্তি স্রেফ আল্লাহ’র রাসূল ﷺ। যিনি স্বীয় প্রবৃত্তি থেকে কোনো কথা বলেন না। তিনি কেবল তাই বলেন, যা তাঁর কাছে ওয়াহী করা হয়। তিনি যে সংবাদ দিয়েছেন, তা বিশ্বাস করা এবং তিনি যা আদেশ করেছেন, তা মান্য করা ওয়াজিব। তিনি ছাড়া কোনো ইমামেরই এই মর্যাদাপূর্ণ অবস্থান নেই। বরং প্রত্যেক মানুষের কথাই গৃহীত ও প্রত্যাখ্যাত হবে, কেবল রাসূলুল্লাহ ﷺ ছাড়া। যে ব্যক্তি রাসূলুল্লাহ ﷺ ছাড়া অন্য কোনো ব্যক্তিকে এইভাবে নির্ধারণ করে যে, যে ব্যক্তি ওই নির্ধারিত ব্যক্তিকে ভালোবাসবে এবং তার সাথে একমত হবে সে আহলুস সুন্নাহ ওয়াল জামা‘আতের অন্তর্ভুক্ত, আর যে ব্যক্তি ওই নির্ধারিত ব্যক্তির বিরোধিতা করবে সে বিদ‘আতীদের অন্তর্ভুক্ত –যেমনভাবে দ্বীন ও অন্যান্য বিষয়ে কথা বলার ক্ষেত্রে কতিপয় দল কর্তৃক ইমামগণের আনুগত্য করতে দেখা যায়– তবে সে ব্যক্তি পথভ্রষ্ট বিভেদ সৃষ্টিকারী বিদ‘আতীদের অন্তর্ভুক্ত।”
সুতরাং যে ব্যক্তি নাবী ﷺ ব্যতীত অন্য কোনো ব্যক্তিকে উম্মাহ’র জন্য এই মর্মে স্থাপন করে যে, ওই ব্যক্তির কথার উপর মিত্রতা ও বৈরিতা পোষণ করা হবে, তাহলে সে পথভ্রষ্ট বিভেদ সৃষ্টিকারী বিদ‘আতীদের অন্তর্ভুক্ত। নাবী ﷺ ব্যতীত অন্য কারও কথার উপর মিত্রতা ও বৈরিতা পোষণ করা হবে না। স্রেফ নাবী ﷺ এর কথার উপর মিত্রতা ও বৈরিতা পোষণ করা হবে। তিনি ব্যতীত অন্য কোনো মানুষের ক্ষেত্রে এটা করা হবে না।” [“জামা‘আতুল ইখওয়ানিল মুসলিমীন”– শীর্ষক খুত্ববাহ; খুত্ববাহ’র তারিখ: ১৮ই রজব, ১৪৩৩ হিজরী মোতাবেক ৮ই জুন, ২০১২ খ্রিষ্টাব্দ; খুত্ববাহ’র অনুলিপির লিংক: www.ajurry(এখানে একটি ডট বসিয়ে লিংকটি ব্যবহার করুন)com/vb/showthread.php?t=28323.]
·
৭ম বক্তব্য:
আশ-শাইখুল ‘আল্লামাহ মুহাম্মাদ বিন সা‘ঈদ রাসলান (হাফিযাহুল্লাহ) আরও বলেছেন,
فإذا جاءكم إخواني حاكمًا فحاربوا عقيدةَ الإخوان المسلمين وزيفوها عند المسلمين، وبيِّنوا عُوَارَها للمسلمين، ولا تنزعوا يدًا من طاعة كما فعل أئمتكم من السابقين كالإمام أحمد رحمه الله رحمةً واسعةً.
فإنه وقع ما وقع له ولغيره من العلماء في عصره من المأمون والمعتصم والواثق، ومن الواثق خاصة، وجاءه الفقهاء ليآمِرُوه على الخروج عليه، فنهاهم وهو يكتب في الوقت عينه: «الردُّ على الجهمية»، وكذا يفعل ولده وتلاميذه يحاربون معتقَد الحاكمِ، ولا ينزعون يدًا من طاعة.
فنهاهم عن الخروج عليه، وأن ينزِعوا يدًا من طاعة؛ لأنه على منهج السلف، لا يحيد عنه قِيدَ أُنْمُلَةٍ، ولكنه يبين الحق، ويوضِّح المعتقد الصحيح، ولا يتعرض للحاكم على المنابر بالنقد، ولا في المجامع، ولا يُشهِّر بسياساته.
وإنما يتكلم عن العقيدة وإن امتحنها مَن امتحنها ممن يحكمهم، ولا يُعَد هذا خروجًا كما فعل الأئمة: أحمد بن حنبل، وأحمد بن نصر، ونعيم بن حماد، ومحمد بن نوح، والبُوَيْطِيّ وغيرُهم من الأئمة فَعَلَ فِعْلَهم: لم ينزعوا يدًا من طاعة، ولكن بينوا العقيدة الصحيحة، وبينوا العقيدة الطالحة الفاسدة، يأمرون بالاتباع للحق، وينهون عن متابعة الباطل والزَّيْف.
“তোমাদের কাছে যখন ইখওয়ানী শাসক আসবে, তখন তোমরা মুসলিম ব্রাদারহুডের ‘আক্বীদাহর বিরুদ্ধে যুদ্ধ করবে। মুসলিমদের কাছে তাদের ‘আক্বীদাহকে ভ্রান্ত বলে ঘোষণা করবে। মুসলিমদের কাছে তাদের ‘আক্বীদাহর ত্রুটি বর্ণনা করবে। কিন্তু তোমরা আনুগত্যের হাত ছিনিয়ে নিবে না। যেমনটি তোমাদের পূর্ববর্তী ইমামগণ করেছেন। যেমন: ইমাম আহমাদ (রাহিমাহুল্লাহু রাহমাতাও ওয়াসি‘আহ)। কেননা তাঁর যুগে তিনি এবং তিনি ব্যতীত অন্যান্য ‘আলিমদের উপর মা’মূন, মু‘তাসিম ও ওয়াসিক্বের পক্ষ থেকে, বিশেষ করে ওয়াসিক্বের পক্ষ থেকে দুর্যোগ আপতিত হয়েছিল। তখন তাঁর কাছে সে যুগের ফাক্বীহগণ এসেছিলেন, ওয়াসিক্বের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করার পরামর্শ দিতে। কিন্তু তিনি তাঁদেরকে (বিদ্রোহ করা থেকে) নিষেধ করেছিলেন। তিনি সেসময় লেখালেখি করেছিলেন, যার মূল বিষয় ছিল—জাহমীদের রদ (রিফিউটেশন)। তাঁর ছেলে এবং ছাত্রবৃন্দও অনুরূপ কাজ করেছেন। তাঁরা শাসকের (ভ্রান্ত) ‘আক্বীদাহর বিরুদ্ধে লড়াই করেছেন, কিন্তু (শাসকের) আনুগত্য করা থেকে হাত গুটিয়ে নেননি।
তিনি সেই ফাক্বীহগণকে বিদ্রোহ করা থেকে এবং আনুগত্যের হাত ছিনিয়ে নেয়া থেকে নিষেধ করেছেন। কেননা তিনি সালাফদের মানহাজের উপর ছিলেন। তিনি সালাফদের মানহাজ থেকে এক আঙুল পরিমাণও বিচ্যুত হননি। কিন্তু তিনি হক বর্ণনা করেছেন, বিশুদ্ধ ‘আক্বীদাহ ব্যাখ্যা করেছেন। তবে মিম্বারের উপর, লোকসমাবেশে শাসকের সমালোচনায় প্রবৃত্ত হননি, শাসকের রাজনীতির নিন্দা করেননি।
‘আক্বীদাহ সম্পর্কে আলোচনা করা হবে, যদিও শাসকবর্গের কেউ ‘আক্বীদাহর ব্যাপারে পরীক্ষায় ফেলেন তারপরও। আর এটা শাসকের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ বলে পরিগণিত হবে না। যেমনটি ইমামগণ করেছেন—আহমাদ বিন হাম্বাল, আহমাদ বিন নাসর, নু‘আইম বিন হাম্মাদ, মুহাম্মাদ বিন নূহ, আল-বুওয়াইত্বী প্রমুখ। তাঁরা তাঁদের কাজ করেছেন, তাঁরা আনুগত্যের হাত ছিনিয়ে নেননি। কিন্তু তাঁরা বিশুদ্ধ ‘আক্বীদাহ বর্ণনা করেছেন, ভ্রষ্ট ও মন্দ ‘আক্বীদাহ সম্পর্কে আলোচনা করেছেন। তাঁরা হকের অনুসরণ করার নির্দেশ দিয়েছেন, আর বাতিল ও ভ্রান্তির অনুসরণ করা থেকে নিষেধ করেছেন।” [“বাল হিয়া ফিতনাহ”– শীর্ষক খুত্ববাহ থেকে সংগৃহীত; খুত্ববাহ’র তারিখ: ২রা শা‘বান, ১৪৩৩ হিজরী মোতাবেক ২২শে জুন, ২০১২ খ্রিষ্টাব্দ; খুত্ববাহ’র অনুলিপির লিংক: www.sahab.net/forums/index.php….]
·
৮ম বক্তব্য:
আশ-শাইখুল ‘আল্লামাহ মুহাম্মাদ বিন সা‘ঈদ রাসলান (হাফিযাহুল্লাহ) আরও বলেছেন,
إذا نهيتَ هؤلاء من الفتن والخروج على الحكام قالوا أنت تقدس الحكام، أنت من عباد الطواغيت، أنت من عبيد الطاغوت، أنتم مرجئة الحكام، وهذا الكلام لمصلحة من؟ لمصلحة الجماعةِ جماعتِهم، وهم يضعون ويستحدثون تأصيلات وتقعيدات تخالف منهج السلف لحماية الجماعة ورموزها، كمهج الموازنة بين الحسنات والسيئات، أو إن الحكمة السكوت لئلا تقع فتنة.
وأوهموا أن كبار علمائنا ما كانوا يردون على أهل الأهواء والبدع وكذبوا عليهم، فإنهم ما يكتمون الحق، وللعلماء ردود كثيرة على جماعات وأشخاص بأعيانهم، ولكن هؤلاء الخوارج من القطبيين والإخوانيين يدّعون أن العلماء لم يشغلوا أنفسهم بالرد على المخالفين وأهل البدع، وهذا إنما هو محض افتراء، وهذا المفتي السابق الديار السعودية العلامة الشيخ إبن باز رد على كثيرين، منهم حسن البنا، ومنهم سيد قطب ومنهم المَسعري، وابن لادن والفقيه، والقرضاوي ومحمد نايف سرور زين العابدين، وكذلك العودة والحوالى، فهذا الإمام رحمه الله رد على هؤلاء جميعًا وعلى غيرهم، فكلام هؤلاء الخوارج من القطبيين والإخوانيين فيما يحتجون به على أهل العلم وأهل منهاج النبوة ومنهج السلف الصالح، هؤلاء يكذبون على الأئمة، يدّعون أنهم لم يردوا على المخالفين.
“তুমি যখন তাদেরকে ফিতনাহ থেকে এবং শাসকদের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করা থেকে নিষেধ করবে, তখন তারা বলবে, তুমি শাসকদের ভালো বলে ঘোষণা করছ, তুমি ত্বাগূতদের দাস, তুমি ত্বাগূত-পূজারীদের অন্তর্ভুক্ত, তোমরা মুরজিয়া। এই কথাগুলো (তারা) কার কল্যাণের জন্য (বলে)? তাদের দলের কল্যাণের জন্য। তারা নিজেদের দল ও তার নেতৃবর্গকে রক্ষা করার জন্য এমন মূলনীতি ও ক্বা‘ইদাহ উদ্ভাবন করে, যা সালাফদের মানহাজ পরিপন্থি। যেমন: ‘ভালো ও খারাপের মধ্যে তুলনা করার মানহাজ (মানহাজুল মুওয়াযানাত)’, অথবা ‘নীরবতা পালন করাই প্রকৃত হিকমাহ (প্রজ্ঞা), যাতে করে ফিতনাহ সংঘটিত না হয়’।
তারা এই ধরনের সংশয় তৈরি করেছে যে, আমাদের বয়োজ্যেষ্ঠ ‘আলিমগণ বিদ‘আতীদের রদ তথা খণ্ডন করেননি। তারা ‘আলিমগণের উপর মিথ্যাচার করেছে। তাঁরা হক গোপণ করতেন না। বিভিন্ন দল এবং নির্দিষ্ট ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে ‘আলিমগণের অসংখ্য রদ আছে। কিন্তু ওই ক্বুত্বুবী ও ইখওয়ানী খারিজীরা দাবি করে যে, ‘আলিমগণ বিদ‘আতী ও বিরুদ্ধবাদীদের রদ করেননি। অথচ এটা ডাহা মিথ্যা কথা।
সৌদি আরবের সাবেক গ্র্যান্ড মুফতী আল-‘আল্লামাহ আশ-শাইখ ইবনু বায (রাহিমাহুল্লাহ) অসংখ্য ব্যক্তিকে রদ করেছেন। তাদের মধ্যে আছে—হাসান আল-বান্না, সাইয়্যিদ ক্বুত্বুব, আল-মাস‘আরী, বিন লাদেন, আল-ফাক্বীহ, আল-ক্বারদ্বাউয়ী, মুহাম্মাদ নায়িফ সুরূর যাইনুল ‘আবিদীন, অনুরূপভাবে আল-‘আওদাহ, আল-হাওয়ালী প্রমুখ। এই ইমাম (রাহিমাহুল্লাহ) তাদের সবাইকে এবং তারা ছাড়াও অন্যান্য বিরুদ্ধবাদীদের রদ করেছেন।
সুতরাং ওই ক্বুত্বুবী ও ইখওয়ানী খারিজীরা এসব কথা বলে নাবাউয়ী মানহাজ ও সালাফদের মানহাজের অনুসারীদের বিরুদ্ধে এবং ‘আলিমদের বিরুদ্ধে দলিল পেশ করে। তারা ইমামগণের উপর মিথ্যাচার করে, আর দাবি করে যে, তাঁরা বিরুদ্ধবাদীদের রদ করেননি।” [“আল-ক্বিসসাতুল কামিলাহ লি খাওয়ারিজি ‘আসরিনা”– শীর্ষক লেকচার সিরিজের ২০শ পর্ব; ২০শ পর্বের নাম: সিফাতু মানহাজিল ইখওয়ান ফী বিলাদিল হারামাইন ওয়া যিকরু বা‘দ্বি ফাতাওয়াল ‘উলামা আর-রাব্বানিয়্যিঈন ফিল ইখওয়ান ওয়াল ক্বুত্বুবিয়্যিঈন ফিল জাযীরাহ ওয়াল খালীজিল ‘আরাবী; লেকচারের তারিখ: ২৫শে শাওয়্যাল, ১৪৩৬ হিজরী মোতাবেক ১০ই আগস্ট, ২০১৫ খ্রিষ্টাব্দ; বক্তব্যের অনূদিত অংশ: ৩৫ মিনিট ১৮ সেকেন্ড থেকে ৩৭ মিনিট ২৬ সেকেন্ড পর্যন্ত; লেকচার লিংক: www.rslan.com/vad/items_details.php?id=5165.]
মুসলিম ব্রাদারহুডের ব্যাপারে ‘আল্লামাহ মুহাম্মাদ সা‘ঈদ রাসলান (হাফিযাহুল্লাহ)’র আলোচনার সংখ্যা নেহায়েত কম নয়। তাঁর অফিসিয়াল ওয়েবসাইটে মুসলিম ব্রাদারহুডের ব্যাপারে একটি স্বতন্ত্র ওয়েবপেজ আছে, যেখানে ব্রাদারহুড সম্পর্কে তাঁর ত্রিশটি খুত্ববাহ ও লেকচার রয়েছে। ওয়েবপেজের লিংক: www.rslan.com/vad/categories_browse.php?categories_id=58। এই পেজে উল্লিখিত লেকচারগুলো ছাড়াও তিনি বিভিন্ন আলোচনায় প্রাসঙ্গিকভাবে মুসলিম ব্রাদারহুডের বিভ্রান্তির ব্যাপারে আলোচনা করেছেন।
·
অনুবাদ ও সংকলনে: মুহাম্মাদ ‘আব্দুল্লাহ মৃধা

No comments:

Post a Comment

Download AsPDF

Print Friendly and PDFPrint Friendly and PDFPrint Friendly and PDF
Related Posts Plugin for WordPress, Blogger...