Wednesday 13 March 2019

কষ্টিপাথরে ব্রাদারহুড, ইখুয়ানুল মুসলিমীনের (জামাতী ইসলামী) ব্যাপারে সালাফী আলেমদের ফতোয়া। পর্ব-০৫


·Image may contain: text
শাইখ পরিচিতি:

‘আল্লামাহ সালিহ বিন ‘আব্দুল ‘আযীয আলুশ শাইখ (হাফিযাহুল্লাহ)
‘আল্লামাহ সালিহ বিন ‘আব্দুল ‘আযীয আলুশ শাইখ (হাফিযাহুল্লাহ) বর্তমান যুগের একজন শ্রেষ্ঠ ‘আলিমে দ্বীন। তিনি ১৩৭৮ হিজরী মোতাবেক ১৯৫৯ খ্রিষ্টাব্দে সৌদি আরবের রিয়াদ শহরে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি ইমাম মুহাম্মাদ বিন সা‘ঊদ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে গ্রাজুয়েশন করেছেন। তাঁর শিক্ষকদের মধ্যে অন্যতম কয়েকজন হলেন—ইমাম ‘আব্দুল্লাহ বিন ‘আক্বীল, ইমাম ‘আব্দুল্লাহ বিন গুদাইয়্যান, ইমাম হাম্মাদ আল-আনসারী, ইমাম ইসমা‘ঈল আল-আনসারী প্রমুখ (রাহিমাহুমুল্লাহ)। তিনি সৌদি আরবের ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সম্মানিত মন্ত্রী। তিনি বিভিন্ন বিষয়ে অসংখ্য মূল্যবান গ্রন্থ প্রণয়ন করেছেন। তাঁর লিখন পড়লে তাঁর ‘ইলমের প্রাচুর্যতা এবং ফিক্বহের গভীরতা উত্তমরূপে উপলব্ধি করা যায়।
‘আল্লামাহ সালিহ আলুশ শাইখ ইমাম আলবানী’র লেখা ইরওয়াউল গালীল গ্রন্থে যেসব হাদীসের তাখরীজ ছাড়া পড়েছে, সেগুলো জমা করে একটি গ্রন্থ রচনা করেছেন। ইমাম আলবানীকে ‘আল্লামাহ সালিহের বইটির ব্যাপারে জিজ্ঞেস করা হলে তিনি তাঁর প্রশংসা করেন। এছাড়াও শাইখ সালিহ আলুশ শাইখের বিরুদ্ধে আলজেরিয়ার সরকারকে কাফির ফাতওয়া প্রদানের অভিযোগ উত্থাপন করা হলে ‘আল্লামাহ যাইদ আল-মাদখালী (রাহিমাহুল্লাহ) শাইখ সালিহকে ডিফেন্ড করেন, ওই বিষয়টি অস্বীকার করেন এবং শাইখের প্রশংসা করেন। [sahab.net] এছাড়াও ইমাম মুক্ববিল বিন হাদী আল-ওয়াদি‘ঈ (রাহিমাহুল্লাহ) শাইখ সালিহ আলুশ শাইখের প্রশংসা করেছেন। [আজুর্রি (ajurry) ডট কম]
উম্মুল ক্বুরা বিশ্ববিদ্যালয়ের অনুষদ সদস্য (faculty member) অধ্যাপক ‘আল্লামাহ মুহাম্মাদ বাযমূল (হাফিযাহুল্লাহ) শাইখ সালিহ আলুশ শাইখের ব্যাপারে বলেছেন, “তিনি হলেন আল-ওয়াযীর (মন্ত্রী), আল-‘আলিম, আল-মুফাসসির, আল-মুহাদ্দিস, আল-ফাক্বীহ, আল-উসূলী।” [দ্র.: https://m.youtube.com/watch?v=6udOz4rubGI(অডিয়ো ক্লিপ)]
আল্লাহ তাঁর অমূল্য খেদমতকে কবুল করুন এবং তাঁকে উত্তমরূপে হেফাজত করুন। আমীন। সংগৃহীত: saleh.af.org.sa।
·
‘আল্লামাহ সালিহ আলুশ শাইখের বক্তব্য:
সৌদি আরবের সম্মানিত ধর্মমন্ত্রী আশ-শাইখুল ‘আল্লামাহ সালিহ বিন ‘আব্দুল ‘আযীয আলুশ শাইখ (হাফিযাহুল্লাহ) [জন্ম: ১৩৭৮ হি.] প্রদত্ত ফাতওয়া—
السؤال: ما هي الأصول التي تنبني عليها جماعة الإخوان المسلمين؟
الجواب: إن من أبرز مظاهر الدعوة عندهم التكتم والخفاء والتلون، والتقرب إلى من يظنون أنه سينفعهم، وعدم إظهار حقيقة أمرهم، يعني أنهم نوع من أنواع الباطنية، ومنهم من خالط بعض العلماء والمشايخ زمانًا طويلًا وهو لا يعرف حقيقتها.
ومن مظاهر الجماعة وأصولها أنهم يغلقون عقول أتباعهم عن سماع القول الذي خالف منهجهم، ولهم في هذا الإغلاق طرق شتى متنوعة؛ منها إشغال وقت الشاب جميعه من صبحه إلى ليله حتى لا يسمع قولًا آخر، ومنها أنهم يحذرون ممن ينقدهم، فإذا رأوا واحدًا من الناس يعرف منهجهم وطريقتهم وبدأ في نقدهم وفي تحذير الشباب من الانخراط في الحزبية البغيضة أخذوا يحذرون منه بطرق شتى؛ تارة باتهامه وتارة بالكذب عليه، وتارة بقذفه في أمور هو منها براء، وهم يعلمون أن ذلك كذب، وتارة يقفون منه على غلط فيشنعون به عليه ويضخمون ذلك حتى يصدوا الناس عن اتباع الحق والهدى.
وهم في ذلك شبيهون بالمشركين في خصلة من خصالهم؛ حيث كانوا ينادون على رسول الله صلى الله عليه وسلم في المجامع بأن هذا صابئ وأن فيه كذا وفيه كذا؛ حتى يصدوا الناس عن اتباعه.
أيضًا مما يميز الإخوان عن غيرهم أنهم لا يحترمون السنة ولا يحبون أهلها، وإن كانوا في الجملة لا يظهرون ذلك، لكنهم في حقيقة الأمر لا يحبون السنة ولا يدعون لأهلها، وقد جربنا ذلك في بعض من كان منتميًا لهم أو يخالط بعضهم، فتجد أنه لما بدأ يقرأ كتب السنة مثل صحيح البخاري أو الحضور عند بعض المشايخ في قراءة بعض الكتب حذروه وقالوا: هذا لا ينفعك. يعني أنهم لا يقرون فيما بينهم تدريس السنة ولا محبة أهلها.
من مظاهرهم أيضًا أنهم يرومون الوصول إلى السلطة؛ وذلك بأنهم يتخذون من رءوسهم أدوات يجعلونها تصل، وتارة تكون تلك الرءوس ثقافية، وتارة تكون تلك الرءوس تنظيمية، يعني أنهم يبذلون أنفسهم ويعينون بعضًا حتى يصلوا بطريقة أو بأخرى إلى السلطة؛ يعني إلى سلطة جزئية؛ حتى ينفذوا من خلالها إلى التأثير. وهذا يتبعه أن يكون هناك تحزُّب؛ يعني يقربون مَن هم في الجماعة، ويبعدون من لم يكونوا في الجماعة، فيقال مثلا: فلان ينبغي إبعاده، ولا يمكَّن من التدريس، لماذا؟ لأن عليه ملاحظات، ما هي هذه الملاحظات؟ ليس من الإخوان.
يعني صار عندهم حب وبغض في الحزب أو في الجماعة، وهذا كما جاء في حديث الحارث الأشعري أن النبي –صلى الله عليه وسلم– قال: «مَن دَعَا بِدَعْوَى الْجَاهِلِيَّةِ فَإِنَّهُ مِنْ جُثَا جَهَنَّمَ» . قالوا : يا رسول الله ، وإن صام وإن صلى؟ قال : «وإنْ صامَ وإنْ صَلَّى وَزَعَمَ أَنَّهُ مُسْلِمٌ، فَادْعُوا الْمُسْلِمِينَ بِأَسْمَائِهِمْ، بِمَا سَمَّاهُمُ اللَّهُ عَزَّ وَجَلَّ الْمُسْلِمِينَ الْمُؤْمِنِينَ عِبَادَ اللهِ عَزَّ وَجَلَّ». حديث صحيح .
ولهذا ينبغي للشباب أن يُنبهوا على هذا الأمر بالطريقة الحسنى المثلى حتى يكون هناك اهتداء إلى طريق أهل السنة والجماعة وإلى منهج السلف الصالح، كما أمر الله – عز وجل – بقوله : ﴿ادْعُ إِلَى سَبِيلِ رَبِّكَ بِالْحِكْمَةِ وَالْمَوْعِظَةِ الْحَسَنَةِ وَجَادِلْهُمْ بِالَّتِي هِيَ أَحْسَنُ﴾ [النحل : ١٢٥]
أيضًا من مظاهرهم، بل مما يميزهم عن غيرهم أن الغاية عندهم من الدعوة هي الوصول إلى الدولة، وهذا أمر ظاهر بيّن في منهج الإخوان، بل في دعوتهم، الغاية من دعوتهم هي الوصول إلى الدولة، أما كيف ينجو الناس من عذاب الله –جل وعلا– وأن تبعث لهم الرحمة في هدايتهم إلى ما ينجيهم من عذاب القبر ومن عذاب النار وما يدخلهم الجنة وما يقربهم إليها؛ فليس ذلك عندهم كبير أمر ولا كبير شأن ولا يهتمون بذلك؛ لأن الغاية عندهم هي الدولة.
ولهذا يقولون: الكلام في الحكام يجمع النا، والكلام في أخطاء الناس ومعاصيهم يفرق الناس، فابذلوا ما به تجتمع عليكم القلوب، وهذا لا شك أنه خطأ تأصيلي ونية فاسدة؛ فإن النبي –صلى الله عليه وسلم– بين أن مسائل القبر ثلاثة؛ يُسأل العبد عن ربه، يعني عن معبوده، وعن دينه، وعن نبيه صلى الله عليه وسلم، فمن صحب أولئك زمنًا طويلًا؛ عشر سنين أو عشرين سنة أو أكثر أو أقل، وهو لم يُعلَّم ما ينجيه إذا أُدخل في القبر فهل نُصِحَ له وهل أُحب له الخير؟ فلو أحبوا المسلمين حق المحبة لبذلوا النصيحة فيما ينجيهم من عذاب القبر وفيما ينجيهم من عذاب الله، ولعلموهم التوحيد، وهو أول مسئول عنه من ربك، أي من معبودك.
প্রশ্ন: “মুসলিম ব্রাদারহুড কোন মূলনীতিগুলোর উপর প্রতিষ্ঠিত?”
উত্তর: “তাদের দা‘ওয়াতের সবচেয়ে স্পষ্ট দিক হলো—গোপনীয়তা, অস্থিতিশীলতা, যে তাদের উপকারে আসবে বলে তারা মনে করে তার নিকটবর্তী হওয়া এবং তাদের প্রকৃত বিষয়কে প্রকাশ না করা। অর্থাৎ, তারা বাত্বিনীদের একটি প্রকার। তাদের কেউ কেউ ‘উলামা ও মাশাইখদের কারও সাথে দীর্ঘ সময় অবস্থান করে, এতৎসত্ত্বেও তিনি তাদের দা‘ওয়াতের হকিকত সম্পর্কে জানতে পারেন না।

এই দলের অন্যতম মূলনীতি হলো, তারা তাদের অনুসারীদের মস্তিষ্ককে তাদের মানহাজের বিরোধিতা করে এমন কারও কথা শোনা থেকে বিরত রাখে। তাদের এই বিরত রাখার বিভিন্ন পদ্ধতি আছে। তার মধ্যে অন্যতম হলো—তারা যুবকের সমস্ত সময়কে, ভোর থেকে রাত পর্যন্ত ব্যস্ততাপূর্ণ করে রাখে, যাতে করে সে অন্য কোনো কথা শুনতে না পায়। আরেকটি পদ্ধতি হলো—যে ব্যক্তিই তাদের সমালোচনা করে, তার থেকে তারা সতর্ক করে। তারা যদি একজন মানুষকেও দেখে, যে মানুষটি তাদের মানহাজ ও আদর্শ সম্পর্কে জানে এবং তাদের সমালোচনা করতে শুরু করে, আর যুবকদেরকে ঘৃণ্য দলবাজিতে যোগ দেওয়া থেকে সতর্ক করতে শুরু করে, সেই মানুষ থেকে তারা বিভিন্নভাবে সতর্ক করতে আরম্ভ করে।
কখনো তারা মানুষটিকে দোষারোপ করে, কখনো তার উপর মিথ্যাচার করে, আবার কখনো তার ব্যাপারে এমন অপবাদ দেয়, যা থেকে সে মানুষটি মুক্ত। আর তারা জানেও যে, এটা মিথ্যা। কখনো তারা ওই ব্যক্তির কোনো ভুল সম্পর্কে অবগত হতে পারে। তখন তারা সেই ভুলের কারণে তার নিন্দা করে এবং ভুলটিকে বড়ো করে দেখায়, যাতে করে মানুষ হকের অনুসরণ থেকে বিচ্যুত হয়ে যায়।
তারা এই বৈশিষ্ট্যের ব্যাপারে মুশরিকদের সাথে সাদৃশ্য রাখে। তারা লোকদের সমাবেশে রাসূল ﷺ কে ‘সাবেয়ী’ তথা ‘ধর্মত্যাগী’ বলে ডাকত এবং বলত যে, তার এই এই দোষ রয়েছে। যাতে করে তারা লোকদেরকে তাঁর অনুসরণ করা থেকে বিচ্যুত করতে পারে।
ব্রাদারহুডের আরও যেসব স্বতন্ত্র বৈশিষ্ট্য রয়েছে, তা হলো—তারা সুন্নাহকে সম্মান করে না এবং আহলুস সুন্নাহকে ভালোবাসে না। যদিও তারা সার্বিকভাবে বিষয়টি প্রকাশ করে না। কিন্তু বাস্তবে তারা সুন্নাহকে ভালোবাসে না এবং আহলুস সুন্নাহ’র জন্য মানুষকে আহ্বানও করে না। যারা তাদের দলে যোগ দিয়েছে, বা তাদের সাথে মিশেছে, তাদের কাছ থেকে আমরা অভিজ্ঞতা অর্জন করেছি। তুমি এরকম পাবে যে, যখন (তাদের) কেউ সুন্নাহ’র গ্রন্থসমূহ যেমন: সাহীহ বুখারী পড়া শুরু করে, বা কোনো শাইখের নিকট কোনো কিতাব পড়ার জন্য উপস্থিত হতে শুরু করে, তখন তারা তাকে সতর্ক করে। তারা বলে, এটা তোমার জন্য ফলপ্রসূ নয়। অর্থাৎ, তারা তাদের মধ্যে সুন্নাহ’র তাদরীস (টিচিং) এবং আহলুস সুন্নাহ’র প্রতি ভালোবাসা সমর্থন করে না।
তাদের একটি অন্যতম বাহ্যিক বৈশিষ্ট্য হলো, তারা ক্ষমতায় পৌঁছতে চায়। তারা তাদের নেতাদেরকে মাধ্যম হিসেবে গ্রহণ করে, যে মাধ্যম ব্যবহার করে তারা ক্ষমতায় পৌঁছবে। কখনো সেই নেতারা সাংস্কৃতিক হয়, আবার কখনো সাংগঠনিক হয়। অর্থাৎ, তারা নিজেরা চেষ্টা করে এবং কাউকে সাহায্য করে, যাতে করে তারা কোনো উপায়ে শাসনক্ষমতায় তথা আংশিক ক্ষমতায় পৌঁছতে পারে। যাতে করে তারা এর মাধ্যমে প্রভাব বিস্তার করতে পারে। আর এর অনুগামী হয় তাদের দলবাজি। অর্থাৎ, যারা তাদের দলে রয়েছে, তাদেরকে তারা নিকটবর্তী করে, আর যারা তাদের দলে নেই, তাকে তারা বিতাড়ন করে। উদাহরণস্বরূপ বলা হয়, অমুককে বিতাড়ন করা উচিত। তাকে শেখানো সম্ভব নয়। কেন? কারণ তার কিছু সমস্যা আছে। সমস্যা কী? সে ব্রাদারহুডের লোক নয়!
অর্থাৎ, তাদের ভালোবাসা ও ঘৃণা দলকেন্দ্রিক। এ বিষয়ে হারিস আল-আশ‘আরী বর্ণিত হাদীস রয়েছে, নাবী ﷺ বলেছেন, “যে লোক জাহিলী যুগের রীতিনীতির দিকে আহ্বান করে সে জাহান্নামীদের দলভুক্ত।” জনৈক ব্যক্তি বলল, “হে আল্লাহ’র রাসূল! সে সালাত আদায় করলেও এবং সিয়াম পালন করলেও?” তিনি বললেন, “হ্যাঁ, সে সালাত আদায় ও সিয়াম পালন করলেও। সুতরাং তোমরা সেই মহান আল্লাহ’র ডাকেই নিজেদেরকে ডাকবে, যিনি তোমাদেরকে মুসলিম, মু’মিন ও আল্লাহ’র বান্দা নাম রেখেছেন।” (তিরমিযী, হা/২৮৬৩; সনদ: সাহীহ)
সুতরাং, যুবকদের জন্য উত্তম পন্থায় এ থেকে সতর্ক করা বাঞ্ছনীয়। যাতে করে আহলুস সুন্নাহ ওয়াল জামা‘আতের আদর্শ এবং ন্যায়নিষ্ঠ সালাফদের মানহাজের দিকে পরিচালিত হওয়া যায়। যেমনভাবে মহান আল্লাহ আদেশ করেছেন, “তুমি তোমরা রবের পথে হিকমাহ ও সুন্দর উপদেশের মাধ্যমে আহ্বান করো এবং সুন্দরতম পন্থায় তাদের সাথে বিতর্ক করো।” (সূরাহ নাহল: ১২৫)
তাদের অন্যতম একটি বৈশিষ্ট্য, বরং তাদের স্বতন্ত্র বৈশিষ্ট্য হলো—তাদের দা‘ওয়াতের উদ্দেশ্যই হচ্ছে রাষ্ট্রক্ষমতায় পৌঁছানো। ব্রাদারহুডের মানহাজে, বরং তাদের দা‘ওয়াতে এটি একটি সুস্পষ্ট বিষয়। পক্ষান্তরে কীভাবে মানুষ মহান আল্লাহ’র ‘আযাব থেকে রক্ষা পাবে, আর কীভাবে মানুষের উপর হিদায়াতের রহমত আসবে, যা তাদেরকে কবরের ‘আযাব ও জাহান্নামের ‘আযাব থেকে রক্ষা করার দিকে এবং জান্নাতে প্রবেশ করানো ও জান্নাতের নিকটবর্তীকরণের দিকে পথপ্রদর্শন করবে—তা তাদের নিকট বড়ো বিষয় নয়! তারা এর প্রতি গুরুত্ব দেয় না। কেননা তাদের লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য হলো রাষ্ট্রক্ষমতা।
একারণে তারা বলে, শাসকের ব্যাপারে কথা বললে, তা মানুষকে ঐক্যবদ্ধ করে। আর মানুষের ভুলত্রুটি ও পাপাচারিতা নিয়ে কথা বললে, তা মানুষকে বিভক্ত করে। সুতরাং তোমরা তাই করো, যার উপর তোমাদের অন্তরসমূহ একত্রিত হয়। আর নিঃসন্দেহে এটি ভুল মূলনীতি এবং বিকৃত অভিলাষ। কেননা নাবী ﷺ বর্ণনা করেছেন যে, কবরের প্রশ্ন হবে তিনটি বিষয়ে। বান্দাকে তার রব (প্রভু) সম্পর্কে প্রশ্ন করা হবে, অর্থাৎ তার উপাস্য সম্পর্কে, তার দ্বীন সম্পর্কে প্রশ্ন করা হবে এবং তার নাবী ﷺ সম্পর্কে প্রশ্ন করা হবে।
একজন ব্যক্তি তাদের সাথে দীর্ঘদিন থেকেছে, দশ বছর বা বিশ বছর, অথবা এরচেয়ে কম বা বেশি, অথচ তাকে শেখানো হয়নি, যখন তাকে কবরে ঢুকানো হবে তখন কী তাকে রক্ষা করবে! তাকে কি সদুপদেশ দেওয়া হয়েছে, আর তার জন্য কি কল্যাণ চাওয়া হয়েছে? তারা যদি মুসলিমদেরকে সত্যিকারার্থেই ভালোবাসত, তবে অবশ্যই তারা তাদেরকে এই বিষয়ে নসিহত করত যে, কী তাদেরকে কবরের ‘আযাব ও আল্লাহ’র ‘আযাব থেকে রক্ষা করবে। তারা যদি মুসলিমদেরকে সত্যিকারার্থেই ভালোবাসত, তবে অবশ্যই তারা তাদেরকে তাওহীদ শেখাত। যে তাওহীদ সম্পর্কে মানুষকে সর্বপ্রথম প্রশ্ন করা হবে—‘তোমার রব কে, তথা তোমার উপাস্য কে’।” [দ্র.: http://salehalshaikh.com/wp2/?p=673 (শাইখের অফিসিয়াল ওয়েবসাইটের আর্টিকেল লিংক)]
·
▌৭ম অধ্যায়: ‘আল্লামাহ ‘আলী আল-হুযাইফী (হাফিযাহুল্লাহ)
·
শাইখ পরিচিতি:
‘আল্লামাহ ‘আলী বিন ‘আব্দুর রহমান আল-হুযাইফী (হাফিযাহুল্লাহ) সৌদি আরবের একজন প্রখ্যাত ‘আলিমে দ্বীন। তিনি ১৩৬৬ হিজরী মোতাবেক ১৯৪৭ খ্রিষ্টাব্দে মক্কা বিভাগের ‘আরদ্বিয়্যাহ জেলার ‘ক্বারনে মুস্তাক্বীম’ নামক গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি ইমাম মুহাম্মাদ বিন সা‘ঊদ বিশ্ববিদ্যালয়ের শারী‘আহ অনুষদ থেকে অনার্স করেছেন এবং আল-আযহার বিশ্ববিদ্যালয় থেকে মাস্টার্স ও পিএইচডি সম্পন্ন করেছেন। তাঁর অন্যতম একজন শিক্ষক হলেন প্রখ্যাত মুহাদ্দিস ইমাম হাম্মাদ আল-আনসারী (রাহিমাহুল্লাহ)। তিনি ১৩৯৭ হিজরী থেকে মাদীনাহ ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষকতা করছেন। তিনি সেখানে শারী‘আহ অনুষদে তাওহীদ ও ফিক্বহ পড়িয়েছেন। এছাড়াও তিনি ক্বুরআন অনুষদ, হাদীস অনুষদ এবং ‘দা‘ওয়াহ ও উসূলে দ্বীন’ অনুষদে পড়িয়েছেন। তিনি বিভিন্ন সময়ে মাসজিদে ক্বুবায় ইমাম ও খত্বীব হিসেবে কর্মরত ছিলেন। ১৪০১ হিজরী সনে মক্কার মাসজিদুল হারামে ইমাম ও খত্বীব হিসেবে কর্মরত ছিলেন। ১৪০২ হিজরী থেকে এখন অবধি তিনি মাসজিদে নাবাউয়ীর ইমাম ও খত্বীব হিসেবে কর্মরত আছেন।
ইয়েমেনের প্রখ্যাত মুহাদ্দিস ও ফাক্বীহ আশ-শাইখুল ‘আল্লামাহ মুহাম্মাদ বিন ‘আব্দুল ওয়াহহাব আল-ওয়াসাবী (রাহিমাহুল্লাহ) [মৃত: ১৪৩৬ হি./২০১৫ খ্রি.] কে ‘আল্লামাহ হুযাইফীর ‘আল-উসূলুস সালাফিয়্যাহ’ নামক পুস্তিকা ইংরেজিতে ভাষান্তর করা এবং পুস্তিকাটি লোকদের মধ্যে প্রচার করার ব্যাপারে তাঁর অভিমত কী– তা জিজ্ঞেস করা হলে তিনি বলেন, “কোনো সমস্যা নেই। আমাদের ভাই শাইখ ‘আলী আল-হুযাইফী (আল্লাহ তাঁকে সৎকর্মের তাওফীক্ব দিন) কল্যাণের উপর রয়েছেন। তিনি আহলুস সুন্নাহ ওয়াল জামা‘আতের অন্তর্ভুক্ত। তাঁর কথা বেশ ভালো এবং হকের দিশারী। তাঁর কথায় ‘ইলম আছে। সুতরাং তাঁর পুস্তিকাটি প্রচার করায় কোনো সমস্যা নেই, ইনশাআল্লাহ।” [bayenahsalaf.com]
ইমাম রাবী‘ বিন হাদী আল-মাদখালী (হাফিযাহুল্লাহ) [জন্ম: ১৩৫১ হি./১৯৩২ খ্রি.] ‘আল্লামাহ ‘আলী আশ-শারফী আল-হুযাইফীর জবাবমূলক লিখন পড়ে তাঁর প্রশংসা করেছেন এবং বলেছেন, “শাইখ ‘আলী আশ-শারফী কতইনা ভালো ও সম্মানীয়!” [আজুর্রি (ajurry) ডট কম]
কুয়েত বিশ্ববিদ্যালয়ের শারী‘আহ অনুষদের অধ্যাপক শাইখ ড. ফালাহ বিন ইসমা‘ঈল আল-মুনদাকার (হাফিযাহুল্লাহ) [জন্ম: ১৯৫০ খ্রি.] বর্তমান যুগের বেশ কয়েকজন ‘আলিমের নাম বলেছেন, যাঁদের নিকট থেকে শার‘ঈ ‘ইলম নেওয়া যায়। তিনি মাদীনাহ’র বেশ কয়েকজন ‘আলিমের নাম নিয়েছেন, যাদের মধ্যে রয়েছেন সম্মানিত শাইখ ‘আলী বিন ‘আব্দুর রহমান আল-হুযাইফী (হাফিযাহুল্লাহ)। [sahab.net]
আল্লাহ তাঁর অমূল্য খেদমতকে কবুল করুন এবং তাঁকে উত্তমরূপে হেফাজত করুন। আমীন। সংগৃহীত: sahab.net
·
‘আল্লামাহ হুযাইফীর বক্তব্য:
মাসজিদে নাবাউয়ীর সম্মানিত ইমাম আশ-শাইখুল ‘আল্লামাহ আবূ ‘আম্মার ‘আলী আল-হুযাইফী (হাফিযাহুল্লাহ) [জন্ম: ১৩৬৬ হি./১৯৪৭ খ্রি.] মুসলিম ব্রাদারহুডের ব্যাপারে “মুসলিম ব্রাদারহুড: অন্য দৃষ্টিকোণ (আল-ইখওয়ানুল মুসলিমূন আল-ওয়াজহুল আখার)” শিরোনামে একটি সুদীর্ঘ প্রবন্ধ লিখেছেন, যা দুই পর্বে সাহাব ডট নেটে পোস্ট করা হয়েছে। ইসলামের নাম দিয়ে মুসলিম ব্রাদারহুড যে অনিসলাম প্রচার করছে, এই প্রবন্ধে তিনি সে বিষয়টি বেশ কয়েকটি পয়েন্টে আলোচনা করেছেন। তাঁর লেখা এই বিশাল কলেবরের প্রবন্ধটি খোদ একটি গ্রন্থ হওয়ার দাবি রাখে। তাই আমি সম্পূর্ণ প্রবন্ধটি অনুবাদ করতে যাচ্ছি না। আমি স্রেফ মুসলিম ব্রাদারহুডের ব্যাপারে তাঁর সুচিন্তিত ও গবেষণালব্ধ মন্তব্য উল্লেখ করছি।
‘আল্লামাহ আবূ ‘আম্মার ‘আলী আল-হুযাইফী (হাফিযাহুল্লাহ) প্রবন্ধটির ভূমিকায় বলেছেন,
فرقة الإخوان المسلمين، صنع لها كبارها صيتاً كبيراً يغطي على حقائقها وفضائحها، وروجوا لها على أنها هي الفرقة الناجية، والطائفة المنصورة، جاهلين أو متجاهلين أن منهجها مخالف تماماً ومصادم كل المصادمة بل يسير بالاتجاه المعاكس للطائفة الناجية والفرقة المنصورة، ومع هذا فــ”الإخوان المسلمون“ يصنعون لأنفسهم زخماً إعلامياً كبيراً، وهالة عجيبة وكأنهم هم الذين في الساحة وحدهم وهم الذين حفظ الله بهم دينه وشريعته، وقد دفعتني هذه التغطية الإعلامية لهذه الفرقة إلى كتابة شيء مختصر عن حقيقتها وفضائحها كما فعل العلماء من قبلي.
“মুসলিম ব্রাদারহুডের নেতারা ব্রাদারহুডের অনেক সুনাম করে, যে সুনাম ব্রাদারহুডের হকিকত এবং দোষত্রুটি পর্দাচ্ছাদিত করে রাখে। আর তারা এই কথা প্রচার করেছে যে, ব্রাদারহুড হলো ফিরক্বাহ নাজিয়াহ (মুক্তিপ্রাপ্ত দল) এবং ত্বাইফাহ মানসূরাহ (সাহায্যপ্রাপ্ত দল)। তারা এ ব্যাপারে হয় অজ্ঞ অথবা অজ্ঞতার ভানকারী যে, ব্রাদারহুডের মানহাজ সম্পূর্ণরূপে মুক্তিপ্রাপ্ত দলের বিরোধী এবং মুক্তিপ্রাপ্ত দলের সাথে সাংঘর্ষিক, বরং মুক্তিপ্রাপ্ত ও সাহায্যপ্রাপ্ত দলের বিরোধী মনোভাবাপন্ন। এতৎসত্ত্বেও তারা নিজেদের জন্য দুর্গন্ধময় প্রচারণা চালাচ্ছে এবং এক আশ্চর্য বলয় তৈরি করেছে। যেন পৃথিবীতে কেবল তাদের মাধ্যমেই আল্লাহ স্বীয় দ্বীন ও শরিয়তকে হেফাজত করেছেন। এই দলের প্রচারণামূলক আবরণই (ক্যামোফ্লাজ) আমাকে এই দলের প্রকৃতত্ব ও ত্রুটিবিচ্যুতি সম্পর্কে সংক্ষেপে কিছু লিখতে বাধ্য করেছে। যেমনটি আমার পূর্বে ‘আলিমগণ করেছেন।” [‘আল্লামাহ ‘আলী আল-হুযাইফী (হাফিযাহুল্লাহ), “আল-ইখওয়ানুল মুসলিমূন আল-ওয়াজহুল আখার”– শীর্ষক প্রবন্ধ (১ম পর্ব); প্রবন্ধের লিংক: www.sahab.net/forums/index.php….]
·
▌৮ম অধ্যায়: ‘আল্লামাহ ‘আব্দুস সালাম বিন বারজিস (রাহিমাহুল্লাহ)
·
শাইখ পরিচিতি:
‘আল্লামাহ ‘আব্দুস সালাম বিন বারজিস আলে ‘আব্দুল কারীম (রাহিমাহুল্লাহ) সৌদি আরবের একজন প্রখ্যাত দা‘ঈ ও ‘আলিমে দ্বীন। তিনি ১৩৮৭ হিজরীতে সৌদি আরবের রিয়াদ শহরে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি শরী‘আহ কলেজ থেকে অনার্স করেছেন এবং রিয়াদস্থ হায়ার জুডিশিয়াল ইন্সটিটিউট থেকে ফিক্বহের উপর মাস্টার্স এবং পিএইচডি ডিগ্রি অর্জন করেছেন। তিনি অনেক বড়ো বড়ো ‘আলিমের নিকট থেকে ‘ইলম অর্জনের সৌভাগ্য অর্জন করেছেন। তাঁদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য কয়েকজন হলেন—ইমাম ‘আব্দুল ‘আযীয বিন বায, ইমাম মুহাম্মাদ বিন সালিহ আল-‘উসাইমীন, ইমাম আহমাদ আন-নাজমী, ইমাম ‘আব্দুল্লাহ গুদাইয়্যান, ‘আল্লামাহ সালিহ আল-আত্বরাম, ‘আল্লামাহ ‘আব্দুল্লাহ আদ-দুওয়াইশ প্রমুখ (রাহিমাহুমুল্লাহ)। তিনি কর্মজীবনে হায়ার জুডিশিয়াল ইন্সটিটিউটের প্রভাষক ছিলেন। আর পিএইচডি কমপ্লিট করার পর তিনি হায়ার জুডিশিয়াল ইন্সটিটিউটের সহকারী অধ্যাপক পদে উন্নীত হয়েছিলেন। তিনি বিভিন্ন বিষয়ে প্রায় চল্লিশটিরও অধিক গ্রন্থ রচনা করেছেন।
‘আল্লামাহ ইবনু বারজিসের ব্যাপারে ইমাম সালিহ আল-ফাওযান (হাফিযাহুল্লাহ) [জন্ম: ১৩৫৪ হি./১৯৩৫ খ্রি.] বলেছেন, “আমি সম্মানিত শাইখ ‘আব্দুস সালাম বিন বারজিস বিন নাসির আলে ‘আব্দুল কারীমের “ঈক্বাফুন নাবীল ‘আলা হুকমিত তামসীল (অভিনয়ের বিধান সম্পর্কিত বই)” শিরোনামে লিখিত মূল্যবান পুস্তিকাটি পড়লাম। এই কাজ নিষিদ্ধ হওয়ার ব্যাপারে তিনি যেসব দলিল উপস্থাপন করেছেন এবং যারা এই কাজকে বৈধ বলে, তাদের সংশয়সমূহ যা লিখে অপনোদন করেছেন তা আমি পড়েছি। আল-হামদুলিল্লাহ, আমি এটাকে একটি মূল্যবান পুস্তিকা এবং সংশ্লিষ্ট বিষয়ে পূর্ণাঙ্গ গ্রন্থ হিসেবে পেয়েছি। তিনি একটি চলতি সমস্যার চিকিৎসা করেছেন, যে সমস্যা অধিকাংশ ‘আলিম ও বিদ্বানের মনোযোগ তার দিকে ব্যস্ত রেখেছে।” [ঈক্বাফুন নাবীল ‘আলা হুকমিত তামসীল; পৃষ্ঠা: ৪; দারুল ফাতহ, শারজা (UAE) কর্তৃক প্রকাশিত; সন: ১৪১৬ হি./১৯৯৫ খ্রি. (১ম প্রকাশ)]
ইমাম রাবী‘ বিন হাদী আল-মাদখালী (হাফিযাহুল্লাহ) [জন্ম: ১৩৫১ হি./১৯৩২ খ্রি.] বলেছেন, “আমি একটি মূল্যবান ‘ইলমী গবেষণাপত্র পড়লাম, যা রচনা করেছেন সম্মানযোগ্য তরুণ, স্বীয় দ্বীনের ব্যাপারে প্রবল আত্মসম্মানবোধসম্পন্ন আশ-শাইখ ‘আব্দুস সালাম বিন বারজিস বিন নাসির আলে ‘আব্দুল কারীম। তিনি বইটির নাম দিয়েছেন—ঈক্বাফুন নাবীল ‘আলা হুকমিত তামসীল। তাঁর চমৎকার উপস্থাপন, দলিল গ্রহণের পদ্ধতি, ভাষার স্বচ্ছতা এবং হককে প্রতিষ্ঠিত ও বাত্বিলকে অপনোদিত করার ক্ষেত্রে তাঁর দালিলিক সক্ষমতায় আমি সন্তুষ্ট ও আনন্দিত।” [প্রাগুক্ত; পৃষ্ঠা: ৬]
তিনি ১৪২৫ হিজরী মোতাবেক ২০০৪ খ্রিষ্টাব্দে মাত্র ৩৮ বছর বয়সে মারা যান। আল্লাহ তাঁকে তাঁর সুপ্রশস্ত রহমত দিয়ে ঢেকে দিন এবং জান্নাতুল ফিরদাউসে দাখিল করুন। আমীন। সংগৃহীত: ‘আল্লামাহ ‘আব্দুস সালাম বিন বারজিস (রাহিমাহুল্লাহ), উসূলুদ দা‘ওয়াতিস সালাফিয়্যাহ; পৃষ্ঠা: ১১-১৬; দারু সাবীলিল মু’মিনীন, কায়রো কর্তৃক প্রকাশিত; সন: ১৪৩৩ হি./২০১২ খ্রি. (১ম প্রকাশ)।
·
১ম বক্তব্য:
সৌদি আরবের প্রখ্যাত ‘আলিমে দ্বীন আল-ফাক্বীহুল উসূলী আশ-শাইখুল ‘আল্লামাহ ড. ‘আব্দুস সালাম বিন বারজিস বিন নাসির আলে ‘আব্দুল কারীম (রাহিমাহুল্লাহ) [মৃত: ১৪২৫ হি./২০০৪ খ্রি.] তাওহীদুল হাকিমিয়্যাহ সম্পর্কে আলোচনা করতে গিয়ে মুসলিম ব্রাদারহুডকে ‘বিপথগামী ভ্রষ্ট দল’ বলে উল্লেখ করেছেন। তিনি বলেছেন,
ﺍﻟﺴﺎﺋﻞ ﻳﺴﺄﻝ ﻋﻤﺎ ﻳﺴﻤﻰ ﺑﺘﻮﺣﻴﺪ ﺍﻟﺤﺎﻛﻤﻴﺔ، ﻭ ﻫﻞ ﻟﻪ ﺣﻆ ﻣﻦ ﺍﻟﻨﻈﺮ ﻭ ﺍﻻﻋﺘﺒﺎﺭ ﻓﻲ ﺃﻗﺴﺎﻡ ﺍﻟﺘﻮﺣﻴﺪ؛ ﻓﻨﻘﻮﻝ: ﺇﻥ ﺍﻟﻠﻪ –ﺳﺒﺤﺎﻧﻪ ﻭ ﺗﻌﺎﻟﻰ– ﻣُﺘَﻮَﺣِّﺪٌ ﻓﻲ ﺭﺑﻮﺑﻴﺘﻪ، ﻣﺘﻮﺣﺪ ﻓﻲ ﺃﺳﻤﺎﺋﻪ ﻭ ﺻﻔﺎﺗﻪ، ﻣﺘﻮﺣﺪ ﻓﻲ ﺃﻟﻮﻫﻴﺘﻪ؛ ﻫﺬﻩ ﻫﻲ ﺃﻗﺴﺎﻡ ﺍﻟﺘﻮﺣﻴﺪ ﺍﻟﺘﻲ ﺟﺮﻯ ﻋﻠﻴﻬﺎ ﺍﻟﺴﻠﻒ –ﺭﺿﻲ ﺍﻟﻠﻪ ﻋﻨﻬﻢ ﻭ ﺃﺭﺿﺎﻫﻢ–؛ ﻭ ﺗﻮﺣﻴﺪ ﺍﻟﺤﺎﻛﻤﻴﺔ ﺩﺍﺧﻞ ﻓﻲ ﻃﺎﻋﺔ ﺍﻟﻠﻪ –ﻋﺰ ﻭ ﺟﻞ– ﻭ ﻋﺒﺎﺩﺗﻪ ﻭﺣﺪﻩ ﻻ ﺷﺮﻳﻚ ﻟﻪ؛ ﻛﻤﺎ ﺃﻧﻪ –ﺃﻳﻀﺎ– ﻳﺪﺧﻞ ﻓﻲ ﺭﺑﻮﺑﻴﺔ ﺍﻟﻠﻪ –ﻋﺰ ﻭ ﺟﻞ–: ﴿ﺃﻻ ﻟﻪ ﺍﻟﺨﻠﻖ ﻭ ﺍﻷﻣﺮ﴾ ﴿ﺇﻥ ﺍﻟﺤﻜﻢ ﺇﻻ ﻟﻠﻪ﴾ ﺑﻤﻌﻨﻰ ﺃﻥ ﺍﻟﻘﻀﺎﺀ ﻟﻠﻪ –ﺳﺒﺤﺎﻧﻪ ﻭﺗﻌﺎﻟﻰ– ﻭﺣﺪﻩ ﻻ ﺷﺮﻳﻚ ﻟﻪ؛ ﻭﻳﺪﺧﻞ ﻓﻲ ﺫﻟﻚ ﺍﻟﻘﻀﺎﺀ ﺍﻟﻜﻮﻧﻲ، ﻭﻳﺪﺧﻞ ﻓﻲ ﺫﻟﻚ ﺍﻟﻘﻀﺎﺀ ﺍﻟﺸﺮﻋﻲ، ﻛﻤﺎ ﺣﺮﺭﻩ ﺟﻤﺎﻋﺔ ﻣﻦ ﺍﻟﻤﻔﺴﺮﻳﻦ، ﻛﺎﻟﻌﻼﻣﺔ ﺍﻟﺸﻨﻘﻴﻄﻲ ﻭ ﻏﻴﺮﻩ؛ ﻭ ﺩﺧﻮﻟﻪ ﻓﻲ ﺗﻮﺣﻴﺪ ﺍﻹﻻﻫﻴﺔ ﻭﺍﺿﺢ، ﺃﻥ ﺍﻟﻠﻪ –ﻋﺰ ﻭ ﺟﻞ– ﺗﻌﺒّﺪﻧﺎ ﺑﺎﻟﻘﺮﺁﻥ، ﺗﻌﺒّﺪﻧﺎ ﺑﺎﻟﺴﻨﺔ؛ ﻓﻼ ﻋﺒﺎﺩﺓ ﻓﻲ ﻏﻴﺮ ﻫﺬﻳﻦ ﺍﻟﻤﺼﺪﺭﻳﻦ؛ ﻓﺎﺗﺒﺎﻋﻬﻤﺎ ﻫﻮ ﺗﺤﻘﻴﻖ ﻟﺘﻮﺣﻴﺪ ﺍﻷﻟﻮﻫﻴﺔ.
ﻓﻤﻦ ﺛﻢ، ﻭﺿﻊُ ﺗﻮﺣﻴﺪ ﺍﻟﺤﺎﻛﻤﻴﺔ ﻗﺴﻴﻤﺎ ﻷﻗﺴﺎﻡ ﺍﻟﺘﻮﺣﻴﺪ ﺍﻟﻤﻌﺮﻭﻓﺔ ﺍﻟﺜﻼﺛﺔ، ﻫﻮ ﻣﻦ ﺍﻷﻣﻮﺭ ﺍﻟﺘﻲ ﺃﺩﺧﻠﻬﺎ ﺑﻌﺾ ﻣﻦ ﺍﻧﺤﺮﻑ ﻓﻲ ﻣﺴﺎﺋﻞ ﺍﻟﺘﻜﻔﻴﺮ ﻓﻲ ﻫﺬﺍ ﺍﻟﻌﺼﺮ –ﻛﺠﻤﺎﻋﺔ ﺍﻹﺧﻮﺍﻥ ﺍﻟﻤﺴﻠﻤﻴﻦ ﻭ ﻏﻴﺮﻫﻢ– ﻭ ﻫﻮ ﻟﻴﺲ ﻓﻲ ﺷﻴﺊ، ﺇﺫ ﺃﻗﺴﺎﻡ ﺍﻟﺘﻮﺣﻴﺪ ﺍﻟﺜﻼﺛﺔ ﻛﺎﻓﻴﺔ؛ ﻭﺃﻣﺎ ﺇﻓﺮﺍﺩ ﺍﻟﻠﻪ –ﻋﺰ ﻭ ﺟﻞ– ﺑﺎﻟﺤﻜﻢ ﻭ ﺇﻓﺮﺍﺩ ﻧﺒﻴﻪ –ﺻﻠﻰ ﺍﻟﻠﻪ ﻋﻠﻴﻪ ﻭﺳﻠﻢ– ﺑﺎﻟﺤﻜﻢ، ﻓﺬﻟﻚ ﻣﻌﺮﻭﻑ ﻣﻦ ﻛﺘﺎﺏ ﺍﻟﻠﻪ، ﻭﻣﻦ ﺳﻨﺔ ﺍﻟﻨﺒﻲ –ﺻﻠﻰ ﺍﻟﻠﻪ ﻋﻠﻴﻪ ﻭﺳﻠﻢ–؛ ﻭ ﻫﻮ ﺩﺍﺧﻞ ﻓﻲ ﻋﺒﺎﺩﺓ ﺍﻟﻠﻪ –ﺗﻌﺎﻟﻰ– ﻭﺣﺪﻩ ﻻ ﺷﺮﻳﻚ ﻟﻪ.
“প্রশ্নকারী প্রশ্ন করেছেন তাওহীদুল হাকিমিয়্যাহ প্রসঙ্গে। তাওহীদের প্রকারসমূহের ক্ষেত্রে এর কি কোনো অনুমোদনযোগ্য অংশ আছে?
আমরা বলব, নিশ্চয় আল্লাহ তাঁর রুবূবিয়্যাহ (প্রভুত্ব), আসমা ওয়াস সিফাত (নাম ও গুণাবলি) এবং উলূহিয়্যাহ’র (দাসত্ব) ক্ষেত্রে এক ও অদ্বিতীয়। এগুলোই তাওহীদের প্রকার, যার উপর সালাফগণ (রাদ্বিয়াল্লাহু ‘আনহুম ওয়া আরদ্বাহুম) চলেছেন। তাওহীদুল হাকিমিয়্যাহ মহান আল্লাহ’র শরীকবিহীন একক আনুগত্য ও ইবাদতের অন্তর্ভুক্ত। যেমনভাবে এটা আল্লাহ’র রুবূবিয়্যাহ তথা প্রভুত্বেরও অন্তর্ভুক্ত। মহান আল্লাহ বলেছেন, “জেনে রেখো, সৃষ্টি তাঁর, হুকুমও (চলবে) তাঁর।” (সূরাহ আ‘রাফ: ৫৪) “আল্লাহ ছাড়া কোনো বিধানদাতা নেই।” (সূরাহ ইউসুফ: ৪০)
অর্থাৎ, বিচার-ফায়সালা হবে একমাত্র আল্লাহ’র জন্যই, যিনি এক ও অদ্বিতীয়। জাগতিক ফায়সালা যেমন এর অন্তর্ভুক্ত, শার‘ঈ ফায়সালাও তেমন এর অন্তর্ভুক্ত। যেমনভাবে একদল মুফাসসির বিষয়টি আলোচনা করেছেন। যেমন: ‘আল্লামাহ শানক্বীত্বী প্রমুখ। তাওহীদুল উলূহিয়্যাহ’য় এর অন্তর্ভুক্ত হওয়াটা স্পষ্ট। আমরা আল্লাহ’র ইবাদত করি ক্বুরআন-সুন্নাহ’র মাধ্যমে। এই দুটি উৎস ছাড়া অন্য কোথাও ইবাদত নেই। এই দুয়ের অনুসরণ করাই হচ্ছে তাওহীদুল উলূহিয়্যাহ’র বাস্তবায়ন।
পক্ষান্তরে তাওহীদুল হাকিমিয়্যাহকে সুপরিচিত তিন প্রকার তাওহীদের আলাদা অংশ হিসেবে নিয়ে আসা ওই সব বিষয়াবলির অন্তর্ভুক্ত, যেগুলো বিপথগামী ভ্রষ্টরা বর্তমান যুগে তাকফীরের মাসআলাহসমূহের মধ্যে প্রবিষ্ট করেছে। যেমন: মুসলিম ব্রাদারহুড এবং অন্যান্য দল। অথচ এটি একটি অমূলক বিষয়। যেহেতু তিন প্রকার তাওহীদ যথেষ্ট।
সুতরাং বিধান দেওয়ার ক্ষেত্রে মহান আল্লাহকে এক বলে গণ্য করা এবং বিধান দেওয়ার ক্ষেত্রে তাঁর নাবী ﷺ কে এক বলে গণ্য করা আল্লাহ’র কিতাব এবং নাবী ﷺ এর সুন্নাহ থেকে সুপরিচিত। এটা আল্লাহ তা‘আলার ইবাদতের অন্তর্ভুক্ত, যিনি এক ও অদ্বিতীয়।” [দ্র.: http://badrweb.net/burjes_files/fatawa/0096.mp3.]
·
২য় বক্তব্য:
‘আল্লামাহ ‘আব্দুস সালাম বিন বারজিস বিন নাসির আলে ‘আব্দুল কারীম (রাহিমাহুল্লাহ) মুসলিম ব্রাদারহুডের নেতৃস্থানীয় দা‘ঈদের ব্যাপারে দীর্ঘ আলোচনার শেষে বলেছেন,
ولذا سمعت العلامة الشيخ محمد ناصر الدين الألباني حفظه الله يقول في إحدى أشرطته الحديثة: ليس صوابًا أن يقال إن الإخوان المسلمين من أهل السنة، هم يحاربون السنة، فكيف يقولون من أهل السنة.
“আর একারণে আমি আল-‘আল্লামাহ আশ-শাইখ মুহাম্মাদ নাসিরুদ্দীন আল-আলবানী (হাফিযাহুল্লাহ) কে তাঁর এক অডিয়ো ক্লিপে বলতে শুনেছি, তিনি বলেছেন, একথা বলা ঠিক নয় যে, মুসলিম ব্রাদারহুড আহলুস সুন্নাহ’র অন্তর্ভুক্ত। কেননা তারা সুন্নাহ’র সাথে যুদ্ধ করছে। তাহলে তারা কীভাবে বলে যে, তারা আহলুস সুন্নাহ’র অন্তর্ভুক্ত?!” [দ্র.: https://m.youtube.com/watch?v=cvcoqQ16Bfc(অডিয়ো ক্লিপ)]
·
▌৯ম অধ্যায়: গ্র্যান্ড মুফতী ইমাম ‘আব্দুল ‘আযীয বিন ‘আব্দুল্লাহ আলুশ শাইখ (হাফিযাহুল্লাহ)
·
শাইখ পরিচিতি:
ইমাম ‘আব্দুল ‘আযীয বিন ‘আব্দুল্লাহ আলুশ শাইখ (হাফিযাহুল্লাহ) বর্তমান যুগের একজন শ্রেষ্ঠ ফাক্বীহ। তিনি সৌদি আরবের গ্র্যান্ড মুফতী। তিনি সৌদি আরবের ‘ইলমী গবেষণা ও ফাতাওয়া প্রদানের স্থায়ী কমিটি (আল-লাজনাতুদ দাইমাহ লিল বুহূসিল ‘ইলমিয়্যাহ ওয়াল ইফতা) এবং সৌদি আরবের সর্বোচ্চ ‘উলামা পরিষদের (হাইআতু কিবারিল ‘উলামা) প্রধান। তিনি ১৩৬২ হিজরী মোতাবেক ১৯৪৩ খ্রিষ্টাব্দে মক্কা নগরীতে জন্মগ্রহণ করেছেন। তিনি শারী‘আহ কলেজ থেকে ‘উলূমুশ শার‘ইয়্যাহ এবং আরবি ভাষার উপর অনার্স করেছেন। তাঁর শিক্ষকদের মধ্যে অন্যতম হলেন—প্রথম গ্র্যান্ড মুফতী ইমাম মুহাম্মাদ বিন ইবরাহীম আলুশ শাইখ এবং সাবেক গ্র্যান্ড মুফতী ইমাম ‘আব্দুল ‘আযীয বিন বায (রাহিমাহুমাল্লাহ)। বিভিন্ন বিষয়ে তাঁর বেশকিছু গ্রন্থ এবং অসংখ্য ফাতওয়া রয়েছে। এই মহান ‘আলিমের অমূল্য খেদমতকে আল্লাহ কবুল করুন এবং তাঁকে উত্তমরূপে হেফাজত করুন। আমীন। সংগৃহীত: ইমাম ‘আব্দুল ‘আযীয আলুশ শাইখ (হাফিযাহুল্লাহ), ফাতাওয়া নূরুন ‘আলাদ দার্ব; খণ্ড: ২; পৃষ্ঠা: ৩-১২; সোর্স: alifta.net
·
১ম বক্তব্য:
সৌদি আরবের বর্তমান গ্র্যান্ড মুফতী আশ-শাইখুল ‘আল্লামাহ ইমাম ‘আব্দুল ‘আযীয বিন ‘আব্দুল্লাহ আলুশ শাইখ (হাফিযাহুল্লাহ) [জন্ম: ১৩৬২ হি./১৯৪৩ খ্রি.] মুসলিম ব্রাদারহুডকে বিদ‘আতী সংগঠন হিসেবে গণ্য করেছেন এবং এই সংগঠনের সংস্পর্শ থেকে বেঁচে থাকতে বলেছেন। গ্র্যান্ড মুফতীর অফিসিয়াল ওয়েবসাইটে “আল-মুফতী: ইখতিলাফুনা মা‘আল ইখওয়ান ফিল মানহাজ ওয়া লাইসাল উসূল” শিরোনামে একটি ছোট্ট আর্টিকেল রয়েছে, যেখানে ব্রাদারহুডের ব্যাপারে তাঁর অবস্থান ব্যক্ত করা হয়েছে। আর্টিকেলটি নিম্নরূপ—
أكد سماحة مفتي عام المملكة ورئيس هيئة كبار العلماء وإدارة البحوث العلمية والإفتاء فضيلة الشيخ عبد العزيز بن عبد الله آل الشيخ أن داعش والقاعدة والإخوان امتطوا الإسلام لآرائهم وأهوائهم وخداع الناس، ومن يدعو شبابنا إلى الانتظام معهم فقد أخطأ وضل سواء السبيل.
من جهة أخرى قالت هيئة كبار العلماء على لسان أمينها العام: إن البعض يعتقد أن خلافنا مع الإخوان في مسائل محددة ومعدودة، وهذا ليس بصحيح؛ فالخلاف معهم في المنهج قبل أن يكون في المسائل.
وأوضحت الهيئة أن زعزعة الأمن، والجناية على الأنفس، والممتلكات الخاصة والعامة تعتبر جريمة تستهدف الإفساد، وأن كل من شارك في عمل إرهابي، أو تستر، أو حرض، أو موّل، أو بغير ذلك من وسائل الدعم يستحق العقوبة الزاجرة الرادعة.
“সৌদি আরবের গ্র্যান্ড মুফতী এবং সর্বোচ্চ ‘উলামা পরিষদের প্রধান সম্মানিত শাইখ ‘আব্দুল ‘আযীয বিন ‘আব্দুল্লাহ আলুশ শাইখ নিশ্চিত করেছেন যে, আইএস, আল-কায়েদা ও ব্রাদারহুড তাদের মতাদর্শ এবং বিদ‘আতী কর্মকাণ্ডের জন্য ইসলামকে বাহন হিসেবে গ্রহণ করেছে এবং মানুষকে ধোঁকা দিয়েছে। যে ব্যক্তি আমাদের যুবকদেরকে তাদের দলে যোগদান করার দিকে আহ্বান করছে, সে ভুল করছে এবং সঠিক পথ থেকে বিচ্যুত হয়ে গেছে।
অপরদিকে সর্বোচ্চ ‘উলামা পরিষদ তার সেক্রেটারি জেনারেলের জবানে বলেছে, “কিছু লোক মনে করে, ব্রাদারহুডের সাথে আমাদের বিরোধ কিছু নির্দিষ্ট ও সীমাবদ্ধ মাসআলাহ’র ক্ষেত্রে। এটা সঠিক নয়। বরং মাসআলাহ’র ক্ষেত্রে বিরোধ হওয়ার আগে তাদের সাথে আমাদের বিরোধ মানহাজের ক্ষেত্রে।”
আর সর্বোচ্চ ‘উলামা পরিষদ স্পষ্ট করেছে যে, নিরাপত্তা বিঘ্নিত করা এবং জান ও নির্দিষ্ট-অনির্দিষ্ট মালের অনিষ্ট সাধন করা অপরাধ হিসেবে পরিগণিত, যে অপরাধ বিপর্যয়ের দিকে ধাবিত করে। আর যারাই সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডে জড়িত হয়, বা আত্মগোপন করে থাকে, অথবা অন্যায় কর্মে প্ররোচিত করে, বা এসবে অর্থ যোগান দেয়, অথবা অন্যান্য সমর্থন ও সহযোগিতার যোগান দেয়, তারাই ‘এসব কাজ থেকে বাধাদানকারী শাস্তি’ পাওয়ার হকদার হয়।” [দ্র.: https://tinyurl.com/yaons74y(শাইখের অফিসিয়াল ওয়েবসাইট– mufti.af.org.sa এর আর্টিকেল লিংক)]
·
২য় বক্তব্য:
ইমাম ‘আব্দুল ‘আযীয বিন ‘আব্দুল্লাহ আলুশ শাইখ (হাফিযাহুল্লাহ) তাঁর এক ফাতওয়ায় নুসরা ফ্রন্ট, আইএস, আল-কায়েদা এবং মুসলিম ব্রাদারহুডকে পথভ্রষ্ট ঘোষণা করেছেন। ফাতওয়াটি নিম্নরূপ—
প্রশ্ন: “বর্তমানে এমন লোকেরা আছে যারা মুসলিম তরুণদের এবং আমভাবে মুসলিমদের এক নতুন মানহাজের দিকে ডাকে, হিযবিয়্যাহ’র মানহাজ, যা তাদের মধ্যে দলে দলে বিভক্তি ঘটায়। তারা বলে, এটাই সঠিক মানহাজ, অর্থাৎ নুসরা ফ্রন্ট, আইএস, আল-কায়েদা ও মুসলিম ব্রাদারহুডের মতো দলগুলোতে যোগদান করা।”
উত্তর: “আমার ভাইয়েরা, বর্তমানকালের এই সকল দলই পথভ্রষ্ট। আপনি যদি ভালো করে যাচাই করে দেখেন তাহলে আপনি দেখবেন যে, ইসলামের সাথে তাদের ন্যূনতম সম্পর্কও নেই। তারা তাদের মতামত ও প্রবৃত্তি অনুযায়ী ইসলামের ব্যাখ্যা করে এবং এর মাধ্যমে লোকদের ধোঁকা দেয়। তারা সত্যিকারার্থেই পথভ্রষ্ট। তারা রক্ত ঝরানোকে বৈধ করে, তারা পবিত্রতা লঙ্ঘন করে, সম্পদ লুট করে এবং জমিনে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করে। আমার ভাইয়েরা, এসব কিছুই হলো বাতিল মানহাজ। এগুলোর পেছনে যারাই থাকুক না কেন। এগুলোর মাঝে কোনো কল্যাণ নেই, আর না আছে সেসব লোকদের মাঝে যারা এই মানহাজগুলোর অনুসরণ করে।” [দ্র.: https://goo.gl/NdpnBX; গৃহীত: https://tinyurl.com/y7wjrnd8 (“সালাফী: ‘আক্বীদাহ্ ও মানহাজে” পেজের পোস্ট)]
·
অনুবাদ ও সংকলনে: মুহাম্মাদ ‘আব্দুল্লাহ মৃধা

No comments:

Post a Comment

Download AsPDF

Print Friendly and PDFPrint Friendly and PDFPrint Friendly and PDF
Related Posts Plugin for WordPress, Blogger...