শুরু করছি মহান আল্লাহর নামে,যিনি পরম করুনাময় অসীম দয়ালু।
عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ -رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ- قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم : « إِنَّ لِلَّهِ مَلَائِكَةً يَطُوفُونَ فِي الطُّرُقِ يَلْتَمِسُونَ أَهْلَ الذِّكْرِ، فَإِذَا وَجَدُوا قَوْمًا يَذْكُرُونَ اللَّهَ تَنَادَوْا: هَلُمُّوا إِلَى حَاجَتِكُمْ » قَالَ: « فَيَحُفُّونَهُمْ بِأَجْنِحَتِهِمْ إِلَى السَّمَاءِ الدُّنْيَا قَالَ: فَيَسْأَلُهُمْ رَبُّهُمْ عز وجل -وَهُوَ أَعْلَمُ مِنْهُمْ- مَا يَقُولُ عِبَادِي؟ قَالُوا: يَقُولُونَ: يُسَبِّحُونَكَ وَيُكَبِّرُونَكَ وَيَحْمَدُونَكَ وَيُمَجِّدُونَكَ قَالَ: فَيَقُولُ: هَلْ رَأَوْنِي؟ قَالَ: فَيَقُولُونَ: لَا وَاللَّهِ مَا رَأَوْكَ قَالَ: فَيَقُولُ: وَكَيْفَ لَوْ رَأَوْنِي؟ قَالَ: يَقُولُونَ: لَوْ رَأَوْكَ كَانُوا أَشَدَّ لَكَ عِبَادَةً، وَأَشَدَّ لَكَ تَمْجِيدًا، وَتَحْمِيدًا وَأَكْثَرَ لَكَ تَسْبِيحًا، قَالَ: يَقُولُ: فَمَا يَسْأَلُونِي؟ قَالَ يَسْأَلُونَكَ الْجَنَّةَ، قَالَ: يَقُولُ: وَهَلْ رَأَوْهَا؟ قَالَ: يَقُولُونَ: لَا وَاللَّهِ يَا رَبِّ مَا رَأَوْهَا، قَالَ: يَقُولُ: فَكَيْفَ لَوْ أَنَّهُمْ رَأَوْهَا؟ قَالَ: يَقُولُونَ: لَوْ أَنَّهُمْ رَأَوْهَا كَانُوا أَشَدَّ عَلَيْهَا حِرْصًا، وَأَشَدَّ لَهَا طَلَبًا، وَأَعْظَمَ فِيهَا رَغْبَةً، قَالَ: فَمِمَّ يَتَعَوَّذُونَ؟ قَالَ: يَقُولُونَ: مِنْ النَّارِ، قَالَ: يَقُولُ: وَهَلْ رَأَوْهَا؟ قَالَ: يَقُولُونَ: لَا وَاللَّهِ يَا رَبِّ مَا رَأَوْهَا، قَالَ: يَقُولُ: فَكَيْفَ لَوْ رَأَوْهَا، قَالَ: يَقُولُونَ: لَوْ رَأَوْهَا، كَانُوا أَشَدَّ مِنْهَا فِرَارًا وَأَشَدَّ لَهَا مَخَافَةً، قَالَ: فَيَقُولُ: فَأُشْهِدُكُمْ أَنِّي قَدْ غَفَرْتُ لَهُمْ، قَالَ: يَقُولُ مَلَكٌ مِنْ الْمَلَائِكَةِ: فِيهِمْ فُلَانٌ لَيْسَ مِنْهُمْ إِنَّمَا جَاءَ لِحَاجَةٍ، قَالَ: هُمْ الْجُلَسَاءُ لَا يَشْقَى بِهِمْ جَلِيسُهُمْ ». (خ) صحيح
বাংলা অনুবাদ
আবু হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে
বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, “আল্লাহর কতক
ফেরেশতা রয়েছে তারা যিকিরকারীদের তালাশে রাস্তায় রাস্তায় ঘুরে। যখন কোন
কওমকে আল্লাহর যিকিরে মশগুল দেখে তারা একে অপরকে আহ্বান করে, তোমাদের
লক্ষ্যের দিকে আস”। তিনি বলেন, “অতঃপর তাদেরকে তারা নিজেদের ডানা দ্বারা
দুনিয়ার আসমান পর্যন্ত ঢেকে নেয়। তিনি বলেন, অতঃপর তাদের রব তাদেরকে
জিজ্ঞাসা করেন, অথচ তিনি তাদের চেয়ে অধিক জানেন- আমার বান্দাগণ কি বলে?
ফেরেশতারা বলে, তারা আপনার পবিত্রতা বর্ণনা করছে, আপনার বড়ত্ব ঘোষণা করছে,
আপনার প্রশংসা করছে ও আপনার মর্যাদা ঘোষণা করছে। তিনি বলেন, অতঃপর আল্লাহ
বলেন, তারা কি আমাকে দেখেছে? তিনি বলেন, ফেরেশতারা বলে, না, আল্লাহর কসম,
তারা আপনাকে দেখেনি। তিনি বলেন, অতঃপর আল্লাহ বলেন, যদি তারা আমাকে দেখত
কেমন হত? তিনি বলেন, ফেরেশতারা বলে, যদি তারা আপনাকে দেখত তাহলে আরও কঠিন
ইবাদত করত, অধিক মর্যাদা ও প্রশংসার ঘোষণা করত, অধিক তসবিহ পাঠ করত। তিনি
বলেন, আল্লাহ বলেন, তারা আমার নিকট কি চায়? তিনি বলেন, ফেরেশতারা বলে, তারা
আপনার নিকট জান্নাত চায়? তিনি বলেন, আল্লাহ বলেন, তারা কি জান্নাত দেখেছে?
তিনি বলেন, ফেরেশতারা বলে, না, হে রব, তারা জান্নাত দেখে নি। তিনি বলেন,
আল্লাহ বলেন, যদি তারা জান্নাত দেখত কেমন হত? তিনি বলেন, ফেরেশতারা বলে,
যদি তারা জান্নাত দেখত তাহলে তার জন্য তারা আরো অধিক আগ্রহী হত, অধিক
তলবকারী হত ও তার অধিক আশা পোষণ করত। তিনি বলেন, তারা কার থেকে পানাহ চায়?
তিনি বলেন, ফেরেশতারা বলে, জাহান্নাম থেকে। তিনি বলেন, আল্লাহ বলেন, তারা
কি জাহান্নাম দেখেছে? তিনি বলেন, ফেরেশতারা বলেনা, আল্লাহর কসম, হে রব তারা
জাহান্নাম দেখেনি। তিনি বলেন, আল্লাহ বলেন, যদি তারা জাহান্নাম দেখত কেমন
হত? তিনি বলেন, ফেরেশতারা বলে, যদি তারা জাহান্নাম দেখত তাহলে তার থেকে
অধিক পলায়ন করত, তাকে অধিক ভয় করত। তিনি বলেন, আল্লাহ বলেন, তোমাদের সাক্ষী
রাখছি আমি তাদেরকে ক্ষমা করে দিলাম। তিনি বলেন, তাদের এক ফেরেশতা বলে,
তাদের মধ্যে অমুক রয়েছে যে তাদের দলের নয়, সে অন্য কাজে এসেছে। তিনি বলেন,
তারা এমন জামাত যাদের কারণে তাদের সাথীরা মাহরুম হয় না”।
[বুখারি] হাদিসটি সহিহ।
হাদিসে কুদসি নং – ২৯ : বান্দার সাথে আল্লাহ থাকেন
عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ -رَضِيَ
اللَّهُ عَنْهُ- عَنْ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم قَالَ: «إِنَّ اللَّهَ
-عَزَّ وَجَلَّ- يَقُولُ: أَنَا مَعَ عَبْدِي إِذَا هُوَ ذَكَرَنِي
وَتَحَرَّكَتْ شَفَتَاهُ”. (حم, جه) صحيح
বাংলা অনুবাদ
আবু হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে
বর্ণিত, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, “আল্লাহ তাআলা বলেন,
আমি আমার বান্দার সাথেই আছি যখন সে আমাকে স্মরণ করে ও তার দুই ঠোট নড়ে”।
[আহমদ, ইব্ন মাজাহ] হাদিসটি সহিহ।
হাদিসে কুদসি নং – ৩০ : আল্লাহর তৌফিক ব্যতীত পাপ থেকে বিরত থাকা ও ইবাদত করার ক্ষমতা নেই
عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ وَأَبِي
سَعِيدٍ -رضى الله عنهما- أَنَّهُمَا شَهِدَا عَلَى رَسُولِ اللَّهِ صلى
الله عليه وسلم قَالَ: «إِذَا قَالَ الْعَبْدُ لَا إِلَهَ إِلَّا اللَّهُ
وَاللَّهُ أَكْبَرُ، قَالَ: يَقُولُ اللَّهُ عَزَّ وَجَلَّ: صَدَقَ عَبْدِي
لَا إِلَهَ إِلَّا أَنَا وَأَنَا أَكْبَرُ، وَإِذَا قَالَ الْعَبْدُ: لَا
إِلَهَ إِلَّا اللَّهُ وَحْدَهُ، قَالَ: صَدَقَ عَبْدِي لَا إِلَهَ إِلَّا
أَنَا وَحْدِي، وَإِذَا قَالَ: لَا إِلَهَ إِلَّا اللَّهُ لَا شَرِيكَ لَهُ
قَالَ: صَدَقَ عَبْدِي لَا إِلَهَ إِلَّا أَنَا وَلَا شَرِيكَ لِي،
وَإِذَا قَالَ: لَا إِلَهَ إِلَّا اللَّهُ لَهُ الْمُلْكُ وَلَهُ
الْحَمْدُ، قَالَ: صَدَقَ عَبْدِي لَا إِلَهَ إِلَّا أَنَا لِيَ الْمُلْكُ
وَلِيَ الْحَمْدُ، وَإِذَا قَالَ: لَا إِلَهَ إِلَّا اللَّهُ وَلَا حَوْلَ
وَلَا قُوَّةَ إِلَّا بِاللَّهِ، قَال: صَدَقَ عَبْدِي لَا إِلَهَ إِلَّا
أَنَا وَلَا حَوْلَ وَلَا قُوَّةَ إِلَّا بِي» . (جه, ت, عبد, حب) صححه
الشيخ الألباني
বাংলা অনুবাদ
আবু হুরায়রা ও আবু সায়িদ রাদিয়াল্লাহু
আনহুমা থেকে বর্ণিত, তারা উভয়ে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি
ওয়াসাল্লামকে দেখেছেন, তিনি বলেছেন, “বান্দা যখন বলে, لَا إِلَهَ إِلَّا اللَّهُ وَاللَّهُ أَكْبَرُ তিনি বলেন, আল্লাহ বলেন, আমার বান্দা ঠিক বলেছে, আমি ছাড়া কোন হক ইলাহ নেই, আমিই মহান। বান্দা যখন বলে: لَا إِلَهَ إِلَّا اللَّهُ وَحْدَهُ তিনি বলেন, আমার বান্দা ঠিক বলেছে, একলা আমি ছাড়া কোন হক ইলাহ নেই। বান্দা যখন বলে, لَا إِلَهَ إِلَّا اللَّهُ لَا شَرِيكَ لَهُ তিনি বলেন, আমার বান্দা ঠিক বলেছে, আমি ছাড়া কোন হক ইলাহ নেই, আমার কোন শরীক নেই। বান্দা যখন বলে, لَا إِلَهَ إِلَّا اللَّهُ لَهُ الْمُلْكُ وَلَهُ الْحَمْدُ তিনি বলেন, আমার বান্দা ঠিক বলেছে, আমি ছাড়া কোন হক ইলাহ নেই, রাজত্ব আমার, আমার জন্যই প্রশংসা। বান্দা যখন বলে, لَا إِلَهَ إِلَّا اللَّهُ وَلَا حَوْلَ وَلَا قُوَّةَ إِلَّا بِاللَّهِ، তিনি বলেন, আমার বান্দা ঠিক বলেছে, আমি ছাড়া কোন হক ইলাহ নেই, আমার তৌফিক ব্যতীত পাপ থেকে বিরত থাকা ও ইবাদত করার ক্ষমতা নেই”।
[ইব্ন মাজাহ, তিরমিযি, ইব্ন হুমাইদ ও ইব্ন হিব্বান] শায়খ আলবানি হাদিসটি সহিহ বলেছেন।
হাদিসে কুদসি নং – ৩১ : তওবা ও ইস্তেগফারের প্রতি উৎসাহ প্রদান করা
عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ -رَضِيَ
اللَّهُ عَنْهُ- قَالَ: سَمِعْتُ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم قَالَ: «
إِنَّ عَبْدًا أَصَابَ ذَنْبًا -وَرُبَّمَا قَالَ: أَذْنَبَ ذَنْبًا-
فَقَال: رَبِّ أَذْنَبْتُ -وَرُبَّمَا قَالَ: أَصَبْتُ فَاغْفِرْ لِي-
فَقَالَ رَبُّهُ: أَعَلِمَ عَبْدِي أَنَّ لَهُ رَبًّا يَغْفِرُ الذَّنْبَ
وَيَأْخُذُ بِهِ؟ غَفَرْتُ لِعَبْدِي، ثُمَّ مَكَثَ مَا شَاءَ اللَّهُ،
ثُمَّ أَصَابَ ذَنْبًا -أَوْ أَذْنَبَ ذَنْبًا- فَقَالَ: رَبِّ أَذْنَبْتُ
-أَوْ أَصَبْتُ- آخَرَ فَاغْفِرْهُ. فَقَالَ: أَعَلِمَ عَبْدِي أَنَّ لَهُ
رَبًّا يَغْفِرُ الذَّنْبَ وَيَأْخُذُ بِهِ؟ غَفَرْتُ لِعَبْدِي. ثُمَّ
مَكَثَ مَا شَاءَ اللَّهُ ثُمَّ أَذْنَبَ ذَنْبًا -وَرُبَّمَا قَالَ:
أَصَابَ ذَنْبًا- قَالَ: قَالَ: رَبِّ أَصَبْتُ -أَوْ قَالَ: أَذْنَبْتُ-
آخَرَ فَاغْفِرْهُ لِي. فَقَالَ: أَعَلِمَ عَبْدِي أَنَّ لَهُ رَبًّا
يَغْفِرُ الذَّنْبَ وَيَأْخُذُ بِهِ؟ غَفَرْتُ لِعَبْدِي ثَلَاثًا
فَلْيَعْمَلْ مَا شَاءَ » . ( خ, م ) صحيح
বাংলা অনুবাদ
আবু হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু আনহু বলেন, আমি
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে শুনেছি, তিনি বলেছেন, “কোন
বান্দা পাপে লিপ্ত হল, অথবা বলেছেন, কোন পাপ করল। অতঃপর বলে, হে আমার রব
আমি পাপ করেছি, অথবা বলে, পাপে লিপ্ত হয়েছি আমাকে ক্ষমা করুন। তার রব বলেন,
আমার বান্দা কি জানে তার রব রয়েছে, যিনি পাপ ক্ষমা করেন ও তার জন্য পাকড়াও
করেন? আমার বান্দাকে ক্ষমা করে দিলাম। অতঃপর আল্লাহ যে পরিমাণ চান সে বিরত
থাকে। অতঃপর পাপে লিপ্ত হয় অথবা পাপ সংগঠিত করে, অতঃপর বলে, হে আমার রব,
আমি দ্বিতীয় পাপ করেছি অথবা দ্বিতীয় পাপে লিপ্ত হয়েছি, আপনি তা ক্ষমা করুন।
আল্লাহ বলেন, আমার বান্দা কি জানে তার রব রয়েছে, যিনি পাপ ক্ষমা করেন ও
তার জন্য পাকড়াও করেন? আমার বান্দাকে আমি ক্ষমা করে দিলাম। অতঃপর আল্লাহর
যে পরিমাণ চান সে বিরত থাকে। অতঃপর কোন পাপ করে অথবা বলেছেন, পাপে লিপ্ত
হয়। তিনি বলেন, সে বলে, হে আমার রব আমি পাপ করেছি অথবা পাপে লিপ্ত হয়েছি
আবারও, আপনি আমার জন্য তা ক্ষমা করুন। আল্লাহ বলেন, আমার বান্দা কি জানে
তার রব রয়েছে, যিনি পাপ ক্ষমা করেন ও তার জন্য পাকড়াও করেন? আমি আমার
বান্দাকে তিনবারই ক্ষমা করে দিলাম, সে যা চায় আমল করুক”।
[বুখারি ও মুসলিম] হাদিসটি সহিহ।
হাদিসে কুদসি নং – ৩২ : ইস্তেগফারের দ্বারা আল্লাহর ক্ষমা লাভ করা যায়
عَنْ أَبِي سَعِيدٍ الْخُدْرِيِّ
-رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ- قَالَ: سَمِعْتُ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه
وسلم يَقُولُ: « إِنَّ إِبْلِيسَ قَالَ لِرَبِّهِ: بِعِزَّتِكَ وَجَلَالِكَ
لَا أَبْرَحُ أُغْوِي بَنِي آدَمَ مَا دَامَتْ الْأَرْوَاحُ فِيهِمْ،
فَقَالَ اللَّهُ: فَبِعِزَّتِي وَجَلَالِي لَا أَبْرَحُ أَغْفِرُ لَهُمْ
مَا اسْتَغْفَرُونِي » ( حم ) صحيح
বাংলা অনুবাদ
আবু সায়িদ খুদরি রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে
বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে বলতে
শুনেছি, “ইবলিস তার রবকে বলেছে, আপনার ইজ্জত ও বড়ত্বের কসম, আমি বনি আদমকে
ভ্রষ্ট করতেই থাকব যতক্ষণ তাদের মধ্যে রূহ থাকে। আল্লাহ বলেন, আমার ইজ্জত ও
বড়ত্বের কসম, আমি তাদের ক্ষমা করতে থাকব যতক্ষণ তারা আমার নিকট ইস্তেগফার
করে”।
[আহমদ] হাদিসটি সহিহ।
হাদিসে কুদসি নং – ৩৩ : আল্লাহ ব্যতীত কেউ পাপ ক্ষমাকারী নেই
عَنْ عَلِيِّ بْنِ رَبِيعَةَ
قَالَ: شَهِدْتُ عَلِيًّا -رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ- وَأُتِيَ بِدَابَّةٍ
لِيَرْكَبَهَا فَلَمَّا وَضَعَ رِجْلَهُ فِي الرِّكَابِ قَالَ: بِسْمِ
اللَّهِ، فَلَمَّا اسْتَوَى عَلَى ظَهْرِهَا، قَالَ: الْحَمْدُ لِلَّهِ،
ثُمَّ قَالَ: ﴿سُبۡحَٰنَ ٱلَّذِي سَخَّرَ لَنَا هَٰذَا وَمَا كُنَّا لَهُۥ
مُقۡرِنِينَ ١٣﴾ ثُمَّ قَالَ: الْحَمْدُ لِلَّهِ ثَلَاثَ مَرَّاتٍ، ثُمَّ
قَالَ: اللَّهُ أَكْبَرُ ثَلَاثَ مَرَّاتٍ، ثُمَّ قَالَ: سُبْحَانَكَ
إِنِّي ظَلَمْتُ نَفْسِي فَاغْفِرْ لِي فَإِنَّهُ لَا يَغْفِرُ الذُّنُوبَ
إِلَّا أَنْتَ -ثُمَّ ضَحِكَ- فَقِيلَ: يَا أَمِيرَ الْمُؤْمِنِينَ مِنْ
أَيِّ شَيْءٍ ضَحِكْتَ؟ قَالَ: رَأَيْتُ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم
فَعَلَ كَمَا فَعَلْتُ ثُمَّ ضَحِكَ فَقُلْتُ: يَا رَسُولَ اللَّهِ مِنْ
أَيِّ شَيْءٍ ضَحِكْتَ؟ قَالَ: «إِنَّ رَبَّكَ يَعْجَبُ مِنْ عَبْدِهِ
إِذَا قَالَ اغْفِرْ لِي ذُنُوبِي يَعْلَمُ أَنَّهُ لَا يَغْفِرُ
الذُّنُوبَ غَيْرِي». ( د, ت, حم ) صحيح
বাংলা অনুবাদ
আলি ইব্ন রাবিয়াহ থেকে বর্ণিত, তিনি
বলেন, আমি আলিকে দেখেছি, “একটি চতুষ্পদ জন্তু আনা হল যেন সে তাতে আরোহণ
করে, তিনি যখন তার ওপর নিজ পা রাখলেন বললেন, بِسْمِ اللَّهِ যখন তার পিঠে স্থির বসলেন বললেন, الْحَمْدُ لِلَّهِ، অতঃপর বললেন,
سُبۡحَٰنَ ٱلَّذِي سَخَّرَ لَنَا هَٰذَا وَمَا كُنَّا لَهُۥ مُقۡرِنِينَ
“পবিত্র-মহান সেই সত্তা যিনি এগুলোকে আমাদের বশীভূত করে দিয়েছেন। আর আমরা এগুলোকে নিয়ন্ত্রণ করতে সক্ষম ছিলাম না”। অতঃপর, الْحَمْدُ لِلَّهِ তিনবার, اللَّهُ أَكْبَرُ তিনবার বললেন, অতঃপর বললেন,
سُبْحَانَكَ إِنِّي ظَلَمْتُ نَفْسِي فَاغْفِرْ لِي فَإِنَّهُ لَا يَغْفِرُ الذُّنُوبَ إِلَّا أَنْتَ
“আপনি
কতই-না পবিত্র, নিশ্চয় আমি আমার নিজের নফসের উপর যুলুম করেছি, সুতরাং আমাকে
ক্ষমা কুরন, নিশ্চয় আপনি ব্যতীত কেউ গুনাহ ক্ষমা করতে পারে না”
অতঃপর হাসলেন, বলা হল, হে আমিরুল মুমেনিন
কি জন্য হাসলেন? তিনি বললেন, আমি নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে
দেখেছি, তিনি করেছেন যেরূপ আমি করেছি, অতঃপর তিনি হেসেছেন। আমি বললাম, হে
আল্লাহর রাসূল কি জন্য হাসলেন? তিনি বললেন, “তোমার রব তার বান্দাকে দেখে
আশ্চর্য হন, যখন সে বলে আমার পাপ ক্ষমা করুন, সে জানে আমি ব্যতীত কেউ পাপ
ক্ষমা করবে না”।
[আবু দাউদ, তিরমিযি ও আহমদ] হাদিসটি সহিহ।
হাদিসে কুদসি নং – ৩৪ : আল্লাহর সাক্ষাত যে পছন্দ করে আল্লাহ তার সাক্ষাত পছন্দ করেন
عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ -رَضِيَ
اللَّهُ عَنْهُ- أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم قَالَ: قَالَ
اللَّهُ: « إِذَا أَحَبَّ عَبْدِي لِقَائِي أَحْبَبْتُ لِقَاءَهُ، وَإِذَا
كَرِهَ لِقَائِي كَرِهْتُ لِقَاءَهُ » . ( خ ) صحيح البخاري
বাংলা অনুবাদ
আবু হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে
বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, আল্লাহ তাআলা
বলেন, “আমার বান্দা যখন আমার সাক্ষাত পছন্দ করে আমি তার সাক্ষাত পছন্দ করি।
যখন সে আমার সাক্ষাত অপছন্দ করে আমি তার সাক্ষাত অপছন্দ করি”।
[বুখারি] হাদিসটি সহিহ।
হাদিসে কুদসি নং – ৩৫ : বান্দার জন্য আল্লাহর মহব্বতের নিদর্শন
عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ -رَضِيَ
اللَّهُ عَنْهُ- عَن النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم قَالَ: « إِذَا أَحَبَّ
اللَّهُ عَبْدًا نَادَى جِبْرِيلَ: إِنَّ اللَّهَ يُحِبُّ فُلَانًا
فَأَحِبَّهُ فَيُحِبُّهُ جِبْرِيلُ، فَيُنَادِي جِبْرِيلُ فِي أَهْلِ
السَّمَاءِ: إِنَّ اللَّهَ يُحِبُّ فُلَانًا فَأَحِبُّوهُ فَيُحِبُّهُ
أَهْلُ السَّمَاءِ ثُمَّ يُوضَعُ لَهُ الْقَبُولُ فِيِ الْأَرْضِ » . ( خ )
صحيح
বাংলা অনুবাদ
আবু হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে
বর্ণিত, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, “আল্লাহ যখন কোন
বান্দাকে মহব্বত করেন জিবরিলকে ডেকে বলেন, আল্লাহ অমুককে মহব্বত করেন অতএব
তুমি তাকে মহব্বত কর ফলে জিবরিল তাকে মহব্বত করেন। অতঃপর জিবরিল
আসমানবাসীদের মধ্যে ঘোষণা করেন, আল্লাহ অমুককে মহব্বত করেন অতএব তোমরা তাকে
মহব্বত কর ফলে আসমানবাসীরা তাকে মহব্বত করে, অতঃপর জমিনে তার জনপ্রিয়তা
রাখা হয়”।
[বুখারি] হাদিসটি সহিহ।
হাদিসে কুদসি নং – ৩৬ : বান্দার প্রতি আল্লাহর মহব্বতের বহি :প্রকাশ
عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ -رَضِيَ
اللَّهُ عَنْهُ- قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم : «
إِنَّ اللَّهَ إِذَا أَحَبَّ عَبْدًا دَعَا جِبْرِيلَ فَقَالَ: إِنِّي
أُحِبُّ فُلَانًا فَأَحِبَّهُ ». قَالَ: «فَيُحِبُّهُ جِبْرِيلُ، ثُمَّ
يُنَادِي فِي السَّمَاءِ فَيَقُولُ: إِنَّ اللَّهَ يُحِبُّ فُلَانًا
فَأَحِبُّوهُ فَيُحِبُّهُ أَهْلُ السَّمَاءِ » قَالَ: « ثُمَّ يُوضَعُ لَهُ
الْقَبُولُ فِي الْأَرْضِ، وَإِذَا أَبْغَضَ عَبْدًا دَعَا جِبْرِيلَ
فَيَقُولُ: إِنِّي أُبْغِضُ فُلَانًا فَأَبْغِضْهُ » قَالَ: «فَيُبْغِضُهُ
جِبْرِيلُ ثُمَّ يُنَادِي فِي أَهْلِ السَّمَاءِ إِنَّ اللَّهَ يُبْغِضُ
فُلَانًا فَأَبْغِضُوهُ » قَالَ: فَيُبْغِضُونَهُ ثُمَّ تُوضَعُ لَهُ
الْبَغْضَاءُ فِي الْأَرْضِ » . ( م ) صحيح
বাংলা অনুবাদ
আবু হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে
বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, “আল্লাহ যখন
কোন বান্দাকে মহব্বত করেন জিবরিলকে ডাকেন, অতঃপর বলেন, আমি অমুককে মহব্বত
করি অতএব তুমি তাকে মহব্বত কর। তিনি বলেন: “ফলে জিবরিল তাকে মহব্বত করে,
অতঃপর সে আসমানে ঘোষণা করে, আল্লাহ অমুককে মহব্বত করেন অতএব তোমরা তাকে
মহব্বত কর, ফলে আসমানবাসী তাকে মহব্বত করে”। তিনি বলেন, “অতঃপর জমিনে তার
জন্য গ্রহণযোগ্যতা রাখা হয়। পক্ষান্তরে যখন তিনি কোন বান্দাকে অপছন্দ করেন
জিবরিলকে ডাকেন অতঃপর বলেন, আমি অমুককে অপছন্দ করি অতএব তুমি তাকে অপছন্দ
কর”। তিনি বলেন, “ফলে জিবরিল তাকে অপছন্দ করে, অতঃপর সে আসমানবাসীদের মধ্যে
ঘোষণা দেয়, আল্লাহ অমুককে অপছন্দ করে অতএব তোমরা তাকে অপছন্দ কর”। তিনি
বলেন, ফলে তারা তাকে অপছন্দ করে, অতঃপর জমিনে তার জন্য নিন্দা রাখা হয়”।
[মুসলিম] হাদিসটি সহিহ।
হাদিসে কুদসি নং – ৩৭ : মুসলিমদেরকে মহব্বত ও ভ্রাতৃত্বের প্রতি উদ্বুদ্ধ করা
عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ -رَضِيَ
اللَّهُ عَنْهُ- قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم: «إِنَّ
اللَّهَ -عَزَّ وَجَلَّ- يَقُولُ يَوْمَ الْقِيَامَةِ: يَا ابْنَ آدَمَ
مَرِضْتُ فَلَمْ تَعُدْنِي قَالَ: يَا رَبِّ كَيْفَ أَعُودُكَ وَأَنْتَ
رَبُّ الْعَالَمِينَ؟ قَالَ: أَمَا عَلِمْتَ أَنَّ عَبْدِي فُلَانًا مَرِضَ
فَلَمْ تَعُدْهُ. أَمَا عَلِمْتَ أَنَّكَ لَوْ عُدْتَهُ لَوَجَدْتَنِي
عِنْدَهُ؟ يَا ابْنَ آدَمَ اسْتَطْعَمْتُكَ فَلَمْ تُطْعِمْنِي قَالَ: يَا
رَبِّ وَكَيْفَ أُطْعِمُكَ وَأَنْتَ رَبُّ الْعَالَمِينَ؟ قَالَ: أَمَا
عَلِمْتَ أَنَّهُ اسْتَطْعَمَكَ عَبْدِي فُلَانٌ فَلَمْ تُطْعِمْهُ، أَمَا
عَلِمْتَ أَنَّكَ لَوْ أَطْعَمْتَهُ لَوَجَدْتَ ذَلِكَ عِنْدِي؟ يَا ابْنَ
آدَمَ اسْتَسْقَيْتُكَ فَلَمْ تَسْقِنِي قَالَ: يَا رَبِّ كَيْفَ أَسْقِيكَ
وَأَنْتَ رَبُّ الْعَالَمِينَ؟ قَالَ: اسْتَسْقَاكَ عَبْدِي فُلَانٌ
فَلَمْ تَسْقِهِ أَمَا إِنَّكَ لَوْ سَقَيْتَهُ وَجَدْتَ ذَلِكَ عِنْدِي ».
( م ) صحيح
বাংলা অনুবাদ
আবু হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে
বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, “কিয়ামতের দিন
আল্লাহ তা‘আলা বলবেন, হে বনি আদম আমি অসুস্থ হয়েছিলাম, তুমি আমাকে দেখনি,
সে বলবে, হে আল্লাহ আপনাকে কিভাবে দেখব, অথচ আপনি দু’জাহানের রব? তিনি
বলবেন, তুমি জান না আমার অমুক বান্দা অসুস্থ হয়েছিল তুমি তাকে দেখনি, তুমি
জান না যদি তাকে দেখতে আমাকে তার নিকট পেতে? হে বনি আদম আমি তোমার নিকট
খাদ্য চেয়েছিলাম তুমি আমাকে খাদ্য দাওনি, সে বলবে, হে আমার রব, আমি কিভাবে
আপনাকে খাদ্য দিব অথচ আপনি দু’জাহানের রব? তিনি বলবেন, তুমি জান না আমার
অমুক বান্দা তোমার নিকট খাদ্য চেয়েছিল তুমি তাকে খাদ্য দাওনি, তুমি জান না
যদি তাকে খাদ্য দিতে তা আমার নিকট অবশ্যই পেতে। হে বনি আদম, আমি তোমার কাছে
পানি চেয়েছিলাম তুমি আমাকে পানি দাওনি, সে বলবে, হে আমার রব কিভাবে আমি
আপনাকে পানি দেব অথচ আপনি দু’জাহানের রব? তিনি বলবেন, আমার অমুক বান্দা
তোমার নিকট পানি চেয়েছিল তুমি তাকে পানি দাওনি, মনে রেখ যদি তাকে পানি দিতে
তা আমার নিকট অবশ্যই পেতে”।
[মুসলিম] হাদিসটি সহিহ।
হাদিসে কুদসি নং – ৩৮ : প্রতিবেশীদের সাক্ষী ও তাদের প্রশংসার ফজিলত
عَنْ أَنَسٍ -رَضِيَ اللَّهُ
عَنْهُ- أَنَّ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم قَالَ: « مَا مِنْ مُسْلِمٍ
يَمُوتُ فَيَشْهَدُ لَهُ أَرْبَعَةٌ أَهْلُ أَبْيَاتٍ مِنْ جِيرَانِهِ
الْأَدْنَيْنَ إِلَّا قَالَ: قَدْ قَبِلْتُ فِيهِ عِلْمَكُمْ فِيهِ
وَغَفَرْتُ لَهُ مَا لَا تَعْلَمُونَ » ( حم ) حسن لغيره
বাংলা অনুবাদ
আনাস রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত, নবী
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, “যখনই কোন মুসলিম মারা যায় অতঃপর
তার প্রতিবেশীর নিকটতম চার ঘর তার জন্য সাক্ষ্য দেয়, তার সম্পর্কেই আল্লাহ
বলেন, তার সম্পর্কে তোমাদের জানা আমি কবুল করলাম, আর যা তোমরা জান না আমি
ক্ষমা করে দিলাম”।
[আহমদ] হাদিসটি হাসান লি গায়রিহি।
হাদিসে কুদসি নং – ৩৯ : দুনিয়া-আখিরাতে মুমিনের দোষ গোপন করা
عَنْ صَفْوَانَ بْنِ مُحْرِزٍ
الْمَازِنِيِّ، قَالَ: بَيْنَمَا أَنَا أَمْشِي مَعَ ابْنِ عُمَرَ ( آخِذٌ
بِيَدِهِ إِذْ عَرَضَ رَجُلٌ فَقَالَ: كَيْفَ سَمِعْتَ رَسُولَ اللَّهِ صلى
الله عليه وسلم يَقُولُ فِي النَّجْوَى؟ فَقَالَ: سَمِعْتُ رَسُولَ صلى
الله عليه وسلم يَقُولُ: «إِنَّ اللَّهَ يُدْنِي الْمُؤْمِنَ فَيَضَعُ
عَلَيْهِ كَنَفَهُ وَيَسْتُرُهُ، فَيَقُولُ: أَتَعْرِفُ ذَنْبَ كَذَا
أَتَعْرِفُ ذَنْبَ كَذَا؟ فَيَقُولُ: نَعَمْ أَيْ رَبِّ حَتَّى إِذَا
قَرَّرَهُ بِذُنُوبِهِ وَرَأَى فِي نَفْسِهِ أَنَّهُ هَلَكَ قَالَ:
سَتَرْتُهَا عَلَيْكَ فِي الدُّنْيَا وَأَنَا أَغْفِرُهَا لَكَ الْيَوْمَ،
فَيُعْطَى كِتَابَ حَسَنَاتِهِ، وَأَمَّا الْكَافِرُ وَالْمُنَافِقُونَ
فَيَقُولُ الْأَشْهَادُ: هَؤُلَاءِ الَّذِينَ كَذَبُوا عَلَى رَبِّهِمْ
أَلَا لَعْنَةُ اللَّهِ عَلَى الظَّالِمِينَ ». ( خ, م ) صحيح
বাংলা অনুবাদ
সাফওয়ান ইব্ন মুহরিয আল-মাযেনি রহ. থেকে
বর্ণিত, তিনি বলেন, একদা আমি ইব্ন ওমরের সাথে তার হাত ধরে হাঁটছিলাম, হঠাৎ
এক ব্যক্তি সামনে এলো। অতঃপর সে বলল, ‘নাজওয়া’ (গোপন কথা) সম্পর্কে
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে কি বলতে শুনেছেন? তিনি বলেন,
আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে বলতে শুনেছি, “আল্লাহ
তা‘আলা মুমিনের নিকটবর্তী হবেন অতঃপর তার ওপর পর্দা ফেলে তাকে ঢেকে নিবেন
এবং বলবেন, মনে পড়ে অমুক পাপ, মনে পড়ে অমুক পাপ? সে বলবে, হ্যাঁ, হে আমার
রব, অবশেষে সে যখন তার সকল পাপ স্বীকার করবে এবং নিজেকে মনে করবে যে, সে
ধ্বংস হয়ে গেছে, আল্লাহ বলবেন, তোমার ওপর দুনিয়াতে এসব গোপন রেখেছি আজ আমি
তা তোমার জন্য ক্ষমা করে দিচ্ছি। অতঃপর তাকে তার নেক আমলের দফতর দেয়া হবে,
পক্ষান্তরে কাফের ও মুনাফিক সম্পর্কে সাক্ষীরা বলবে, এরা তাদের রবের ওপর
মিথ্যারোপ করেছিল, জেনে রেখ জালেমদের ওপর আল্লাহর লা‘নত”।
[বুখারি ও মুসলিম] হাদিসটি সহিহ।
হাদিসে কুদসি নং – ৪০ : মুমিনের ফজিলত
عَنْ
أَبِي هُرَيْرَةَ -رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ- قَالَ: سَمِعْتُ رَسُولَ
اللَّهِ صلى الله عليه وسلم يَقُولُ: «إِنَّ اللَّهَ عَزَّ وَجَلَّ
يَقُولُ: إِنَّ عَبْدِي الْمُؤْمِنَ عِنْدِي بِمَنْزِلَةِ كُلِّ خَيْرٍ
يَحْمَدُنِي وَأَنَا أَنْزِعُ نَفْسَهُ مِنْ بَيْنِ جَنْبَيْهِ» . ( حم )
حسن
বাংলা অনুবাদ
আবু হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে
বর্ণিত, তিনি বলেন: আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে বলতে
শুনেছি: “আল্লাহ তা‘আলা বলেন: আমার মুমিন বান্দা আমার নিকট এমন মর্যাদায়
অধিষ্ঠিত, যেখানে সে সকল কল্যাণের হকদার, সে আমার প্রশংসা করে এমতাবস্থায়
আমি তার দু’পাশ থেকে তার রূহ কব্জা করি”।
[আহমদ] হাদিসটি হাসান।
হাদিসে কুদসি নং – ৪১ : গরিবকে সুযোগ দেয়া ও ক্ষমা করার ফজিলত
عَنْ
حُذَيْفَةَ -رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ- قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى
الله عليه وسلم : «تَلَقَّتْ الْمَلَائِكَةُ رُوحَ رَجُلٍ مِمَّنْ كَانَ
قَبْلَكُمْ فَقَالُوا: أَعَمِلْتَ مِنْ الْخَيْرِ شَيْئًا؟ قَالَ: لَا،
قَالُوا: تَذَكَّرْ. قَالَ: كُنْتُ أُدَايِنُ النَّاسَ فَآمُرُ فِتْيَانِي
أَنْ يُنْظِرُوا الْمُعْسِرَ وَيَتَجَوَّزُوا عَنْ الْمُوسِرِ قَالَ: قَالَ
اللَّهُ عَزَّ وَجَلّ: تَجَوَّزُوا عَنْهُ». ( خ,م ) صحيح
বাংলা অনুবাদ
হুযায়ফা রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত,
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, “তোমাদের পূর্বেকার
জনৈক ব্যক্তির রূহের সাথে ফেরেশতারা সাক্ষাত করে বলে, তুমি কি কোন কল্যাণ
করেছ? সে বলে, না, তারা বলেন, স্মরণ কর। সে বলে, আমি মানুষদের ঋণ দিতাম,
অতঃপর আমার যুবকদের বলতাম তারা যেন গরিবকে সুযোগ দেয় ও ধনীর বিলম্বিতা
ক্ষমা করে”।
[বুখারি ও মুসলিম] হাদিসটি সহিহ।
হাদিসে কুদসি নং – ৪২ : আল্লাহ মহানই ক্ষমা করার অধিক হকদার
عَنْ أَبِي مَسْعُودٍ -رَضِيَ
اللَّهُ عَنْهُ- قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم :
«حُوسِبَ رَجُلٌ مِمَّنْ كَانَ قَبْلَكُمْ فَلَمْ يُوجَدْ لَهُ مِنْ
الْخَيْرِ شَيْءٌ إِلَّا أَنَّهُ كَانَ يُخَالِطُ النَّاسَ، وَكَانَ
مُوسِرًا فَكَانَ يَأْمُرُ غِلْمَانَهُ أَنْ يَتَجَاوَزُوا عَنْ
الْمُعْسِرِ» قَالَ: «قَالَ اللَّهُ عَزَّ وَجَلَّ: نَحْنُ أَحَقُّ
بِذَلِكَ مِنْهُ تَجَاوَزُوا عَنْهُ». ( م ) صحيح
বাংলা অনুবাদ
হাদিসে কুদসি নং – ৪২ : আল্লাহ মহানই ক্ষমা করার অধিক হকদার
আবু মাসউদ রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত,
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, “তোমাদের পূর্বের
জনৈক ব্যক্তিকে জেরা করা হয়েছে, কিন্তু তার কোন কল্যাণ পাওয়া যায়নি, সে ছিল
ধনী, মানুষের সাথে লেনদেন করত, আর তার লোকদের বলত, যেন গরিবকে ক্ষমা করে”।
তিনি বলেন, “আল্লাহ তা‘আলা বললেন, তার চেয়ে আমি ক্ষমা করার অধিক হকদার,
তাকে ক্ষমা কর”।
[মুসলিম] হাদিসটি সহিহ।
হাদিসে কুদসি নং – ৪৩ : গরিবকে ক্ষমা করলে আল্লাহও ক্ষমা করবেন
عَنْ
أَبِي هُرَيْرَةَ -رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ-: عَنْ رَسُولِ اللَّهِ صلى الله
عليه وسلم قَالَ: «إِنَّ رَجُلاً لَمْ يَعْمَلْ خَيْرًا قَطُّ، وَكَانَ
يُدَايِنُ النَّاسَ فَيَقُولُ لِرَسُولِه: خُذْ مَا تَيَسَّرَ وَاتْرُكْ
مَا عَسُرَ وَتَجَاوَزْ، لَعَلَّ اللَّهَ تَعَالَى أَنْ يَتَجَاوَزَ
عَنَّا، فَلَمَّا هَلَكَ قَالَ اللَّهُ عَزَّ وَجَلَّ لَهُ: هَلْ عَمِلْتَ
خَيْرًا قَطُّ؟ قَالَ: لَا إِلَّا أَنَّهُ كَانَ لِي غُلَامٌ وَكُنْتُ
أُدَايِنُ النَّاسَ فَإِذَا بَعَثْتُهُ لِيَتَقَاضَى قُلْتُ لَهُ: خُذْ مَا
تَيَسَّرَ وَاتْرُكْ مَا عَسُرَ وَتَجَاوَزْ لَعَلَّ اللَّهَ يَتَجَاوَزُ
عَنَّا، قَالَ اللَّهُ تَعَالَى: قَدْ تَجَاوَزْتُ عَنْكَ». ( ن ) حسن
বাংলা অনুবাদ
আবু হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে
বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, “জনৈক ব্যক্তি
কোনো কল্যাণ করেনি, সে মানুষকে ঋণ দিত, অতঃপর তার দূতকে বলত; যা সহজ গ্রহণ
কর, যা কষ্টের তা ত্যাগ কর ও ছাড় দাও। হয়তো আল্লাহ তাআলা আমাদেরকে ক্ষমা
করবেন। যখন সে মারা গেল, আল্লাহ তাকে বললেন, তুমি কোন কল্যাণ করেছ? সে বলে,
না, তবে আমার এক কর্মচারী ছিল, আমি মানুষকে ঋণ দিতাম, যখন আমি তাকে উসুল
করার জন্য প্রেরণ করেছি তাকে বলেছি, যা সহজ হয় গ্রহণ কর, যা কষ্টকর ত্যাগ
কর ও ক্ষমা কর, হয়তো আল্লাহ তাআলা আমাদের ক্ষমা করবেন। আল্লাহ বলবেন, আমি
তোমাকে ক্ষমা করে দিলাম”।
[নাসায়ি] হাদিসটি হাসান।
হাদিসে কুদসি নং – ৪৪ : আল্লাহর অলিদের সাথে দুশমনি করা পাপ
عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ -رَضِيَ
اللَّهُ عَنْهُ- قَال: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم : «إِنَّ
اللَّهَ قَالَ: مَنْ عَادَى لِي وَلِيًّا فَقَدْ آذَنْتُهُ بِالْحَرْب،ِ
وَمَا تَقَرَّبَ إِلَيَّ عَبْدِي بِشَيْءٍ أَحَبَّ إِلَيَّ مِمَّا
افْتَرَضْتُ عَلَيْه،ِ وَمَا يَزَالُ عَبْدِي يَتَقَرَّبُ إِلَيَّ
بِالنَّوَافِلِ حَتَّى أُحِبَّهُ فَإِذَا أَحْبَبْتُهُ كُنْتُ سَمْعَهُ
الَّذِي يَسْمَعُ بِهِ، وَبَصَرَهُ الَّذِي يُبْصِرُ بِه،ِ وَيَدَهُ
الَّتِي يَبْطِشُ بِهَا، وَرِجْلَهُ الَّتِي يَمْشِي بِهَا، وَإِنْ
سَأَلَنِي لَأُعْطِيَنَّه،ُ وَلَئِنْ اسْتَعَاذَنِي لَأُعِيذَنَّهُ، وَمَا
تَرَدَّدْتُ عَنْ شَيْءٍ أَنَا فَاعِلُهُ تَرَدُّدِي عَنْ نَفْسِ
الْمُؤْمِنِ يَكْرَهُ الْمَوْتَ وَأَنَا أَكْرَهُ مَسَاءَتَهُ». ( خ ) صحيح
বাংলা অনুবাদ
আবু হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে
বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, “আল্লাহ তাআলা
বলেন, যে আমার অলির সাথে দুশমনি করবে আমি তার সাথে যুদ্ধের ঘোষণা করেছি।
আমার বান্দার ওপর আমি যা ফরয করেছি আমার নিকট তার চেয়ে অধিক প্রিয় কোন
বস্তু দ্বারা সে আমার নৈকট্য অর্জন করেনি। আমার বান্দা নফল দ্বারা আমার
নৈকট্য অর্জন করতে থাকে অবশেষে আমি তাকে মহব্বত করি। আমি যখন তাকে মহব্বত
করি আমি তার কানে পরিণত যা দ্বারা সে শ্রবণ করে। তার চোখে পরিণত হই যা
দ্বারা সে দেখে, তার হাতে পরিণত হই যা দ্বারা সে ধরে, তার পায়ে পরিণত হই যা
দ্বারা সে হাঁটে। যদি সে আমার নিকট চায় আমি তাকে অবশ্যই দিব, যদি সে আমার
নিকট পানাহ চায় আমি তাকে অবশ্যই পানাহ দিব। আমার করণীয় কোন কাজে আমি দ্বিধা
করি না যেমন দ্বিধা করি মুমিনের নফসের সময়, সে মৃত্যুকে অপছন্দ করে আমি
তার কষ্টকে অপছন্দ করি”।
[বুখারি] হাদিসটি সহিহ।
হাদিসে কুদসি নং – ৪৫ : আল্লাহর জন্য মহব্বতের ফজিলত
عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ -رَضِيَ
اللَّهُ عَنْهُ- قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم : «إِنَّ
اللَّهَ يَقُولُ يَوْمَ الْقِيَامَةِ: أَيْنَ الْمُتَحَابُّونَ
بِجَلَالِي، الْيَوْمَ أُظِلُّهُمْ فِي ظِلِّي يَوْمَ لَا ظِلَّ إِلَّا
ظِلِّي».( م ) صحيح
বাংলা অনুবাদ
আবু হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে
বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন,“কিয়ামতের দিন
আল্লাহ বলবেন: আমার বড়ত্বের জন্য মহব্বতকারীরা কোথায়, আজ আমি তাদেরকে আমার
ছায়ায় ছায়া দান করব, যখন আমার ছায়া ব্যতীত কোন ছায়া নেই”।
[মুসলিম] হাদিসটি সহিহ।
হাদিসে কুদসি নং – ৪৬ : আল্লাহর জন্য মহব্বতকারীগণ আরশের ছায়ায় নুরের মিম্বারে অবস্থান করবেন
عَنْ أَبِي مُسْلِمٍ
الْخَوْلَانِيِّ عَنْ مُعَاذُ بْنُ جَبَلٍ -رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ- قَالَ:
سَمِعْتُ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم يَحْكِي عَنْ رَبِّهِ
يَقُولُ: «الْمُتَحَابُّونَ فِي اللَّهِ عَلَى مَنَابِرَ مِنْ نُورٍ فِي
ظِلِّ الْعَرْشِ يَوْمَ لَا ظِلَّ إِلَّا ظِلُّهُ» قَالَ: فَخَرَجْتُ
حَتَّى لَقِيتُ عُبَادَةَ بْنَ الصَّامِتِ فَذَكَرْتُ لَهُ حَدِيثَ مُعَاذِ
بْنِ جَبَلٍ فَقَالَ: سَمِعْتُ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم
يَحْكِي عَنْ رَبِّهِ -عَزَّ وَجَلَّ- يَقُولُ: «حَقَّتْ مَحَبَّتِي
لِلْمُتَحَابِّينَ فِيَّ، وَحَقَّتْ مَحَبَّتِي لِلْمُتَبَاذِلِينَ فِيّ،َ
وَحَقَّتْ مَحَبَّتِي لِلْمُتَزَاوِرِينَ فِيَّ، وَالْمُتَحَابُّونَ فِي
اللَّهِ عَلَى مَنَابِرَ مِنْ نُورٍ فِي ظِلِّ الْعَرْشِ يَوْمَ لَا ظِلَّ
إِلَّا ظِلُّهُ». (حم ) صحيح بمجموع طرقه
বাংলা অনুবাদ
আবু মুসলিম খাওলানি রাহিমাহুল্লাহ, মুআয
ইব্ন জাবাল রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণনা করেন, তিনি বলেন, আমি
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে তার রবের পক্ষ থেকে বর্ণনা
করতে শুনেছি, “আল্লাহর নিমিত্তে মহব্বতকারীগণ আরশের ছায়ায় নুরের মিম্বারে
অবস্থান করবেন, যে দিন তার ছায়া ব্যতীত কোন ছায়া থাকবে না”। তিনি বলেন,
(মুআযের কাছ থেকে) বের হয়ে উবাদাহ ইব্ন সামেতের সাথে দেখা করি, আমি তাকে
মু‘আয ইব্ন জাবালের হাদিস বলি, তিনি বললেন, আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়াসাল্লামকে তার রবের পক্ষ থেকে বর্ণনা করতে শুনেছি, “আমার
নিমিত্তে মহব্বতকারীদের জন্য আমার মহব্বত ওয়াজিব। আমার নিমিত্তে খরচকারীদের
জন্য আমার মহব্বত ওয়াজিব। আমার নিমিত্তে সাক্ষাতকারীদের জন্য আমার মহব্বত
ওয়াজিব। আল্লাহর জন্য পরস্পর মহব্বতকারীগণ আরশের ছায়ার নিচে নূরের মিম্বারে
অবস্থান করবে, যে দিন তার ছায়া ব্যতীত কোন ছায়া থাকবে না”।
[আহমদ] এ হাদিসটি সব কটি সনদের বিবেচনায় সহিহ।
হাদিসে কুদসি নং – ৪৭ : আল্লাহকে মহব্বতকারীদের জন্য রয়েছে নূরের মিম্বার
عن معاذ بن جبل -رَضِيَ اللَّهُ
عَنْهُ- قال: سمعت رسول الله صلى الله عليه وسلم يقول: « قال الله عز وجل:
المتحابون في جلالي لهم منابر من نور يغبطهم النبيون والشهداء». (ت) حسن
বাংলা অনুবাদ
মুয়ায ইব্ন জাবাল রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে বলতে শুনেছি, “আল্লাহ তাআলা বলেন, “আমার নিমিত্তে মহব্বতকারীদের জন্য নূরের মিম্বার রয়েছে, যাদের সাথে ঈর্ষা করবে নবী ও শহীদগণ”।
মুয়ায ইব্ন জাবাল রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে বলতে শুনেছি, “আল্লাহ তাআলা বলেন, “আমার নিমিত্তে মহব্বতকারীদের জন্য নূরের মিম্বার রয়েছে, যাদের সাথে ঈর্ষা করবে নবী ও শহীদগণ”।
[তিরমিযি] হাদিসটি হাসান।
হাদিসে কুদসি নং – ৪৮ : জান্নাতকে কষ্ট ও জাহান্নামকে প্রবৃত্তি দ্বারা আবৃত রাখা হয়েছে
عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ -رَضِيَ
اللَّهُ عَنْهُ- أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم قَالَ: «لَمَّا
خَلَقَ اللَّهُ الْجَنَّةَ قَالَ لِجِبْرِيلَ: اذْهَبْ فَانْظُرْ
إِلَيْهَا. فَذَهَبَ فَنَظَرَ إِلَيْهَا ثُمَّ جَاءَ فَقَالَ: أَيْ رَبِّ
وَعِزَّتِكَ لَا يَسْمَعُ بِهَا أَحَدٌ إِلَّا دَخَلَهَا، ثُمَّ حَفَّهَا
بِالْمَكَارِهِ ثُمَّ قَالَ: يَا جِبْرِيلُ اذْهَبْ فَانْظُرْ إِلَيْهَا،
فَذَهَبَ فَنَظَرَ إِلَيْهَا، ثُمَّ جَاءَ، فَقَالَ: أَيْ رَبِّ
وَعِزَّتِكَ لَقَدْ خَشِيتُ أَنْ لَا يَدْخُلَهَا أَحَدٌ، قَال:َ فَلَمَّا
خَلَقَ اللَّهُ النَّارَ قَالَ يَا جِبْرِيلُ اذْهَبْ فَانْظُرْ إِلَيْهَا
فَذَهَبَ فَنَظَرَ إِلَيْهَا، ثُمَّ جَاءَ فَقَالَ: أَيْ رَبِّ وَعِزَّتِكَ
لَا يَسْمَعُ بِهَا أَحَدٌ فَيَدْخُلُهَا، فَحَفَّهَا بِالشَّهَوَاتِ
ثُمَّ قَالَ: يَا جِبْرِيلُ اذْهَبْ فَانْظُرْ إِلَيْهَا فَذَهَبَ فَنَظَرَ
إِلَيْهَا ثُمَّ جَاءَ فَقَالَ: أَيْ رَبِّ وَعِزَّتِكَ لَقَدْ خَشِيتُ
أَنْ لَا يَبْقَى أَحَدٌ إِلَّا دَخَلَهَا». ( د, ت, ن, حم ) حسن
বাংলা অনুবাদ
আবু হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে
বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, “আল্লাহ যখন
জান্নাত সৃষ্টি করেছেন জিবরিলকে বলেছেন, যাও তা দেখ। সে গেল ও তা দেখল
অতঃপর এসে বলল, হে আমার রব, আপনার ইজ্জতের কসম তার ব্যাপারে কেউ শুনে তাতে
প্রবেশ ব্যতীত থাকবে না। অতঃপর তা কষ্ট দ্বারা ঢেকে দিলেন। অতঃপর বললেন, হে
জিবরিল যাও তা দেখ, সে গেল ও তা দেখল অতঃপর এসে বলল, হে আমার রব, আপনার
ইজ্জতের কসম আমি আশঙ্কা করছি তাতে কেউ প্রবেশ করবে না। তিনি বলেন: আল্লাহ
যখন জাহান্নাম সৃষ্টি করেছেন বলেছেন, হে জিবরিল যাও তা দেখ, সে গেল ও তা
দেখল অতঃপর এসে বলল, হে আমার রব, আপনার ইজ্জতের কসম, তার ব্যাপারে কেউ শুনে
তাতে কখনো প্রবেশ করবে না। অতঃপর তিনি তা প্রবৃত্তি দ্বারা ঢেকে দিলেন
অতঃপর বললেন, হে জিবরিল যাও তা দেখ, সে গেল ও তা দেখল অতঃপর এসে বলল, হে
আমার রব, আপনার ইজ্জতের কসম আমি আশঙ্কা করছি তাতে প্রবেশ ব্যতীত কেউ বাকি
থাকবে না”।
[আবু দাউদ, তিরমিযি, নাসায়ি ও আহমদ] হাদিসটি হাসান।
হাদিসে কুদসি নং – ৪৯ : নেক বান্দাদের জন্য তৈরি কিছু নেয়ামতের বর্ণনা
عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ -رَضِيَ
اللَّهُ عَنْهُ- قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم «قَالَ
اللَّهُ تَبَارَك وتعَالى: أَعْدَدْتُ لِعِبَادِي الصَّالِحِينَ مَا لَا
عَيْنٌ رَأَتْ وَلَا أُذُنٌ سَمِعَتْ وَلَا خَطَرَ عَلَى قَلْبِ بَشَرٍ». (
خ، م ) صحيح
বাংলা অনুবাদ
আবু হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে
বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, “আল্লাহ তা‘আলা
বলেছেন, আমি আমার নেক বান্দাদের জন্য তৈরি করেছি যা কোন চোখ দেখেনি, কোন
কান শ্রবণ করেনি এবং কোন মানুষের অন্তরে তার কল্পনা হয়নি”।
[বুখারি ও মুসলিম] হাদিসটি সহিহ।
হাদিসে কুদসি নং – ৫০ : জান্নাতবাসীদের ওপর রয়েছে আল্লাহর সন্তুষ্টি
عَنْ أَبِي سَعِيدٍ الْخُدْرِيِّ
-رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ- قَالَ: قَالَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم :
«إِنَّ اللَّهَ يَقُولُ لِأَهْلِ الْجَنَّةِ: يَا أَهْلَ الْجَنَّةِ،
فَيَقُولُونَ: لَبَّيْكَ رَبَّنَا وَسَعْدَيْكَ وَالْخَيْرُ فِي يَدَيْك،َ
فَيَقُولُ: هَلْ رَضِيتُمْ؟ فَيَقُولُونَ: وَمَا لَنَا لَا نَرْضَى يَا
رَبِّ، وَقَدْ أَعْطَيْتَنَا مَا لَمْ تُعْطِ أَحَدًا مِنْ خَلْقِكَ،
فَيَقُولُ أَلَا أُعْطِيكُمْ أَفْضَلَ مِنْ ذَلِكَ؟ فَيَقُولُونَ: يَا
رَبِّ وَأَيُّ شَيْءٍ أَفْضَلُ مِنْ ذَلِكَ؟ فَيَقُولُ: أُحِلُّ عَلَيْكُمْ
رِضْوَانِي فَلَا أَسْخَطُ عَلَيْكُمْ بَعْدَهُ أَبَدًا». ( خ, م ) صحيح
বাংলা অনুবাদ
আবু সায়িদ খুদরি রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে
বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, “আল্লাহ
তা‘আলা জান্নাতিদের বলবেন, হে জান্নাতিগণ, তারা বলবে, সদা উপস্থিত হে
আমাদের রব, আপনার সন্তুষ্টিবিধানে আমি সদা সচেষ্ট, সকল কল্যাণ আপনার হাতে।
তিনি বলবেন, তোমরা সন্তুষ্ট হয়েছ? তারা বলবে, হে আমাদের রব আমরা কেন
সন্তুষ্ট হব না, অথচ আপনি আমাদেরকে দিয়েছেন যা আপনার মখলুকের কাউকে দেননি!
তিনি বলবেন, আমি কি তোমাদেরকে এর চেয়ে উত্তম দিব না? তারা বলবে, হে রব এর
চেয়ে উত্তম কোন বস্তু? তিনি বলবেন, আমি তোমাদের ওপর আমার সন্তুষ্টি অবধারিত
করছি এরপর কখনো তোমাদের ওপর অসন্তুষ্ট হব না”।
[বুখারি ও মুসলিম] হাদিসটি সহিহ।
No comments:
Post a Comment