Monday 25 August 2014

বিদাতপন্থী সূফীদের মাঝে ২টি শিরকি-কুফুরী আকীদাহঃ



১. রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম মৃত্যুবরণ করেন নি, তিনি কবরে ‪#‎আমাদের_মতোই‬ জীবিত। ***ইসলাম বিরোধী, অসংখ্য ক্বুরানের আয়াত ও সহীহ হাদীস বিরোধী কুফুরী কথা।
২. কবরের কাছে গিয়ে মৃত মানুষের কাছে সাহায্য চাওয়া, টাকা-পয়সা চাওয়া, খাবার চাওয়া, কারো বিরুদ্ধে বিচার চাওয়া, সুপারিশ বা দুয়া চাওয়া, রোগ হলে চিকিৎসা চাওয়া জায়েজ।
***নাউযুবিল্লাহ, কবর পূজারীদের শিরকি কথা।
‪#‎সূফীরা‬ হচ্ছে ৭২টি ভ্রান্ত ফেরকার অন্তর্ভুক্ত বেদাতী একটি দল, যাদের মাঝে অনেক বড়বড় শিরকি ও কুফুরী আকীদাহ আছে। সূফীদের অনেক তরীকাহ, দল ও ফেরকাহ আছে। তবে ভারত, বাংলাদেশ ও পাকিস্থানের সূফীবাদীরা মোটামুটি দেওবন্দী ও বেরেলবী এই দুইটি মাদ্রাসাকে কেন্দ্র করে ২টি বড় দলে ভাগ হয়েছে। এই দুই দলই নিজেদেরকে ‪#‎হানাফী‬ ও ‪#‎সুন্নী‬ দাবী করে, কিন্তু নিজেদের মাঝে তাদের অনেক ঝগড়া-বিবাদ আছে। তবে, এই ২ দলের মাঝেই কমন অনেক শিরকী ও কুফুরী আকীদাহ আছে, যার মাঝে ২টা ভ্রান্ত বিশ্বাস উপরে বর্ণনা করা হয়েছে।

১. নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম জীবিত নাকি মৃত?
আল্লাহর পক্ষ থেকে ঘোষণা, নবী সাঃ একজন মানুষ, সাথে সাথে তিনি আল্লাহর নবীঃ
“(হে নবী) আপনি বলুনঃ আমিও তোমাদের মতই একজন মানুষ, আমার কাছে ওয়াহী করা হয় যে, তোমাদের ইলাহ হচ্ছেন একমাত্র ইলাহ।”
সুরা কাহফঃ ১১০।
আল্লাহর পক্ষ থেকে অগ্রীম ঘোষণা, নবী মৃত্যুবরণ করবেনঃ
“ইন্নাকা মায়্যিতুন ওয়া ইন্নাহুম-মায়্যিতুন” – (হে নবী!) আপনিও মৃত্যু বরণ করবেন, আর তারাও মৃত্যু বরণ করবে।”
সুরা আল-যুমার, আয়াত ৩০।
সুরা আলে-ইমরানের আয়াত ও সহীহ বুখারী সহীহ স্পষ্ট হাদীস দিয়ে অকাট্যভাবে প্রমানিত হয় যে, রাসুল (সাঃ) মৃত্যুবরণ করেছেন এবং সমস্ত সাহাবী এই ‪#‎আকীদা‬ মেনে নিয়েছেনঃ
আবূ সালামা (রহঃ) বলেন, নবী (সাঃ) সহধর্মিণী আয়িশা (রাঃ) আমাকে বলেছেনঃ
[রাসূলুল্লাহ্ (সাঃ) এর মৃত্যুর খবর পেয়ে] আবূ বকর (রাঃ) ‘সুনহ’ এ অবস্থিত তাঁর বাড়ি থেকে ঘোড়ায় চড়ে চলে এলেন এবং নেমে মসজিদে প্রবেশ করলেন। সেখানে লোকদের সাথে কোন কথা না বলে আয়িশা (রাঃ) এর ঘরে প্রবেশ করে রাসূলুল্লাহ্ (সাঃ) এর দিকে অগ্রসর হলেন। তখন তিনি একখানি ‘হিবারাহ’ নামক ইয়ামানী চাদর দ্বারা আবৃত ছিলেন। আবূ বকর (রাঃ) রাসূলুল্লাহ্ (সাঃ) এর মুখমণ্ডল উম্মুক্ত করে তাঁর উপর ঝুকে পড়লেন এবং চুমু খেলেন, তারপর কাঁদতে লাগলেন এবং বললেন, হে আল্লাহর নবী! আমার পিতা আপনার জন্য কুরবান হোক। আল্লাহ আপনার জন্য দুইটি ‪#‎মৃত্যু‬ একত্রিত করবেন না । তবে যে #মৃত্যু আপনার জন্য নির্ধারিত ছিল তা তো আপনি কবুল করেছেন।
আবূ সালামা (রহঃ) বলেন, আবদুল্লা ইবনে আব্বাস (রাঃ) আমাকে খবর দিয়েছেন যে, (তারপর) আবূ বকর (রাঃ) বেরিয়ে এলেন। তখন উমর (রাঃ) লোকদের সাথে কথা বলছিলেন। আবূ বকর (রাঃ) তাঁকে বললেন, বসে পড়ুন। তিনি তা মানলেন না। আবূ বকর (রাঃ) তাঁকে বললেন, বসে পড়ুন, তিনি তা মানলেন না। তখন আবূ বকর (রাঃ) কালিমা-ই-শাহাদাতের দ্বারা (বক্তব্য) আরম্ভ করলেন। লোকেরা উমর (রাঃ) কে ছেড়ে তাঁর দিকে আকৃষ্ট হন। আবূ বকর (রাঃ) বললেনঃ আম্‌মা বাআ’দু (অতঃপর) তোমাদের মধ্যে যারা মুহাম্মদ (সাঃ) এর পূজা করতে, জেনে রাখ মুহাম্মদ (সাঃ) সত্যিই মৃত্যুবরণ করেছেন। আর যারা মহান আল্লাহর ইবাদত করতে, তারা জেনে রাখ, নিশ্চয়ই আল্লাহ্‌ চিরঞ্জীব, তাঁর কোন মৃত্যু নেই। (অতঃপর আবু বকর রাঃ রাসুল সাঃ যে মৃত্যুবরণ করবেন এই কথার দলীল হিসেবে বলেন) মহান আল্লাহ্ ইরশাদ করেছেনঃ
“মুহাম্মাদ, তিনিতো আল্লাহর রাসুল ছাড়া আর কিছু নন, তার পূর্বেও অনেক রাসুল মৃত্যু বরণ করেছেন। এখন তিনি যদি মৃত্যুবরণ করেন বা নিহত হন তোমরা কি তোমাদের পূর্ব অবস্থায় (কুফুরীতে) ফিরে যাবে? প্রকৃতপক্ষে যেই ব্যক্তি তার পূর্বের অবস্থায় ফিরে যাবে সে আল্লাহর কোন ক্ষতি করতে পারবেনা। আল্লাহ অচিরেই কৃতজ্ঞদেরকে প্রতিদান দিবেন।”
সুরা আলে ইমরান, আয়াত ১৪৪।
আল্লাহ্‌র কসম, মনে হচ্ছিল যেন আবূ বক্‌র (রা.)-এর তিলাওয়াত করার পূর্ব পর্যন্ত লোকদের জানাই ছিল না যে, আল্লাহপাক এই আয়াত নাযিল করেছিলেন। এখনই যেন লোকেরা আয়াতখানি তার কাছ থেকে শুনতে পেলেন। প্রতিটি মানুষকেই তখন ঐ আয়াত তিলাওয়াত করতে শোনা গেল।
সহিহ আল-বুখারী, জানাযা অধ্যায়, খন্ড ২, অধ্যায় ২৩, হাদিস ৩৩৩।
বিঃদ্রঃ মানুষের জীবন দুই প্রকার, একটা মৃত্যুর আগে আরেকটা পরে, যাকে পরকাল বা আখেরাত বলা হয়। আর কবর থেকে নিয়ে কিয়ামতে হাশর হওয়া পর্যন্ত জীবনকে “বরযখের জীবন” বা পর্দার জীবন বলা হয়। মানুষ মারা গেলে তার দুনিয়ার জীবন শেষ হয়ে যায়, আর বরযখের জীবন শুরু হয়, যা দুনিয়ার জীবন থেকে আলাদা। আর ঐ কবরের জীবন কেমন, কিরকম এটা বুঝা আমাদের পক্ষে সম্ভব না। সে সম্পর্কে কুরআন হাদীসে আমাদের যতটুকু জানানো হয়েছে আমরা ততটুকু কোনোরকম প্রশ্ন ছাড়াই ইমান আনবো। কিন্তু কোনো প্রকার ব্যাখ্যা বিশ্লেষণ বা অতিরিক্ত প্রশ্ন করবোনা। এটাই হলো ইমান বিল গায়েব – অদৃশ্যে বিশ্বাস।
রাসুলুল্লাহ (সাঃ) কে আমাদের দুরুদগুলো ফেরশতারা পোঁছে দেন, আমাদের দুনিয়ার জীবনের কিছু কথা আমাদের মৃত আত্মীয় স্বজনদের কাছে বলা হয়, পরিচিত মৃত ব্যাক্তিদের আত্মাদের মাঝে দেখা সাক্ষাত হয়, অনেক মৃত ব্যাক্তিকে কবরে শাস্তি দেওয়া হয়, - এইসবগুলো সহীহ হাদীস দ্বারা প্রমানিত। আমরা এইগুলো বিশ্বাস করবো, কিন্তু ব্যাখ্যা করা বা দুনিয়ার জীবনের সাথে তুলনা করার চেষ্টা করবোনা।
__________________________
২. নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ও অন্য মৃত ব্যক্তিদের কাছে সাহায চাওয়া শিরকঃ
এতোক্ষণ আলোচনা দিয়ে সরাসরি ক্বুরানের আয়াত ও স্পষ্ট সহীহ হাদীস দিয়ে প্রমান যে, রাসুল সাঃ মৃত্যুবরণ করেছেন। এবার স্পষ্ট প্রমান দেখুন – রাসুল সাঃ এর মৃত্যুর পরে কোন একজন সাহাবা রাসুল সাঃ এর কাছে কোন সাহায্য চাইতেন না। কারণ মৃত মানুষের কাছে দুয়া করা বা সাহায্য চাওয়া হচ্ছে শিরক। আর একেই কবর পূজা বলা হচ্ছে, কারণ এরা কবরওয়ালাকে আল্লাহর ক্ষমতার সমান মনে করে তাঁদের কাছে সাহায্য চায় বা দুয়া করে।
উমর ইবন খাত্তাব (রাঃ) অনাবৃষ্টির সময় আব্বাস ইবন আবদুল মুত্তালিব (রাঃ) (যিনি নবী সাঃ এর আপন চাচা ছিলেন) তাঁর উসীলা দিয়ে বৃষ্টির জন্য দুআ’ করতেন এবং বলতেন, হে আল্লাহ্! (প্রথমে) আমরা আমাদের রাসূলুল্লাহ্‌ (সা) এর উসিলা দিয়ে দোয়া করতাম এবং আপনি বৃষ্টি দান করতেন। এখন আমরা আমাদের রাসূলুল্লাহ্‌ (সাঃ) এর ‪#‎চাচার‬ উসিলা দিয়ে দুআ’ করছি, আপনি আমাদেরকে বৃষ্টি দান করুন। বর্ণনাকারী বলেন, দুআ’র সাথে সাথেই বৃষ্টি বর্ষিত হতো।”
সহিহ বুখারী, খন্ড ২, বৃষ্টির জন্য দুআ অধ্যায়ঃ ১৭, হাদীস নং- ১২৩।
উপরের এই সহিহ হাদীস ও হাদীস থেকে শিক্ষার দিকে একটু মনোযোগ দিয়ে লক্ষ্য করুনঃ
১. উমার (রাঃ) এর মতো এতো বড় জ্ঞানী সাহাবী – তিনি ক্বুরান হাদীস থেকে এটা বুঝেছিলেন যে, রাসুল সাঃ এর মৃত্যুর পরে তাঁর কবরের কাছে গিয়ে বলা যাবেনা যে, হে নবী আমরা বড় কষ্টে আছি, আপনি আমাদের জন্য আল্লাহর কাছে দুয়া করুন। কারণ মৃত্যুর পরে কবরবাসীরা দুনিয়ার মানুষের কথা শুনতে পারেনা, তবে বিশেষ বিশেষ কিছু ঘটনা ছাড়া। যেমন বদরের যুদ্ধে নিহতদেরকে আল্লাহ নবী (সাঃ) এর তিরষ্কারমূলক কথা গুলো শুনিয়েছিলেন।
অথবা উমার (রাঃ) ডাইরেক্ট নবীর কাছে গিয়ে বৃষ্টি চেয়ে কবর পূজারীদের মতো শিরকি কাজও করেন নি।
২. রাসুল (সাঃ) মৃত্যুর পর সাহাবারা রাসুল সাঃ এর উসীলা দিয়ে দুয়া করেন নি। বরং, তারা রাসুল সাঃ এর জীবিত চাচা, দুর্বল ব্যক্তি ও শিশুদের উসীলা দিয়ে আল্লাহর কাছে দুয়া করেছেন। এথেকে প্রমানিত হয়, হে আল্লাহ আমাকে নবীর উসীলায় মাফ করো, নবীর কদম মুবারক (পা) বা স্যান্ডেলের উসীলায়, নবীর রওজা (কবরের) উসীলাম আমার দুয়া কবুল করো – এই সমস্ত কথা বলা সম্পূর্ণ বাতিল ও ভ্রান্ত। এই হারাম উসীলা দিয়ে যে দুয়া করবে সে বেদাত করলো, আর রাসুল সাঃ বলেছেন, “প্রত্যেক বেদাত জাহান্নামে যাবে।”
এবার ক্বুরান-হাদীসের বাণীর সাথে বর্তমানে বেদাতী মুশরেকদের আকীদাহ তুলনা করে দেখুন – যারা নবী সাঃ এর সাথে কথা বলার, তাঁর সাথে হ্যান্ডশেক করার, তাঁকে ডাক দিয়ে কবর থেকে বের করে ফেলার মতো‪#‎ভুয়া‬ কেরামতির কথা বলে বেড়ায়। অথবা বিপদে-আপদে, রোগের সময়ে, টাকা-পয়সা, বিচার, ইত্যাদি জিনিস আল্লাহর কাছে না চেয়ে নবী (সাঃ) এর কবরের কাছে চেয়ে কবর পূজার মতো জঘনয় শিরকি কাজ করে বেড়ায়।
বাংলাদেশে সবচাইতে বড় ‪#‎দেওবন্দী‬ মাদ্রাসা, চট্টগ্রাম হাটহাজারী মাদ্রাসার প্রিন্সিপাল, আমাদের দেশে দেওবন্দীদের সবচাইতে বড় আলেম ও হেফাজতে ইসলামীর আমীর, মাওলানা আহমাদ শফি সাহেব তার কিতাব ‘ইরশাদাতে মুরশিদীতে’ লিখেছেনঃ
“হোসাইন আহমদ মাদানীকে মদীনায় তার ছাত্ররা প্রশ্ন করলো, রাসুল সাঃ কি কবরে জীবিত?
তিনি বললেন, আলমে মেছালীতে রাসুল সাঃ জীবিত, কিন্ত ছাত্ররা দলিল প্রমাণাদী পেশ করলো যে কোরআনে সূরা যুমারের ৩০নং আয়াতে বলা হয়েছে
“(হে নবী!) নিশ্চয় আপনি মৃত্যুবরণ করবেন আর তারাও মৃত্যুবরণ করবে”।
মাদানী ছাত্রদেরকে বিভিন্ন দলিলের মাধ্যমে বুঝাতে চেষ্টা করলেন, কিন্ত তারা বুঝতে অপ্রস্তুত, এরপর মাদানী ছাত্রদেরকে নিয়ে রওযায়ে আতহারের কাছে নিয়ে গেলেন এবং হাত দিয়ে ইশারা করলেন, এই ইশারাতে রাসুল সাঃ রওযা থেকে মাথা উঠিয়ে সকলকে দেখা দিয়ে আবার মাটির নিচে লুকিয়ে গেলেন”!!?
ইরশাদাতে মুরশিদী, পৃষ্ঠা ৪২।
মন্তব্যঃ ডাহা বানোয়াট, মিথ্যা কাহিনী দিয়ে মৃত্যুর পরেও কোন ব্যক্তি দুনিয়াতে আসে - এই কুফুরী আকীদা বয়ান করা হয়েছে। এছাড়া একজন মানুষের ডাকে রাসুল সাঃ কবর থেকে বের হয়ে এসেছেন – এইরকম ভুয়া কাহিনী বলে রাসুল সাঃ এর সম্মান ও মর্যাদারও হানি করা হয়েছে (নাউযুবিল্লাহ)।
আমাদের দেশে অতি পরিচিত তাবলীগ জামাতের লোকেরা দেওবন্দ মাদ্রাসার অনুসারী, এইজন্য তাদের মাঝে এইসমস্ত পচা শিরকি আকীদাহ পাওয়া যায়। যেমন তাবলীগের লেখক, জাকারিয়া সাহেবের লেখা কিছু বানোয়াট শিরকি কাহিনী শিরকিঃ
‪#‎উদাহরণ‬ – ১
ফাজায়েলে হজ্জ, ১৩৮ পৃষ্ঠা।
মূল লেখক – মাওলানা জাকারিয়া সাহেব, কাকরাইলে মুরুব্বীদের অনুমতি ও দোয়া নিয়ে অনুবাদ করেছেন – মাওলানা সাখাওয়াত উল্লাহ, প্রকাশনী – তাবলিগি কুতুবখানা ৫০ বাংলাবাজার ঢাকা, ফোন – ৭১২৩৫৩৮।
“শায়েখ আবুল খায়ের বলেন, একবার মদীনা মোনাওয়ারায় হাজির হইয়া পাঁচ দিন পর্যন্ত আমাকে উপবাস থাকতে হয়। খাওয়ার জন্য কিছুই না পেয়ে অবশেষে আমি হুজুর (রাসুল সাঃ কে তারা হুজুর নামে ডাকে, এই নামে ডাকা জায়েজ না) এবং শায়ইখানের (আবু বকর ও উমার রাঃ কে শায়খান বলা হয়) কবরের মধ্যে সালাম পড়িয়া আরজ করলাম, হে আল্লাহর রাসুল! আমি আজ রাতে আপনার মেহমান হবো।
এই কথা আরজ করে মিম্বর শরীফের নিকট গিয়ে আমি শুইয়া পড়লাম। স্বপ্নে দেখি, হুজুরে পাক (সাঃ) তাশরীফ এনেছেন। ডানে হযরত আবু বকর, বাম দিকে হজরত ওমর এবং সামনে হজরত আলী রাঃ । হযরত আলী রাঃ আমাকে ডেকে বলেন, এই দেখ, হুজুর সাঃ তাশরীফ এনেছেন । আমি উঠা মাত্রই মহানবী সাঃ আমাকে একটা রুটি দিলেন, আমি অর্ধেক খেয়ে ফেলি তারপর যখন আমার চোখ খুলিল তখন আমার হাতে বাকী অর্ধেক ছিল (রুটি অবশিষ্টাংশ) ।
সূত্রঃ ফাজায়েলে হজ্জ, ১৩৮ পৃষ্ঠা।
সম্মানিত মুসলিম ভাই ও বোনেরা!!
=> আল্লাহকে ছেড়ে মৃত্যুর পর নবীর রওজায় (কবরে) গিয়ে খাদ্যের জন্য দুয়া করা স্পষ্ট শিরক নয় কি?
=> মৃতুর পর নবী কবরে থেকেও খাওয়াতে পারেন এ আক্বিদাহ পোষন করা শিরক নয় কি??
=> এই রকম শিরকী আকিদাহ কি মানুষকে জান্নাতের দিকে নিয়ে যায়, নাকি জাহান্নামের দিকে???
অথচ মহান আল্লাহ সুবহানাহু তায়ালা বলেছেনঃ “ভূ-পৃষ্ঠে বিচরণকারী সকলের জীবিকার দায়িত্ব আল্লাহর।”
সূরা হুদঃ ৬।
______________________
উদাহরণ – ২
“তাবলীগ জামাতের” লেখক মাওলানা জাকারিয়া কান্ধলবী সাহেব কর্তৃক লিখিত, তাবলিগ জামাতের মূল পাঠ্যসূচি, ফাযায়েলে সাদাকাতে কবর-মাযার পূজার শিক্ষাঃ
“মিশরে একজন নেক বখত লোক ছিলেন। অভাবগ্রস্ত হইয়া কোন এক লোক তাহার নিকট আসিলে তিনি চাঁদা উসুল করিয়া তাহাকে দিয়া দিতেন। একদা জনৈক ফকির তাহার নিকট আসিয়া বলিল আমার একটা ছেলে হইয়াছে, তাহার এছলাহের ব্যবস্থার জন্য আমার নিকট কিছুই নাই। এই ব্যাক্তি উঠিল ও ফকিরকে অনেক লোকের নিকট লইয়া গিয়াও ব্যর্থ হইয়া ফিরিল। অবশেষে নৈরাশ হইয়া একজন‪#‎দানবীর_ব্যাক্তির_কবরের_নিকট_গিয়া‬ (!) সমস্ত কথা তাহাকে শুনাইল। রাত্রি বেলায় সেই লোকটি কবরওয়ালাকে স্বপ্নে দেখিল যে, সে বলিতেছে, আমি_তোমার_যাবতীয়_অভিযোগ_শুনিয়াছি(!), কিন্তু বলিবার অনুমতি দেওয়া হয় নাই। তুমি আমার ঘরে গিয়া পরিবারস্থ লোকদিগকে বল ঘরের অমুক অংশে যেখানে চুলা রহিয়াছে, উহার নিচে একটা চিনা বরতনে পাঁচশত আশরাফী রহিয়াছে তাহারা যেন উঠাইয়া সেই ফকিরকে দিয়া দেয়”।
ফাজায়েলে সাদাকাত, মাওলানা জাকারিয়া সাহারানপুরি; অনুবাদক ছাখাওয়াত উল্লাহ; ২য় খণ্ড পৃষ্ঠা নঃ- ৩২২; তাবলিগী কুতুবখানা ১৪২৬ হিজরী।
___________________________
মন্তব্যঃ নেককার লোকদের কবরের কাছে গিয়ে তাদের কাছে সাহায্য চাওয়া, দুয়া করা, এটাই হচ্ছে কবর-মাযার পূজা। জাকারিয়া সাহেব – ফাযায়েলে সাদাকাত নাম দিয়ে ভুয়া কাহিনী প্রচার করে এই শিক্ষাই দিলেন যে - এইভাবে কবরের কাছে প্রার্থনা করা জায়েজ আর এইভাবে কবরবাসীর কাছে সাহায্য চেয়ে নাকি উপকৃতও হওয়া যায় (নাউযুবিল্লাহ - ডাহা শেরেক)!
২. কবরের কাছে গিয়ে মৃত মানুষের কাছে সাহায্য চাওয়া, টাকা-পয়সা চাওয়া, খাবার চাওয়া, কারো বিরুদ্ধে বিচার চাওয়া, সুপারিশ বা দুয়া চাওয়া, রোগ হলে চিকিৎসা চাওয়া জায়েজ।***নাউযুবিল্লাহ, কবর পূজারীদের শিরকি কথা।‪#‎সূফীরা‬ হচ্ছে ৭২টি ভ্রান্ত ফেরকার অন্তর্ভুক্ত বেদাতী একটি দল, যাদের মাঝে অনেক বড়বড় শিরকি ও কুফুরী আকীদাহ আছে। সূফীদের অনেক তরীকাহ, দল ও ফেরকাহ আছে। তবে ভারত, বাংলাদেশ ও পাকিস্থানের সূফীবাদীরা মোটামুটি দেওবন্দী ও বেরেলবী এই দুইটি মাদ্রাসাকে কেন্দ্র করে ২টি বড় দলে ভাগ হয়েছে। এই দুই দলই নিজেদেরকে ‪#‎হানাফী‬ ও ‪#‎সুন্নী‬ দাবী করে, কিন্তু নিজেদের মাঝে তাদের অনেক ঝগড়া-বিবাদ আছে। তবে, এই ২ দলের মাঝেই কমন অনেক শিরকী ও কুফুরী আকীদাহ আছে, যার মাঝে ২টা ভ্রান্ত বিশ্বাস উপরে বর্ণনা করা হয়েছে।১. নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম জীবিত নাকি মৃত?আল্লাহর পক্ষ থেকে ঘোষণা, নবী সাঃ একজন মানুষ, সাথে সাথে তিনি আল্লাহর নবীঃ“(হে নবী) আপনি বলুনঃ আমিও তোমাদের মতই একজন মানুষ, আমার কাছে ওয়াহী করা হয় যে, তোমাদের ইলাহ হচ্ছেন একমাত্র ইলাহ।”সুরা কাহফঃ ১১০।আল্লাহর পক্ষ থেকে অগ্রীম ঘোষণা, নবী মৃত্যুবরণ করবেনঃ “ইন্নাকা মায়্যিতুন ওয়া ইন্নাহুম-মায়্যিতুন” – (হে নবী!) আপনিও মৃত্যু বরণ করবেন, আর তারাও মৃত্যু বরণ করবে।”সুরা আল-যুমার, আয়াত ৩০।সুরা আলে-ইমরানের আয়াত ও সহীহ বুখারী সহীহ স্পষ্ট হাদীস দিয়ে অকাট্যভাবে প্রমানিত হয় যে, রাসুল (সাঃ) মৃত্যুবরণ করেছেন এবং সমস্ত সাহাবী এই ‪#‎আকীদা‬ মেনে নিয়েছেনঃ আবূ সালামা (রহঃ) বলেন, নবী (সাঃ) সহধর্মিণী আয়িশা (রাঃ) আমাকে বলেছেনঃ[রাসূলুল্লাহ্ (সাঃ) এর মৃত্যুর খবর পেয়ে] আবূ বকর (রাঃ) ‘সুনহ’ এ অবস্থিত তাঁর বাড়ি থেকে ঘোড়ায় চড়ে চলে এলেন এবং নেমে মসজিদে প্রবেশ করলেন। সেখানে লোকদের সাথে কোন কথা না বলে আয়িশা (রাঃ) এর ঘরে প্রবেশ করে রাসূলুল্লাহ্ (সাঃ) এর দিকে অগ্রসর হলেন। তখন তিনি একখানি ‘হিবারাহ’ নামক ইয়ামানী চাদর দ্বারা আবৃত ছিলেন। আবূ বকর (রাঃ) রাসূলুল্লাহ্ (সাঃ) এর মুখমণ্ডল উম্মুক্ত করে তাঁর উপর ঝুকে পড়লেন এবং চুমু খেলেন, তারপর কাঁদতে লাগলেন এবং বললেন, হে আল্লাহর নবী! আমার পিতা আপনার জন্য কুরবান হোক। আল্লাহ আপনার জন্য দুইটি ‪#‎মৃত্যু‬ একত্রিত করবেন না । তবে যে #মৃত্যু আপনার জন্য নির্ধারিত ছিল তা তো আপনি কবুল করেছেন। আবূ সালামা (রহঃ) বলেন, আবদুল্লা ইবনে আব্বাস (রাঃ) আমাকে খবর দিয়েছেন যে, (তারপর) আবূ বকর (রাঃ) বেরিয়ে এলেন। তখন উমর (রাঃ) লোকদের সাথে কথা বলছিলেন। আবূ বকর (রাঃ) তাঁকে বললেন, বসে পড়ুন। তিনি তা মানলেন না। আবূ বকর (রাঃ) তাঁকে বললেন, বসে পড়ুন, তিনি তা মানলেন না। তখন আবূ বকর (রাঃ) কালিমা-ই-শাহাদাতের দ্বারা (বক্তব্য) আরম্ভ করলেন। লোকেরা উমর (রাঃ) কে ছেড়ে তাঁর দিকে আকৃষ্ট হন। আবূ বকর (রাঃ) বললেনঃ আম্‌মা বাআ’দু (অতঃপর) তোমাদের মধ্যে যারা মুহাম্মদ (সাঃ) এর পূজা করতে, জেনে রাখ মুহাম্মদ (সাঃ) সত্যিই মৃত্যুবরণ করেছেন। আর যারা মহান আল্লাহর ইবাদত করতে, তারা জেনে রাখ, নিশ্চয়ই আল্লাহ্‌ চিরঞ্জীব, তাঁর কোন মৃত্যু নেই। (অতঃপর আবু বকর রাঃ রাসুল সাঃ যে মৃত্যুবরণ করবেন এই কথার দলীল হিসেবে বলেন) মহান আল্লাহ্ ইরশাদ করেছেনঃ“মুহাম্মাদ, তিনিতো আল্লাহর রাসুল ছাড়া আর কিছু নন, তার পূর্বেও অনেক রাসুল মৃত্যু বরণ করেছেন। এখন তিনি যদি মৃত্যুবরণ করেন বা নিহত হন তোমরা কি তোমাদের পূর্ব অবস্থায় (কুফুরীতে) ফিরে যাবে? প্রকৃতপক্ষে যেই ব্যক্তি তার পূর্বের অবস্থায় ফিরে যাবে সে আল্লাহর কোন ক্ষতি করতে পারবেনা। আল্লাহ অচিরেই কৃতজ্ঞদেরকে প্রতিদান দিবেন।”সুরা আলে ইমরান, আয়াত ১৪৪।আল্লাহ্‌র কসম, মনে হচ্ছিল যেন আবূ বক্‌র (রা.)-এর তিলাওয়াত করার পূর্ব পর্যন্ত লোকদের জানাই ছিল না যে, আল্লাহপাক এই আয়াত নাযিল করেছিলেন। এখনই যেন লোকেরা আয়াতখানি তার কাছ থেকে শুনতে পেলেন। প্রতিটি মানুষকেই তখন ঐ আয়াত তিলাওয়াত করতে শোনা গেল।সহিহ আল-বুখারী, জানাযা অধ্যায়, খন্ড ২, অধ্যায় ২৩, হাদিস ৩৩৩।বিঃদ্রঃ মানুষের জীবন দুই প্রকার, একটা মৃত্যুর আগে আরেকটা পরে, যাকে পরকাল বা আখেরাত বলা হয়। আর কবর থেকে নিয়ে কিয়ামতে হাশর হওয়া পর্যন্ত জীবনকে “বরযখের জীবন” বা পর্দার জীবন বলা হয়। মানুষ মারা গেলে তার দুনিয়ার জীবন শেষ হয়ে যায়, আর বরযখের জীবন শুরু হয়, যা দুনিয়ার জীবন থেকে আলাদা। আর ঐ কবরের জীবন কেমন, কিরকম এটা বুঝা আমাদের পক্ষে সম্ভব না। সে সম্পর্কে কুরআন হাদীসে আমাদের যতটুকু জানানো হয়েছে আমরা ততটুকু কোনোরকম প্রশ্ন ছাড়াই ইমান আনবো। কিন্তু কোনো প্রকার ব্যাখ্যা বিশ্লেষণ বা অতিরিক্ত প্রশ্ন করবোনা। এটাই হলো ইমান বিল গায়েব – অদৃশ্যে বিশ্বাস।রাসুলুল্লাহ (সাঃ) কে আমাদের দুরুদগুলো ফেরশতারা পোঁছে দেন, আমাদের দুনিয়ার জীবনের কিছু কথা আমাদের মৃত আত্মীয় স্বজনদের কাছে বলা হয়, পরিচিত মৃত ব্যাক্তিদের আত্মাদের মাঝে দেখা সাক্ষাত হয়, অনেক মৃত ব্যাক্তিকে কবরে শাস্তি দেওয়া হয়, - এইসবগুলো সহীহ হাদীস দ্বারা প্রমানিত। আমরা এইগুলো বিশ্বাস করবো, কিন্তু ব্যাখ্যা করা বা দুনিয়ার জীবনের সাথে তুলনা করার চেষ্টা করবোনা।__________________________২. নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ও অন্য মৃত ব্যক্তিদের কাছে সাহায চাওয়া শিরকঃ এতোক্ষণ আলোচনা দিয়ে সরাসরি ক্বুরানের আয়াত ও স্পষ্ট সহীহ হাদীস দিয়ে প্রমান যে, রাসুল সাঃ মৃত্যুবরণ করেছেন। এবার স্পষ্ট প্রমান দেখুন – রাসুল সাঃ এর মৃত্যুর পরে কোন একজন সাহাবা রাসুল সাঃ এর কাছে কোন সাহায্য চাইতেন না। কারণ মৃত মানুষের কাছে দুয়া করা বা সাহায্য চাওয়া হচ্ছে শিরক। আর একেই কবর পূজা বলা হচ্ছে, কারণ এরা কবরওয়ালাকে আল্লাহর ক্ষমতার সমান মনে করে তাঁদের কাছে সাহায্য চায় বা দুয়া করে।উমর ইবন খাত্তাব (রাঃ) অনাবৃষ্টির সময় আব্বাস ইবন আবদুল মুত্তালিব (রাঃ) (যিনি নবী সাঃ এর আপন চাচা ছিলেন) তাঁর উসীলা দিয়ে বৃষ্টির জন্য দুআ’ করতেন এবং বলতেন, হে আল্লাহ্! (প্রথমে) আমরা আমাদের রাসূলুল্লাহ্‌ (সা) এর উসিলা দিয়ে দোয়া করতাম এবং আপনি বৃষ্টি দান করতেন। এখন আমরা আমাদের রাসূলুল্লাহ্‌ (সাঃ) এর ‪#‎চাচার‬ উসিলা দিয়ে দুআ’ করছি, আপনি আমাদেরকে বৃষ্টি দান করুন। বর্ণনাকারী বলেন, দুআ’র সাথে সাথেই বৃষ্টি বর্ষিত হতো।” সহিহ বুখারী, খন্ড ২, বৃষ্টির জন্য দুআ অধ্যায়ঃ ১৭, হাদীস নং- ১২৩।উপরের এই সহিহ হাদীস ও হাদীস থেকে শিক্ষার দিকে একটু মনোযোগ দিয়ে লক্ষ্য করুনঃ১. উমার (রাঃ) এর মতো এতো বড় জ্ঞানী সাহাবী – তিনি ক্বুরান হাদীস থেকে এটা বুঝেছিলেন যে, রাসুল সাঃ এর মৃত্যুর পরে তাঁর কবরের কাছে গিয়ে বলা যাবেনা যে, হে নবী আমরা বড় কষ্টে আছি, আপনি আমাদের জন্য আল্লাহর কাছে দুয়া করুন। কারণ মৃত্যুর পরে কবরবাসীরা দুনিয়ার মানুষের কথা শুনতে পারেনা, তবে বিশেষ বিশেষ কিছু ঘটনা ছাড়া। যেমন বদরের যুদ্ধে নিহতদেরকে আল্লাহ নবী (সাঃ) এর তিরষ্কারমূলক কথা গুলো শুনিয়েছিলেন।অথবা উমার (রাঃ) ডাইরেক্ট নবীর কাছে গিয়ে বৃষ্টি চেয়ে কবর পূজারীদের মতো শিরকি কাজও করেন নি।২. রাসুল (সাঃ) মৃত্যুর পর সাহাবারা রাসুল সাঃ এর উসীলা দিয়ে দুয়া করেন নি। বরং, তারা রাসুল সাঃ এর জীবিত চাচা, দুর্বল ব্যক্তি ও শিশুদের উসীলা দিয়ে আল্লাহর কাছে দুয়া করেছেন। এথেকে প্রমানিত হয়, হে আল্লাহ আমাকে নবীর উসীলায় মাফ করো, নবীর কদম মুবারক (পা) বা স্যান্ডেলের উসীলায়, নবীর রওজা (কবরের) উসীলাম আমার দুয়া কবুল করো – এই সমস্ত কথা বলা সম্পূর্ণ বাতিল ও ভ্রান্ত। এই হারাম উসীলা দিয়ে যে দুয়া করবে সে বেদাত করলো, আর রাসুল সাঃ বলেছেন, “প্রত্যেক বেদাত জাহান্নামে যাবে।”এবার ক্বুরান-হাদীসের বাণীর সাথে বর্তমানে বেদাতী মুশরেকদের আকীদাহ তুলনা করে দেখুন – যারা নবী সাঃ এর সাথে কথা বলার, তাঁর সাথে হ্যান্ডশেক করার, তাঁকে ডাক দিয়ে কবর থেকে বের করে ফেলার মতো‪#‎ভুয়া‬ কেরামতির কথা বলে বেড়ায়। অথবা বিপদে-আপদে, রোগের সময়ে, টাকা-পয়সা, বিচার, ইত্যাদি জিনিস আল্লাহর কাছে না চেয়ে নবী (সাঃ) এর কবরের কাছে চেয়ে কবর পূজার মতো জঘনয় শিরকি কাজ করে বেড়ায়।বাংলাদেশে সবচাইতে বড় ‪#‎দেওবন্দী‬ মাদ্রাসা, চট্টগ্রাম হাটহাজারী মাদ্রাসার প্রিন্সিপাল, আমাদের দেশে দেওবন্দীদের সবচাইতে বড় আলেম ও হেফাজতে ইসলামীর আমীর, মাওলানা আহমাদ শফি সাহেব তার কিতাব ‘ইরশাদাতে মুরশিদীতে’ লিখেছেনঃ“হোসাইন আহমদ মাদানীকে মদীনায় তার ছাত্ররা প্রশ্ন করলো, রাসুল সাঃ কি কবরে জীবিত?তিনি বললেন, আলমে মেছালীতে রাসুল সাঃ জীবিত, কিন্ত ছাত্ররা দলিল প্রমাণাদী পেশ করলো যে কোরআনে সূরা যুমারের ৩০নং আয়াতে বলা হয়েছে“(হে নবী!) নিশ্চয় আপনি মৃত্যুবরণ করবেন আর তারাও মৃত্যুবরণ করবে”।মাদানী ছাত্রদেরকে বিভিন্ন দলিলের মাধ্যমে বুঝাতে চেষ্টা করলেন, কিন্ত তারা বুঝতে অপ্রস্তুত, এরপর মাদানী ছাত্রদেরকে নিয়ে রওযায়ে আতহারের কাছে নিয়ে গেলেন এবং হাত দিয়ে ইশারা করলেন, এই ইশারাতে রাসুল সাঃ রওযা থেকে মাথা উঠিয়ে সকলকে দেখা দিয়ে আবার মাটির নিচে লুকিয়ে গেলেন”!!?ইরশাদাতে মুরশিদী, পৃষ্ঠা ৪২।মন্তব্যঃ ডাহা বানোয়াট, মিথ্যা কাহিনী দিয়ে মৃত্যুর পরেও কোন ব্যক্তি দুনিয়াতে আসে - এই কুফুরী আকীদা বয়ান করা হয়েছে। এছাড়া একজন মানুষের ডাকে রাসুল সাঃ কবর থেকে বের হয়ে এসেছেন – এইরকম ভুয়া কাহিনী বলে রাসুল সাঃ এর সম্মান ও মর্যাদারও হানি করা হয়েছে (নাউযুবিল্লাহ)।আমাদের দেশে অতি পরিচিত তাবলীগ জামাতের লোকেরা দেওবন্দ মাদ্রাসার অনুসারী, এইজন্য তাদের মাঝে এইসমস্ত পচা শিরকি আকীদাহ পাওয়া যায়। যেমন তাবলীগের লেখক, জাকারিয়া সাহেবের লেখা কিছু বানোয়াট শিরকি কাহিনী শিরকিঃ‪#‎উদাহরণ‬ – ১ফাজায়েলে হজ্জ, ১৩৮ পৃষ্ঠা।মূল লেখক – মাওলানা জাকারিয়া সাহেব, কাকরাইলে মুরুব্বীদের অনুমতি ও দোয়া নিয়ে অনুবাদ করেছেন – মাওলানা সাখাওয়াত উল্লাহ, প্রকাশনী – তাবলিগি কুতুবখানা ৫০ বাংলাবাজার ঢাকা, ফোন – ৭১২৩৫৩৮।“শায়েখ আবুল খায়ের বলেন, একবার মদীনা মোনাওয়ারায় হাজির হইয়া পাঁচ দিন পর্যন্ত আমাকে উপবাস থাকতে হয়। খাওয়ার জন্য কিছুই না পেয়ে অবশেষে আমি হুজুর (রাসুল সাঃ কে তারা হুজুর নামে ডাকে, এই নামে ডাকা জায়েজ না) এবং শায়ইখানের (আবু বকর ও উমার রাঃ কে শায়খান বলা হয়) কবরের মধ্যে সালাম পড়িয়া আরজ করলাম, হে আল্লাহর রাসুল! আমি আজ রাতে আপনার মেহমান হবো।এই কথা আরজ করে মিম্বর শরীফের নিকট গিয়ে আমি শুইয়া পড়লাম। স্বপ্নে দেখি, হুজুরে পাক (সাঃ) তাশরীফ এনেছেন। ডানে হযরত আবু বকর, বাম দিকে হজরত ওমর এবং সামনে হজরত আলী রাঃ । হযরত আলী রাঃ আমাকে ডেকে বলেন, এই দেখ, হুজুর সাঃ তাশরীফ এনেছেন । আমি উঠা মাত্রই মহানবী সাঃ আমাকে একটা রুটি দিলেন, আমি অর্ধেক খেয়ে ফেলি তারপর যখন আমার চোখ খুলিল তখন আমার হাতে বাকী অর্ধেক ছিল (রুটি অবশিষ্টাংশ) ।সূত্রঃ ফাজায়েলে হজ্জ, ১৩৮ পৃষ্ঠা।সম্মানিত মুসলিম ভাই ও বোনেরা!!=> আল্লাহকে ছেড়ে মৃত্যুর পর নবীর রওজায় (কবরে) গিয়ে খাদ্যের জন্য দুয়া করা স্পষ্ট শিরক নয় কি?=> মৃতুর পর নবী কবরে থেকেও খাওয়াতে পারেন এ আক্বিদাহ পোষন করা শিরক নয় কি??=> এই রকম শিরকী আকিদাহ কি মানুষকে জান্নাতের দিকে নিয়ে যায়, নাকি জাহান্নামের দিকে???অথচ মহান আল্লাহ সুবহানাহু তায়ালা বলেছেনঃ “ভূ-পৃষ্ঠে বিচরণকারী সকলের জীবিকার দায়িত্ব আল্লাহর।”সূরা হুদঃ ৬।______________________উদাহরণ – ২“তাবলীগ জামাতের” লেখক মাওলানা জাকারিয়া কান্ধলবী সাহেব কর্তৃক লিখিত, তাবলিগ জামাতের মূল পাঠ্যসূচি, ফাযায়েলে সাদাকাতে কবর-মাযার পূজার শিক্ষাঃ“মিশরে একজন নেক বখত লোক ছিলেন। অভাবগ্রস্ত হইয়া কোন এক লোক তাহার নিকট আসিলে তিনি চাঁদা উসুল করিয়া তাহাকে দিয়া দিতেন। একদা জনৈক ফকির তাহার নিকট আসিয়া বলিল আমার একটা ছেলে হইয়াছে, তাহার এছলাহের ব্যবস্থার জন্য আমার নিকট কিছুই নাই। এই ব্যাক্তি উঠিল ও ফকিরকে অনেক লোকের নিকট লইয়া গিয়াও ব্যর্থ হইয়া ফিরিল। অবশেষে নৈরাশ হইয়া একজন‪#‎দানবীর_ব্যাক্তির_কবরের_নিকট_গিয়া‬ (!) সমস্ত কথা তাহাকে শুনাইল। রাত্রি বেলায় সেই লোকটি কবরওয়ালাকে স্বপ্নে দেখিল যে, সে বলিতেছে, আমি_তোমার_যাবতীয়_অভিযোগ_শুনিয়াছি(!), কিন্তু বলিবার অনুমতি দেওয়া হয় নাই। তুমি আমার ঘরে গিয়া পরিবারস্থ লোকদিগকে বল ঘরের অমুক অংশে যেখানে চুলা রহিয়াছে, উহার নিচে একটা চিনা বরতনে পাঁচশত আশরাফী রহিয়াছে তাহারা যেন উঠাইয়া সেই ফকিরকে দিয়া দেয়”।ফাজায়েলে সাদাকাত, মাওলানা জাকারিয়া সাহারানপুরি; অনুবাদক ছাখাওয়াত উল্লাহ; ২য় খণ্ড পৃষ্ঠা নঃ- ৩২২; তাবলিগী কুতুবখানা ১৪২৬ হিজরী।___________________________
মন্তব্যঃ নেককার লোকদের কবরের কাছে গিয়ে তাদের কাছে সাহায্য চাওয়া, দুয়া করা, এটাই হচ্ছে কবর-মাযার পূজা। জাকারিয়া সাহেব – ফাযায়েলে সাদাকাত নাম দিয়ে ভুয়া কাহিনী প্রচার করে এই শিক্ষাই দিলেন যে - এইভাবে কবরের কাছে প্রার্থনা করা জায়েজ আর এইভাবে কবরবাসীর কাছে সাহায্য চেয়ে নাকি উপকৃতও হওয়া যায় (নাউযুবিল্লাহ - ডাহা শেরেক)!২. কবরের কাছে গিয়ে মৃত মানুষের কাছে সাহায্য চাওয়া, টাকা-পয়সা চাওয়া, খাবার চাওয়া, কারো বিরুদ্ধে বিচার চাওয়া, সুপারিশ বা দুয়া চাওয়া, রোগ হলে চিকিৎসা চাওয়া জায়েজ।***নাউযুবিল্লাহ, কবর পূজারীদের শিরকি কথা।‪#‎সূফীরা‬ হচ্ছে ৭২টি ভ্রান্ত ফেরকার অন্তর্ভুক্ত বেদাতী একটি দল, যাদের মাঝে অনেক বড়বড় শিরকি ও কুফুরী আকীদাহ আছে। সূফীদের অনেক তরীকাহ, দল ও ফেরকাহ আছে। তবে ভারত, বাংলাদেশ ও পাকিস্থানের সূফীবাদীরা মোটামুটি দেওবন্দী ও বেরেলবী এই দুইটি মাদ্রাসাকে কেন্দ্র করে ২টি বড় দলে ভাগ হয়েছে। এই দুই দলই নিজেদেরকে ‪#‎হানাফী‬ ও ‪#‎সুন্নী‬ দাবী করে, কিন্তু নিজেদের মাঝে তাদের অনেক ঝগড়া-বিবাদ আছে। তবে, এই ২ দলের মাঝেই কমন অনেক শিরকী ও কুফুরী আকীদাহ আছে, যার মাঝে ২টা ভ্রান্ত বিশ্বাস উপরে বর্ণনা করা হয়েছে।১. নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম জীবিত নাকি মৃত?আল্লাহর পক্ষ থেকে ঘোষণা, নবী সাঃ একজন মানুষ, সাথে সাথে তিনি আল্লাহর নবীঃ“(হে নবী) আপনি বলুনঃ আমিও তোমাদের মতই একজন মানুষ, আমার কাছে ওয়াহী করা হয় যে, তোমাদের ইলাহ হচ্ছেন একমাত্র ইলাহ।”সুরা কাহফঃ ১১০।আল্লাহর পক্ষ থেকে অগ্রীম ঘোষণা, নবী মৃত্যুবরণ করবেনঃ “ইন্নাকা মায়্যিতুন ওয়া ইন্নাহুম-মায়্যিতুন” – (হে নবী!) আপনিও মৃত্যু বরণ করবেন, আর তারাও মৃত্যু বরণ করবে।”সুরা আল-যুমার, আয়াত ৩০।সুরা আলে-ইমরানের আয়াত ও সহীহ বুখারী সহীহ স্পষ্ট হাদীস দিয়ে অকাট্যভাবে প্রমানিত হয় যে, রাসুল (সাঃ) মৃত্যুবরণ করেছেন এবং সমস্ত সাহাবী এই ‪#‎আকীদা‬ মেনে নিয়েছেনঃ আবূ সালামা (রহঃ) বলেন, নবী (সাঃ) সহধর্মিণী আয়িশা (রাঃ) আমাকে বলেছেনঃ[রাসূলুল্লাহ্ (সাঃ) এর মৃত্যুর খবর পেয়ে] আবূ বকর (রাঃ) ‘সুনহ’ এ অবস্থিত তাঁর বাড়ি থেকে ঘোড়ায় চড়ে চলে এলেন এবং নেমে মসজিদে প্রবেশ করলেন। সেখানে লোকদের সাথে কোন কথা না বলে আয়িশা (রাঃ) এর ঘরে প্রবেশ করে রাসূলুল্লাহ্ (সাঃ) এর দিকে অগ্রসর হলেন। তখন তিনি একখানি ‘হিবারাহ’ নামক ইয়ামানী চাদর দ্বারা আবৃত ছিলেন। আবূ বকর (রাঃ) রাসূলুল্লাহ্ (সাঃ) এর মুখমণ্ডল উম্মুক্ত করে তাঁর উপর ঝুকে পড়লেন এবং চুমু খেলেন, তারপর কাঁদতে লাগলেন এবং বললেন, হে আল্লাহর নবী! আমার পিতা আপনার জন্য কুরবান হোক। আল্লাহ আপনার জন্য দুইটি ‪#‎মৃত্যু‬ একত্রিত করবেন না । তবে যে #মৃত্যু আপনার জন্য নির্ধারিত ছিল তা তো আপনি কবুল করেছেন। আবূ সালামা (রহঃ) বলেন, আবদুল্লা ইবনে আব্বাস (রাঃ) আমাকে খবর দিয়েছেন যে, (তারপর) আবূ বকর (রাঃ) বেরিয়ে এলেন। তখন উমর (রাঃ) লোকদের সাথে কথা বলছিলেন। আবূ বকর (রাঃ) তাঁকে বললেন, বসে পড়ুন। তিনি তা মানলেন না। আবূ বকর (রাঃ) তাঁকে বললেন, বসে পড়ুন, তিনি তা মানলেন না। তখন আবূ বকর (রাঃ) কালিমা-ই-শাহাদাতের দ্বারা (বক্তব্য) আরম্ভ করলেন। লোকেরা উমর (রাঃ) কে ছেড়ে তাঁর দিকে আকৃষ্ট হন। আবূ বকর (রাঃ) বললেনঃ আম্‌মা বাআ’দু (অতঃপর) তোমাদের মধ্যে যারা মুহাম্মদ (সাঃ) এর পূজা করতে, জেনে রাখ মুহাম্মদ (সাঃ) সত্যিই মৃত্যুবরণ করেছেন। আর যারা মহান আল্লাহর ইবাদত করতে, তারা জেনে রাখ, নিশ্চয়ই আল্লাহ্‌ চিরঞ্জীব, তাঁর কোন মৃত্যু নেই। (অতঃপর আবু বকর রাঃ রাসুল সাঃ যে মৃত্যুবরণ করবেন এই কথার দলীল হিসেবে বলেন) মহান আল্লাহ্ ইরশাদ করেছেনঃ“মুহাম্মাদ, তিনিতো আল্লাহর রাসুল ছাড়া আর কিছু নন, তার পূর্বেও অনেক রাসুল মৃত্যু বরণ করেছেন। এখন তিনি যদি মৃত্যুবরণ করেন বা নিহত হন তোমরা কি তোমাদের পূর্ব অবস্থায় (কুফুরীতে) ফিরে যাবে? প্রকৃতপক্ষে যেই ব্যক্তি তার পূর্বের অবস্থায় ফিরে যাবে সে আল্লাহর কোন ক্ষতি করতে পারবেনা। আল্লাহ অচিরেই কৃতজ্ঞদেরকে প্রতিদান দিবেন।”সুরা আলে ইমরান, আয়াত ১৪৪।আল্লাহ্‌র কসম, মনে হচ্ছিল যেন আবূ বক্‌র (রা.)-এর তিলাওয়াত করার পূর্ব পর্যন্ত লোকদের জানাই ছিল না যে, আল্লাহপাক এই আয়াত নাযিল করেছিলেন। এখনই যেন লোকেরা আয়াতখানি তার কাছ থেকে শুনতে পেলেন। প্রতিটি মানুষকেই তখন ঐ আয়াত তিলাওয়াত করতে শোনা গেল।সহিহ আল-বুখারী, জানাযা অধ্যায়, খন্ড ২, অধ্যায় ২৩, হাদিস ৩৩৩।বিঃদ্রঃ মানুষের জীবন দুই প্রকার, একটা মৃত্যুর আগে আরেকটা পরে, যাকে পরকাল বা আখেরাত বলা হয়। আর কবর থেকে নিয়ে কিয়ামতে হাশর হওয়া পর্যন্ত জীবনকে “বরযখের জীবন” বা পর্দার জীবন বলা হয়। মানুষ মারা গেলে তার দুনিয়ার জীবন শেষ হয়ে যায়, আর বরযখের জীবন শুরু হয়, যা দুনিয়ার জীবন থেকে আলাদা। আর ঐ কবরের জীবন কেমন, কিরকম এটা বুঝা আমাদের পক্ষে সম্ভব না। সে সম্পর্কে কুরআন হাদীসে আমাদের যতটুকু জানানো হয়েছে আমরা ততটুকু কোনোরকম প্রশ্ন ছাড়াই ইমান আনবো। কিন্তু কোনো প্রকার ব্যাখ্যা বিশ্লেষণ বা অতিরিক্ত প্রশ্ন করবোনা। এটাই হলো ইমান বিল গায়েব – অদৃশ্যে বিশ্বাস।রাসুলুল্লাহ (সাঃ) কে আমাদের দুরুদগুলো ফেরশতারা পোঁছে দেন, আমাদের দুনিয়ার জীবনের কিছু কথা আমাদের মৃত আত্মীয় স্বজনদের কাছে বলা হয়, পরিচিত মৃত ব্যাক্তিদের আত্মাদের মাঝে দেখা সাক্ষাত হয়, অনেক মৃত ব্যাক্তিকে কবরে শাস্তি দেওয়া হয়, - এইসবগুলো সহীহ হাদীস দ্বারা প্রমানিত। আমরা এইগুলো বিশ্বাস করবো, কিন্তু ব্যাখ্যা করা বা দুনিয়ার জীবনের সাথে তুলনা করার চেষ্টা করবোনা।__________________________২. নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ও অন্য মৃত ব্যক্তিদের কাছে সাহায চাওয়া শিরকঃ এতোক্ষণ আলোচনা দিয়ে সরাসরি ক্বুরানের আয়াত ও স্পষ্ট সহীহ হাদীস দিয়ে প্রমান যে, রাসুল সাঃ মৃত্যুবরণ করেছেন। এবার স্পষ্ট প্রমান দেখুন – রাসুল সাঃ এর মৃত্যুর পরে কোন একজন সাহাবা রাসুল সাঃ এর কাছে কোন সাহায্য চাইতেন না। কারণ মৃত মানুষের কাছে দুয়া করা বা সাহায্য চাওয়া হচ্ছে শিরক। আর একেই কবর পূজা বলা হচ্ছে, কারণ এরা কবরওয়ালাকে আল্লাহর ক্ষমতার সমান মনে করে তাঁদের কাছে সাহায্য চায় বা দুয়া করে।উমর ইবন খাত্তাব (রাঃ) অনাবৃষ্টির সময় আব্বাস ইবন আবদুল মুত্তালিব (রাঃ) (যিনি নবী সাঃ এর আপন চাচা ছিলেন) তাঁর উসীলা দিয়ে বৃষ্টির জন্য দুআ’ করতেন এবং বলতেন, হে আল্লাহ্! (প্রথমে) আমরা আমাদের রাসূলুল্লাহ্‌ (সা) এর উসিলা দিয়ে দোয়া করতাম এবং আপনি বৃষ্টি দান করতেন। এখন আমরা আমাদের রাসূলুল্লাহ্‌ (সাঃ) এর ‪#‎চাচার‬ উসিলা দিয়ে দুআ’ করছি, আপনি আমাদেরকে বৃষ্টি দান করুন। বর্ণনাকারী বলেন, দুআ’র সাথে সাথেই বৃষ্টি বর্ষিত হতো।” সহিহ বুখারী, খন্ড ২, বৃষ্টির জন্য দুআ অধ্যায়ঃ ১৭, হাদীস নং- ১২৩।উপরের এই সহিহ হাদীস ও হাদীস থেকে শিক্ষার দিকে একটু মনোযোগ দিয়ে লক্ষ্য করুনঃ১. উমার (রাঃ) এর মতো এতো বড় জ্ঞানী সাহাবী – তিনি ক্বুরান হাদীস থেকে এটা বুঝেছিলেন যে, রাসুল সাঃ এর মৃত্যুর পরে তাঁর কবরের কাছে গিয়ে বলা যাবেনা যে, হে নবী আমরা বড় কষ্টে আছি, আপনি আমাদের জন্য আল্লাহর কাছে দুয়া করুন। কারণ মৃত্যুর পরে কবরবাসীরা দুনিয়ার মানুষের কথা শুনতে পারেনা, তবে বিশেষ বিশেষ কিছু ঘটনা ছাড়া। যেমন বদরের যুদ্ধে নিহতদেরকে আল্লাহ নবী (সাঃ) এর তিরষ্কারমূলক কথা গুলো শুনিয়েছিলেন।অথবা উমার (রাঃ) ডাইরেক্ট নবীর কাছে গিয়ে বৃষ্টি চেয়ে কবর পূজারীদের মতো শিরকি কাজও করেন নি।২. রাসুল (সাঃ) মৃত্যুর পর সাহাবারা রাসুল সাঃ এর উসীলা দিয়ে দুয়া করেন নি। বরং, তারা রাসুল সাঃ এর জীবিত চাচা, দুর্বল ব্যক্তি ও শিশুদের উসীলা দিয়ে আল্লাহর কাছে দুয়া করেছেন। এথেকে প্রমানিত হয়, হে আল্লাহ আমাকে নবীর উসীলায় মাফ করো, নবীর কদম মুবারক (পা) বা স্যান্ডেলের উসীলায়, নবীর রওজা (কবরের) উসীলাম আমার দুয়া কবুল করো – এই সমস্ত কথা বলা সম্পূর্ণ বাতিল ও ভ্রান্ত। এই হারাম উসীলা দিয়ে যে দুয়া করবে সে বেদাত করলো, আর রাসুল সাঃ বলেছেন, “প্রত্যেক বেদাত জাহান্নামে যাবে।”এবার ক্বুরান-হাদীসের বাণীর সাথে বর্তমানে বেদাতী মুশরেকদের আকীদাহ তুলনা করে দেখুন – যারা নবী সাঃ এর সাথে কথা বলার, তাঁর সাথে হ্যান্ডশেক করার, তাঁকে ডাক দিয়ে কবর থেকে বের করে ফেলার মতো‪#‎ভুয়া‬ কেরামতির কথা বলে বেড়ায়। অথবা বিপদে-আপদে, রোগের সময়ে, টাকা-পয়সা, বিচার, ইত্যাদি জিনিস আল্লাহর কাছে না চেয়ে নবী (সাঃ) এর কবরের কাছে চেয়ে কবর পূজার মতো জঘনয় শিরকি কাজ করে বেড়ায়।বাংলাদেশে সবচাইতে বড় ‪#‎দেওবন্দী‬ মাদ্রাসা, চট্টগ্রাম হাটহাজারী মাদ্রাসার প্রিন্সিপাল, আমাদের দেশে দেওবন্দীদের সবচাইতে বড় আলেম ও হেফাজতে ইসলামীর আমীর, মাওলানা আহমাদ শফি সাহেব তার কিতাব ‘ইরশাদাতে মুরশিদীতে’ লিখেছেনঃ“হোসাইন আহমদ মাদানীকে মদীনায় তার ছাত্ররা প্রশ্ন করলো, রাসুল সাঃ কি কবরে জীবিত?তিনি বললেন, আলমে মেছালীতে রাসুল সাঃ জীবিত, কিন্ত ছাত্ররা দলিল প্রমাণাদী পেশ করলো যে কোরআনে সূরা যুমারের ৩০নং আয়াতে বলা হয়েছে“(হে নবী!) নিশ্চয় আপনি মৃত্যুবরণ করবেন আর তারাও মৃত্যুবরণ করবে”।মাদানী ছাত্রদেরকে বিভিন্ন দলিলের মাধ্যমে বুঝাতে চেষ্টা করলেন, কিন্ত তারা বুঝতে অপ্রস্তুত, এরপর মাদানী ছাত্রদেরকে নিয়ে রওযায়ে আতহারের কাছে নিয়ে গেলেন এবং হাত দিয়ে ইশারা করলেন, এই ইশারাতে রাসুল সাঃ রওযা থেকে মাথা উঠিয়ে সকলকে দেখা দিয়ে আবার মাটির নিচে লুকিয়ে গেলেন”!!?ইরশাদাতে মুরশিদী, পৃষ্ঠা ৪২।মন্তব্যঃ ডাহা বানোয়াট, মিথ্যা কাহিনী দিয়ে মৃত্যুর পরেও কোন ব্যক্তি দুনিয়াতে আসে - এই কুফুরী আকীদা বয়ান করা হয়েছে। এছাড়া একজন মানুষের ডাকে রাসুল সাঃ কবর থেকে বের হয়ে এসেছেন – এইরকম ভুয়া কাহিনী বলে রাসুল সাঃ এর সম্মান ও মর্যাদারও হানি করা হয়েছে (নাউযুবিল্লাহ)।আমাদের দেশে অতি পরিচিত তাবলীগ জামাতের লোকেরা দেওবন্দ মাদ্রাসার অনুসারী, এইজন্য তাদের মাঝে এইসমস্ত পচা শিরকি আকীদাহ পাওয়া যায়। যেমন তাবলীগের লেখক, জাকারিয়া সাহেবের লেখা কিছু বানোয়াট শিরকি কাহিনী শিরকিঃ‪#‎উদাহরণ‬ – ১ফাজায়েলে হজ্জ, ১৩৮ পৃষ্ঠা।মূল লেখক – মাওলানা জাকারিয়া সাহেব, কাকরাইলে মুরুব্বীদের অনুমতি ও দোয়া নিয়ে অনুবাদ করেছেন – মাওলানা সাখাওয়াত উল্লাহ, প্রকাশনী – তাবলিগি কুতুবখানা ৫০ বাংলাবাজার ঢাকা, ফোন – ৭১২৩৫৩৮।“শায়েখ আবুল খায়ের বলেন, একবার মদীনা মোনাওয়ারায় হাজির হইয়া পাঁচ দিন পর্যন্ত আমাকে উপবাস থাকতে হয়। খাওয়ার জন্য কিছুই না পেয়ে অবশেষে আমি হুজুর (রাসুল সাঃ কে তারা হুজুর নামে ডাকে, এই নামে ডাকা জায়েজ না) এবং শায়ইখানের (আবু বকর ও উমার রাঃ কে শায়খান বলা হয়) কবরের মধ্যে সালাম পড়িয়া আরজ করলাম, হে আল্লাহর রাসুল! আমি আজ রাতে আপনার মেহমান হবো।এই কথা আরজ করে মিম্বর শরীফের নিকট গিয়ে আমি শুইয়া পড়লাম। স্বপ্নে দেখি, হুজুরে পাক (সাঃ) তাশরীফ এনেছেন। ডানে হযরত আবু বকর, বাম দিকে হজরত ওমর এবং সামনে হজরত আলী রাঃ । হযরত আলী রাঃ আমাকে ডেকে বলেন, এই দেখ, হুজুর সাঃ তাশরীফ এনেছেন । আমি উঠা মাত্রই মহানবী সাঃ আমাকে একটা রুটি দিলেন, আমি অর্ধেক খেয়ে ফেলি তারপর যখন আমার চোখ খুলিল তখন আমার হাতে বাকী অর্ধেক ছিল (রুটি অবশিষ্টাংশ) ।সূত্রঃ ফাজায়েলে হজ্জ, ১৩৮ পৃষ্ঠা।সম্মানিত মুসলিম ভাই ও বোনেরা!!=> আল্লাহকে ছেড়ে মৃত্যুর পর নবীর রওজায় (কবরে) গিয়ে খাদ্যের জন্য দুয়া করা স্পষ্ট শিরক নয় কি?=> মৃতুর পর নবী কবরে থেকেও খাওয়াতে পারেন এ আক্বিদাহ পোষন করা শিরক নয় কি??=> এই রকম শিরকী আকিদাহ কি মানুষকে জান্নাতের দিকে নিয়ে যায়, নাকি জাহান্নামের দিকে???অথচ মহান আল্লাহ সুবহানাহু তায়ালা বলেছেনঃ “ভূ-পৃষ্ঠে বিচরণকারী সকলের জীবিকার দায়িত্ব আল্লাহর।”সূরা হুদঃ ৬।______________________উদাহরণ – ২“তাবলীগ জামাতের” লেখক মাওলানা জাকারিয়া কান্ধলবী সাহেব কর্তৃক লিখিত, তাবলিগ জামাতের মূল পাঠ্যসূচি, ফাযায়েলে সাদাকাতে কবর-মাযার পূজার শিক্ষাঃ“মিশরে একজন নেক বখত লোক ছিলেন। অভাবগ্রস্ত হইয়া কোন এক লোক তাহার নিকট আসিলে তিনি চাঁদা উসুল করিয়া তাহাকে দিয়া দিতেন। একদা জনৈক ফকির তাহার নিকট আসিয়া বলিল আমার একটা ছেলে হইয়াছে, তাহার এছলাহের ব্যবস্থার জন্য আমার নিকট কিছুই নাই। এই ব্যাক্তি উঠিল ও ফকিরকে অনেক লোকের নিকট লইয়া গিয়াও ব্যর্থ হইয়া ফিরিল। অবশেষে নৈরাশ হইয়া একজন‪#‎দানবীর_ব্যাক্তির_কবরের_নিকট_গিয়া‬ (!) সমস্ত কথা তাহাকে শুনাইল। রাত্রি বেলায় সেই লোকটি কবরওয়ালাকে স্বপ্নে দেখিল যে, সে বলিতেছে, আমি_তোমার_যাবতীয়_অভিযোগ_শুনিয়াছি(!), কিন্তু বলিবার অনুমতি দেওয়া হয় নাই। তুমি আমার ঘরে গিয়া পরিবারস্থ লোকদিগকে বল ঘরের অমুক অংশে যেখানে চুলা রহিয়াছে, উহার নিচে একটা চিনা বরতনে পাঁচশত আশরাফী রহিয়াছে তাহারা যেন উঠাইয়া সেই ফকিরকে দিয়া দেয়”।ফাজায়েলে সাদাকাত, মাওলানা জাকারিয়া সাহারানপুরি; অনুবাদক ছাখাওয়াত উল্লাহ; ২য় খণ্ড পৃষ্ঠা নঃ- ৩২২; তাবলিগী কুতুবখানা ১৪২৬ হিজরী।___________________________মন্তব্যঃ নেককার লোকদের কবরের কাছে গিয়ে তাদের কাছে সাহায্য চাওয়া, দুয়া করা, এটাই হচ্ছে কবর-মাযার পূজা। জাকারিয়া সাহেব – ফাযায়েলে সাদাকাত নাম দিয়ে ভুয়া কাহিনী প্রচার করে এই শিক্ষাই দিলেন যে - এইভাবে কবরের কাছে প্রার্থনা করা জায়েজ আর এইভাবে কবরবাসীর কাছে সাহায্য চেয়ে নাকি উপকৃতও হওয়া যায় (নাউযুবিল্লাহ - ডাহা শেরেক)!

No comments:

Post a Comment

Download AsPDF

Print Friendly and PDFPrint Friendly and PDFPrint Friendly and PDF
Related Posts Plugin for WordPress, Blogger...