"Unity of the Muslim Ummah" - এই শিরোনামে ডা. জাকির নায়েকের একটা ইংরেজী লেকচার অনুবাদ করে "মুসলিম উম্মাহর ঐক্য" নাম দিয়ে "তাওহীদ পাবলিকেশন্স" থেকে বই হিসেবে ছাপানো হয়েছে। অনুবাদ করেছেন হাফেজ রায়হান কাবীর বিন আব্দুর রাহমান। দাওরা হাদীস, মাদরাসা মুহাম্মাদীয়া আরাবীয়া। ডা. জাকির নায়েক যা বলেছেন, তার কিছু অংশ তুলে ধরা হলো। উল্লেখ্য, কোটেশান দিয়ে ডা. জাকির নায়েকের বক্তব্যের মূল অংশ এবং মন্তব্য দিয়ে তার উপরে আমার কিছু কথা পেশ করা হয়েছে।
.
(১) "আমি পাক্কা (১০০%) আহলে হাদীস, আপনারা ৮০% বা ৮৫% আহলে হাদীস।"
মন্তব্যঃ এটা অহংকার। আমাদের আলেমরা আহলুল হাদীসের আকিদাহর দিকে আহবান করেন, কিন্তু আজ পর্যন্ত কোন একজন আলেম দাবী করেন নি যে, তিনি ১০০% আহলে হাদীস। শায়খ সালেহ আল-ফাউজান হা'ফিজাহুল্লাহ অহংকার বশত নিজেকে সালাফী বলাকে নাজায়েজ বলে ফতোয়া দিয়েছেন। সেখানে অন্যদেরকে কম পার্সেন্টেজ দিয়ে নিজেকে ১০০% আহলে হাদীস দাবী করা কোন বুদ্ধিমানের কাজ হতে পারে?
.
(২) "সালাফীরা কয়েকভাগে বিভক্তঃ কুতুবী, সুরুরী, মাদখালী। সালাফীদের মাঝে এমন আরো অনেক ফেরকা রয়েছে।"
মন্তব্যঃ সালাফী কি, কুতুবী কি যারা বুঝেনা, এমন অজ্ঞ/বোকা লোকেরাই এমন কথা বলতে পারে। মূলত সালাফী দাওয়াহর বিরোধীতাকারী, যেমন মডারেট (ডা. ইয়াসির ক্বাদী), সূফী, পশ্চিমারা সালাফীদেরকে বিদআ'তীদের সাথে মিশিয়ে এমন ভাগ করে থাকে।
.
(৩) "ইউকের সালাফীরা কয়েকভাগে বিভক্ত এবং একদল আরেকদলকে কাফের বলে ফতোয়া দিচ্ছে।"
মন্তব্যঃ এটা মিথ্যা অপবাদ। ইউকেতে সালাফী দাবীদার কিছু ব্যক্তিরা একজন আরেকজনের সমালোচনা নিয়ে বাড়াবাড়িতে লিপ্ত, একথা সত্যি। কিন্তু সেখানে সালাফী দাবীদার কেউ কাউকে কাফের বলেনি।
.
(৪) ডা. জাকির নায়েক শায়খ নাসির উদ্দিন আলবানী রহিমাহুল্লাহর ভুল ধরেছেন এই বইয়ে। শায়খ আলবানী "সালাফী" নাম বলতে হবে, এটা বলে ঠিক বলেন নি। ডাক্তার সাহেব কাল্পনিক কথোপকথনের মাধ্যমে শায়খ আলবানীর কথাকে রদ্দ করেছেন।
মন্তব্যঃ পূর্বের কিংবা বর্তমানের কোন একজন আলেম সালাফী নামে পরিচয় দেওয়া নিয়ে আপত্তি করেছেন? ইমাম ইবনে তাইমিয়া, ইমাম আয-যাহাবী, শায়খ আব্দুল আ'জিজ বিন বাজ, আল্লাহ তাদের সকলের প্রতি রহম করুন, তাদের সকলেই বলেছেন, বিদআ'তীদের থেকে নিজেকে আলাদা করার জন্য সালাফী বলে পরিচয় দেওয়া যাবে, আর একজন অনুবাদ পড়ে ফতোয়া দানকারী, শিক্ষানবীশ শায়খ আলবানীর ভুল ধরছেন? আর তার অন্ধ অনুসারীরা ইলমের অভাবে তার কথাকে ক্বুরআন ও হাদীসের মতোই অভ্রান্ত মনে করে সাধারণ মানুষের মাঝে ব্যাপকভাবে প্রচার করছেন।
.
(৫) এছাড়া বইটিতে যেইভাবে হানাফী, শাফেয়ী বা মাযহাবের ব্যপারে ক্বুরআনের আয়াতগুলো জুড়ে দেওয়া হয়েছে, তা বিকৃতি। আমাদের আলেমরা ঢালাউভাবে মাযহাব কিংবা মাযহাবের অনুসারীদেরকে এইভাবে আক্রমন করেন না।
.
অনুধাবনঃ
- গণতান্ত্রিক দেশে যার যা খুশি বলার অধিকার রয়েছে, যার যা খুশি লিখে প্রকাশ করতে পারে। বিশেষ করে, দ্বীনের ব্যপারে তো যার যা খুশি বলার অঘোষিত লাইসেন্স রয়েছে। কোন জবাবদিহিতা করা লাগেনা।
- ভারতীয় উপমহাদেশে সালাফী/আহলুল হাদীস দাবীদার ভাইয়েরা আশা করি ডা. জাকির নায়েকের উদাহরণ থেকে শিক্ষা নেবেন। ভবিষ্যতে যেন যাচাই বাছাই না করে, শুধুমাত্র জনপ্রিয়তা দেখে কিংবা ব্যাকগ্রাউন্ড চেক না করে দুই-চারটা ভালো কথা শুনেই উচ্চ প্রশংসা করে কোন ব্যক্তিকে সাধারণ মানুষের সামনে যেন তুলে ধরা না হয়। এটা একটা ফিতনাহ। বর্তমানে "আমি অনলি মুসলিম", মুসলিম ইউনিটি থিওরী, "আমি শুধু ক্বুরান-হাদীস মানি কোন আলেমের তাকলিদ করিনা", এধরণের স্লোগান ধারীদের দিকে লক্ষ্য করলে এই ফিতনাহর বাস্তবতা উপলব্ধি করা যায়।
- তাওহীদ পাবলিকেশান থেকে ভালো, মন্দ কিংবা মিক্সড, যেকোন ধরণের বই ছাপানো হতে পারে, একথা আবারো প্রমানিত হলো। ইতিঃপূর্বে এই প্রকাশনী থেকে খারেজীদের সম্পর্কে হাদীসগুলোকে অপব্যখ্যা/ভুল অনুবাদ/জোড়াতালি দিয়ে তাবলীগ জামাতের জন্য ফিট করে একটি বই ছাপানো হয়েছিলো। সেই বইটি এতো নিম্নমানের, মারাত্মক একটা ভুল, যা তাওহীদ পাবলিকেশানসহ তাদের বইয়ের ক্রেতা আহলুল হাদীস/সালাফীদের জন্য লজ্জাজনক একটা বিষয়।
- জানিনা কে এই রায়হান কবীর, কে তার উস্তাদ, কি তার মানহাজ? তবে মাদ্রাসা ব্যাকগ্রাউন্ড থেকে অন্তত নূন্যতম ইলম অর্জন করা সত্ত্বেও কোন ব্যক্তির এই ধরণের বাজে বই অনুবাদ করার উতসাহ, সত্যিই আশ্চর্যজনক।
.
বিঃদ্রঃ
(১) আমার এই পোস্ট অনেক আগেই লিখা শেষ হয়েছিলো। শুধুমাত্র একজন শায়খকে দেখিয়ে লেখাটা সম্পর্কে তার মতামত নেওয়ার জন্য রাত একটা পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হলো। আলহা'মদুলিল্লাহ সেই পর্ব শেষ। আমি শায়খের নাম উল্লেখ করে তাকে বিরক্ত করতে চাইনা। কারো জানার আগ্রহ থাকলে শায়খের নাম এবং তার মতামত ইনবক্সে দেওয়া যাবে ইনশাআল্লাহ, অবশ্য শায়খের অনুমতি সাপেক্ষে।
(২) আমি খুব ভালো করে জানি, সত্যি কথা বললে মানু্ষ রাগ করে। সুতরাং, অন্ধভক্তি কিংবা আবেগের বশে বাজে/ভুল মন্তব্যের আমি কোন পরোয়া করি না। তবে প্রয়োজন অনুযায়ী ডিলিট/ব্লক অপশন কাজে লাগানো হবে।
Courtesy Brother Shahab Babu
.
(১) "আমি পাক্কা (১০০%) আহলে হাদীস, আপনারা ৮০% বা ৮৫% আহলে হাদীস।"
মন্তব্যঃ এটা অহংকার। আমাদের আলেমরা আহলুল হাদীসের আকিদাহর দিকে আহবান করেন, কিন্তু আজ পর্যন্ত কোন একজন আলেম দাবী করেন নি যে, তিনি ১০০% আহলে হাদীস। শায়খ সালেহ আল-ফাউজান হা'ফিজাহুল্লাহ অহংকার বশত নিজেকে সালাফী বলাকে নাজায়েজ বলে ফতোয়া দিয়েছেন। সেখানে অন্যদেরকে কম পার্সেন্টেজ দিয়ে নিজেকে ১০০% আহলে হাদীস দাবী করা কোন বুদ্ধিমানের কাজ হতে পারে?
.
(২) "সালাফীরা কয়েকভাগে বিভক্তঃ কুতুবী, সুরুরী, মাদখালী। সালাফীদের মাঝে এমন আরো অনেক ফেরকা রয়েছে।"
মন্তব্যঃ সালাফী কি, কুতুবী কি যারা বুঝেনা, এমন অজ্ঞ/বোকা লোকেরাই এমন কথা বলতে পারে। মূলত সালাফী দাওয়াহর বিরোধীতাকারী, যেমন মডারেট (ডা. ইয়াসির ক্বাদী), সূফী, পশ্চিমারা সালাফীদেরকে বিদআ'তীদের সাথে মিশিয়ে এমন ভাগ করে থাকে।
.
(৩) "ইউকের সালাফীরা কয়েকভাগে বিভক্ত এবং একদল আরেকদলকে কাফের বলে ফতোয়া দিচ্ছে।"
মন্তব্যঃ এটা মিথ্যা অপবাদ। ইউকেতে সালাফী দাবীদার কিছু ব্যক্তিরা একজন আরেকজনের সমালোচনা নিয়ে বাড়াবাড়িতে লিপ্ত, একথা সত্যি। কিন্তু সেখানে সালাফী দাবীদার কেউ কাউকে কাফের বলেনি।
.
(৪) ডা. জাকির নায়েক শায়খ নাসির উদ্দিন আলবানী রহিমাহুল্লাহর ভুল ধরেছেন এই বইয়ে। শায়খ আলবানী "সালাফী" নাম বলতে হবে, এটা বলে ঠিক বলেন নি। ডাক্তার সাহেব কাল্পনিক কথোপকথনের মাধ্যমে শায়খ আলবানীর কথাকে রদ্দ করেছেন।
মন্তব্যঃ পূর্বের কিংবা বর্তমানের কোন একজন আলেম সালাফী নামে পরিচয় দেওয়া নিয়ে আপত্তি করেছেন? ইমাম ইবনে তাইমিয়া, ইমাম আয-যাহাবী, শায়খ আব্দুল আ'জিজ বিন বাজ, আল্লাহ তাদের সকলের প্রতি রহম করুন, তাদের সকলেই বলেছেন, বিদআ'তীদের থেকে নিজেকে আলাদা করার জন্য সালাফী বলে পরিচয় দেওয়া যাবে, আর একজন অনুবাদ পড়ে ফতোয়া দানকারী, শিক্ষানবীশ শায়খ আলবানীর ভুল ধরছেন? আর তার অন্ধ অনুসারীরা ইলমের অভাবে তার কথাকে ক্বুরআন ও হাদীসের মতোই অভ্রান্ত মনে করে সাধারণ মানুষের মাঝে ব্যাপকভাবে প্রচার করছেন।
.
(৫) এছাড়া বইটিতে যেইভাবে হানাফী, শাফেয়ী বা মাযহাবের ব্যপারে ক্বুরআনের আয়াতগুলো জুড়ে দেওয়া হয়েছে, তা বিকৃতি। আমাদের আলেমরা ঢালাউভাবে মাযহাব কিংবা মাযহাবের অনুসারীদেরকে এইভাবে আক্রমন করেন না।
.
অনুধাবনঃ
- গণতান্ত্রিক দেশে যার যা খুশি বলার অধিকার রয়েছে, যার যা খুশি লিখে প্রকাশ করতে পারে। বিশেষ করে, দ্বীনের ব্যপারে তো যার যা খুশি বলার অঘোষিত লাইসেন্স রয়েছে। কোন জবাবদিহিতা করা লাগেনা।
- ভারতীয় উপমহাদেশে সালাফী/আহলুল হাদীস দাবীদার ভাইয়েরা আশা করি ডা. জাকির নায়েকের উদাহরণ থেকে শিক্ষা নেবেন। ভবিষ্যতে যেন যাচাই বাছাই না করে, শুধুমাত্র জনপ্রিয়তা দেখে কিংবা ব্যাকগ্রাউন্ড চেক না করে দুই-চারটা ভালো কথা শুনেই উচ্চ প্রশংসা করে কোন ব্যক্তিকে সাধারণ মানুষের সামনে যেন তুলে ধরা না হয়। এটা একটা ফিতনাহ। বর্তমানে "আমি অনলি মুসলিম", মুসলিম ইউনিটি থিওরী, "আমি শুধু ক্বুরান-হাদীস মানি কোন আলেমের তাকলিদ করিনা", এধরণের স্লোগান ধারীদের দিকে লক্ষ্য করলে এই ফিতনাহর বাস্তবতা উপলব্ধি করা যায়।
- তাওহীদ পাবলিকেশান থেকে ভালো, মন্দ কিংবা মিক্সড, যেকোন ধরণের বই ছাপানো হতে পারে, একথা আবারো প্রমানিত হলো। ইতিঃপূর্বে এই প্রকাশনী থেকে খারেজীদের সম্পর্কে হাদীসগুলোকে অপব্যখ্যা/ভুল অনুবাদ/জোড়াতালি দিয়ে তাবলীগ জামাতের জন্য ফিট করে একটি বই ছাপানো হয়েছিলো। সেই বইটি এতো নিম্নমানের, মারাত্মক একটা ভুল, যা তাওহীদ পাবলিকেশানসহ তাদের বইয়ের ক্রেতা আহলুল হাদীস/সালাফীদের জন্য লজ্জাজনক একটা বিষয়।
- জানিনা কে এই রায়হান কবীর, কে তার উস্তাদ, কি তার মানহাজ? তবে মাদ্রাসা ব্যাকগ্রাউন্ড থেকে অন্তত নূন্যতম ইলম অর্জন করা সত্ত্বেও কোন ব্যক্তির এই ধরণের বাজে বই অনুবাদ করার উতসাহ, সত্যিই আশ্চর্যজনক।
.
বিঃদ্রঃ
(১) আমার এই পোস্ট অনেক আগেই লিখা শেষ হয়েছিলো। শুধুমাত্র একজন শায়খকে দেখিয়ে লেখাটা সম্পর্কে তার মতামত নেওয়ার জন্য রাত একটা পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হলো। আলহা'মদুলিল্লাহ সেই পর্ব শেষ। আমি শায়খের নাম উল্লেখ করে তাকে বিরক্ত করতে চাইনা। কারো জানার আগ্রহ থাকলে শায়খের নাম এবং তার মতামত ইনবক্সে দেওয়া যাবে ইনশাআল্লাহ, অবশ্য শায়খের অনুমতি সাপেক্ষে।
(২) আমি খুব ভালো করে জানি, সত্যি কথা বললে মানু্ষ রাগ করে। সুতরাং, অন্ধভক্তি কিংবা আবেগের বশে বাজে/ভুল মন্তব্যের আমি কোন পরোয়া করি না। তবে প্রয়োজন অনুযায়ী ডিলিট/ব্লক অপশন কাজে লাগানো হবে।
Courtesy Brother Shahab Babu
No comments:
Post a Comment