Tuesday 16 July 2019

খারেজীদের গুরু আহমাদ মূসা জিবরীল এর ব্যাপারে সতর্কতা


Image may contain: 1 person, text

তাকফীরী যুবকদের একটি সাধারন বৈশিষ্ট্য হচ্ছে; তারা বয়ঃজ্যৈষ্ঠ সালাফী আলিমদের গালমন্দ করে অথচ আহমাদ মুসা জিবরীল ও আনোয়ার আল আউলাকির মতো মানুষকে 'ইমাম' হিসেবে উপস্থাপন করতে চায়। এরা আসলেই মিসকিন বৈ কিছুই না।
.
তাকফীরী ধূর্তরা আহমাদ মূসা জিবরীলের ডিফেন্সে নানারূপে চল-চাতুরী করে। যেমন : এরা যুগ শ্রেষ্ঠ আলিমেদ্বীন ইমাম ইবনু বায রাহিমাহুল্লাহ-র তাজকিয়্যাহ পেশ করে ( জানিনা এটা সত্য নাকি ভুয়া) যদি সত্যও হয়ে থাকে তাহলেও তা বাতিল হয়ে যাবে ঠিক যেমনটি বাতিল হয়ে গেছে সাইয়্যদ ক্বুতুব এবং জামা’য়াত আত তাবলীগের ব্যাপারে করা তাঁর প্রশংসা। কেননা ঐ সমস্ত লোকের ব্যাপারে পরবর্তীতে তিনি তার অবস্থান পরিবর্তন করেছিলেন। চ্যালেঞ্জ রইল, পারলে দেখাও - ইমাম ইবনু বায এর জীবিত ছাত্রদের মধ্যে কে তাকে তাজকিয়্যাহ দিয়েছে ?
ইমাম ফাউজান ? লুহাইদান ? রাবী?
.
সালাফীদের মূলনীতির একটি বৈশিষ্ট্য হচ্ছে; অপরিচিত (মাজহুল) কারো নিকট হতে জ্ঞান আহরণ করা হয়না। আমাদের কাছে উলামাদের পক্ষ হতে তাযকিয়্যাহ নিয়ে এসো। যাও _
.
আহমাদ মুূসা জিবরীলের অনুসারীদের দাবী হচ্ছে, ইমাম ইবনু বায [ রাহিমাহুল্লাহ ] নাকি সাধারনভাবে তাকে তাজকিয়্যাহ দিয়েছেন।
আমরা জিবরীলের অনুসারীদের স্মরণ করিয়ে দিতে চাই যে, ইমাম ইবনু বায রাহিমাহুল্লাহ মারা ১৯৯৯ সালে। ঠিক তখনও অর্থাৎ ২০০০ – ২০০১ সাল পর্যন্ত আহমেদ মুসা জিবরীল খোলাখুলিভাবে তার খারেজিপনা প্রচার শুরু করেনি ঠিক যেমনিভাবে আব্দুর রহমান আব্দুল খালেক তার দুষ্ট নবউদ্ভাবিত ধারণা ততক্ষণ পর্যন্ত শুরু করেনি, যতক্ষণ পর্যন্ত না ইমাম আল আলবানী এবং ইমাম মুক্ববীল [ রাহিমাহুমুল্লাহ ] জীবিত ছিলেন।

.
আপনারা নিশ্চয়ই অবগত আছেন যে, আহমাদ মূসা জিবরীল বিরচিত " ধূলোমলিন রমাদান " নামক একটা বই বাংলায় অনুদিত হয়েছে। সেখানেও লিখক পরিচিতিতে কারসাজি করা হয়েছে! বলা হয়েছে, পাকিস্তানের বিখ্যাত আহলে হাদিস আলিম, আল্লামাহ এহসান এলাহী যাহীর [ রাহিমাহুল্লাহ ] নাকি তাকে তাজকিয়্যাহ দিয়েছেন! অথচ আমরা উইকিপিডিয়া এবং আহমাদ মুসা জিবরীল সাহেবের অফিশিয়াল পেইজে তালাশ করে দেখলাম যে, তিনি ১৯৮৯-১৯৯০ তে মদিনায় পড়তে এসেছিলেন!
এখন যদি কেউ দাবী করে যে, একটা বাচ্চা ছেলেকে আল্লামাহ যাহীর রাহিমাহুল্লাহ তাজকিয়্যাহ দিয়েছেন সেটা চরম হাস্যকরই বটে! কারণ, ৩০ মার্চ ’১৯৮৭ সালে সোমবার ভোর রাত ৪-টার সময় মাত্র ৪২ বছর বয়সে আল্লামাহ যহীর বোমা হামলায় আহত হন এবং সৌদির একটি হসপিটালের ইন্তেকাল করেন। তারমানে হল, মূসা জিবরীল সাহেব মদিনায় ছাত্রত্ব গ্রহণের ৩ বছর আগেই আল্লামাহ যাহীর রাহিমাহুল্লাহ মৃত্যবরণ করেন।
.
এসব কথিত প্রশংসাপত্র আহমাদ মুসা জিবরীলের অনুসারীরা ব্যবহার করে থাকে তাকে রক্ষা করার জন্য এবং যারা তার সমালোচনা করে তাদেরকে মিথ্যা বা ভুল প্রমাণ করার জন্য। জ্ঞাতব্য যে, এটা রক্ষার চেষ্টা নয় বরং এক ধরনের দ্বিচারিতা, অপ-কৌশল ও মিথ্যাচার, যা দ্বারা তার প্রমোটার-রা ধোঁকাগ্রস্থ সালাফীদের ব্লাকমেইল করে থাকে। অবশ্য, এটা নতুন কিছুই নয়, কেননা আমরা প্রায়ই দেখে আসছি খ্যাতি অর্জনে ইচ্ছুক অনেক বক্তাকেই এমনিভাবে রক্ষার চেষ্টা করা হয়েছে।
.
এদের আরেকটি খোঁড়া যুক্তি হল “ আহমাদ মূসা জিবরীল মদিনা বিশ্ববিদ্যালয়ের স্নাতক ছিলেন এবং ইযাযতপ্রাপ্তও ছিলেন।“
শেষোক্ত অংশের (ইযাযত) ব্যাপারে আমাদের নিকট কোনো অথেনটিক প্রমাণ নেই তবে "মদিনা বিশ্ববিদ্যালয়ের সনদ" এই বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমিক আদর্শ অনুসারে সনদধারীর জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষ হতে সাধারণ ইযাযত হিসেবে বিবেচিত হয়। অধিকন্তু, মদিনার শ্রেষ্ঠ মুহাদ্দিস, আশ শাইখুল আল্লামাহ, আব্দুল মুহসিন আল আব্বাদ আল বদর [ হাফিয্বাহুল্লাহ ] বলেছেন, "যখন কেউ মদিনা বিশ্ববিদ্যালয় হতে স্নাতক ডিগ্রি অর্জন করেন তখন তিনি গবেষণামূলক জ্ঞানের প্রারম্ভিক ছাত্র হিসেবে বিবেচিত হন, তবে তিনি ‘আলিম নন"।
.
ওহে খারেজীদের লেজের সমর্থকরা! ক্বাবার প্রভুর দোহাই দিয়ে বলছি : মিথ্যাচার বন্ধ কর, আল্লাহকে ভয় কর এবং আহমাদ মূসা জিবরীল [ হাদাহুল্লাহ ] ও অন্যান্য খারেজীদের প্রতি অন্ধ গোঁড়ামি পরিহার কর।
অত:পর সালাফী ভাইদের অনুরোধ করব, "তোমরা সালফদের পথ অনুসরণ করো। সর্বোত্তম বক্তব্য হল আল্লাহর আর সর্বোত্তম দিকনির্দেশনা তার রসূলের। কাজেই একজন প্রতারককে পছন্দ করার চেয়ে এটাই তোমাদের জন্য অধিকতর পছন্দনীয় হওয়া উচিৎ।
হে ভাই তুমি হয়ত ভাবছো যে, আল্লাহর দ্বীনের জন্য উমুক ব্যক্তি আমেরিকার কারাগারে বন্দী হয়েছিলেন , অথচ সে কোনো মহৎ কাজের জন্য কারারুদ্ধ হননি বরং গ্রেফতার হয়েছিলেন কর ফাঁকির জন্য।
মনে রেখো, একজন ধোঁকাবাজ ও চক্রান্তকারী ব্যক্তি সমসাময়িক যেকোন বিষয়ে কিছু আবেগময় লেকচার দিয়ে তোমাকে সপ্নের মুজাহিদ বানিয়ে তুলতে পারে, কিন্তু তাকিয়ে দেখ, সে এবং তাঁর পরিবার নিরাপদ জীবন যাপন করছে।
.
যুবক! জেগে উঠো, আল্লাহ তোমাকে সঠিক পথে পরিচালিত করুন এবং অন্ধ গোঁড়ামির রোগ হতে হিফাজত করুন।
আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তাআ'লা এবং তাঁর রাসূল মুহাম্মাদূর রাসূলুল্লাহ ﷺ-এর ভালবাসার উপরে অন্যকারো ভালবাসাকে স্থান দেয়া হতে আল্লাহ আমাদেরকে হিফাজত করুন। আমীন।
.
সুন্নাহর পথযাত্রী

No comments:

Post a Comment

Download AsPDF

Print Friendly and PDFPrint Friendly and PDFPrint Friendly and PDF
Related Posts Plugin for WordPress, Blogger...