Saturday 8 July 2017

সালাতে যেই সাতটি স্থানে দুয়া করা যায়ঃ



আমরা অনেকেই জানি, সালাতের সিজদাতে ও সালাম ফিরানোর আগে দুয়া করা যায়। কিন্তু প্রশ্ন হচ্ছে, সালাতে মোট কতগুলো জায়গায় দুয়া করা যায় এবং সেই জায়গাগুলো কি কি?
নবী সাল্লাল্লাহু আ’লাইহি ওয়া সাল্লাম সালাতের ভেতরে মোট সাতটি স্থানে দুয়া করতেন। সালাতে যেই সাতটি স্থানে দুয়া করা যায় তা বিস্তারিত বর্ণনা করা হলো।
(১) সানাঃ সালাতের শুরুতে তাকবীর তাহরীমার “আল্লাহু আকবার” বলে বুকে হাত বাঁধার পরে, সালাত শুরুর দিকে “সানা” হিসেবে দুয়া পড়া যায়। এখানে নিজের ইচ্ছামতো যেকোনো দুয়া করা যায়না, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আ’লাইহি ওয়া সাল্লাম সানা হিসেবে যেই দুয়াগুলো করেছেন, শুধুমাত্র সেই দুয়াগুলোই করা যাবে। সানার দুয়া অবশ্যই আরবীতে পড়তেই হবে।
প্রচলিত ভাষায় আমরা যাকে সানা বলি, সহীহ হাদীসে আরো অনেক সানার দুয়া আছে, কোন কোন সানাতে দুয়া বা প্রার্থনা রয়েছে। আপনি যদি সেই সানাগুলো পড়েন তাহলে সেটা সানা ও দুয়া দুটো একসাথে হবে, যেন এক ঢিলে দুই পাখি শিকার করা। সানা হিসেবে আমরা যেটা পড়ি এর পরিবর্তে ঐ দুয়াটা সানা হিসেবে পড়া যাবে। বরং, অনেক আলেম সহীহ বুখারী ও সহীহ মুসলিমে বর্ণিত সানার সেই দুয়াটাকে উত্তম বলে মত দিয়েছেন। আপনি নবী সাল্লাল্লাহু আ’লাইহি ওয়া সাল্লাম-এর সানা হিসেবে দুয়াটার অর্থের দিকে লক্ষ্য করুন, তাহলে বুঝবেন কত সুন্দর এই দুয়াটা। অলসতা করে মুখস্থ না করার কারণে আপনি মহামূল্যবান এই দুয়া থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। চিন্তা করুন, এতো সুন্দর ভাষায় আল্লাহর কাছে নিজের গুনাহ থেকে মাফ চেয়ে সালাত শুরু করলে আল্লাহ তা’আলা সেই সালাতকে কত বেশি পছন্দ করবেন! তাই প্রিয় বন্ধুরা! অলসতা ত্যাগ করে কষ্ট করে নীচে এই দুয়াটা মুখস্থ করে মাঝে মাঝে পড়ার চেষ্ট করবেন, বিশেষ করে ফরয সালাতে। যখন সময় কম থাকে বা অলসতা লাগে তখন ছোট যেটা “সুবহা’নাকা আল্লাহুম্মা ওয়াবিহা’মদিকা...”, এটা পড়লেন। আর যখন সময়, ইচ্ছা, শক্তি-সামর্থ্য আছে বা এমনিতেই একবার তোওবা করার ইচ্ছা করবেন, তখন সানা হিসেবে এই দুয়াটা পড়লেন। অথবা আপনি নফল সুন্নত সালাতে ছোট সানা এবং পাঁচ ওয়াক্তের ফরয সালাতে এটা পড়লেন, আবার কখনো একবার এটা আরেকবার অন্যটা এইভাবে ঘুরিয়ে ফিরিয়েও পড়া যাবে। দুয়াটা হচ্ছেঃ
اللَّهُمَّ بَاعِدْ بَيْنِي وَبَيْنَ خَطَايَايَ كَمَا بَاعَدْتَ بَيْنَ الْمَشْرِقِ وَالْمَغْرِبِ، اللَّهُمَّ نَقِّنِي مِنْ خَطَايَايَ كَمَا يُنَقَّى الثَّوْبُ الْأَبْيَضُ مِنَ الدَّنَسِ، اللَّهُمَّ اغْسِلْني مِنْ خَطَايَايَ، بِالثَّلْجِ وَالْماءِ وَالْبَرَدِ.
উচ্চারণঃ আল্লাহুম্মা বাইয়ি’দ বাইনী ওয়া বাইনা খাত্বা-ইয়া-ইয়া কামা বা-আ’দতা বাইনাল মাশরিক্বি ওয়াল মাগরিব। আল্লা-হুম্মা নাক্কিনী মিং খাত্বা-ইয়া-ইয়া কামা ইয়ুনাক্কাস-ছাওবুল আবইয়াদু মিনাদ দানাস। আল্লা-হুম্মাগসিলনী মিং খাত্বা-ইয়া-ইয়া বিস-সালজি ওয়াল মা-ইয়ী ওয়াল বারাদ।
অর্থঃ হে আল্লাহ! আপনি আমার এবং আমার গুনাহসমূহের মাঝে এমন দূরত্ব সৃষ্টি করুন, যেমন দূরত্ব সৃষ্টি করেছেন পূর্ব ও পশ্চিমের মাঝে। হে আল্লাহ! আপনি আমাকে আমার গুনাহসমূহ এমনভাবে পরিষ্কার করে দিন, যেমন সাদা কাপড় ময়লা থেকে পরিষ্কার করা হয়। হে আল্লাহ! আপনি আমাকে আমার পাপসমূহ বরফ, পানি ও মেঘের শিলাখণ্ড দ্বারা ধৌত করে দিন।
সহীহ বুখারীঃ ৭৪৪, সহীহ মুসলিমঃ ৫৯৮।
(২) দুয়া কুনুতঃ বিতির সালাতে কওমাতে দাঁড়ানো অবস্থায় কিরাত শেষ করে রুকুতে যাবার পূর্বে অথবা রুকু থেকে দাঁড়ানোর পরে সিজদাতে যাওয়ার পূর্বে ‘দুয়া কুনুত’ পড়া সুন্নত। বিতির সালাতে ও সাময়িকভাবে ফজরের ফরয সালাতেও (মুসলিমদের বিপদ আপদ থেকে বাঁচার জন্য, অত্যাচারী কাফেরদের বদদুয়া করার জন্য অথবা উম্মাহর বিশেষ প্রয়োজন এমন সময়ে) দুয়া কুনুত এবং কুনুতে নাজেলা পড়া সহীহ হাদীস দ্বারা প্রমানিত। সবচাইতে সহীহ এবং অর্থের দিক থেকে বেশি সুন্দর যে দুয়া কুনুত নবী সাল্লাল্লাহু আ’লাইহি ওয়া সাল্লাম কুনুত হিসেবে নিয়মিত পড়তেন, সেটা হচ্ছেঃ
اللَّهُمَّ اهْدِنِي فِيمَنْ هَدَيْتَ، وَعَافِنِي فِيمَنْ عَافَيْتَ، وَتَوَلَّنِي فِيمَنْ تَوَلَّيْتَ، وَبَارِكْ لِي فِيمَا أَعْطَيْتَ، وَقِنِي شَرَّ مَا قَضَيْتَ؛ فَإِنَّكَ تَقْضِي وَلاَ يُقْضَى عَلَيْكَ، إِنَّهُ لاَ يَذِلُّ مَنْ وَالَيْتَ، [وَلاَ يَعِزُّ مَنْ عَادَيْتَ]، تَبارَكْتَ رَبَّنا وَتَعَالَيْتَ
উচ্চারণঃ আল্লা-হুম্মাহদিনী ফীমান হাদাইতা, ওয়া আ’-ফিনী ফীমান আ’-ফাইতা, ওয়া তাওয়াল্লানী ফীমান তাওয়াল্লাইতা, ওয়াবা-রিক লী ফীমা আ’ত্বাইতা, ওয়াক্বিনী শাররা মা ক্বাদাইতা, ফাইন্নাকা তাক্বদ্বী ওয়ালা ইউক্বদ্বা আ’লাইকা। ইন্নাহু লা ইয়াযিল্লু মাওঁ-ওয়া-লাইতা, ওয়ালা ইয়াই’য্যু মাং আ’-দাইতা।] তাবা-রকতা রব্বানা ওয়া তাআ’-লাইতা।
অর্থঃ হে আল্লাহ! আপনি যাদেরকে হেদায়াত করেছেন, তাদের মধ্যে আমাকেও হেদায়াত দান করুন। আপনি যাদেরকে নিরাপত্তা দিয়েছেন, তাদের মধ্যে আমাকেও নিরাপত্তা দান করুন। আপনি যাদের অভিভাবকত্ব গ্রহণ করেছেন, তাদের মধ্যে আমার অভিভাবকত্বও গ্রহণ করুন। আপনি আমাকে যা দিয়েছেন তার মাঝে বরকত দান করুন। আপনি যা ফয়সালা করেছেন তার অকল্যাণ থেকে আমাকে রক্ষা করুন। কারণ, আপনিই তো চূড়ান্ত ফয়সালা দেন, আপনার বিপরীতে ফয়সালা দেওয়া হয় না। আপনি যার সাথে বন্ধুত্ব করেছেন, সে অবশ্যই অপমানিত হয় না। এবং আপনি যার সাথে শত্রুতা করেছেন সে কখনো সম্মানিত হয় না। আপনি বরকতপূর্ণ হে আমাদের রব্ব! আর আপনি সুউচ্চ, সুমহান।
আবু দাউদঃ ১৪২৫, তিরমিযীঃ ৪৬৪, নাসাঈঃ ১৭৪৪, ইবন মাজাহঃ ১১৭৮, আহমাদঃ ১৭১৮, দারামীঃ ১৫৯২, হাকিমঃ ৩/১৭২, বাইহাকীঃ ২/২০৯। আর দু’ ব্রাকেটের মাঝখানের অংশ বাইহাকীর। শায়খ আলবানীর মতে হাদীসটি সহীহঃ ইরওয়াউল গালীলঃ ২/১৭২।
দেখা যাচ্ছে, অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ এই দুয়াটি অনেকগুলো হাদীস গ্রন্থেই উল্লেখ করা হয়েছে। এথেকে এর মর্যাদা বোঝা যাচ্ছে। দুয়া কুনুতের দুয়াটা আরবীতেই করতে হবে।
(৩) রুকু থেকে মাথা উঠিয়ে সোজা হয়ে দাঁড়ানোর পরেঃ রুকু থেকে দাঁড়িয়ে নিজের পছন্দমতো যেকোনো দুয়া করা যায়না, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আ’লাইহি ওয়া সাল্লাম যেই দুয়াগুলো করেছেন, শুধু সেই দুয়াগুলোই করা যাবে। আর এইখানে দুয়াটা আরবীতেই করতে হবে। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম যখন রুকু থেকে মাথা উঠাতেন তখন দুয়া করতেন।
আল্লামাহ ইমাম ইবনুল কাইয়্যিম এখানে তার বইয়ে যেই দুয়াটা উল্লেখ করেছেন সেটা আমি খুঁজে পাইনি বলে দিতে পারলাম না বলে দুঃখিত। দুয়াটা আপনারা মূল বইতে দেখতে পারেন।
(৪) রুকুতে দুয়া করাঃ নবী সাল্লাল্লাহু আ’লাইহি ওয়া সাল্লাম রুকুর মাঝেও দুয়া করতেন। তবে রুকুতে নিজ থেকে কোন দুয়া করা নিষিদ্ধ। শুধুমাত্র নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম রুকুতে যেই দুয়া করেছেন, সেই দুয়া করা যাবে। আয়েশা রাদিয়াল্লাহু আ’নহা বলেন যে, “সুরা নাসর নাযিল হওয়ার পর থেকে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আ’লাইহি ওয়া সাল্লামকে কখনো এই দুয়া পড়া ছাড়া সালাত পড়তে দেখিনি।
سُبْحَانَكَ اللَّهُمَّ رَبَّنَا وَبِحَمْدِكَ، اللَّهُمَّ اغْفِرْ لِي
উচ্চারণঃ সুবহা’নাকা আল্লা-হুম্মা রাব্বানা ওয়া বিহা’মদিকা আল্লা-হুম্মাগফিরলী।
অর্থঃ হে আল্লাহ! তুমি আমাদের রব্ব। তোমার পবিত্রতা ঘোষণা করি, তোমার প্রশংসা সহকারে। হে আল্লাহ! তুমি আমাকে ক্ষমা করে দাও। সহীহ মুসলিম ৯৬৯।
এই দুয়া রুকু এবং সিজদাহ, দুই জায়গাতেই একবার করে পড়া যায়, তবে কেউ চাইলে দুই বা তিনবারও পড়তে পারেন। উল্লেখ্য, এই দুয়া পড়ার পূর্বে রুকু ও সিজদাহর নিয়মতি তাসবীহগুলো পড়ে নিতে হবে।
(৫) সিজদাতে দুয়া করাঃ
সিজদায় দুয়া করা নিয়ে বিস্তারিত জানার জন্য সালাতের সিজদা অধ্যায় দেখুন।
(৬) দুই সিজদার মাঝখানে বসা অবস্থায় দুয়া করাঃ যেকোন সালাতের, যেকোন রাকাতে প্রথম একটি সিজদাহ করে মাথা তুলে এরপর দ্বিতীয় সিজদাহ করার পূর্বে বসা অবস্থাতে সুন্নতী দুয়া রয়েছে। এখানে নিজের পছন্দমতো যেকোনো দুয়া করা যায়না, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম যেই দুয়াগুলো করেছেন শুধু সেই দুয়াগুলো করা যাবে। আর এইখানে দুয়া আরবীতেই করতে হবে। দুই সিজদার মাঝখানে ছোট্ট এই দুয়াটা কি মুখস্থ করা যায়না?
রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আ’লাইহি ওয়া সাল্লাম ফরয, সুন্নত, নফল যে কোনো সালাতের দুই সিজদার মাঝখানে বসা অবস্থায় এই দুয়াট করতেনঃ رَبِّ اغْفِرْ لِي، رَبِّ اغْفِرْ لِي
উচ্চারণঃ রাব্বিগ ফিরলি, রাব্বিগ ফিরলি।
অর্থঃ হে আমার রব আমাকে ক্ষমা করা, হে আমার রব আমাকে ক্ষমা কর।
আবু দাউদঃ ১/৩১, ইবনে মাজাহ, দুয়াটা সহীহ।
আল্লামাহ আব্দুল আ’জিজ বিন বাজ রাহিমাহুল্লাহ বলেছেন, “দুই সিজদার মাঝখানে রাব্বিগ ফিরলি অন্তত একবার বলা ওয়াজিব, আর দুইবার বলা সুন্নত।”
এই ছোট্ট দুয়াটা পড়ে আল্লাহর কাছে ক্ষমা চাওয়ার সুযোগ থেকে বঞ্চিত হওয়া ঠিকনা। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আ’লাইহি ওয়া সাল্লাম দিনে ৭০ থেকে ১০০ বার তোওবা করতেন। আপনি যদি সালাতের দুই সিজদার মাঝখানে এই দুয়াটা পড়ার অভ্যাস গড়ে তুলেন তাহলে দিনে যত রাকাত সালাত পড়বেন, ততবারই আল্লাহর কাছে ক্ষমা চাওয়া হবে। আল্লাহর ভালোবাসা পাওয়ার একটা উপায় হচ্ছে বেশি বেশি করে তোওবা ও ইস্তিগফার করা (ক্ষমা প্রার্থনা করা)।
এছাড়া দুই সিজদার মাঝখানে আরেকটা ছোট্ট সুন্দর দুয়াঃ
اللَّهُمَّ اغْفِرْ لِي، وَارْحَمْنِي، وَاهْدِنِي، وَاجْبُرْنِي، وَعَافِنِي، وَارْزُقْنِي، وَارْفَعْنِي
উচ্চারণঃ আল্লা-হুম্মাগফিরলী, ওয়ারহা’মনী, ওয়াহদিনী, ওয়াজবুরনী, ওয়াআ’ফিনি, ওয়ারযুক্বনী, ওয়ারফা‘নী।
অর্থঃ হে আল্লাহ! আপনি আমাকে ক্ষমা করুন, আমার প্রতি দয়া করুন, আমাকে সঠিক পথে পরিচালিত করুন, আমার সমস্ত ক্ষয়ক্ষতি পূরণ করে দিন, আমাকে নিরাপত্তা দান করুন, আমাকে রিযিক দান করুন এবং আমার মর্যাদা বৃদ্ধি করুন।
আবু দাউদঃ ৮৫০, তিরমিযীঃ ২৮৪, ইবনে মাজাহঃ ৮৯৮। হাদীসটি সহীহ, শায়খ আলবানী।
(৭) শেষ বৈঠকে দুয়াঃ তাশাহুদ (আত্তাহিয়্যাতু) ও দুরুদের পড়ার পরে, সালাম ফিরানোর আগে দুয়া মাসুরা ও নিজের পছন্দমতো দুনিয়া ও আখেরাতের যেকোন কল্যাণের দুয়া করা যায়। ফরয সালাতের শেষ বৈঠকের দুয়া আল্লাহ বেশি কবুল করেন। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আ’লাইহি ওয়া সাল্লামকে জিজ্ঞাসা করা হল, “কোন দুয়া সর্বাধিক শোনা (কবুল করা) হয়?” তিনি বললেন, “রাত্রির শেষভাগে এবং ফরয নামায সমূহের শেষাংশে।” তিরমিযীঃ ৩৪৯৯, হাসান সহীহ, ইমাম তিরমিযী ও শায়খ আলবানী।
সবচাইতে গুরুত্বপূর্ণ ও প্রয়োজনীয় দুয়া মাসুরা হচ্ছে চারটি বিষয় থেকে আশ্রয় চাওয়ার দুয়া। কবরের আজাব, জাহান্নামের আজাব, দুনিয়ার ফেতনা ও মৃত্যুর সময়ের ফেতনা ও দাজ্জালের ফেতনা থেকে নিরাপদ থাকার জন্য দুয়া মাসুরাঃ
রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এই চারটি ক্ষতিকস জিনিস থেকে বাঁচার জন্য ফরয, নফল বা সুন্নত, যেকোনো সালাতে তাশাহুদ ও দুরুদের পরে সালাম ফিরানোর আগে এই দুয়া পড়তে বলেছেন।
اَللَّهُمَّ إِنِّيْ أَعُوْذُ بِكَ مِنْ عَذَابِ الْقَبْرِ، وَمِنْ عَذَابِ جَهَنَّمَ، وَمِنْ فِتْنَةِ الْمَحْيَا وَالْمَمَاتِ، وَمِنْ شَرِّ فِتْنَةِ الْمَسِيْحِ الدَّجَّالِ.
উচ্চারণঃ আল্লাহুম্মা ইন্নী আ’উযুবিকা মিং আ’যাবিল ক্বাবার, ওয়া মিং আ’যাবি জাহান্নাম। ওয়ামিং ফিতনাতিল মাহ’ইয়া ওয়াল মামাত, ওয়ামিং সাররি ফিতনাতিল মাসীহি’দ-দাজ্জাল।
অর্থঃ হে আল্লাহ! তুমি আমাকে কাবরের আযাব থেকে রক্ষা করো, আমাকে জাহান্নামের আযাব, এবং দুনিয়ার ফিৎনা ও মৃত্যুর ফেতনা এবং দাজ্জালের ফিৎনা থেকে রক্ষা করো।
সহীহ বুখারীঃ ২১০২, সহীহ মুসলিমঃ ১/৪১২, হিসনুল মুসলিমঃ পৃষ্ঠা ৯০।
রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আ’লাইহি ওয়া সাল্লাম দুয়া মাসুরা হিসেবে এই দুয়াটা পড়তে সবচেয়ে বেশি জোর দিয়েছেন। এছাড়া আরো অনেক দুয়া মাসুরা আছে, আপনার হিসনুল মুসলিম বই থেকে মুখস্থ করে নিতে পারেন। আরবীতে অন্য যেকোন দুয়া এইখানে পড়তে পারবেন ইনশাআল্লাহ। ক্বুরআন ও হাদীসে বর্ণিত দুয়াগুলো যেমন- রাব্বানা আতিনা...রাব্বির হামহুমা কামা...আল্লাহুম্মা ইন্নি আস আলুকাল জান্নাতা...এইরকম নিজের জন্য, মাতাপিতার জন্য, যেকোনো মুসলিমের জন্য দুনিয়া ও আখেরাতের যেকোন হালাল ও কল্যানকর কিছু চাওয়া যাবে।
নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সালাতে এই মোট সাতটি স্থানে নিজে দুয়া করেছেন এবং সাহাবীদেরকেও দুয়া করতে শিক্ষা দিয়েছেন।
উৎসঃ আল-হাফিজ, ইমাম ইবনে কাইয়্যিম রাহিমাহুল্লাহ লিখিত অসাধারণ একটি গ্রন্থঃ
- “আল্লাহর রাসুল কিভাবে নামায পড়তেন”।
শতাব্দী প্রকাশনী, ঢাকার কাঁটাবনে এই বইটা কিনতে পাওয়া যায়, সম্ভব হলে এই বইটা কিনে পড়ার চেষ্টা করবেন ইনশা’আল্লাহ।

সংগ্রহঃ ফেছবুক পেজ তোমরা তোমাদের পালনকর্তার অভিমূখী হও এবং তাঁর আজ্ঞাবহ হও

অনলাইনে ফ্রী পিডিএফ ডাউনলোড করুন এই লিংক থেকে -


http://www.mediafire.com/…/allah%27r+rasul+saw+ki+vabe+nama…

No comments:

Post a Comment

Download AsPDF

Print Friendly and PDFPrint Friendly and PDFPrint Friendly and PDF
Related Posts Plugin for WordPress, Blogger...