Tuesday 27 January 2015

আহলে সুন্নাহ, আহলে হাদীস ও আহলে বায়ত কি?


বিসমিল্লাহ, ওয়ালহা'মদুলিল্লাহ, ওয়াস সালাতু ওয়াস সালামু আ'লা রাসূলিল্লাহ। আম্মা বা'দ।
‪#‎আহলে_সুন্নাহ‬ কি?
“আহলে সুন্নাহ” – অর্থ হচ্ছে সুন্নাহর অনুসরণকারী। যারা শিরক-বিদআত মুক্ত থেকে পরিপূর্ণভাবে সত্যিকার অর্থে রাসুলুল্লাহ (সাঃ) এর সুন্নাহর অনুসরণ করে, ঠিক সেইভাবে যেইভাবে সাহাবারা করেছিলেন তারাই হচ্ছে প্রকৃত আহলে সুন্নাহ, যাদেরকে সংক্ষেপে অনেক সময় “সুন্নী” বলা হয়।
রাসুলুল্লাহ (সাঃ) আমাদের আগেই সতর্ক করে দিয়েছিলেন - এই উম্মত ৭৩টা দলে ভাগ হবে - যার মধ্যে ৭২টা দলি জাহান্নামে যাবে। আর একটা মাত্র দল জান্নাতে যাবে। নাজাত প্রাপ্ত সেই দলটা হলো - যারা মুহাম্মাদ (সাঃ) ও তাঁর সাহাবারা যে তরীকার উপরে ছিলেন সেটাকে অনুসরণকরবে – শুধু মাত্র তারাই নাজাত পাবে। তাবেয়ীদের যুগ থেকে বিভিন্ন ভ্রান্ত মতবাদের দল বের হয়, যেমন খারেজী, শিয়া, মুহতাজিলা ইত্যাদি। সেই ভ্রান্ত দলগুলো থেকে সত্যিকারের নাজাতপ্রাপ্ত দলকে পরিচয় দেওয়ার জন্যে তাবেয়ীদের যুগ থেকেই “আহলে সুন্নাহ” বলে পরিচয় দেওয়া শুরু হয়। যেমন - তাবে'ঈ ইমাম ইবনু সীরীন র'হিমাহুল্লাহ বলেনঃ
"মানুষেরা আগে হাদীসের সনদের ব্যাপারে জিগ্যেস করতোনা। কিন্তু যখন ফিতনাহ এসে পড়ল, তখন তারা বলা শুরু করলেন, তোমাদের হাদীসের রাবী বা বর্ণনাকারীর নাম বল। এরপর কেবল "আহলুস সুন্নাহ" ব্যক্তিদের হাদীস গ্রহণ করা হত আর "আহলুল বিদ'আ হলে গ্রহণ করা হতনা।"
সহীহ মুসলিম, মুক্বাদ্দিমাহ অধ্যায়।
উল্লেখ্য, কেউ নিজেকে আহলে সুন্নাহ দাবী করলেই সেসুন্নী হয়ে যায়না। ভারত বাংলাদেশে আহলে সুন্নত ওয়াল জামাত বা সুন্নী পরিচয় দেয় এমন কিছু মানুষ আছে (আসলে তারা রিজভী/ব্রেলভী) – এরা হচ্ছে খালেস কবরপূজারী, পীরপূজারী। আজমীর, শাহজালাল, বায়েজীদ বোস্তামী ওয়ালা, মাইজভান্ডারী, দেওয়ানবাগী,কুতুববাগী - এরাই হলো সেই এই দলের নেতা। এদের ঈমান আছে কিনা সেটাই আলোচনার বিষয়।
আরো কিছু দল আছে যারা নিজেদেরকে আহলে সুন্নাহ বলে পরিচয় দেয় – কিন্তু তাদের মাঝেও সুন্নাহ থেকে দূরত্ব দেখা যায়। বহুল প্রচলিত এমন দুটি দল হলো – তাবলিগ জামাত ও জামাতে ইসলামী। এরা মুসলিম কিন্তু এদের মাঝে অনেক ভুল-ভ্রান্তি আছে যা সংশোধন করে নেওয়া তাদের জন্য "ওয়াজিব"।
তাই শুধু আহলে সুন্নাহ নাম দাবী করলেই হবেনা। ঈমান ও আমলে কুরআন, সুন্নাহ ও সাহাবীদের মতো হলেই প্রকৃত আহলে সুন্নাহ হওয়া যাবে।
‪#‎আহলে_হাদীস‬ কি?
“আহলে হাদীস” – অর্থ হচ্ছে হাদীসের অনুসারী। যারা কোনো মানুষ বা মানুষের বানানো মতবাদ যেমন (মাযহাব, তরীকা, পীর, ইমাম) অন্ধ অনুসরণ করেনা, বিশুদ্ধভা্বে হাদীসকে অনুসরণ করে তারাই হচ্ছে আহলে হাদীস। এখানে “হাদীস” দ্বারা কুরানুল কারীম ও রাসুলুল্লাহ (সাঃ) এর কথা উভয়কেই বোঝানো হয়েছে। কারণ কুরআন ও হাদীসে “কুরানুল কারীমকেও” হাদীস বলা হয়েছে। যেমন –
“যদি তারা (কাফেররা) এই হাদীসের (কুরানুল কারীম) প্রতি ঈমান না আনে, তবে তাদের পশ্চাতে সম্ভবতঃ আপনি আফসোস করতে করতে আপনি নিজের প্রাণ ধ্বংস করে দেবেন! (সুরা আল-কাহফঃ ৬)।
“আল্লাহ নাযিল করেছেন “উত্তম হাদীস” (উত্তম বাণী,কুরানুল কারীম),যা সামঞ্জস্যপূর্ণ, বার বার পাঠ করা হয়।” (সুরা যুমারঃ ২৩)।
রাসুলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেনঃ
“ফা ইন্না খায়রাল হাদীসি কিতাবুল্লাহ” – জেনে রাখো নিশ্চয়ই সর্বশ্রেষ্ঠ হাদীস (কথা/বাণী) হচ্ছে আল্লাহর কিতাব (কুরানুল কারীম)।
সহীহ মুসলিম, মিশকাত।

আহলে হাদীস দ্বারা অর্থ হচ্ছে “কুরআন+সুন্নাহর” অনুসারী।
সুন্নাহ লিপিবদ্ধ আছে সহীহ হাদীসে, আর কুরানুল কারীমকেও কুরআন ও হাদীসে “হাদীস” দিয়ে সম্বোধন করা হয়। উল্লেখ্য হাদীস অর্থ হচ্ছে বাণী।
সেই দৃষ্টিকোন থেকে আহলে সুন্নাহর আরেক নাম হচ্ছে আহলে হাদীস। যদিও আমাদের দেশের মানুষ আহলে সুন্নাহ নামটার সাথে বেশি প্রচলিত, কিন্তু আরব দেশগুলোতে বিশেষ করে প্রাচীনকালের আলেম ওলামারা আহলে সুন্নাহ ও আহলে হাদীস – এই দুইটি নামকেই সমার্থক হিসেবে ব্যবহার করেছেন। এনিয়ে ইমাম আহমাদ ইবনে হাম্বাল, ইমাম বুখারীর ওস্তাদ ইবনুল মাদানী ও ইমাম বুখারী, ইমাম হাকেম, ইমাম তিরমিযী, ইমাম খাত্তাবি, ইমাম ইবেনে তাইমিয়্যা, ইমাম ইবনে কাইয়্যিম, ইমাম ইবনে কাসীর, আব্দুল কাদীর জিলানি...এইভাবে অতীত থেকে নিয়ে আজ পর্যন্ত সমস্ত আলেম ওলামারা নাজাতপ্রাপ্ত দল হিসেবে আহলে সুন্নাহ ও আহলে হাদীস এর নাম উল্লেখ করেছেন।এটা একই জামাতের দুইটি সমার্থক নাম। এছাড়া এই জামাতের আরো অন্য নামও রয়েছে।
তবে মূল বিষয় হলো নাম যাই হোক না কেনো, এমনকি নাম থাকুক বা না থাকুক – যেই কুরআন ও সুন্নাহকে ঠিক সেইভাবে অনুসরণ করবে যেইভাবে সাহাবারা অনুসরণ করেছিলেন, তারাই হলো প্রকৃত নাজাতপ্রাপ্ত দল।
ভারত, পাকিস্থান ও বাংলাদেশে “আহলে হাদীস” নামটা নিয়ে বেশ কিছু কারণে (সামান্য কিছু যৌক্তিক, বেশির ভাগই অযৌক্তিক ও হাস্যকর কারণ) ফেতনা, তর্ক-বিতর্ক, পরস্পর বিরোধী বক্তব্য লক্ষ্য করা যায়। তাই আহলে হাদীস নিয়ে অতীত যুগ থেকে নিয়ে বর্তমান যুগের আলেমরা কি বলেছেন সেটা তুলে ধরা হলোঃ
১. ইমাম আহমাদ ইবেন হাম্বল (রহঃ) যখন ৭৩ ফির্ক্বাহর মধ্যে নাজিয়াহ ফির্ক্বাহ (নাজাতপ্রাপ্ত দল) সম্পর্কে বলেছিলেনঃ
“যদি তারা “আহলে হাদীস” না হয় তবে আমি জানিনাতারা অন্য কারা।”
দেখুন সহীহ বুখারীর ৭৩১১ নং হাদীসের ব্যখ্যা, বুখারীর জগদ্বিখ্যাত বাখ্যাগ্রন্থ ইবনু হাজার আল-আসকালানী (রহঃ) এর ফাতহুল বারী, ১৩দশ খন্ড, ২৯৩ পৃ.
ইবনু হাম্বল (রহঃ) পর্যন্ত একথার সনদের ব্যাপারে ফাতহুল বারীতে বলা হয়েছেঃ “ইমাম হাকিম (রহঃ) তার মারিফাতু উলূমিল হাদীস গ্রন্থে আহমাদ বিন হাম্বল থেকে সহীহ সনদে বর্ণনা করেন যে এঁরা (নাজাতপ্রাপ্ত দল, আল-ফিরকাহ আন-নাজিয়াহ) যদি আহলে হাদীস না হয় তাহলে আমি জানিনা তারা কারা।”
“আমি আমার পিতা আহমাদ বিন হাম্বালকে এক ব্যক্তির ব্যাপারে জিজ্ঞেস করলাম, যে তার দ্বীন সংক্রান্ত বিষয়- 'তালাক্ব ও অন্যান্য বিষয়ের ক্বসম' এর ব্যাপারে সওয়াল করতে চায় যে ব্যাপারে সে কিনা পরীক্ষায় নিপতিত হয়েছে। সেখানে "আসহাবে রায়" এর একটি দল এবং"আসহাবে হাদীস" এর এমন একটি দল রয়েছে যারা হাদীস মুখস্ত করেনা এবং হাদীসের সনদ কোনটা দুর্বল আর কোনটা শক্তিশালী তা চেনেনা। এই দুই গ্রুপের উপস্থিতিতে সে কাকে ফতওয়া জিজ্ঞেস করবে? আহলে রায়কে নাকি আহলে হাদীসের ওই গ্রুপটাকে যদিও তাদের হাদীসের ব্যাপারে জ্ঞান কম? তিনি (আহমাদ বিন হাম্বল) বললেনঃ আসহাবে হাদীস বা আহলে হাদীসকে (যদিও ওই আহলে হাদীস হাদীস কম জানে) জিজ্ঞেস করবে, কেননা য'ঈফ হাদীস ও আবু 'হানীফাহর রায় অপেক্ষা শ্রেয়।
কিতাবুস সুন্নাহ, আব্দুল্লাহ বিন আহমাদ বিন হাম্বল, ১ম খন্ড ১৮০ পৃষ্ঠা, আমার পিতা ও অন্য মাশায়েখদের কাছ থেকে আবূ হানীফাহর ব্যাপারে কী স্মরণ রেখেছি অধ্যায়।
২. ফাতহুল বারীতে অনুরূপ আছে,
অর্থাৎ, ইমাম আত-তিরমিযী (রহঃ) উপরোক্ত অধ্যায়ের হাদীস উল্লেখ করে বলেছেন, আমি মুহাম্মাদ বিনইসমাঈল (ইমাম বুখারীর আসল নাম) কে বলতে শুনেছি যে তিনি তাঁর উস্তাদ আলী ইবনুল মাদীনীকে বলতে শুনেছেন যে, “তারা (মুক্তিপ্রাপ্ত দল) হলো আসহাবুল হাদীস।”
৭৩ ফির্ক্বাহর আলোচনায় ইমাম আততিরমিযী এ কথা এনেছেন।
৩. শায়খুল ইসলাম, ইমাম ইবনে তাইমিয়া রহিমাহুল্লাহ সুন্দর বলেছিলেনঃ
“অতএব প্রতীয়মান হচ্ছে যে মানুষের মধ্যে আলফিরক্বাহ আন না-জিয়াহ (নাজাত প্রাপ্ত দল) হবার সর্বাধিক হক্বদার হলো "আহলুল হাদীস ওয়াস সুন্নাহ", যাদের কোনো অনুসৃত নেতা নেই যার দিকে তারা পক্ষাবলম্বন করে, একমাত্র আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু 'আলাইহি ওয়া সাল্লাম ব্যতীত..".."তাঁদের অগ্রগামীই মামেরা রাসূলের (স) বাণীসমূহের এবং অবস্থাবলীর ব্যাপারে ফাক্বীহ, তারা হাদীসের মর্ম বোঝেন এবং সত্যায়ন, আমল করা, এবং ভালবাসার মাধ্যমে তার ইত্তিবা (অনুসরণ) করেন...যারা এই নীতি ভালবাসেন, তাঁদেরকে আহলে হাদীসের আলেমরা ভালবাসেন। আর যারা এই নীতির সাথে শত্রুতা করেন তাদেরকে আহলে হাদীসের আলেমরা শত্রু মনে করেন...আর যেসব বিষয়ে মানুষ বিবাদ করেছে, যেমন আল্লাহর মহান গুণাবলী, তাক্বদীর, শাস্তির ভীতি প্রদর্শন, আল্লাহর নামসমূহ, সৎ কাজের আদেশ, অসৎ কাজ হতে নিষেধ ইত্যাদি, এসমস্ত ব্যাপার তারা আল্লাহ এবং তাঁর রাসূলের দিকে সোপর্দ করেন...."
ইবনু তাইমিয়ার মাজমূউল ফাতাওয়া, ৩য় খন্ড, ৩৪৭ পৃ.।
৪. তাফসীর ইবনে কাসীরে সুরাহ বানী ইসরাঈলের ৭১ নং আয়াত [ يوم ندعو كل أناس بإمامهم ] "যেদিন আমি প্রত্যেক মানুষকে তার"ইমাম" ধরে ডাকব" এর তাফসীরে ইবনু কাসীর (রহঃ) বলেন,
هذا أكبر شرف لاصحاب الحديث لأن إمامهمالنبي صلى الله عليه و سلم
অর্থাৎ, এটি আসহাবুল হাদীস তথা আহলে হাদীসের সর্বোচ্চ সম্মান কারণ তাদের ইমাম স্বয়ং নবী (সঃ)।
৫. "দুনিয়ায় এমনকোনো বিদআ’তী নেই যে আহলে হাদীসদের প্রতি বিদ্বেষ রাখেনা।"
বলেছেন মুহাদ্দিস আহমাদ বিন সিনান আল ক্বাত্তান(রহঃ)
ইমাম 'হাকিমের মা'রিফাতু উলুমিলহাদীস পৃ ৪.।
৬. সৌদী আরবের সাবেকগ্র্যান্ড মুফতী সামাহাতুশ শায়খ আব্দুল আজীজ বিন বায রহিমাহুল্লাহ এক প্রশ্নের জবাবে ফির্ক্বাবাজী আর বিভিন্ন বিদ'আতী দল সম্পর্কে সতর্ক করার পর আদর্শ ইসলামী দলের উদাহরণ দিতে গিয়ে বলেনঃ
"যখন কোনো মুসলিম এমন কোনো দল অথবা মারকায অথবা জামঈয়াত (সংস্থা/সমাজ/সমিতি) খুঁজে পাবে যেটি আল্লাহর কিতাব এবং তাঁর রাসূল (সঃ) এর সুন্নাহর দিকে আহবান করে, যেমন মিসর এবং সুদানে "অনসারুস সুন্নাহ" এবং ভারত এবং পাকিস্তানে "জম'ঈয়াতে আহলে হাদীস", তখন তার উচিত তার অনুগামী হওয়া এবং তাকে আঁকড়ে ধরা।"
মাজমূ ফাতাওয়া ওমাক্বালাত মুতানাওওয়ি'আহ লিসামাহাতিশ শেইখ আল আল্লামাহ আব্দুল আযীয বিনআব্দিল্লাহ বিন বায (রহঃ) - ৮ম খন্ড ১৭৯ পৃ.।
৭. আমাদের অতি পরিচিত কাবার ইমাম সাউদ আশ-শুরাইম ও আব্দুর রাহমান আস-সুদাইসঃ
***মাক্কাহর হারাম শরীফের সন্মানিত ইমাম এবং মাক্কাহরউম্মুল ক্বুরা বিশ্ববিদ্যালয়ের কুল্লিয়াতুশ শারী'আহ ওয়াদ দিরাসা-তিলইসলামিয়্য়াহর সন্মানিত ডীন, ফাদ্বীলাতুশ
শায়খ প্রফেসর ড. সঊদ বিন ইব্রাহীম আশশুরাইম মুম্বাই শহরের আহলে হাদীস ভাইদের উদ্দেশ্যে আহলে হাদীসের কী ফযীলত বয়ানকরেছেন জানতে দেখুনঃ
http://www.youtube.com/watch?v=c4_RiwFf0RU
http://www.youtube.com/watch?v=iN1x5YOLjLg
আমি নিজেই অবাক হয়ে গেছি! তিনি বললেনঃ
শেখ স'উদ আশ শুরাইম বললেন, "আপনাদের সুস্বাগতম এই মোবারক-মোলাকাতে! আপনাদের সাথে এই মোলাকাত করাকে আমি আমার ওপর অবশ্য কর্তব্য (ওয়াজিব) মনে করি! যে সময়ে আমার দুই পা ভারতের মাটিতে এবং মুম্বাই শহরে পড়ল, তখনই আমি মনে করেছি আমাকে দেখা করে যেতে হবে আমার বন্ধু, ভাই এবং মহাব্বাতের পাত্র আহলে হাদীসদের সাথে! আহলে হাদীস হলো আত-ত-ইফাতুল মানসূরাহ (সাহায্য-প্রাপ্ত দল), যেমনটা আলেমরা বলে গেছেন। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু 'আলাইহি ওয়া সাল্লাম যখন বললেন, "আমার উম্মতের একটি দল সর্বদা হক্কের ওপর বিজয়ী থাকবে, তাদেরকে যারা পরিত্যাগ করবে বা বিরোধিতা করবে তারা তাদের কোনো ক্ষতি করতে পারবেনা (অর্থাৎ হক্বের ওপর বিজয়ী থাকা থেকে বিরত করতে পারবেনা) ক্বিয়ামত পর্যন্ত" তখন তাঁকে (সঃ) জিগ্যেস করা হলো তাদের ব্যাপারে, তিনি (সঃ) বললেন, তারা ওই জিনিসের ওপরই থাকবে যার ওপর আজ আমি আছি এবং আমার সাহাবাহ আছি। অনেক বিদ্বান যাদের মধ্যে আছেন ইমাম বুখারী (রঃ) এবং অন্যরা বলে গেছেন যে, “তারা হলো আহলে হাদীস”...সালাফদের (পূর্ববর্তী আলেমদের) কেউ বলেছেন, “তারা যদি আহলে হাদীস না হয় তাহলে আর কারা?”...
এবং কেন নয়, এই পরিচয়ের সম্বন্ধিকরণ তো একেবারে মানবজাতির সর্দার এবং ক্বিয়ামাতের দিন বনী-আদমের নেতা সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের দিকেই ফিরে যাচ্ছে!..আমরা যারা হারামাইন শরীফাইন এর দেশ সৌদী আরবে আছি, তারা আমাদের ভাই ভারতের আহলে হাদীসদের ভালবাসি, কেননা আমাদের মানহাজ (পথের বুঝ) একই, আক্বীদাহ একই…বললেন শায়খ শুরাইম।
***একই রকম কথা মাক্কাহর প্রধান ইমাম ও খত্বীব এবং উম্মুল ক্বুরা বিশ্ববিদ্যালয়ের সম্মানিত প্রফেসর ও বিশ্বখ্যাত ক্বারী ফাদ্বীলাতুশ শেখ ড. আব্দুর রহমান আস সুদাইস ও বলেছেন। youtube এ দেখুন
http://www.youtube.com/watch?v=aBKFcNW2S0g
http://www.youtube.com/watch?v=B2_iohd2XIA&feature=related
http://www.youtube.com/watch?v=z6CKozX8vWk
তিনি তো বললেন
“এটা কোনো অন্ধ পক্ষাবলম্বন নয় বা কোনো দলীয়তাও নয়, বরং প্রত্যেক মুসলিমেরই আহলে হাদীস হওয়া উচিত!"
৮. IslamQA এ শায়খ সালিহআল-মুনাজ্জিদের ফাতওয়াঃ
http://www.islamqa.com/en/ref/12761
http://islamqa.info/en/159436
‪#‎আহলে_বায়ত‬ কে?
“আহলে বায়ত” অর্থ হলো ঘরের বাসিন্দা বা যারা ঘরেথাকে, আহল বা পরিবারের লোকজন। এখানে আহলে বায়ত বলতে রাসুলুল্লাহ (সাঃ) এর পরিবারেরলোকজন তাঁর সেই আত্মীয়দেরকে বোঝানো হয়েছে যাদের জন্য সাদাকাহ খাওয়া হারাম ছিলো। তারা হচ্ছেন, খাদিজাহ (রাঃ), আলী (রাঃ), আয়িশাহ (রাঃ), ফাতিমাহ (রাঃ), হাসান(রাঃ), হুসাইন (রাঃ) ও অন্যান্যরা। কুরআন ও হাদীসে “আহলে বায়তদের” অনেক মর্যাদার কথাবলা হয়েছে।
উল্লেখ্য, “শিয়া” নামক ভ্রান্ত একটা দল দাবী করেতারা আহলে বায়তের অনুসারী, বিশেষ করে তারা আলী (রাঃ) এর অনুসারী হওয়ার দাবী করে। এটা ডাহা মিথ্যা কথা, যেমন মিথ্যা কথা আমাদের দেশের কবরপূজারীরা করে থাকে নিজেদের আহলে সুন্নাহ বলে পরিচয় দিয়ে। শিয়া নামক এই দল যারা নিজদের আহলে বায়তের অনুসারীবলে দাবী করে – এরা আসলে আহলে বায়তের চরম শত্রু। হাসান ও হুসাইন (রাঃ) এর হত্যার সাথে এদের প্রত্যক্ষবা পরোক্ষ ভূমিকা ছিলো। এরা মা আয়িশাহ (রাঃ) এর নামে জঘন্য অপবাদ দেয় (নাউযুবিল্লাহ) ।
আর আস্তে আস্তে পরবর্তীতে আহলে বায়তের অনুসারী হওয়ার দাবীদার এই শিয়াদের মাঝে (এরা আসলে ইয়াহুদী মুনাফেক আব্দুল্লাহ ইবনে সাবাহর অনুসারী) মারাত্মক রকমের শিরকি, কুফুরী আকীদা ঢুকেছে। আমাদের পাক-ভারত উপমহাদেশে কবরপূজারীদের বাপ-মা আসলে এই শিয়ারা। অনেক শিয়াদের আকীদা ইয়াহুদী, খ্রীস্টানদের চেয়ে জঘন্য। আর ইতিহাস স্বাক্ষী, শিয়ারা আহলে সুন্নাহর সাথে ইয়াহুদীদের থেকে বেশি শত্রুতা করে আসছে, আজ পর্যন্ত। সর্বশেষ, সিরিয়ার ঘটনা তার একটা প্রমান।

No comments:

Post a Comment

Download AsPDF

Print Friendly and PDFPrint Friendly and PDFPrint Friendly and PDF
Related Posts Plugin for WordPress, Blogger...