#অযু #শিক্ষা (বিশেষ করে শিশুদের শিক্ষা দিন)
=====================
অযু শিক্ষা
অযু একটি ইবাদত যা ছাড়া নামায হয় না। নামায ছাড়াও বহু এমন ইবাদত রয়েছে যা অযুর উপর নির্ভশীল। অযু যেমন একটি ইবাদত তেমন পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন হওয়ারও এটি একটি সুন্দর শারঈ উপায়। মহান আল্লাহ বলেন:
)يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُوا إِذَا قُمْتُمْ إِلَى الصَّلَاةِ فَاغْسِلُوا وُجُوهَكُمْ وَأَيْدِيَكُمْ إِلَى الْمَرَافِقِ وَامْسَحُوا بِرُءُوسِكُمْ وَأَرْجُلَكُمْ إِلَى الْكَعْبَيْنِ(
অর্থ: (হে মুমিনগণ! যখন তোমরা নামাযের জন্য প্রস্তুত হবে, তখন তোমরা তোমাদের মুখমন্ডল ও হাত কনুই পর্যন্ত ধৌত করবে এবং তোমাদের মাথা মাসাহ করবে এবং পা গিঁঠ পর্যন্ত ধুয়ে নিবে।) [সূরা মায়িদাহ/৬)
নবী স্বল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন: “বায়ু নির্গত হলে তার নামায হয় না যতক্ষণে সে অযু না করে”। [বুখারী]
অযু করার নিয়ম:
১-মনে মনে অযু করার ইচ্ছা করবে।
২-তারপর বিসমিল্লাহ বলবে।
৩-তারপর দুই হাত কব্জি পর্যন্ত তিন বার ধৌত করবে। দু’বার কিংবা এক বারও ধৌত করতে পারো।
৪-অত:পর মুখে পানি নিয়ে তিনবার কুল্লি করবে। ঠিক তেমনি নাকের ভিতর পানি টেনে নিয়ে বাইরে ঝেড়ে ফেলে দিবে তিন বার। এই দুটি কাজের জন্য এক সাথে পানি নেওয়া যায় কিংবা উভয়ের জন্য ভিন্ন ভিন্ন পানি ব্যবহার করা যায়। কুল্লি করা ও নাক ঝাড়ার কাজটি দুইবার কিংবা একবার করলেও তা বৈধ হবে।
৫-অত:পর মুখমন্ডল তিন বার ধৌত করবে। দু’বার কিংবা এক বার ধোয়াও বৈধ। মুখমন্ডলের সীমা হচ্ছে, কপালের উপরিভাগ যেখান থেকে চুল গজায় সেখান থেকে নিয়ে থুতিনর নিম্নভাগ পর্যন্ত। আর এক কানপট্টি থেকে অপর কানপট্টি পর্যন্ত।
৬-অত:পর ডান হাত কনুই পর্যন্ত তারপর বাম হাত কনুই পর্যন্ত তিনবার ধৌত করবে। দু’বার কিংবা একবার করে ধোয়াও জায়িয।
৭-অত:পর দু’হাতের আঙ্গুল ভিজিয়ে নিয়ে মাথার এবং কানের এক সাথে এক বার মাসাহ করবে। মাসাহর সময় খেয়াল রাখবে যেন, সম্পূর্ণ মাথা এবং কানের ভিতর বাহির মাসাহ করা হয়। এই দুই কাজের জন্য ভিন্ন ভিন্ন পানি ব্যবহার করা যেতে পারে।
৮-অত:পর ডান পা তারপর বাম পা গিঁঠ পর্যন্ত তিন বার ধৌত করবে। দু’বার এবং একবার করেও ধোয়া বৈধ।
৯-উপরোক্ত কাজগুলি বিরতি ছাড়াই ধারাবাহিকভাবে পরষ্পর করবে উল্টা-পাল্টা করবে না।
অযু শেষে দুআ:
(أشْهَدُ أنْ لا إله إِلاَّ اللَّهُ وَحْدَهُ لا شَرِيك لَهُ ، وأشْهَدُ أنَّ مُحَمَّداً عَبْدُهُ وَرَسُولُه )
উচ্চারণ: আশ্হাদু আন্ লা-ইলাহা ইল্লাল্লাহু ওয়াহদাহু, লা-শারীকা লাহু, ওয়া আশহাদু আন্না মুহাম্মাদান আবদুহূ ওয়া রাসূলুহু।
নবী স্বল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন: “যে কেউ পূর্ণরূপে অযু করবে অত:পর এই দুআ পাঠ করবে তাহলে তার জন্য জান্নাতের আটটি দরজা খুলে দেওয়া হবে। সে যেটি দিয়ে ইচ্ছা করবে তাতে প্রবেশ করবে”। [স্বহীহ মুসলিম নং ২৩৪]
অযু নষ্ট হওয়ার কারণসমূহ:
১- প্রস্রাবের রাস্তা দিয়ে প্রস্রাব ইত্যাদি বের হলে অযু নষ্ট হয়।
২-পায়খানার রাস্তা দিয়ে পায়খনা বা বায়ু নির্গত হলে অযু নষ্ট হয়।
৩-গভীর ঘুম গেলে অযু নষ্ট হয়।
৪-উটের গোশত খেলে অযু বিনষ্ট হয়।
অযু ছাড়া যা করা নিষেধ:
১-অযু ব্যতীত ফরয কিংবা নফল নামায পড়া নিষেধ।
২-অযু ব্যতীত আল্লাহর ঘর কা’বার তওয়াফ করা নিষেধ।
৩-অযু ছাড়া কুরআন মজীদ স্পর্শ করা নিষেধ; মুখস্ত পড়া বৈধ।
********************
অনুশীলন
১- শব্দার্থ লেখ।
ইবাদত, নির্ভরশীল, মুখমন্ডল, কনুই, গিঁঠ, নির্গত হওয়া, মাসাহ, বিরতি, ফরয, নফল, তওয়াফ।
২- এক কথায় উত্তর দাও।
ক-অযু ছাড়া কি হয় না?
খ-বায়ু নির্গত হলে কি করতে হয়?
গ-অযুর প্রথম কাজ কি?
ঘ-অযুর শেষ কাজ কি?
৩-একাধিক বাক্যে উত্তর দাও।
ক-অযু করার সময় কীভাবে কুল্লি এবং নাক পরিষ্কার করতে হয়?
খ-কীভাবে মাথার এবং কানের মাসাহ করতে হয়?
গ-মুখমন্ডলের সীমানা কি?
ঘ-অযুর দুআটি কি এবং তা বললে কি লাভ?
ঙ-অযু ছাড়া কি কি কাজ নিষেধ?
চ-অযুর কাজগুলি ধারাবাহিকভাবে করা এবং বিরতি ছাড়া পরষ্পর করা বলতে কি বুঝায়?
ছ-তোমার শিক্ষককে সম্পূর্ণ অযুর নিয়ম বর্ণনা দাও।
৪- নিচের কাজগুলির মধ্যে কোন্ টি অযু ভঙ্গের কাজ? বের করে লেখ।
ছাগলের গোশত খাওয়া, পেশাব করা, কথা বলা, দৌড়া-দৌড়ি করা, ভাত খাওয়া, পায়খানা করা, তন্দ্রা আসা, উটের গোশত খাওয়া, মলত্যাগ করা, কাঁত হয়ে শোয়া।
লিখেছেন শায়খ আব্দুর রাক্কীব বুখারী মাদানী হাফিযাহুল্লাহ।
=====================
অযু শিক্ষা
অযু একটি ইবাদত যা ছাড়া নামায হয় না। নামায ছাড়াও বহু এমন ইবাদত রয়েছে যা অযুর উপর নির্ভশীল। অযু যেমন একটি ইবাদত তেমন পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন হওয়ারও এটি একটি সুন্দর শারঈ উপায়। মহান আল্লাহ বলেন:
)يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُوا إِذَا قُمْتُمْ إِلَى الصَّلَاةِ فَاغْسِلُوا وُجُوهَكُمْ وَأَيْدِيَكُمْ إِلَى الْمَرَافِقِ وَامْسَحُوا بِرُءُوسِكُمْ وَأَرْجُلَكُمْ إِلَى الْكَعْبَيْنِ(
অর্থ: (হে মুমিনগণ! যখন তোমরা নামাযের জন্য প্রস্তুত হবে, তখন তোমরা তোমাদের মুখমন্ডল ও হাত কনুই পর্যন্ত ধৌত করবে এবং তোমাদের মাথা মাসাহ করবে এবং পা গিঁঠ পর্যন্ত ধুয়ে নিবে।) [সূরা মায়িদাহ/৬)
নবী স্বল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন: “বায়ু নির্গত হলে তার নামায হয় না যতক্ষণে সে অযু না করে”। [বুখারী]
অযু করার নিয়ম:
১-মনে মনে অযু করার ইচ্ছা করবে।
২-তারপর বিসমিল্লাহ বলবে।
৩-তারপর দুই হাত কব্জি পর্যন্ত তিন বার ধৌত করবে। দু’বার কিংবা এক বারও ধৌত করতে পারো।
৪-অত:পর মুখে পানি নিয়ে তিনবার কুল্লি করবে। ঠিক তেমনি নাকের ভিতর পানি টেনে নিয়ে বাইরে ঝেড়ে ফেলে দিবে তিন বার। এই দুটি কাজের জন্য এক সাথে পানি নেওয়া যায় কিংবা উভয়ের জন্য ভিন্ন ভিন্ন পানি ব্যবহার করা যায়। কুল্লি করা ও নাক ঝাড়ার কাজটি দুইবার কিংবা একবার করলেও তা বৈধ হবে।
৫-অত:পর মুখমন্ডল তিন বার ধৌত করবে। দু’বার কিংবা এক বার ধোয়াও বৈধ। মুখমন্ডলের সীমা হচ্ছে, কপালের উপরিভাগ যেখান থেকে চুল গজায় সেখান থেকে নিয়ে থুতিনর নিম্নভাগ পর্যন্ত। আর এক কানপট্টি থেকে অপর কানপট্টি পর্যন্ত।
৬-অত:পর ডান হাত কনুই পর্যন্ত তারপর বাম হাত কনুই পর্যন্ত তিনবার ধৌত করবে। দু’বার কিংবা একবার করে ধোয়াও জায়িয।
৭-অত:পর দু’হাতের আঙ্গুল ভিজিয়ে নিয়ে মাথার এবং কানের এক সাথে এক বার মাসাহ করবে। মাসাহর সময় খেয়াল রাখবে যেন, সম্পূর্ণ মাথা এবং কানের ভিতর বাহির মাসাহ করা হয়। এই দুই কাজের জন্য ভিন্ন ভিন্ন পানি ব্যবহার করা যেতে পারে।
৮-অত:পর ডান পা তারপর বাম পা গিঁঠ পর্যন্ত তিন বার ধৌত করবে। দু’বার এবং একবার করেও ধোয়া বৈধ।
৯-উপরোক্ত কাজগুলি বিরতি ছাড়াই ধারাবাহিকভাবে পরষ্পর করবে উল্টা-পাল্টা করবে না।
অযু শেষে দুআ:
(أشْهَدُ أنْ لا إله إِلاَّ اللَّهُ وَحْدَهُ لا شَرِيك لَهُ ، وأشْهَدُ أنَّ مُحَمَّداً عَبْدُهُ وَرَسُولُه )
উচ্চারণ: আশ্হাদু আন্ লা-ইলাহা ইল্লাল্লাহু ওয়াহদাহু, লা-শারীকা লাহু, ওয়া আশহাদু আন্না মুহাম্মাদান আবদুহূ ওয়া রাসূলুহু।
নবী স্বল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন: “যে কেউ পূর্ণরূপে অযু করবে অত:পর এই দুআ পাঠ করবে তাহলে তার জন্য জান্নাতের আটটি দরজা খুলে দেওয়া হবে। সে যেটি দিয়ে ইচ্ছা করবে তাতে প্রবেশ করবে”। [স্বহীহ মুসলিম নং ২৩৪]
অযু নষ্ট হওয়ার কারণসমূহ:
১- প্রস্রাবের রাস্তা দিয়ে প্রস্রাব ইত্যাদি বের হলে অযু নষ্ট হয়।
২-পায়খানার রাস্তা দিয়ে পায়খনা বা বায়ু নির্গত হলে অযু নষ্ট হয়।
৩-গভীর ঘুম গেলে অযু নষ্ট হয়।
৪-উটের গোশত খেলে অযু বিনষ্ট হয়।
অযু ছাড়া যা করা নিষেধ:
১-অযু ব্যতীত ফরয কিংবা নফল নামায পড়া নিষেধ।
২-অযু ব্যতীত আল্লাহর ঘর কা’বার তওয়াফ করা নিষেধ।
৩-অযু ছাড়া কুরআন মজীদ স্পর্শ করা নিষেধ; মুখস্ত পড়া বৈধ।
********************
অনুশীলন
১- শব্দার্থ লেখ।
ইবাদত, নির্ভরশীল, মুখমন্ডল, কনুই, গিঁঠ, নির্গত হওয়া, মাসাহ, বিরতি, ফরয, নফল, তওয়াফ।
২- এক কথায় উত্তর দাও।
ক-অযু ছাড়া কি হয় না?
খ-বায়ু নির্গত হলে কি করতে হয়?
গ-অযুর প্রথম কাজ কি?
ঘ-অযুর শেষ কাজ কি?
৩-একাধিক বাক্যে উত্তর দাও।
ক-অযু করার সময় কীভাবে কুল্লি এবং নাক পরিষ্কার করতে হয়?
খ-কীভাবে মাথার এবং কানের মাসাহ করতে হয়?
গ-মুখমন্ডলের সীমানা কি?
ঘ-অযুর দুআটি কি এবং তা বললে কি লাভ?
ঙ-অযু ছাড়া কি কি কাজ নিষেধ?
চ-অযুর কাজগুলি ধারাবাহিকভাবে করা এবং বিরতি ছাড়া পরষ্পর করা বলতে কি বুঝায়?
ছ-তোমার শিক্ষককে সম্পূর্ণ অযুর নিয়ম বর্ণনা দাও।
৪- নিচের কাজগুলির মধ্যে কোন্ টি অযু ভঙ্গের কাজ? বের করে লেখ।
ছাগলের গোশত খাওয়া, পেশাব করা, কথা বলা, দৌড়া-দৌড়ি করা, ভাত খাওয়া, পায়খানা করা, তন্দ্রা আসা, উটের গোশত খাওয়া, মলত্যাগ করা, কাঁত হয়ে শোয়া।
লিখেছেন শায়খ আব্দুর রাক্কীব বুখারী মাদানী হাফিযাহুল্লাহ।
No comments:
Post a Comment