কাকের একাধিক প্রকার আছে। কিছু কাক আছে বিরল, সাধারণতঃ সব দেশে দেখা যায় না। সেই কাকের উপমা দিয়ে বিরলতা প্রকাশ করা হয়। যেমন হাদীসে এসেছে, রাসূলুল্লাহ (সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেছেন,
« خَيْرُ نِسَائِكُمُ الْوَدُودُ الْوَلُودُ الْمَوَاتِيَةُ الْمُوَاسِيَةُ إِذَا اتَّقَيْنَ اللَّهَ، وَشَرُّ نِسَائِكُمُ الْمُتَبَرِّجَاتُ الْمُتَخَيِّلاَتُ وَهُنَّ الْمُنَافِقَاتُ لاَ يَدْخُلُ الْجَنَّةَ مِنْهُنَّ إِلاَّ مِثْلُ الْغُرَابِ الأَعْصَمِ ».
“তোমাদের সর্বশ্রেষ্ঠ স্ত্রী সে, যে প্রেমময়ী, অধিক সন্তানদাত্রী, যে (স্বামীর) সহমত অবলম্বন করে, (স্বামীকে বিপদে-শোকে) সান্ত্বনা দেয় এবং সেই সাথে আল্লাহর ভয় রাখে। আর তোমাদের সবচেয়ে খারাপ মেয়ে তারা, যারা বেপর্দা, অহংকারী, তারা কপট নারী, তাদের মধ্যে লাল রঙের ঠোট ও পা-বিশিষ্ট কাকের মত (বিরল) সংখ্যক বেহেস্তে যাবে।” (বাইহাকী ১৩২৫৬নং)
এমন নারীদের ভাগ্যে তওবার সুযোগ কমই ঘটে। তাই অনুরূপ বিরল কাকের মতো বিরল সংখ্যক মুনাফিক নারী জান্নাতে প্রবেশ করবে; যদি তাদের ঈমান ও আমলে তওহীদ থাকে, শির্ক না থাকে এবং বিশ্বাসগত মুনাফিকী না থাকে। এমন নারী বেপর্দা ও তারা নিজেদের দেহ বা দেহাংশ এমন পুরুষকে দেখায়, যার জন্য দেখা বৈধ নয়। দেহাঙ্গে ঠিকমতো কাপড় রাখে না। অথবা এমন কাপড় রাখে, যার উপর থেকে ভিতরের সব কিছু দেখা যায়। এমন নারী অহংকারী ও মানুষকে তুচ্ছ করে। কথা ও কর্মে গর্ব প্রকাশ করে। নিজ অলংকার-পোশাক, ঘর-বাড়ি, মায়ের বাড়ি, শ্বশুরবাড়ি বা স্বামী-সন্তান নিয়ে ফখর ও ফুটানি করে। বিশেষ করে নিজ ভর্তা ও কর্তা (স্বামী)কে ছোট করে। কথা ও আচরণে তাকে হেনস্থা করে। তাকে ভেড়া বানিয়ে রাখে। তার আচরণিক শ্লোগান থাকে, স্বামী আমি জানি না, পরের ছেলে মানি না।
শ্বশুরবাড়ির লোককেও কোন পরোয়া করে না। কারো কথা শোনেনা, হক গ্রহণ করে না, কারো উপদেশ মেনে নেয় না। কথায় কথায় তর্ক ও ঝগড়া করে, বড়দেরকে কোন পাত্তাই দেয় না।
আর হাদীসে এসেছে, “যার অন্তরে অণু পরিমাণ অহঙ্কার থাকবে, সে জান্নাতে প্রবেশ করতে পারবে না।” (মুসলিম ২৭৫নং)
এমন নারী মুনাফিকঃ আর কর্মগত মুনাফিকের গুণ হল পাঁচটি। (১) তার কাছে আমানত রাখা হলে খিয়ানত করে। (২) কথা বললে মিথ্যা বলে। (৩) ওয়াদাহ করলে তা ভঙ্গ করে। (৪) চুক্তি করলে ভঙ্গ করে। এবং (৫) ঝগড়া-বিবাদে লিপ্ত হলে অশ্লীল ভাষা বলে। (বুখারী, মুসলিম)
এমন অহংকারী মেয়ে কথায় কথায় স্বামীর কাছে তালাক চায়। পান থেকে চুন খসতেই বলে ওঠে, ‘আমাকে তালাক দাও!’ হাদীসে এসেছে,
((الْمُخْتَلِعَاتُ وَالْمُنْتَزِعَاتُ هُنَّ الْمُنَافِقَاتُ)).
“খোলা তালাক প্রার্থিনী এবং বিবাহ বন্ধন ছিন্নকারিণীরা মুনাফিক মেয়ে।” (আহমাদ ৯৩৫৮, নাসাঈ ৩৪৬১, বাইহাকী, সিলসিলাহ সহীহাহ ৬৩২নং)
আর অকারণে তালাক চায়, এমন মেয়েরা জান্নাতের নিকট থেকে ৪০, ৭০ বা ৫০০ বছরে অতিক্রম্য দূরবর্তী স্থানে থাকবে,
মহানবী (সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেছেন,
((أَيُّمَا امْرَأَةٍ سَأَلَتْ زَوْجَهَا الطَّلَاقَ مِنْ غَيْرِ مَا بَأْسٍ فَحَرَامٌ عَلَيْهَا رَائِحَةُ الْجَنَّةِ)).
“যে স্ত্রীলোক অকারণে তার স্বামীর নিকট থেকে তালাক চাইবে, সে স্ত্রীলোকের জন্য জান্নাতের সুগন্ধও হারাম হয়ে যাবে।” (আহমাদ ২২৩৭৯, আবু দাউদ ২২২৬, তিরমিযী ১ ১৮৭, ইবনে মাজাহ ২০৫৫নং, ইবনে হিব্বান, বাইহাকী ৭/৩ ১৬, সহীহুল জামে' ২৭০৬নং)।
সংগ্রহেঃ আব্দুল হামীদ আল-ফাইজী আল-মাদানী হাফিযাহুল্লাহ।
No comments:
Post a Comment