مَنْ كَانَ يُرِيدُ الْحَيَاةَ الدُّنْيَا وَزِينَتَهَا نُوَفِّ إِلَيْهِمْ أَعْمَالَهُمْ فِيهَا وَهُمْ فِيهَا لا يُبْخَسُونَ أُولَئِكَ الَّذِينَ لَيْسَ لَهُمْ فِي الآخِرَةِ إِلاَّ النَّارُ وَحَبِطَ مَا صَنَعُوا فِيهَا وَبَاطِلٌ مَا كَانُوا يَعْمَلُونَ-هود/15-16
যে দুনিয়ার জীবনের মহার্ঘতা চাইবে সে পথে তার কর্মসমুহ সফলতা পায়। এতে তাদের প্রতি কার্পন্য করা হয়না। তবে তাদের জন্যে আখেরাতে আগুনের আজাব ছাড়া আর কিছুই বাকী থাকেনা। তাদের দুনিয়ার কাজ-কর্ম সব নিস্ফল হয়েছে-(হুদ/১৫-১৬)।
مَّن كَانَ يُرِيدُ الْعَاجِلَةَ عَجَّلْنَا لَهُ فِيهَا مَا نَشَاءُ لِمَن نُّرِيدُ ثُمَّ جَعَلْنَا لَهُ جَهَنَّمَ يَصْلَاهَا مَذْمُومًا مَّدْحُورًا - وَمَنْ أَرَادَ الْآخِرَةَ وَسَعَىٰ لَهَا سَعْيَهَا وَهُوَ مُؤْمِنٌ فَأُولَٰئِكَ كَانَ سَعْيُهُم مَّشْكُورًا - كُلًّا نُّمِدُّ هَٰؤُلَاءِ وَهَٰؤُلَاءِ مِنْ عَطَاءِ رَبِّكَ ۚ وَمَا كَانَ عَطَاءُ رَبِّكَ مَحْظُورًا – الإسراء/18-20
যে নগদটা চাইবে আমরা তাকে নগদটা দেব, তবে যাকে যে পরিমাণ দিব সে তাই পাবে। অতপর সে অপমান অপদস্থ অবস্থায় জাহান্নামে তা চিত্তে করবে। আর যারা আখেরাত চাইবে এবং সে জন্যে ইমান সহকারে যা করনীয় সে জন্যে অকুণ্ঠ প্রচেষ্টা করবে, তাদের প্রচেষ্টা প্রশংসিত হবে। উভয় ধরনের লোকদেরকেই তোমার প্রভুর-ভাণ্ডার থেকে দেওয়া হয়। তোমার প্রভুর দান কারো জন্যে নিষিদ্ধ নয়-( সুরা ইসরা/১৮-২০)।
مَنْ كَانَ يُرِيدُ حَرْثَ الْآَخِرَةِ نَزِدْ لَهُ فِي حَرْثِهِ وَمَنْ كَانَ يُرِيدُ حَرْثَ الدُّنْيَا نُؤْتِهِ مِنْهَا وَمَا لَهُ فِي الْآَخِرَةِ مِنْ نَصِيبٍ- الشورى/20
যারা আখেরাতের ফসল চায় তাদেরকে আরো বাড়তি কিছু দেই। আর যারা দুনিয়ার ফসল চায় তাদেরকে তাই দেই, কিন্তু আখেরাতে তাদের জন্যে কিছুই পাওয়ার থাকবেনা-( সুরা শুরা/২০)।
وَابْتَغُوا مَا كَتَبَ اللَّهُ لَكُمْ- البقرة/187
আল্লাহ্ যা তোমাদের প্রত্যেকের জন্যে বরাদ্দ করে রেখেছেন তোমরা তা তালাশ করো- ( সুরা বাকারা/১৮৭)।
وَابْتَغُوا مِن فَضْلِ اللَّهِ وَاذْكُرُوا اللَّهَ كَثِيرًا لَّعَلَّكُمْ تُفْلِحُونَ- الجمعة/10.
আল্লাহর অনুগ্রহের দান তালাশ কর, আল্লাহকে বেশী করে স্মরন কর; তাহলেই হয়তো সফলকাম হবে-( সুরা জুম’আ/১০)।
قيل للحسن البصري: ما العلاقة بين الدين والدنيا؟ قال بينهما علاقة المشرق بالمغرب، إنك إذا اقتربت من أحدهما بدرجة ابتعدت من الآخر مثلها.
একই প্রশ্নের জওয়াবে ফাদল ইবণূ আইয়াদ রাঃ বলেছেনঃ
مثلهما مثل الضرتين فإن أرضيت الواحدة أغضبت الأخرى.
দুনিয়া ও আখেরাতের মধ্যে সম্পর্ক দুই সতীনের সম্পর্কের মত;একজনকে খুশী করেছ ত অন্যজন নাখোশ!
উপরের আয়াত ও উক্তি সমুহ থেকে যা শিক্ষা পাই তা হলঃ
১) দুনিয়া ও আখেরাতের মধ্যকার সম্পর্ক বিপরীত মুখী। যে কোন এক দিকে যত অগ্রসর হবে অন্যদিক দিক থেকে তত দূরে সরে যাবে।
২) দুনিয়ার হিসসা যা আল্লাহ্ বণ্টন করে রাখেন তা তালাশ না করলে পাওয়া যায়না। এই তালাশ করা দোষের কাজ নয়, বরং সাওয়াবেরও।
৩) যে শুধু দুনিয়া চাইবে সে আখেরাত থেকে বঞ্চিত হবে।
৪) যে শুধু আখেরাত তালাশে নিমগ্ন থাকবে আল্লাহর পক্ষ থেকে তাঁর জন্যে দুনিয়ার হিসসা সহজ লভ্য করে দেওয়া হবে।
৫) আখেরাতের সাফল্য কামনা করলেই মিলবেনা সে জন্যে সকল সামর্থ দিয়ে চেষ্টা করতে হবে।
৬) দুনিয়া ও আখেরাতের পথ সকলের জন্যে খোলা। কিন্তু আখেরাতের সাফল্য পাবেন শুধুই মুত্তাকী-পরহেজগার গন।
৭) আখেরাতের সফলতার জন্যে ‘তাকওয়া-পহেজগারী’ অত্যাবশ্যক। দুনিয়া অর্জনের জন্যে তাকওয়া আবশ্যক নয়। চরম খারাপ চরিত্রের ব্যক্তিও দুনিয়া লাভ করতে পারে যদি আল্লাহ্ বাঁধা সৃষ্টি না করেন।
৮) আল্লাহ্ দুনিয়ার নিজ অংশ ভুলে যেতে মানা করেছেন। তাই বলে মুমিন দুনিয়ার জন্যে আখেরাত ভুলে যেতে পারেনা। আখেরাত এর গুরুত্বও তার কাছে নগণ্য হতে পারেনা।
সংগ্রহঃ শায়খ Muzammel Hoque
No comments:
Post a Comment