Tuesday 30 December 2014

নববর্ষ [থার্টিফাস্ট নাইট] ইহুদি, খৃস্টান ও মুশরিকদের উৎসব




নববর্ষ [থার্টিফাস্ট নাইট] ইহুদি, খৃস্টান ও মুশরিকদের উৎসব উদযাপন করা হারাম পবিত্র কুরআনে আল্লাহ তা'আলা বলেন : “হে মুমিনগণ, তোমরা আল্লাহকে ভয় কর, যথাযথ ভয়। আর তোমরা মুসলিম হওয়া ছাড়া মারা যেও না”। ----------[সূরা আলে-ইমরান: (১০২)] মুসলিম হতে হলে মহান আল্লাহ তা'আলা যা আদেশ করেছেন তা পালন করতে হবে আর যা নিষেধ করেছেন তা থাকে বিরত থাকতে হবে এবং মহান আল্লাহ্‌ তা'আলার সন্তুষ্টি অর্জনই আমাদের জীবনের একমাত্র লক্ষ্য হতে হবে। যারা আমাদের ধর্ম কে মানে না আল্লাহ্‌কে বিশ্বাস করে না তাদের উৎসব, রীতিনীতি ও কালচার পালন করে তাদেরকে বন্ধু হিসেবে গ্রহন ও সমর্থন করে আপনি নিজেকে মুসলিম দাবি করছেন???? পবিত্র কুরআনে আল্লাহ তা'আলা বলেন : “হে মুমিনগণ, তোমরা তাদেরকে বন্ধুরূপে গ্রহণ করো না, যারা তোমাদের দীনকে উপহাস ও খেল-তামাশারূপে গ্রহণ করেছে, তাদের মধ্য থেকে তোমাদের পূর্বে যাদেরকে কিতাব দেয়া হয়েছে ও কাফিরদেরকে। আর আল্লাহর তাকওয়া অবলম্বন কর, যদি তোমরা মুমিন হয়ে থাক”। ----------[সূরা মায়েদা: (১৫৭)] “হে মুমিনগণ, ইহুদি ও নাসারাদেরকে তোমরা বন্ধুরূপে গ্রহণ করো না। তারা একে অপরের বন্ধু। আর তোমাদের মধ্যে যে তাদের সাথে
বন্ধুত্ব করবে, সে নিশ্চয় তাদেরই একজন। নিশ্চয় আল্লাহ জালিম কওমকে হিদায়াত দেন না”। ----------[সূরা মায়েদা: (৫১)] আপনি নিজেকে মুসলিম বলছেন তো!!! আবার “হ্যাপি নিউ ইয়ার” বলে তাদের উৎসবকে সমর্থন করছেন। এখন নিজের স্থানটি নিজেই বুঝে নিন। অনেক মুসলিম ভাই ও বোনেরা এখন থেকেই প্রেপারেইশন নিচ্ছেন থার্টিফাস্ট নাইটের ব্যাপারে!!! একবার ভেবে দেখেন কি করতে যাচ্ছেন!!! ইহুদি, খৃস্টান ও মুশরিকদের উৎসব ...বাংলা নববর্ষ ‘পহেলা বৈশাখ’, ইংরেজি নববর্ষ ‘থার্টিফাস্ট নাইট’, হিজরি নববর্ষ এবং বড় দিন ইত্যাদি পালন করা হারাম। ইব্‌ন কাসির রাহিমাহুল্লাহ বলেন: “কোন মুসলিমের সুযোগ নেই কাফেরদের সামঞ্জস্য গ্রহণ করা, না তাদের ধর্মীয় উৎসবে, না মৌসুমি উৎসবে, না তাদের কোন ইবাদতে। “নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মদিনায় আগমন করলেন, তখন তাদের দু’টি দিন ছিল, যেখানে তারা খেলা-ধুলা করত। তিনি বললেন: এ দু’টি দিন কি? তারা বলল: আমরা এতে জাহিলি যুগে খেলা-ধুলা করতাম। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন: নিশ্চয় আল্লাহ তাআলা তার পরিবর্তে তার চেয়ে উত্তম দু’টি দিন দিয়েছেন: ঈদুল আদহা ও ঈদুল ফিতর”। ----------[আবু দাউদ: (১১৩৪), আহমদ: (১৩২১০), হাকেম: (১১২৪)।. বুলুগুল মারাম: (৯৩), ফাতহুল বারি: (৩/১১৩)] ইব্‌ন তাইমিয়াহ রাহিমাহুল্লাহ বলেন: “এ হাদিস প্রমাণ করে কাফেরদের উৎসব পালন করা হারাম। কারণ নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আনসারদের জাহিলি দুই ঈদের উপর বহাল রাখেননি। রীতি মোতাবেক তাতে খেলা-ধুলার অনুমতি দেননি। তিনি বলেছেন: নিশ্চয় আল্লাহ তোমাদেরকে পরিবর্তন করে দিয়েছেন। এর দাবি পূর্বের আমল ত্যাগ করা। কারণ বদল করার পর উভয় বস্তুকে জমা করা যায় না। বদল শব্দের অর্থ একটি ত্যাগ করে অপরটি গ্রহণ করা”। ----------[ফায়দুল কাদির: (৪/৫১১)] নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের বাণী: “যে ব্যক্তি কোন সম্প্রদায়ের সাথে সামঞ্জস্য রাখল সে তাদের অন্তর্ভুক্ত”। ----------[আবু দাউদ: (৩৫১৪)] ইব্‌ন তাইমিয়াহ রাহিমাহুল্লাহ বলেন: “আল্লাহর কিতাব, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের সুন্নত, খোলাফায়ে রাশেদিনের আদর্শ ও সকল আলেম একমত যে, মুশরিকদের বিরোধিতা করতে হবে এবং তাদের সাদৃশ্য গ্রহণ করা যাবে না”। ----------[মাজমুউল ফতোয়া: (২৫/৩২৭)] কারণ নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন: “যে কোন কওমের সাথে সামঞ্জস্য রাখল, সে তাদের অন্তর্ভুক্ত”। ----------[আবু দাউদ: (৩৫১৪), আহমদ: (৫১০৬)।. ইকতিদাউস সিরাতুল মুস্তাকিম: (১/২৪০)। ফাতহুল বারি: (১১/৪৪৩)] এ প্রসঙ্গে ইব্‌ন তাইমিয়াহ রাহিমাহুল্লাহ বলেন: “এ হাদিসের সর্বনিম্ন দাবি তাদের সাদৃশ্য গ্রহণ করা হারাম, যদিও হাদিসের বাহ্যিক অর্থের দাবি কুফরি”। ----------[আলফুরু: (১/৩৪৮)] ইব্‌নুল কাইয়্যিম রাহিমাহুল্লাহ বলেন: “এর রহস্য বাহ্যিক সাদৃশ্য মানুষকে নিয়ত ও আমলের সাদৃশ্যের দিকে ধাবিত করে”। -----------[ইলামুল মুয়াক্কিয়িন: (২/১০৭)] তিনি আরো বলেন: “কিতাবি ও অন্য কাফেরদের সাদৃশ্য গ্রহণ করা থেকে একাধিক জায়গায় নিষেধাজ্ঞা এসেছে, কারণ বাহ্যিক সামঞ্জস্য আভ্যন্তরীণ সামঞ্জস্যের দিকে ধাবিত করে, যখন আদর্শের সাথে আদর্শ মিলে যায়, তখন অন্তরের সাথে অন্তর মিলে যায়”। ----------[ইগাসাতুল লাহফান] আল্লাহ তাআলা নির্দেশ দিচ্ছেন: “হে মুমিনগণ, তোমরা ইসলামে পূর্ণরূপে প্রবেশ কর এবং শয়তানের পদাঙ্ক অনুসরণ করো না। নিশ্চয় সে তোমাদের জন্য স্পষ্ট শত্রু”। ----------[সূরা বাকারা: (২০৮)] অতএব কোন মুসলিমের জন্য বৈধ নয় ইহুদি, খৃস্টান ও মুশরিকদের উৎসব পালন করা, যেমন নববর্ষ ও অন্যান্য উৎসবসমূহ। একজন মুসলিম হিসেবে আমাদের উচিত কুরআন ও সুন্নাহ অনুসরন করা। হে আল্লাহ্‌!!! আমাদেরকে সরল পথ দেখান, সে সমস্ত লোকের পথ যাদেরকে আপনি নেয়ামত দান করেছেন। তাদের পথ নয়, যাদের প্রতি আপনার গজব নাযিল হয়েছে এবং যারা পথভ্রষ্ট হয়েছে। আমীন।

No comments:

Post a Comment

Download AsPDF

Print Friendly and PDFPrint Friendly and PDFPrint Friendly and PDF
Related Posts Plugin for WordPress, Blogger...