Tuesday, 1 April 2025

মুসলমানদের উত্থান-পতনের ইতিহাস


৭১১ খৃষ্টাব্দে বীরসেনা তারেক্ব বিন যিয়াদের সেনাপতিত্বে মুসলিমগণ ইউরোপের 'স্পেন'  জয়লাভ করেন। ১৪৯২ খৃষ্টাব্দ পর্যন্ত এটি মুসলিম শাসনাধীন রাষ্ট্র ছিল। এই দীর্ঘ আটশত বছরে মুসলিমগণ ইউরোপকে ঢেলে সাজালেন। জ্ঞান-বিজ্ঞান, কলেজ, ইউনিভার্সিটি ইত্যাদিতে দেশকে নূতন রূপ দিয়েছিলেন।

মুসলমানদের যখন লক্ষ লক্ষ গ্রন্থরাজি, তখন রানী ইথাবিলার গ্রন্থাগারে মাত্র ২০১ খানা বই। ফ্রান্সের শাহী কুতুব-খানায় ৯০০ খানা বই ছিল। মুসলমানদের যেখানে বহু বিষয়ের বই ছিল, সেখানে খৃষ্টানদের কেবল ইনজীল ও তওরাতের বিভিন্ন সংস্করণ। (তথ্য সংগ্রহ, উর্দু তরজুমান, ১লা নভেম্বর ১৯৮২ খৃঃ সংখ্যা থেকে)

 এরপর পতনঃ

বিলাসিতা ও আপোষ-দ্বন্দ্বের জন্য খৃষ্টানরা মওকা পেয়ে গেল। রানী ইথাবিলা ও রাজা ফার্ডিন্যান্ড বৈবাহিকসূত্রে আবদ্ধ হয়ে মুসলিম নিধনে উঠে পড়ে লাগলেন। মুসলিমগণ পরাজিত হতে লাগলেন। শেষে তদানীন্তন স্পেনের রাজধানী গ্রানাডায় আশ্রয় নিলেন। রাজা ফার্ডিন্যান্ড বললেন, মুসলিম বাহিনী যদি নিরস্ত্র অবস্থায় মসজিদে মসজিদে অবস্থান করে, তবে তাদেরকে মুক্তি দেওয়া হবে। মুসলমানরা আল্লাহর উপর 'তাওয়াক্কুল' হারিয়ে রাজার কথায় বিশ্বাস করে মসজিদে মসজিদে নিরস্ত্র অবস্থায় প্রবেশ করলেন। অমনি রাজা নিজের সেনাদেরকে আদেশ করলেন যে, মসজিদগুলোতে শিকল তুলে আগুন ধরিয়ে দাও।

যেমনি আদেশ তেমনি কাজ। আগুন ধরিয়ে দেওয়া হল। মুসলিমদেরকে নির্মমভাবে মাছ পোড়া করে দিল। পতনোত্তর কালে বিদ্রোহীর নির্দেশে গ্রানাডায় ৮০ হাজার গ্রন্থ পুড়িয়ে ছাই করে দেওয়া হল। আর সারা দেশ থেকে আরাবী ক্লাসের লক্ষাধিক গ্রন্থ পুড়িয়ে নিশ্চিহ্ন করা হল!

এর দুঃখ কেবল মুসলমানদেরই নয় বরং ঐতিহাসিক 'স্কট' বলেছেন, 'এ এমন দুর্ভাগ্যজনক ঘটনা, এমন এক মুসীবত যার উপর শুধু বর্তমান যুগ নয়, বরং আগামী দিনের প্রত্যেক জ্ঞান-পিপাসু ব্যক্তিকে অশ্রু বিসর্জন করতে হবে। স্পেনের পতনের মত অত বড় পতন বুঝি মুসলিমদের আর হয়নি। এই পতনের তারীখ, ১৪৯২ খৃষ্টাব্দের ১লা এপ্রিল।

এই দিনে রাজা ফার্ডিন্যান্ড ব্যঙ্গ করে বলেছিলেন, হে মুসলিম! তোমরা 'এপ্রিল ফুল' Fool অর্থে বোকা। বোকা মুসলমান আজও পয়লা এপ্রিলে সেই রসিকতার খেলা খেলে থাকে। এই খেলাতে যে, মুসলমানদের অভিশাপ ও পতন লুকিয়ে আছে তা মুসলমানদের জানা নেই। এ ইতিহাস কান্নার ইতিহাস। এপ্রিল ফুলের রসিকতা খেলা খৃষ্টানদের পক্ষেই শোভা পায়। মুসলমানদের জন্য এটা মোটেই শোভা পায় না।

খৃষ্টানবাহিনী রাজত্ব করায়ত্ব করেই ক্ষান্ত হয়নি বরং তারা মুসলমানদের রচিত জ্ঞান-বিজ্ঞানের ধন ভান্ডার মূল্যবান গ্রন্থগুলি না পুড়িয়ে যত্ন করে গচ্ছিত করে নিজেদের করায়ত্ত করেছে। পরবর্তী কালে ল্যাটিন ইত্যাদি ভাষাতে অনুবাদ করে মুসলমানদের নাম উচ্ছেদ করে নিজেদের নাম বসিয়ে আমূল পরিবর্তন ঘটিয়েছে। আরবী কবি এরই শোক-কাহিনী বড় ব্যাথাতুর মনে গেয়েছেন। তার বাংলা অনুবাদটি এই রকমঃ-

                  রাজ্য গেছে, তাতে কান্না কেন?  সে তো ক্ষণেকের বস্তু!

                                  শাশ্বত আইন মেনে নিতে হয়

                                     নিষ্কৃতি নেই তা হতে;

                              কিন্তু ঐ বিদ্যাধন, মতিসম গ্রন্থরাজী

                                  নিয়ে গেছে ইংরেজ জাতি,

                                     দেখিলে কান্না আসে

                                      হৃদয় দগ্ধ হয় ক্ষতে।

(বিভিন্ন পত্র-পত্রিকা, 'এপ্রিল ফুলের বেড়াজালে মুসলিম সমাজ' থেকে সংগৃহীত)

বইঃ বক্তৃতাসম্ভার

উস্তায মওলানা আব্দুর রঊফ শামীম (রাহিমাহুল্লাহ)

(মতান্তরে এই প্রেক্ষাপট ঐতিহাসিকভাবে প্রমাণিত নয়। উক্ত করুণ ইতিহাসের সাথে ১লা এপ্রিলের যোগসূত্র নেই। আমি নিজে মদীনা ইউনিভার্সিটির ইতিহাসবিদ উস্তাযকে সরাসরি এপ্রিল ফুলের ইতিহাস সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করেছিলাম, তিনি মুসলিমদের দুর্ভাগ্যের ঐ ইতিহাসের সাথে ১লা এপ্রিলের কোন যোগ থাকার কথা পড়েননি বলে মন্তব্য করেছিলেন। আর আল্লাহই ভালো জানেন।)

---আব্দুল হামীদ আল-ফাইযী আল-মাদানী

Friday, 7 March 2025

হিজবুত তাহরীর এর ভয়ংকর আক্বীদাহ!



প্রতিষ্ঠাতা:

এই দলের প্রতিষ্ঠাতা ও প্রথম আমীর হচ্ছেন তকীউদ্দীন নাবাহানী। তিনি ১৯০৯ সালে বর্তমান ইসরাঈলের হাইফা শহরে জন্ম গ্রহণ করেন। তিনি ১৯৪৮ সালে বাইরুতে হিজবুত তাহরীর প্রতিষ্ঠা করেন। ১৯৭৭ সালে তিনি বাইরুতে ইন্তকাল করেন।

.

দলটির মূলনীতি:

এ দলের মূলনীতি ও মতাদর্শ 

'মু'তাযিলা ও আশআরী সম্প্রদায়ের সাথে মিলে যায়। তারা শরীয়তের দলীলের উপর মানবীয় বিবেক বুদ্ধিকে প্রাধান্য দিয়ে থাকে।

.

এই দলের কার্যকলাপ সম্পর্কে যতদূর জানা যায়:

তাদের একমাত্র দাবী হচ্ছে খেলাফত প্রতিষ্ঠা করা। এই দিকেই তারা আহবান করে। ঈমান, নামায, রোজা ও ইসলামের অন্যান্য বিষয় সম্পর্কে তাদের কোন তৎপরতা লক্ষ্য করা যায় না। তাদের অনেক নেতাই নিজ নিজ দেশ ছেড়ে পাশ্চাত্য দেশে গিয়ে স্থায়ীভাবে বসবাস করছে। তারা খেলাফত পুনরুদ্ধার করতে চায়। কিন্তু শির্ক, বিদআত, সুফীবাদ ও পাপ কাজে লিপ্ত হওয়ার কারণে যে উছমানী খেলাফতের পতন ঘটেছে, তা নিয়ে তাদের কোন মাথা ব্যাথা নেই। তারা নিজেদের অবস্থার পরিবর্তন ছাড়াই আল্লাহর কাছে ভাগ্যের পরিবর্তন চায়। তারা সবসময় রাজনীতি নিয়েই ভাষণ ও বক্তৃতা দেয়। ইসলামের অন্যান্য মৌলিক শিক্ষার দিকে কোন গুরুত্ব নেই। মুসলিম দেশের সেনাপতি অমুসলিম হলেও তাদের কোন অসুবিধা নেই। 

--- [ দেখুনঃ ৫/৬/১৯৭০ তারিখে এ দলের আমীর নাবহানী কর্তৃক প্রকাশিত একটি প্রশ্নোত্তর সম্বলিত লিফলেট ]

.

তাদের মতে, হারাম পথ অবলম্বন করে লক্ষ্য-উদ্দেশ্যে পৌঁছাতে কোন অসুবিধা নেই। আমরা যে অর্থে তাকদীরের প্রতি বিশ্বাস করি, তারা তা অস্বীকার করে। 

---- [ দেখুনঃ আদ্-দাওসীয়া, পৃষ্ঠা নং-১৮ ]

.

আক্বল তথা মানবীয় বিবেক হচ্ছে দ্বীনের অন্যতম মূলনীতি। তাদের এ নীতিটি মুতাযেলাদের কথার সাথে মিলে যায়। কর্মক্ষেত্রে নারী ও পুরুষের একত্রিত হওয়া এবং পরস্পর সহযোগিতা করা জরুরী।

শিয়া ও সুন্নীর মধ্যে কোন পার্থক্য নেই।

---- [ দেখুনঃ আল-ওয়াঈ আত্ তাহরীরিয়া, সংখ্য ৭৫, বর্ষ-১৯৯৩ ]

.

Sunday, 2 March 2025

আল্লামা বিন বায রাহ. কর্তৃক প্রদত্ব ছোট ছোট প্রশ্নের গুরুত্বপূর্ণ উত্তর (৫৪টি)

 


আল্লামা ইমাম আব্দুল আজিজ বিন বায রাহ.  রমজান, সিয়াম, তারাবিহ, কিয়ামুল্লায়, ইতিকাফ, সফর, কুরআন তিলাওয়াত, দুআ, উমরা ইত্যা বিষয়ে অত্যন্ত সংক্ষিপ্ত চমৎকার কিছু প্রশ্নোত্তর যেগুলো তিনি ‘ওয়াযায়েফে রমজান’ শীর্ষক কিতাবের ব্যাখ্যা কালীন তাঁর ছাত্রদের পক্ষ থেকে প্রদত্ব বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তরে বলেছিলেন।

নিম্নে পাঠকদের উপকার হবে এ আশায় মূল ব্যাখ্যা বাদ দিয়ে সেখান থেকে কেবল সংক্ষিপ্ত প্রশ্নোত্তরগুলোর অনুবাদ পেশ করা হলো। আল্লাহ তওফিক দাতা।

 মোট ৭টি পর্বে ৫৪টি প্রশ্নোত্তর পেশ করা হয়েছে।

❑ প্রশ্নোত্তর: পর্ব-১

১. প্রশ্ন: যে ব্যক্তি রমজান মাসে সুদ খায় তার রোজা গ্রহণযোগ্য হবে কি?

শাইখ: সুদ হারাম, তা রমজান হোক বা অন্য সময়। রমজানসহ সব সময় সুদ খাওয়া নিষিদ্ধ।

২. প্রশ্ন: তাহলে তার রোজা কবুল হবে?

শাইখ: তার রোজা কবুল হওয়ার আশা করা যায়। তবে সে গুনাহের ঝুঁকিতে থাকবে।

৩. প্রশ্ন: ইউরোপের কিছু দোকানে মুসলিম মালিকরা রমজানে মদ ও শুকরের মাংস বিক্রি করে। এ ব্যাপারে কী বলা যাবে?

শাইখ: তাদের সতর্ক করা উচিত এবং বোঝানো দরকার যে, এটি হারাম ও নিন্দনীয় কাজ যেন তারা শিখে ও সংশোধন হয়ে যায় এবং এসব কাজ ছেড়ে দেয়।

৪. প্রশ্ন: কিন্তু এতে কি তাদের রোজার কোনও প্রভাব পড়ে?

শাইখ: না, রোজা নষ্ট হয় না। তবে এতে দাগ পড়ে। রোজা শুধু তার ভঙ্গকারী বিষয়গুলো দ্বারা বাতিল হয়। কিন্তু গুনাহ করলে রোজার পূর্ণতা কমে যায়-সওয়াব ও প্রতিদান হ্রাস পায়।

৫. প্রশ্ন: কোনও নারী যদি মসজিদের কাছাকাছি বাস করে তাহলে কি সে ইমামের সাথে নামাজ পড়তে পারবে যদি সে ইমামের কণ্ঠ শুনতে পায়?

শাইখ: না, সে মসজিদে গিয়ে পড়বে অথবা একা বাসায় পড়বে। যদি সে মসজিদে না থাকে বা ইমাম ও জামাতকে না দেখে তাহলে সে তাদের অনুসরণ করতে পারবে না। তবে যদি সে মসজিদের ভেতরে থাকে বা ইমাম ও জামাতকে দেখতে পায় তাহলে কোনও সমস্যা নেই।

৬. প্রশ্ন: যদি বাড়িটি মসজিদের সাথে সংযুক্ত হয় যেমন মুয়াজ্জিন বা ইমামের বাসা?

শাইখ: তবুও, যদি সে ইমাম বা জামাতকে না দেখে তাহলে সে অনুসরণ করতে পারবে না। বরং একা নামাজ পড়বে।

৭. প্রশ্ন: নারীদের জন্য ঘরে নামাজ পড়াই কি উত্তম?

শাইখ: হ্যাঁ, নারীদের জন্য ঘরে নামাজ পড়াই উত্তম।

Tuesday, 4 February 2025

অদৃশ্য জগতের কথা

 অদৃশ্য জগতের কথা (পর্ব-১, ২)



(১) আল্লাহ তাআ’লা বলেন, “সমস্ত প্রশংসা আল্লাহর, যিনি আসমান ও যমীনের স্রষ্টা এবং ফেরেশতাগণকে করেছেন বার্তা বাহক। তারা দুই দুই, তিন তিন ও চার চার ডানা বিশিষ্ট হয়ে থাকে। তিনি সৃষ্টির মধ্যে যা ইচ্ছা তা যোগ করেন। আর নিশ্চয় আল্লাহ সর্ববিষয়ে সক্ষম।” 

আল্লাহ তাআ’লা তাঁর নিজের ও নবী-রসুলদের মাঝে যোগাযোগের মাধ্যম হিসেবে ফেরেশতাদেরকে বার্তাবাহক বা ‘দূত’ বানিয়েছেন। ফেরেশতাদের ডানা রয়েছে, যার সাহায্যে তাঁরা উড়তে পারেন, যাতে তাঁরা দ্রুত আল্লাহর বাণী নবী-রসুলদের কাছে পৌঁছে দিতে পারেন। তাঁদের মাঝে কারো দুইটি ডানা রয়েছে, কারো তিন তিনটি, কারো চার চারটি করে ডানা রয়েছে। কারো কারো এর চাইতে বেশি ডানা রয়েছে। যেমন মেরাজের রাতে আল্লাহর রসুল সাল্লাল্লাহু আ’লাইহি ওয়া সাল্লাম জিব্রাঈল আ’লাইহিস সালামকে দেখেছিলেন, এ সময় তাঁর ছয়শত ডানা ছিলো। তাঁর ডানাগুলো এতো বড় ছিলো যে, দুইটি ডানার মাঝখানে পূর্ব দিক ও পশ্চিম দিকের সমান দূরত্ব ছিলো। সুরা ফাতির, আয়াত ১-এর তর্জমা ও তাফসীর।

(২) কোন ব্যক্তি ‘বিসমিল্লাহ’ বলে কাপড় খুললে শয়তান আর তার লজ্জাস্থানের মাঝে আল্লাহ তাআ’লা একটা পর্দা‬ সৃষ্টি করে দেন, যে কারণে শয়তান তার লজ্জাস্থানের দিকে দৃষ্টিপাত করতে পারেনা। সুনানে তিরমিযীঃ ২/৫০৫, ইরওয়াউল গালীলঃ ৪৯, সহিহ আল-জামিঃ ৩/২০৩। 

(৩) নারীদের সম্পূর্ণ শরীর হচ্ছে ‘আওড়াহ’। আওড়াহ অর্থ হচ্ছেঃ গোপনীয় জিনিস, যা কাপড় দিয়ে ঢেকে রাখা ফরয। একারণে, নারীরা ঘর থেকে বের হলে শয়তান তাদের দিকে ‪‎চোখ তুলে তাকায়। তিরমিযীঃ ১১৭৩, সহীহ, শায়খ আলবানী, সহীহ তিরমিযীঃ ৯৩৬।

Tuesday, 24 December 2024

ক্রিসমাস (Christmas)




লেখক: আব্দুল্লাহিল হাদী মু. ইউসুফ

সম্পাদনায়: আব্দুল্লাহিল হাদী আব্দুল জলীল

#abdullahilhadi 

▬▬▬ ◈◉◈▬▬▬

২৫ ডিসেম্বর। খ্রি ষ্টানদের বড়দিন। দিনটি খ্রি ষ্টান বিশ্বে জাঁকজমক পূর্ণভাবে উদযাপিত হয় তাদের ধর্মীয় উৎসব হিসেবে। কিন্তু দুঃখজনক হলেও সত্য যে আজ মুসলিম বিশ্বেও দিনটি বেশ গুরুত্ব পাচ্ছে। তাই আলোচনা করতে চাচ্ছি যে, এই বড়দিন বা ক্রিসমাস কি?

♻ ক্রিসমাস কি?

খ্রি স্টানদের এক সম্প্রদায়ের নিকট এই দিনটি স্রষ্টার জন্ম দিন আবার অপর সম্প্রদায়ের নিকট স্রষ্টার সন্তানের জন্ম দিন হিসেবে পরিচিত। এই দিনটিতে তারা বিভিন্ন রকম উপহার আদান প্রদান, আলোক সজ্জা, বিভিন্ন রকমের খাবার, বিশেষ চা পান, চার্চে গমন ইত্যাদির মাধ্যমে অতিবাহিত করে থাকে।

ইংরেজি Christmas শব্দটির দুটি অংশ একটি Christ অপরটি mas,

Christ এটি ঈসা আলাইহিস সালাম এর একটি উপাধি, আর mas অর্থ জন্মদিন বা জন্মোৎসব। তাহলে Christmas এর মাধ্যমে ঈসা আলাইহিস সালাম এর জন্মোৎসব বোঝানো হয়ে থাকে।

যদিও আজকে খ্রি ষ্টানরা এই দিনটিকে ঈসা আলাইহিস সালাম এর জন্ম দিন হিসেবে পালন করে থাকে বাস্তবে ইতিহাসে তাঁর জন্ম তারিখ সঠিক ভাবে বর্ণিত নেই। এ নিয়ে স্বয়ং খ্রি স্টানদের মাঝেও মতবিরোধ আছে। তাই দেখা যায় ক্যাথোলিক 

খ্রি ষ্টানরা ২৫ ডিসেম্বরকে ক্রিসমাস হিসেবে পালন করে থাকে আর অপর দিকে অর্থোডক্স (Orthodox) ৭ জানুয়ারিকে ক্রিসমাস হিসেবে পালন করে থাকে।

নিঃসন্দেহে ক্রিসমাস খ্রি স্টানদের একটি ধর্মীয় উৎসব, কিন্তু আজকে খ্রি স্টানদের এই আনুষ্ঠানিকতা এবং সে সময় ঈসা আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর জন্ম লগ্নে তাদের পূর্বসূরিদের প্রতিক্রিয়ার কথা আমাদের কে কি বার্তা দিচ্ছে? আজকের ক্রিসমাস পালনকারীরা কি তাদেরই পরবর্তী জেনারেশন নয় যারা ঈসা (আঃ) এর ভূমিষ্ঠ কালে তাঁর মাকে মিথ্যা অপবাদ দিয়েছিল? যারা তাঁকে আল্লাহর পুত্র বলে আখ্যায়িত করেছিল? এবং যারা তাঁকে হত্যা করতে চেয়েছিল?

আফসোস! যারা তাঁকে হত্যা করতে চেয়েছিল তারা আজ তাঁর জন্মোৎসব পালন করছে। এ যেন চোরের মার বড় গলা।

♻ মূলত: ঈসা আলাইহিস সালাম এর জন্ম তারিখ কোনটি? 

ক্যাথোলিকদের ধারণামতে ২৫ ডিসেম্বর না অর্থোডক্সদের ধারণামতে ৭ জানুয়ারি। মূলত খ্রি ষ্টান ধর্ম গ্রন্থসমূহে এর সঠিক তারিখ নির্ধারিত করে বর্ণনা করা হয়নি। তবে কোরআন কারীমের ভাষ্য অনুযায়ী দেখা যায় যে মারিয়াম আলাইহিস সালাম কে লক্ষ্য করে তার গর্ভাবস্থায় আল্লাহ্ বলছেন:

وَهُزِّي إِلَيْكِ بِجِذْعِ النَّخْلَةِ تُسَاقِطْ عَلَيْكِ رُطَبًا جَنِيًّا

“আর তুমি নিজের দিকে খেজুর গাছের কাণ্ডে নাড়া দাও, তা থেকে তোমার উপর সুপক্ব খেজুর পতিত হবে।” (সূরা মারিয়াম-২৫)

এখান থেকে বুঝা যায় যে ঈসা আলাইহিস সালাম এর জন্ম ডিসেম্বর বা জানুয়ারিতে নয় বরং জুন বা জুলাই মাসে কারণ খেজুর একটি গ্রীষ্মকালীন ফল শীতকালীন ফল নয়। তাহলে যদি তাঁর জন্ম তারিখটিই সঠিক ভাবে নির্ণীত না হয় তাহলে কিসের ভিত্তিতে এই আনুষ্ঠানিকতা? সুবহানাল্লাহ!

দেখুন, আমাদের নবী মোহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর জন্ম তারিখও নির্দিষ্টভাবে প্রমাণিত নয় এমনিভাবে ঈসা আলাইহিস সালাম এর জন্ম তারিখও সঠিকভাবে প্রমাণিত নেই। আমার মনে হয়, এর মাধ্যমে আল্লাহ্ তাঁর নবী দ্বয়কে মানুষের অতিরঞ্জন থেকে রক্ষা করেছেন।

♻ ক্রিসমাস সম্পর্কে ইসলামী দৃষ্টিভঙ্গি:

অর্থগত দিক থেকে ক্রিসমাস শব্দটিই একটি শিরকী শব্দ। কারণ শব্দটির অর্থ “প্রভুর জন্মদিন বা প্রভুর পুত্রের জন্ম দিন”। নাউজু বিল্লাহি মিন জালিক, মহান আল্লাহ এ থেকে পুত পবিত্র।

আল্লাহর বাণী: لَمْ يَلِدْ وَلَمْ يُولَدْ “তিন কাউকে জন্ম দেননি এবং কেউ তাঁকে জন্ম দেয়নি।” (সূরা ইখলাস -৩)। অতএব একজন মুসলমানের জন্য এই কথাটি মুখে উচ্চারণ করাই হারাম।

হাদিসে বর্ণিত হয়েছে:

عَنْ أَبِي أُمَامَةَ الْبَاهِلِيِّ ، قَالَ : قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ : ” مَنْ تَشَبَّهَ بِقَوْمٍ فَهُوَ مِنْهُمْ ، وَمَنْ أَحَبَّ قَوْمًا حُشِرَ مَعَهُمْ ” . [رواه أبو داود ح৪০৩১، وأحمد ح৫০৯৩].

“আবু উমামা আল বাহেলী (রায়িাল্লাহু আনহু) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন: রসুলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ) বলেছেন: “

যে ব্যক্তি কোন জাতির সাদৃশ্য অবলম্বন করবে সে তাদেরই অন্তর্ভুক্ত বলে গণ্য হবে, আর যে যেই জাতিকে ভালবাসবে তাদের সাথে তার হাশর হবে।” (আবু দাউদ হাদিস নং ৪০৩১, মুসনাদ আহমদ, হাদিস নং-৫০৯৩)।



♻ আলেমগণের মতামত:

শাইখ উসাইমীন (রাহিমাহুল্লাহ) বলেন: ক্রিসমাস 

উপলক্ষে অনুষ্ঠান করে, উপহার ও মিষ্টি বিতরণ করে, বিভিন্ন ধরণের খাবারের আয়োজন করে এবং ছুটি পালন করে কা ফেরদের সাদৃশ্যতা অবলম্বন করা মুসলমানদের জন্য হারাম। কেননা নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন: “যে ব্যক্তি কোন জাতির সাদৃশ্যতা অবলম্বন করবে সে তাদেরই অন্তর্ভুক্ত বলে গণ্য হবে।”

শাইখুল ইসলাম ইবনে তাইমিয়া (রাহিমাহুল্লাহ্) স্বীয় ইক্তিযাউ সিরাতিল মুস্তাকীম গ্রন্থে বলেন: “তাদের (কাফেরদের) কিছু উৎসবে (মুসলমানদের জন্য)তাদের সাদৃশ্য অবলম্বন করা তারা বাতিল পন্থী হওয়া স্বত্ত্বেও তাদের আত্মতৃপ্তির কারণ হবে। আবার কখনো হয়ত তা দুর্বল হৃদয়ের অধিকারী এবং সুযোগ সন্ধানীদের জন্য বৈধতার প্রমাণ গ্রহণের সুযোগ করে দিবে। যে ব্যক্তি তা করবে সে গোনাহগার বলে গণ্য হবে তা যে উদ্দেশ্যেই করে থাকুক না কেন চাই তা সামাজিকতা রক্ষা, ভালবাসা, লজ্জা বা অন্য কোন কারণে হোকনা কেন। কেননা তা আল্লাহর দ্বীনে তোষামোদ এবং 

কা ফেরদের মনোবলকে দৃঢ় করবে এবং তাদের ধর্ম নিয়ে তাদেরকে গৌরব করার সুযোগ করে দিবে। (ফাতাওয়া ইবনে উসাইমীন ৩/৪৪)

Sunday, 22 December 2024

ক্রিসমাস বা বড়দিন উদযাপন উপলক্ষে কিছু কথা

 


সৌর ক্যালেন্ডার অনুযায়ী আজ ২২শে ডিসেম্বর। পৃথিবীর উত্তর গোলার্ধে এই দিনটিতে বছরের সবচাইতে ছোট দিন এবং সবচাইতে বড় রাত হয়ে থাকে। আল্লাহর অনেক নিদর্শনের মাঝে রয়েছে রাত দিনের আবর্তন এবং ঋতুর পরিবর্তনের মাঝে। আল্লাহ সুবহানাহু তাআ'লা বলেন,

"নিশ্চয় আসমান ও যমীন সৃষ্টিতে এবং রাত্রি ও দিনের আবর্তনে নিদর্শন রয়েছে 'উলিল আলবাব' (বোধ সম্পন্ন লোকদের) জন্যে। ('উলিল আলবাব' হচ্ছে তারা), যারা দাঁড়িয়ে, বসে, ও শায়িত অবস্থায় আল্লাহকে স্মরণ করে এবং চিন্তা গবেষণা করে আসমান ও জমিন সৃষ্টির বিষযে। আর (তারা বলে) হে আমাদের পালনকর্তা! এসব তুমি অনর্থক সৃষ্টি করনি। সকল পবিত্রতা তোমারই, আমাদিগকে তুমি জাহান্নামের শাস্তি থেকে বাঁচাও।"

যাই হোক, সামনে আসছে ২৫শে ডিসেম্বর, 'নাসারাহ' বা খ্রীস্টানদের ক্রিসমাস বা বড়দিন নামক সবচাইতে বড় শিরকি অনুষ্ঠান। খ্রীস্টানরা বিশ্বাস করে ‘ক্রিসমাস বা বড়দিনে আল্লাহর পুত্র ঈসা (আঃ) জন্মগ্রহণ করেছেন’, নাউযুবিল্লাহি মিন যালিক!

খ্রীস্টানরা ঈসা (আঃ) কে আল্লাহর সন্তান মনে করে, একারণে তারা কাফের বা অবিশ্বাসী। তাদের সম্পর্কে আল্লাহ্‌ তাআ’লা বলেন,

“নিশ্চয় তারা কাফের যারা বলে, মসীহ ইবনে মরিয়ম (ঈসা আঃ) ই হচ্ছেন আল্লাহ।” [সুরাহ আল মায়েদাঃ ১৭]

“তারা (খ্রীস্টানরা) বলেঃ দয়াময় আল্লাহ সন্তান গ্রহণ করেছেন। নিশ্চয় তোমরা তো এক অদ্ভুত কান্ড করেছ। হয় তো এর কারণেই এখনই নভোমন্ডল ফেটে পড়বে, পৃথিবী খন্ড-বিখন্ড হয়ে যাবে এবং পর্বতমালা চূর্ণ-বিচুর্ণ হবে। এ কারণে যে, তারা দয়াময় আল্লাহর জন্যে সন্তান সাব্যস্ত করে। অথচ সন্তান গ্রহণ করা দয়াময়ের জন্য শোভনীয় নয়। নভোমন্ডল ও ভূ-মন্ডলে কেউ নেই যে, দয়াময় আল্লাহর কাছে দাস হয়ে উপস্থিত হবে না।” [সুরাহ মারইয়ামঃ ৮৮-৯৩]

এইরকম শিরকি আকিদা জড়িত থাকার কারণে ক্রিসমাস বা বড়দিন ২৫শে ডিসেম্বর উপলক্ষে খ্রীস্টানদেরকে শুভেচ্ছা জানানো বা উইশ করা, মেরী ক্রিসমাস, হ্যাপি হ্যাপি...ইত্যাদি বলা বা তাদেরকে শুভেচ্ছা জানানো, তাদেরকে উপহার দেওয়া অথবা তাদের ক্রিসমাসের অনুষ্ঠানে যোগ দেওয়া সম্পূর্ণ হারাম এবং কবীরাহ গুনাহ। সম্মানিত ওলামারা এই কাজগুলোকে মানুষ হত্যা করা, চুরি করা, জিনা করার চাইতেও বড় গুনাহ বলে ফতোয়া দিয়েছেন, কারণ এর সাথে ‘শিরকের’ পাপ জড়িত আর শিরক হত্যার চাইতেও জঘন্য অপরাধ।

২০১৩ সালে ক্রিসমাস নিয়ে এমেরিকান একজন টিভি বক্তা ইয়াসির ক্বাদী একটা মনগড়া ফতোয়া দিয়ে তার শ্রোতাদেরকে বিভ্রান্ত করেছিলো। এমনকি নিজের অপব্যখ্যার পক্ষে যুক্তি দেখাতে গিয়ে আলেমদের সম্পর্কে মিথ্যা কথা বলেছিলো। আপনারা এরকম বিভ্রান্তিকর ফতোয়া থেকে সতর্ক থাকবেন। আমরা ইয়াসির ক্বাদী এবং তার মতো টিভি, ইউটিউব, ফেইসবুক বক্তাদেরকে অনুরোধ করবো, আপনারা ইসলাম নিয়ে কথা বলার পূর্বে বিষয়টা ভালোভাবে জেনে বলার জন্য, এবং বিভ্রান্তিকর অপব্যখ্যা দেওয়া থেকে বিরত থাকার জন্য। [যারা এনিয়ে বিস্তারিত জানতে চান তারা ইমাম মুহাম্মদ বিন সালেহ আল-উসাইমিন রহঃ এর ফতোয়া দেখুন, ফতোয়া আরকানুল ইসলামে]

‘জামায়াতে ইসলামী’ নামক একটি দল আমাদের দেশে গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে ইসলাম কায়েম করার কথা বলে। অথচ তাদের দলের ভারপ্রাপ্ত আমির মকবুল আহমাদ ২০১৪ সালের ২৪শে ডিসেম্বর এক বিবৃতিতে খ্রীস্টানদেরকে বড়দিনের শুভেচ্ছা জানিয়ে বলেন, “২৫শে ডিসেম্বর খ্রিস্টান সম্প্রদায়ের শুভ বড় দিন উপলক্ষে আমি তাদের আন্তরিকভাবে শুভেচ্ছা জানাচ্ছি এবং শান্তি ও কল্যাণ কামনা করছি।’

আমরা জামাতে ইসলামী দল এবং তাদের অনুসারী ভাইদের প্রতি অনুরোধ করবো, আপনার এইরকম গণতান্ত্রিক শিরকি রাজনীতির চাপে পড়ে অথবা বিধর্মীদেরকে খুশি করার জন্য ফতোয়া চেঞ্জ করবেন না। বিধর্মীদের উৎসব উপলক্ষে যে কোন ধরণের সরকারী অথবা বেসরকারী বিবৃতি দেওয়া, অভিনন্দন জানানো গর্হিত অপরাধ।

“ধর্ম যার যার উৎসব সবার” একথা যে বলে, সে কাফের মুশরেকদের শিরকি অনুষ্ঠান মুসলমানদের ভেতরে প্রবেশ করাতে চায়। এইরকম পথভ্রষ্ট লোক ও তাদের ষড়যন্ত্র থেকে মুসলমান জাতিকে সতর্ক করতে হবে।

খ্রীস্টানদের শিরকি অনুষ্ঠান ক্রিসমাস ও ইংরেজী নববর্ষ উপলক্ষে হাজার হাজার ইয়াহুদী-খ্রীস্টান ও ভ্রষ্ট মুসলমানেরা পাপের মেলার স্থানগুলোতে গিয়ে জড়ো হয়। বিশেষ করে বিভিন্ন ট্যুরিস্ট স্পটগুলোতে এ উপলক্ষে মদ, জুয়া, জিনা-ব্যভিচার, ফাহেশা নারী ও পুরুষ এবং গান-বাজনার উতসব শুরু হয়। মিশর, ইন্দোনেশিয়া ইত্যাদি নামধারী অনেক মুসলিম দেশ এইসমস্ত পাপের কাজগুলোকে ব্যবহার করে ‘পর্যটন শিল্প’ নাম দিয়ে হারাম আয়-উপার্জনে নেমেছে।

২০০৪ সালে ক্রিসমাসের ঠিক পর দিনই ২৬শে ডিসেম্বর রিখটার স্কেলে ৯.১ মাত্রার ভয়াবহ এক সামুদ্রিক ভূমিকম্প ‘সুনামি’ দিয়ে আল্লাহ তাআ’লা ইন্দোনেশিয়ার প্রায় দুই লক্ষ ত্রিশ হাজারের বেশি মানুষকে চোখের পলকে ধ্বংস করে দিয়ে তার বান্দাদেরকে পুনরায় স্বরণ করিয়ে দিয়েছিলেন, 

“নিশ্চয় আপনার রব্বের পাকড়াও অত্যন্ত কঠিন।” [সুরা আল-বুরুজ]

বড়ই দুঃখজনক বিষয় হচ্ছে, মুসলিম সমাজে বড় হয়েও পাশ্চাত্য সংকৃতির অন্ধ গোলামী করাকে যারা নিজেদের ধ্যান-জ্ঞান বলে মনে করেন, এমন একশ্রেণীর অজ্ঞ মুসলমানেরা আজকে বাংলাদেশে বসে খ্রীস্টানদের শিরকি অনুষ্ঠানে শরীক হচ্ছে, সেইগুলো উদযাপন করছে। অথচ এরা নিজেরাও জানেনা এই সমস্ত অনুষ্ঠানে শরীক হয়ে তারা তাদের ঈমানকে কিভাবে নষ্ট করছে।

আল্লাহ তাআ’লা বলেন, “হে ঈমানদারগণ! তোমরা ইয়াহুদী ও খ্রীষ্টানদেরকে ‘আওলিয়া’ (ঘনিষ্ট বন্ধু বা সাহায্যকারী) হিসাবে গ্রহণ করো না। তারা একে অপরের আওলিয়া। তোমাদের মধ্যে যে তাদেরকে আওলিয়া বানাবে, সে তাদেরই (ইয়াহুদী/খ্রীস্টানদের) অন্তর্ভুক্ত বলে গণ্য হবে। আল্লাহ (এমন) জালেমদেরকে পথ প্রদর্শন করেন না।” [সুরা আল-মাইয়ি’দাহঃ ৫১] 

নবী (সাঃ) বলেন, “যে ব্যক্তি যে জাতির সাদৃশ্য অবলম্বন (লেবাসে-পোশাকে, চাল-চলনে অনুকরণ) করবে সে তাদেরই দলভুক্ত।”

সুনানে আবু দাউদ, মিশকাতুল মাসাবীহঃ ৪৩৪৭।

collected from তোমরা তোমাদের পালনকর্তার অভিমূখী হও এবং তাঁর আজ্ঞাবহ হও

Saturday, 21 December 2024

মাতৃভাষায় জুমার খুতবা দেয়ার বিধানঃ



▬▬▬▬ 🔹🔸🔹▬▬▬▬

রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম জুমার খুতবায় আল্লাহর তারীফ করতেন, দরুদ পড়তেন, কুরআন থেকে তেলাওয়াত করতেন এবং কিছু ওয়াজ-নছীহত ও করতেন। নবীদের সম্পর্কে আল্লাহ বলেন:

وَمَا أَرْسَلْنَا مِن رَّسُولٍ إِلَّا بِلِسَانِ قَوْمِهِ لِيُبَيِّنَ لَهُمْ

“আমি সব নবীকেই তাদের স্বজাতির ভাষাভাষী করেই প্রেরণ করেছি, যাতে তাদেরকে পরিষ্কার বোঝাতে পারে।” (সূরা ইবরাহীম: ৪)

রসুলুল্লাহর সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম মাতৃভাষা যেহেতু আরবী ছিল এবং ছাহাবীদেরও ভাষা আরবী ছিল, তাই তিনি আরবীতেই তাদেরকে নছীহত করতেন। এখন যারা নবীজির নায়েব হয়ে জুমার খুতবা দিবেন তাদেরকেও উল্লেখিত আয়াত ও হাদীছ অনুসারে তাদের শ্রোতাদের উদ্দেশ্যে মাতৃভাষায় খুতবা দেয়াটা শরীয়ত সম্মত এবং যুক্তি সংগত।

💠 • এই কারণেই ইমাম শাফেয়ী (রহ.) বলেন: প্রত্যেক খতীবকে জুমার সময় তাঁর মাতৃভাষায় ওয়াজ করা ওয়াজিব বা অবশ্য কর্তব্য। (তানক্বীহুর রুওয়াত ১/২৬৪)

💠 • আল্লামা তাহাভী হানাফী বলেন: জুমার খুতবা আরবী জানলেও ফারসী ভাষায়ও চলবে। (হাশিয়া তাহতাবী আলা মারাক্বিল ফালাহ ২৭)

💠 • আল্লামা আব্দুল হাই লাখনভী হানাফী (রহ.) বলেন: শ্রোতাদেরকে তাদের মাতৃভাষায় খুতবা বুঝিয়ে দেয়া জায়েজ। (মাজমূআহ ফাতাওয়া ১/২৪৫)

💠 • হানাফী ফিক্বহ গ্রন্থ নিহায়া, মুজতাবা, ফাতাওয়া সিরাজিয়্যাহ, মুহীত প্রভৃতি গ্রন্থে আছে যে, ইমাম আবূ হানীফার মতে, ফারসী ভাষাতে জুমার খুতবা দেয়া জায়েজ।

💠 • হানাফী ফতোয়ার কিতাব শামীতে আছে, আরবী ভাষায় খুতবা দেয়া শর্ত নয়।

💠 • হানাফী ফিকহ গ্রন্থ হিদায়ায় আছে, প্রত্যেক ভাষায় খুতবার নছীহত চলতে পারে। (কিতাবুল জুমআহ ৫৫-৫৬) (আলোচনা দ্র: আইনী তোহফা সলাতে মুস্তফা ১/৯৮-৯৯)

💠 খুতবারা আগে বয়ান একটি বিদআত:

নিজ ভাষায় খুতবা না দেয়ার কারণে যেহেতু তা মানুষের বোধগম্য হয় না এজন্যই এই খুতবার আগে খতীবগণ বয়ানের ব্যবস্থা রেখেছেন, যা শরীয়তের দৃষ্টিতে একটি জঘন্যতম বিদআত। কারণ খুতবা দানের পূর্বে বয়ান দেয়া এবং ইহাকে এভাবে স্থায়ী রূপ দেয়া নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম থেকে আদৌ প্রমাণিত নয়। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম খুতবার পূর্বে কখনো এ ধরণের বয়ান দেন নি। দিতে বলেছেন বলে ও কোন প্রমাণ পাওয়া যায় না।

এজন্যই এ সঊদী আরবের বরেণ্য মুফতী শাইখ ইবনে উসাইমীন (রহ:)কে মাতৃভাষায় খুতবা প্রদান সম্পর্কে সওয়াল করা হলে তিনি তা সরাসরি জায়েজ বলে মন্তব্য করেন এবং একথা স্পষ্ট ভাবে বলেন যে, খতীবকে নিজ ভাষায় খুতবা দিতে হবে। (দেখুন: শাইখ ইবনে উসাইমীনের ফাতাওয়া আরকানিল ইসলাম)

বর্তমানে আমাদের দেশের বেশ কিছু জামে মসজিদে মাতৃভাষায় খুতবা দেয়া হয়ে থাকে। বস্তুত: এটাই সুন্নত। এর বিপরীত সুন্নত বিরোধী কাজ যা অবশ্যই পরিত্যাজ্য। আল্লাহ আমাদেরকে দ্বীনের সঠিক ইলম দান করুন এবং যাবতীয় বিদআত পরিত্যাগ করার তাওফীক দিন (আমীন)

▬▬▬▬▬ ◈◉◈▬▬▬▬▬

লেখক: শাইখ আখতারুল আমান বিস আব্দুস সালাম

সম্পাদনা: আব্দুল্লাহিল হাদী বিন আব্দুল জলীল

Sunday, 22 September 2024

৩৬ টি খুবই মহামূল্যবান হাদিস

 জীবন বদলে যাবে এই হাদিস গুলোর উপর  আমল করলে ইনশাআল্লাহ্ ।একগুচ্ছ মনি-মুক্তা(হাদিস) ৩৬ টি খুবই মহামূল্যবান হাদিসঃ সুপ্রিয় বন্ধু, মনি-মুক্তা, হিরা-জহরত, ডাইমন্ড ইত্যাদি পৃথিবীর সবচেয়ে মূল্যবান বস্তু। কিন্তু আমাদের প্রিয় রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের প্রতিটি হাদীস এসব থেকেও মহামূল্যবান। এখানে হাদীসের রত্ন ভান্ডার থেকে একগুচ্ছ মনি-মুক্তা আপনাদেরকে উপহার প্রদান করা হল। হাদীসগুলোর ভাষা খুব সংক্ষিপ্ত ও সহজ-সরল কিন্ত অর্থ অত্যন্ত ব্যাপক ও সুদূর প্রসারী । এগুলো ব্যক্তি ও সমাজ জীবনের জন্য খুবই প্রয়োজন । প্রতিটি কথাই মুখস্ত রাখার মত। প্রতিটি বাক্যই স্বর্ণাক্ষরে লিখে রাখার মত। তবে আসুন, হাদীসগুলো পড়ি। সেই সাথে সেগুলো বাস্তব জীবনে প্রয়োগ করি। আল্লাহ আমাদের সবাইকে ইসলামের আলোকিত সরল পথে চলার তাওফীক দান করুন। আমীন।

১. ﺍﺗَّﻖِ ﺍﻟﻠَّﻪ ﺣَﻴْﺜُﻤَﺎ ﻛُﻨْﺖَ ﻭَﺃَﺗْﺒِﻊْ ﺍﻟﺴَّﻴِّﺌَﺔَ ﺍﻟْﺤَﺴَﻨَﺔَ ﺗَﻤْﺤُﻬَﺎ ﻭﺧَﺎﻟِﻖِ ﺍﻟﻨَّﺎﺱَ ﺑِﺨُﻠُﻖٍ ﺣَﺴَﻦٍ

“আল্লাহকে ভয় কর যেখানেই থাকনা কেন। অন্যায় কাজ হয়ে গেলে পরক্ষণেই ভাল কাজ কর। তবে ভাল কাজ অন্যায়কে মুছে দিবে আর মানুষের সাথে ভাল ব্যবহার কর।“ (তিরমিযী-সহীহ)

২. (( ﺇِﻧَّﻤَﺎ ﺍﻟْﺄَﻋْﻤَﺎﻝُ ﺑِﺎﻟﻨِّﻴَّﺎﺕِ ))

“সব কাজই নিয়তের উপর নির্ভরশীল।“(সহীহ বুখারী)

৩. (( ﺍﻟْﻤُﺴْﻠِﻢُ ﻣَﻦْ ﺳَﻠِﻢَ ﺍﻟْﻤُﺴْﻠِﻤُﻮﻥَ ﻣِﻦْ ﻟِﺴَﺎﻧِﻪِ ﻭَﻳَﺪِﻩِ ))

“প্রকৃত মুসলিম সে ব্যক্তি যার মুখের ভাষা এবং হাত থেকে অন্য মুসলমানগণ নিরাপদ থাকে।“ (সহীহ বুখারী)

৪. (( ﻣَﻦْ ﻏَﺸّﻨﺎ ﻓَﻠَﻴْﺲَ ﻣِﻨِّﺎ ))

যে আমাদের সাথে প্রতারণা করে সে আমাদের দলভূক্ত নয়। (মুসলিম)

৫. (( ﻣَﻦْ ﻛَﺎﻥَ ﻳُﺆْﻣِﻦُ ﺑِﺎﻟﻠَّﻪِ ﻭَﺍﻟْﻴَﻮْﻡِ ﺍﻟْﺂﺧِﺮِ ﻓَﻠَﺎ ﻳُﺆْﺫِ ﺟَﺎﺭَﻩُ ))

“যে আল্লাহ এবং আখেরাতের উপর বিশ্বাস রাখে সে যেন তার প্রতিবেশীকে কষ্ট না দেয়।“ (বুখারী)

৬ (( ﻣَﻦْ ﻛَﺎﻥَ ﻳُﺆْﻣِﻦُ ﺑِﺎﻟﻠَّﻪِ ﻭَﺍﻟْﻴَﻮْﻡِ ﺍﻟْﺂﺧِﺮِ ﻓَﻠْﻴُﻜْﺮِﻡْ ﺿَﻴْﻔَﻪُ ))

“যে আল্লাহ এবং আখেরাতের উপর বিশ্বাস রাখে সে যেন তার মেহমানকে সম্মান করে।“ (বুখারী)

৭. ﻣَﻦْ ﻛَﺎﻥَ ﻳُﺆْﻣِﻦُ ﺑِﺎﻟﻠَّﻪِ ﻭَﺍﻟْﻴَﻮْﻡِ ﺍﻟْﺂﺧِﺮِ ﻓَﻠْﻴَﻘُﻞْ ﺧَﻴْﺮًﺍ ﺃَﻭْ ﻟِﻴَﺼْﻤُﺖْ

“যে আল্লাহ এবং আখেরাতের উপর বিশ্বাস রাখে সে যেন ভাল কথা বলে নতুবা চুপ থাকে।“ (বুখারী)

৮.(( ﻣِﻦْ ﺣُﺴْﻦِ ﺇِﺳْﻠَﺎﻡِ ﺍﻟْﻤَﺮْﺀِ ﺗَﺮْﻛُﻪُ ﻣَﺎ ﻟَﺎ ﻳَﻌْﻨِﻴﻪِ ))

“একজন মানুষের একটি সুন্দর ইসলামী বৈশিষ্ট হল সে অযথা কাজ পরিত্যাগ করে।“ (মুওয়াত্তা মালেক)

৯. ﻣَﻦْ ﻛَﺎﻥَ ﻓِﻲ ﺣَﺎﺟَﺔِ ﺃَﺧِﻴﻪِ ﻛَﺎﻥَ ﺍﻟﻠَّﻪُ ﻓِﻲ ﺣَﺎﺟَﺘِﻪِ

“যে তার কোন ভাইয়ের প্রয়োজন পূরণ করবে আল্লাহ তার প্রয়োজন পূরণ করবেন।“ (বুখারী)

১০. (( ﻣَﻦْ ﻓَﺮَّﺝَ ﻋَﻦْ ﻣُﺴْﻠِﻢٍ ﻛُﺮْﺑَﺔً ﻓَﺮَّﺝَ ﺍﻟﻠَّﻪُ ﻋَﻨْﻪُ ﻛُﺮْﺑَﺔً ﻣِﻦْ ﻛُﺮُﺑَﺎﺕِ ﻳَﻮْﻡِ ﺍﻟْﻘِﻴَﺎﻣَﺔِ ))

“যে ব্যক্তি কোন মুসলমানের একটি কষ্ট দূর করবে আল্লাহ তাআলা কিয়ামতের দিন তাকে অনেক বিপদের মধ্য থেকে একটি বিপদ থেকে উদ্ধার করবেন।“ (বুখারী)

১১. (( ﻣَﻦْ ﺳَﺘَﺮَ ﻣُﺴْﻠِﻤًﺎ ﺳَﺘَﺮَﻩُ ﺍﻟﻠَّﻪُ ﻳَﻮْﻡَ ﺍﻟْﻘِﻴَﺎﻣَﺔِ ))

“যে ব্যক্তি কোন মুসলমানের দোষ-ত্রুটি গোপন করবে কিয়ামতের দিন আল্লাহ তার দোষ-ত্রুটি ঢেকে রাখবেন।“ (বুখারী)

১২. (( ﻋَﻠَﻴْﻜُﻢْ ﺑِﺎﻟﺼِّﺪْﻕِ ﻓَﺈِﻥَّ ﺍﻟﺼِّﺪْﻕَ ﻳَﻬْﺪِﻱ ﺇِﻟَﻰ ﺍﻟْﺒِﺮِّ ﻭَﺍﻟْﺒِﺮَّ ﻳَﻬْﺪِﻱ ﺇِﻟَﻰ ﺍﻟْﺠَﻨَّﺔِ ))

“সব সময় সত্যকে আঁকড়ে ধরে থাক। কারণ সত্য কথা ভাল কাজের পথ দেখায়। আর ভাল কাজ জান্নাতের পথ দেখায়।“ (মুসলিম).

১৩. ﺇِﻳَّﺎﻛُﻢْ ﻭَﺍﻟْﻜَﺬِﺏَ ﻓَﺈِﻥَّ ﺍﻟْﻜَﺬِﺏَ ﻳَﻬْﺪِﻱ ﺇِﻟَﻰ ﺍﻟْﻔُﺠُﻮﺭِ ﻭَﺍﻟْﻔُﺠُﻮﺭَ ﻳَﻬْﺪِﻱ ﺇِﻟَﻰ ﺍﻟﻨَّﺎﺭِ

“মিথ্যা থেকে দূরে থাক। কারণ মিথ্যা অন্যায় কাজের পথ দেখায় আর অন্যায় কাজ জাহান্নামের পথ দেখায়।“ (মুসলিম)

১৪. ﺍﻟﺪَّﺍﻝُّ ﻋَﻠَﻰ ﺍﻟْﺨَﻴْﺮِ ﻛَﻔَﺎﻋِﻠِﻪِ

“যে ব্যক্তি ভাল কাজের রাস্তা দেখায় সে ঐ ব্যক্তির মতই সাওয়াব পায় যে উক্ত ভাল কাজ সম্পাদন করে।” (তিরমিযী-সহীহ)

১৫. ﺍﺗَّﻖِ ﺩَﻋْﻮَﺓَ ﺍﻟْﻤَﻈْﻠُﻮﻡِ ﻓَﺈِﻧَّﻬَﺎ ﻟَﻴْﺲَ ﺑَﻴْﻨَﻬَﺎ ﻭَﺑَﻴْﻦَ ﺍﻟﻠَّﻪِ ﺣِﺠَﺎﺏٌ

“মজলুমের বদ দুআকে ভয় কর। কারণ, তার বদ দুআ আর আল্লাহর মাঝে কোন পর্দা নেই।“ (বুখারী)

১৬. ﺍﺗَّﻘُﻮﺍ ﺍﻟﻈُّﻠْﻢَ ﻓَﺈِﻥَّ ﺍﻟﻈُّﻠْﻢَ ﻇُﻠُﻤَﺎﺕٌ ﻳَﻮْﻡَ ﺍﻟْﻘِﻴَﺎﻣَﺔِ

“তোমরা জুলুম থেকে দূরে থাক। কারণ জুলুম কিয়ামতের দিন ঘোর অন্ধকার হিসেবে উপস্থিত হবে।“ (মুসলিম)

১৭. ﻟَﻴْﺲَ ﺍﻟﺸَّﺪِﻳﺪُ ﺑِﺎﻟﺼُّﺮَﻋَﺔِ ﺇِﻧَّﻤَﺎ ﺍﻟﺸَّﺪِﻳﺪُ ﺍﻟَّﺬِﻱ ﻳَﻤْﻠِﻚُ ﻧَﻔْﺴَﻪُ ﻋِﻨْﺪَ ﺍﻟْﻐَﻀَﺐِ

“কুস্তি লড়াইয়ের মাধ্যমে প্রকৃত বীরত্বের পরিচয় পাওয়া যায় না। বরং প্রকৃত বীর তো সেই ব্যক্তি যে রাগের সময় নিজেকে নিয়ন্ত্রণ করতে পারে।“ (বুখারী)

১৮. ﻟَﺎ ﻳَﺤِﻞُّ ﻟِﻤُﺴْﻠِﻢٍ ﺃَﻥْ ﻳَﻬْﺠُﺮَ ﺃَﺧَﺎﻩُ ﻓَﻮْﻕَ ﺛَﻠَﺎﺙِ ﻟَﻴَﺎﻝٍ

“এক মুসলমানের জন্য অপর মুসলমান ভাইয়ের সাথে তিন দিনের বেশি সম্পর্ক ছিন্ন করে রাখা বৈধ নয়।“ (বুখারী)

১৯. ﻣَﺎ ﻧَﻘَﺼَﺖْ ﺻَﺪَﻗَﺔٌ ﻣِﻦْ ﻣَﺎﻝٍ

“দান করলে সম্পদ কমে না।“ (মুসলিম)

২০. (( ﻣَﺎ ﺯَﺍﺩَ ﺍﻟﻠَّﻪُ ﻋَﺒْﺪًﺍ ﺑِﻌَﻔْﻮٍ ﺇِﻟَّﺎ ﻋِﺰًّﺍ ))

“ক্ষমা করলে আল্লাহ বান্দার সম্মান বাড়িয়ে দেন।“ (মুসলিম)

২১. (( ﻣَﺎ ﺗَﻮَﺍﺿَﻊَ ﺃَﺣَﺪٌ ﻟِﻠَّﻪِ ﺇِﻟَّﺎ ﺭَﻓَﻌَﻪُ ﺍﻟﻠَّﻪُ ))

“আল্লাহর উদ্দেশ্যে কেউ বিনয়ী হলে আল্লাহ তার মর্যাদা বাড়িয়ে দেন।“ (মুসলিম)

২২. (( ﻟَﻴْﺲَ ﻣِﻨَّﺎ ﻣَﻦْ ﻟَﻢْ ﻳَﺮْﺣَﻢْ ﺻَﻐِﻴﺮَﻧَﺎ ﻭَﻳُﻮَﻗِّﺮْ ﻛَﺒِﻴﺮَﻧَﺎ ))

“যে ছোটদেরকে দয়া এবং বড়দেরকে শ্রদ্ধা করেনা সে আমাদের দলভূক্ত নয়।“ (তিরমিযী)

২৩. (( ﺍﻟْﻐِﻨَﻰ ﻏِﻨَﻰ ﺍﻟﻨَّﻔْﺲِ ))

“অন্তরের সচ্ছলাতাই প্রকৃত সচ্ছলাতা।“(বুখারী) (অর্থাৎ যে ব্যক্তি মনের দিক দিয়ে ধনী সেই আসল ধনী, শুধু অর্থ-সম্পদ বেশি থাকলেই ধনী হওয়া যায় না।)

২৪. “হে লোক সকল! তোমরা সালামের প্রসার ঘটাও, মানুষকে খাবার খাওয়াও আর মানুষ যখন ঘুমিয়ে থাকে তখন সালাত আদায় কর তবে শান্তিতে জান্নাতে প্রবেশ করবে।“ (তিরমিযী)

২৫. ﻟَﺎ ﺗَﺄْﻛُﻠُﻮﺍ ﺑِﺎﻟﺸِّﻤَﺎﻝِ ﻓَﺈِﻥَّ ﺍﻟﺸَّﻴْﻄَﺎﻥَ ﻳَﺄْﻛُﻞُ ﺑِﺎﻟﺸِّﻤَﺎﻝِ

“বাম হাতে খেওনা। কারণ শয়তান বাম হাতে খায়।“ (মুসলিম)

২৬. ﻟَﺎ ﺗَﺴُﺒُّﻮﺍ ﺍﻟْﺄَﻣْﻮَﺍﺕَ

“তোমরা মৃতদেরকে গালি দিও না।“ (বুখারী)

২৭. ﻟَﺎ ﻳُﺆْﻣِﻦُ ﺃَﺣَﺪُﻛُﻢْ ﺣَﺘَّﻰ ﻳُﺤِﺐَّ ﻟِﺄَﺧِﻴﻪِ ﻣَﺎ ﻳُﺤِﺐُّ ﻟِﻨَﻔْﺴِﻪِ

“তোমাদের কেউ প্রকৃত ঈমানদার হতে পারবে না যতক্ষণ না সে নিজের জন্য যা পছন্দ করে অন্য ভাইয়ের জন্যও তাই পছন্দ করবে।” (বুখারী)

২৮. ﻗُﻞْ ﺁﻣَﻨْﺖُ ﺑِﺎﻟﻠَّﻪِ ﺛُﻢَّ ﺍﺳْﺘَﻘِﻢْ

“বল, আল্লাহর উপর ঈমান আনলাম। অতঃপর তার উপর অবিচল থাক।“ (মুসলিম)

২৯. ﺍﻟْﺒِﺮُّ ﺣُﺴْﻦُ ﺍﻟْﺨُﻠُﻖِ ﻭَﺍﻟْﺈِﺛْﻢُ ﻣَﺎ ﺣَﺎﻙَ ﻓِﻲ ﺻَﺪْﺭِﻙَ ﻭَﻛَﺮِﻫْﺖَ ﺃَﻥْ ﻳَﻄَّﻠِﻊَ ﻋَﻠَﻴْﻪِ ﺍﻟﻨَّﺎﺱُ

“মানুষের সাথে সুন্দর আচরণ করা হল নেকীর কাজ। আর ঐ কাজটাই পাপ যা তোমার মনে খটকা লাগে হয় এবং মানুষ সেটা জেনে ফেলাকে অপছন্দ কর।“ (মুসলিম)

৩০. ﺇِﻥَّ ﻣِﻦْ ﺧِﻴَﺎﺭِﻛُﻢْ ﺃَﺣْﺴَﻨَﻜُﻢْ ﺃَﺧْﻠَﺎﻗًﺎ

“নিশ্চয় তোমাদের মধ্যে সে ব্যক্তিই উত্তম যার চরিত্র সবচেয়ে মাধুর্যপূর্ণ।“ (বুখারী)

৩১. ﻣَﻦْ ﺭَﺃَﻯ ﻣِﻨْﻜُﻢْ ﻣُﻨْﻜَﺮًﺍ ﻓَﻠْﻴُﻐَﻴِّﺮْﻩُ ﺑِﻴَﺪِﻩِ ﻓَﺈِﻥْ ﻟَﻢْ ﻳَﺴْﺘَﻄِﻊْ ﻓَﺒِﻠِﺴَﺎﻧِﻪِ ﻓَﺈِﻥْ ﻟَﻢْ ﻳَﺴْﺘَﻄِﻊْ ﻓَﺒِﻘَﻠْﺒِﻪِ ﻭَﺫَﻟِﻚَ ﺃَﺿْﻌَﻒُ ﺍﻟْﺈِﻳﻤَﺎﻥِ

“তোমাদের কেউ অন্যায় দেখলে তার কর্তব্য হল, (সাধ্য থাকলে) হাতের মাধ্যমে তা প্রতিহত করা, না পারলে মুখের ভাষা দ্বারা, তাও না পারলে অন্তর দ্বারা। আর এটাই হল দূর্বলতম ঈমানের পরিচয়।“ (মুসলিম)

৩২. ﺧَﻴْﺮُﻛُﻢْ ﻣَﻦْ ﺗَﻌَﻠَّﻢَ ﺍﻟْﻘُﺮْﺁﻥَ ﻭَﻋَﻠَّﻤَﻪُ

“তোমাদের মধ্যে সে ব্যক্তি শ্রেষ্ঠ যে নিজে কুরআন শিক্ষা করে এবং অন্যকে শিক্ষা দেয়।“ (বুখারী)

৩৩. ﺍﺭْﺣَﻤُﻮﺍ ﻣَﻦْ ﻓِﻲ ﺍﻟْﺄَﺭْﺽِ ﻳَﺮْﺣَﻤْﻜُﻢْ ﻣَﻦْ ﻓِﻲ ﺍﻟﺴَّﻤَﺎﺀِ

“তোমরা পৃথিবী অধিবাসীদের প্রতি দয়া কর যিনি আসমানে আছেন তিনি তোমাদের প্রতি দয়া করবেন।“ (তিরমিযী)

৩৫. ﻟَﺎ ﻳَﺪْﺧُﻞُ ﺍﻟْﺠَﻨَّﺔَ ﻧَﻤَّﺎﻡٌ

“চুগলখোর জান্নাতে প্রবেশ করবে না।“ (মুসলিম)

৩৬.   الﺤَﻴَﺎﺀُ ﻣِﻦْ ﺍﻟْﺈِﻳﻤَﺎﻥِ

“লজ্জা ঈমানের অংশ।” (বুখারী)

শায়খ Ajmal Hussain মাদানী হাফিঃ

Tuesday, 30 July 2024

পিতা মাতার সাথে সদ্ব্যবহারের ৩৫ টি আদব:

 পিতা মাতার সাথে সদ্ব্যবহারের ৩৫ টি আদব:

১- তাদের কাছে অবস্থানের সময় মোবাইল ফোন বন্ধ রাখা।

২- চুপচাপ তাদের কথা শোনা।

৩- তাদের মত গ্রহণ করা।

৪- তাদের কথবার্তায় আগ্রহী হওয়া।

৫- সরাসরি তাদের দিকে দৃষ্টপাত করা।

৬- সবসময় তাদের প্রসংশা করা এবং তাদের সঙ্গ দেওয়া।

৭- খুশির সংবাদে তাদের অংশী করা।

৮- মন্দ সংবাদ তাদের না বলা।

৯- তাদের বন্ধু বান্ধব এবং তারা যাদের ভালো বাসে, তাদের প্রসংশা করা।

১০- তাদের অবদানগুলিকে সবসময় স্মরণ করা।

১১- তাদের সাথে কথাবার্তায় আগ্রহ প্রকাশ করা; যদিও তারা সেটা বার বার বলে।

১২- অতীতের বেদনাদায়ক মুহূর্ত বর্ণনা না করা।

১৩- অপ্রাসঙ্গিক কথা বার্তা না বলা।

১৪- সম্মানের সহিত তাদের নিকট অবস্থান করা।

১৫- তাদের মতামত ও চিন্তাধারাকে তুচ্ছ তাচ্ছিল্য না করা। 

১৬- তাদের কথা বার্তার সময় তাদের প্রত্যাখ্যান না করা। এ ভাবে যে তারা বলতেই থাকলো আর তুমি অন্য দিকে ব্যস্ত থাকলে।

১৭- তাদের বয়সের খেয়াল রাখা এবং নাতি নাতনী ইত্যাদির মাধ্যমে তাদের কষ্ট না দেওয়া।

১৮- তাদের সামনে নাতি পুতিদের মারধর না করা।

১৯- তাদের সবরকমের সুপরামর্শ গ্রহণ করা।

২০- তাদের উপস্থিতিতে নিজে দায়িত্ব পালন করা।

২১- তাদের উপর কন্ঠস্বর উঁচু না করা।

২২- তাদের সামনে ও তাদের দিকে না চলা।

২৩- তাদের পূর্বে না খাওয়া।

২৪- তাদের দিকে চোখ রাঙিয়ে না দেখা।

২৫- তাদের নিয়ে সবসময় গর্ব করে।

২৬- তাদের দিকে পা করে না বসা এবং বসার সময় তাদের দিকে পিঠ না করা।

২৭- তাদের গলির পাত্র না করা। (সন্তানের কারণে যেন তারা গালি না খায়)

২৮- সবসময় তাদের জন্য দুআ করা।

২৯- তাদের নিকট ক্লান্তিবোধ ও অনিহা প্রকাশ না করা।

৩০- তাদের ভুলের কারণে হাসাহাসি না করা।

৩১- তাদের কোনো কিছু হুকুম করার পূর্বে তাদের সেবা করা।

৩২- সবসময় তাদের যিয়ারত করা এবং তাদের উপর রাগ না করা।

৩৩- তাদের সাথে কথাবার্তার সময় শালীন শব্দ চয়ন করা। 

৩৪- তাদের নিকট যা সবচেয়ে পছন্দনীয় নাম তা দ্বারা তাদের ডাকা। 

৩৫- সব কিছুর উপর এবং সব লোকের উপর তাদের প্রাধান্য দেওয়া।

🌸তাঁরা পৃথিবীর উপরে তোমার গুপ্তধন। হতে পারে অচিরেই তাঁরা মাটির নিচে চলে যাবেন।

👆🏼 হোয়াটস অ্যাপ এর ইতিহাসে আমার নিকট এটি সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ও উত্তম মেসেজ।

⭐এর প্রত্যেকটি পয়েন্ট অপরটির থেকে গুরুত্বপূর্ণ,

তাই আমি বুঝে বুঝে তা অনুধাবন করার পরামর্শ দিচ্ছি এবং নিজ পিতামাতার সাথে আমাদের ব্যবহার ও উঠা বসার হিসাব নিকাশ করার আবেদন জানাচ্ছি।

🌹 পিতামাতার সাথে সদ্ব্যবহার স্বরূপ সব চেয়ে ছোট দায়িত্ব হিসাবে মেসেজটির প্রচার প্রসার কামনা করছি।

🍥 নিজ সন্তানদের নিকট পাঠিয়ে দিন। (হতে পারে কেউ শিক্ষা গ্রহণ করবে)

✍️অনুবাদে, আব্দুর রাকীব বুখারী মাদানী। (বেনামী আরবী মেসেজ হতে গৃহীত)

Friday, 5 July 2024

আপনার দুনিয়া অন্ধকার হলে লেখাটি আপনার জন্য


হে মুসলিম ভাই! 

আপনার চোখে যখন পুরো দুনিয়া অন্ধকার হয়ে যাবে; তখন স্মরণ করুন যে, আল্লাহই হলেন আসমান ও জমিনের আলো। অতএব দুনিয়ার অন্ধকার আপনার কোনো ক্ষতি করতে পারবে না। 

দুনিয়ার সব দরজা যখন আপনার মুখের উপর বন্ধ করে দেওয়া হয়; আপনি দুনিয়া ও আখিরাতের দয়াময় প্রভুর দরজায় কড়া নাড়ুন, সে দরজা তো বন্ধ হবার নয়। সহীহ মুসলিমে (হা/২৭৫৯) আবু মুসা রাযিয়াল্লাহু আনহুর সূত্রে রাসূল ﷺ থেকে বর্ণিত হয়েছে, রাসূল ﷺ বলেছেনঃ "দিনের আলোয় পাপ করা পাপী যেন রাতের আঁধারে আল্লাহর কাছে তওবা করতে পারে, সেজন্য আল্লাহ স্বীয় হাতকে রাতের বেলা বাড়িয়ে দেন। রাতের অন্ধকারে গুনাহ করা গুনাহগার বান্দা যেন দিনের বেলায় তওবা করতে পারে, সেজন্য আল্লাহ স্বীয় হাতকে দিনের বেলায় বাড়িয়ে দেন। পশ্চিম দিগন্ত থেকে সূর্য ওঠা পর্যন্ত এভাবে চলতেই থাকবে।" 

শক্তিমানরা তাদের শক্তি নিয়ে আপনার উপর চড়াও হলে চিন্তিত হবেন না, বরং দৃঢ় বিশ্বাস রাখুন যে, আপনার মহান প্রতিপালক মহা শক্তিধর এবং পরাক্রমশালী। আর অবশ্যই আল্লাহর সাহায্য সন্নিকটে।

ধনকুবেররা স্বীয় সম্পদ নিয়ে ঔদ্ধত্য করলে (স্মরণ করুন), আল্লাহ বলেছেনঃ "মহিমান্বিত মূলত আল্লাহ; যিনি প্রকৃত মালিক, তিনি ব্যতীত কোনো সত্য উপাস্য নেই; সম্মানিত আরশের অধিপতি তিনি।" -(সূরা মুমিনূন, ১১৬)

উচ্চবংশীয়রা নিজ বংশের অহমিকায় লিপ্ত হলে আল্লাহর এই কথা মনে করুন: "আল্লাহর কাছে সে-ই ব্যক্তি সম্মানিত, যে তোমাদের মাঝে যত বেশি তাকওয়াবান। নিশ্চয়ই আল্লাহ মহাজ্ঞানী, সম্যক অবগত।" -(সূরা হুজুরাত, ১৩)

সময় দীর্ঘ হচ্ছে, অথচ আপনার স্বপ্ন ও লক্ষ্য দূরে সরে যাচ্ছে, নাগালের বাইরে চলে যাচ্ছে; এরকম হলে আল্লাহর শরণাপন্ন হোন, তাঁর কাছেই চান, তাঁরই করুণা ভিক্ষা করুন; তিনি তো অতি নিকটে, আপনার দূরকে তিনি কাছের করে দেবেন, কঠিনকে সহজে পরিণত করবেন, অগম্য গন্তব্যকে নাগালের মধ্যে এনে দেবেন। আল্লাহ বলেনঃ "আর আমার বান্দাগণ আমার সম্পর্কে আপনাকে জিজ্ঞেস করলে বলে দিন, নিশ্চয়ই আমি অতি নিকটে। আহ্বানকারী যখন আমাকে আহ্বান করে আমি তার আহ্বানে সাড়া দেই। কাজেই তারাও আমার ডাকে সাড়া দিক এবং আমার প্রতি ঈমান আনুক, যাতে তারা সঠিক পথে চলতে পারে। -(সূরা বাকারা, ১৮৬)

হে মুসলিম! আল্লাহর উপর অহঙ্কার করে তাঁকে ডাকা বাদ দিয়েন না, তাহলে দুনিয়া ও আখিরাত উভয়ই হারাবেন। আল্লাহ বলেনঃ "তোমাদের প্রতিপালক বলেছেন: ‘তোমরা আমাকে ডাকো, আমি তোমাদের ডাকে সাড়া দেব। যারা অহংকারবশতঃ আমার কাছে দোয়া করা থেকে বিমুখ, ওরা লাঞ্ছিত হয়ে জাহান্নামে প্রবেশ করবে।" -(সূরা গাফির, ৬০)

রাসূল ﷺ বলেছেনঃ "আল্লাহ বলেন: হে আদম সন্তান! তুমি তো আমাকে ডাকোনি, আমার কাছে আশাও করোনি, (করলে) আমি তোমার সব কিছু ক্ষমা করতে কোনো পরোয়া করতাম না। 

ওহে বনী আদম! আসমান ভর্তি গুনাহ নিয়ে আমার কাছে ক্ষমা চাইলে, সব গুনাহ মাফ করে দিতাম কোনো পরোয়া করতাম না।

ওরে আদম সন্তান! পুরো জমিন পরিমাণ ভুল নিয়ে আমার সাথে শিরক বিহীন অবস্থায় সাক্ষাৎ করলে, অনুরূপ মাগফিরাত নিয়ে আমি তোমার কাছে আসতাম।"

আপনি দোয়া করার জন্য রাতের শেষভাগকে বেছে নিন। আবু হুরায়রা রাযিয়াল্লাহু আনহু রাসূল ﷺ থেকে বর্ণনা করেন, রাসূল ﷺ বলেছেনঃ আমাদের মহান রব প্রতি রাতের শেষ তৃতীয়াংশে দুনিয়ার আসমানে অবতরণ করেন এবং বলতে থাকেন: কে আমাকে ডাকবে? আমি তার ডাকে সাড়া দেব। আমার কাছে কে চাইবে? তাকে তার চাওয়া দেব। আমার কাছে মাফ চাইবে কে? তাকে ক্ষমা করে দেব।"

সর্বান্তকরণে আল্লাহর দিকে ফিরুন, দোয়া কবুলের ব্যাপারে অবিচল আস্থা রাখুন। আবু হুরায়রা রাযিয়াল্লাহু আনহু বলেন, রাসূল ﷺ বলেছেনঃ" তোমরা দোয়া কবুলের ব্যাপারে দৃঢ়চিত্ত হয়ে আল্লাহর কাছে দোয়া করো। জেনে রেখো, গাফেল উদাসীন অন্তরের দোয়া আল্লাহ্ কবুল করেন না।" 

হে মুসলিম ভাই! যে দোয়ায় আপনি আল্লাহকে আশা করেন, তাঁর প্রতি মনোনিবেশ করেন, তাড়াহুড়ো না করেন; আপনার সে দোয়া বাস্তবিকই কবুল হবে। আবু সাঈদ রাযিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেন, রাসূল ﷺ বলেছেনঃ "কোনো মুসলিম যদি এমন দোয়া করে, যেটাতে কোনো পাপ নেই অথবা আত্মীয়তার সম্পর্ক ছিন্ন করার দাবি নেই, তাহলে আল্লাহ এর বিনিময়ে তিনটির যেকোনো একটি দেবেন:

১) তার উদ্দিষ্ট বিষয়টি দ্রুতই দেবেন, নতুবা

২) আখিরাতের জন্য জমা রেখে দেবেন, আর নয়তো

৩) অনুরূপ কোনো বিপদ তার থেকে দূরে সরে দেবেন। 

সাহাবীগণ এটা শুনে বললেন, তাহলে তো আমরা আরো বেশি বেশি দোয়া করব!

রাসূল ﷺ বললেনঃ আল্লাহ আরো অধিক দেবেন।"

অতএব আপনারা দোয়াতে মনোনিবেশ করুন। আল্লাহ আমাকে এবং আপনাদেরকে রহম করুন।

✍️শায়খ মুহাম্মাদ বিন উমার বাযমূল হাফিযাহুল্লাহ।

Saturday, 22 June 2024

কন্যা সন্তানের মর্যাদা

 



فضل البنات (কন্যা সন্তানের মর্যাদা)

এক) কন্যা সন্তান জাহান্নামের আগুন হতে প্রতিবন্ধক হবে।

أَنَّ عَائِشَةَ زَوْجَ النَّبِيِّ ﷺ حَدَّثَتْهُ قَالَتْ جَاءَتْنِي امْرَأَةٌ مَعَهَا ابْنَتَانِ تَسْأَلُنِي، فَلَمْ تَجِدْ عِنْدِي غَيْرَ تَمْرَةٍ وَاحِدَةٍ، فَأَعْطَيْتُهَا، فَقَسَمَتْهَا بَيْنَ ابْنَتَيْهَا، ثُمَّ قَامَتْ فَخَرَجَتْ، فَدَخَلَ النَّبِيُّ ﷺ فَحَدَّثْتُهُ فَقَالَ "‏مَنْ يَلِي مِنْ هَذِهِ الْبَنَاتِ شَيْئًا فَأَحْسَنَ إِلَيْهِنَّ كُنَّ لَهُ سِتْرًا مِنَ النَّارِ"‏‏.

নবী ﷺ এর স্ত্রী আয়িশাহ রাদ্বিয়াল্লাহু আনহা হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, “একটি মহিলা দুই মেয়ে সাথে নিয়ে আমার কাছে এসে কিছু চাইলো, আমার কাছ থেকে একটি খেজুর ব্যতীত আর কিছুই সে পেলো না, আমি তাকে ওটা দিলাম। মহিলাটি তার দুই মেয়েকে খেজুরটি ভাগ করে দিল। তারপর সে উঠে বের হয়ে গেল। এ সময় নবী ﷺ এলেন। আমি তাঁকে ব্যাপারটি জানালাম। তখন তিনি বললেন, ‘যাকে এ সব কন্যা সন্তান দিয়ে পরীক্ষা করা হয়, অতঃপর সে তাদের সাথে ভালো ব্যবহার করে, এ কন্যারা তার জন্য জাহান্নামের আগুন থেকে প্রতিবন্ধক হবে।’” [সহীহ বুখারী- ৫৯৯৫, সহীহ মুসলিম- ২৬২৯] 

দুই) দুটি মেয়ে প্রতিপালনে রয়েছে রাসূলুল্লাহ ﷺ এর সাথে জান্নাতে থাকার সুবর্ণ সুযোগ।

عَنْ أَنَسِ بْنِ مَالِكٍ، قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ ﷺ "‏مَنْ عَالَ جَارِيَتَيْنِ حَتَّى تَبْلُغَا جَاءَ يَوْمَ الْقِيَامَةِ أَنَا وَهُوَ وَضَمَّ أَصَابِعَهُ".‏

আনাস ইবনে মালিক রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ ﷺ বলেছেন, “যে ব্যক্তি দুটি মেয়ে সন্তানকে সাবালক হওয়া পর্যন্ত প্রতিপালন করে, কিয়ামতের দিন সে ও আমি এমন পাশাপাশি অবস্থায় থাকবো, এ বলে তিনি তার হাতের আঙ্গুলগুলো মিলিয়ে দিলেন।” [সহীহ মুসলিম- ২৬৩১]

তিন) কন্যা সন্তান মূল্যবান সঙ্গী। 

عَنْ عُقْبَةَ بْنِ عَامِرٍ , قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ ﷺ : «لا تَكْرَهُوا الْبَنَاتِ فَإِنَّهُنَّ الْمُؤْنِسَاتُ الْغَالِيَاتُ»

উকবাহ ইবনে আমের রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু হতে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ ﷺ বলেছেন, “তোমরা মেয়েদের অপছন্দ করো না, কারণ তারা মূল্যবান সঙ্গী।” [সিলসিলাহ সহীহাহ- ৩২০৬]

চার) দুই/তিন মেয়ে/বোন ভালোভাবে প্রতিপালনে ও তাদের ব্যাপারে আল্লাহকে ভয়কারীর জন্য রয়েছে জান্নাত।

عَنْ أَبِي سَعِيدٍ الْخُدْرِيِّ، قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ ﷺ ‏"‏مَنْ كَانَ لَهُ ثَلاَثُ بَنَاتٍ أَوْ ثَلاَثُ أَخَوَاتٍ أَوِ ابْنَتَانِ أَوْ أُخْتَانِ فَأَحْسَنَ صُحْبَتَهُنَّ وَاتَّقَى اللَّهَ فِيهِنَّ فَلَهُ الْجَنَّةُ"‏.‏

আবূ সাঈদ আল-খুদরী রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু হতে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ ﷺ বলেছেন, “যার তিনটি মেয়ে অথবা তিনটি বোন আছে, অথবা দুটি মেয়ে অথবা দুটি বোন আছে, সে তাদের প্রতি ভালো ব্যবহার করলে এবং তাদের (অধিকার) সম্পর্কে আল্লাহ তা‘আলাকে ভয় করলে তার জন্য জান্নাত নির্ধারিত আছে।” [সহীহুত তারগীব- ১৯৭৩]

পাঁচ) তিনটি কন্যা সন্তান থাকলে ও তাদের ব্যাপারে ধৈর্যধারণ করলে, তাদের হক্ব যথাযথ আদায় করলে তারা কিয়ামতের দিন জাহান্নাম থেকে অন্তরায় হবে।

قَالَ سَمِعْتُ عُقْبَةَ بْنَ عَامِرٍ، يَقُولُ سَمِعْتُ رَسُولَ اللَّهِ ﷺ يَقُولُ ‏"‏مَنْ كَانَ لَهُ ثَلاَثُ بَنَاتٍ فَصَبَرَ عَلَيْهِنَّ وَأَطْعَمَهُنَّ وَسَقَاهُنَّ وَكَسَاهُنَّ مِنْ جِدَتِهِ كُنَّ لَهُ حِجَابًا مِنَ النَّارِ يَوْمَ الْقِيَامَةِ"‏.‏

উকবা ইবনে আমের রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ ﷺ কে বলতে শুনেছি, “কারও তিনটি কন্যা সন্তান থাকলে এবং সে তাদের ব্যাপারে ধৈর্য ধারণ করলে, যথাসাধ্য তাদের পানাহার করালে ও পোশাক-আশাক দিলে, তারা কিয়ামতের দিন তার জন্য জাহান্নাম থেকে অন্তরায় হবে।” [সহীহ ইবনে মাজাহ- ২৯৭৪]  

সম্পাদনায়,

শাইখ ড. মুহাম্মাদ সাইফুল্লাহ হাফিযাহুল্লাহ। 

১৫ যুলহিজ্জাহ ১৪৪৫ হিজরি, ২২ জুন ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

Friday, 26 April 2024

শাসকের সমালোচনা থেকে সতর্ক হোন -

 খারেজীদের রাষ্ট্রীয় বিষয়ে সমস্ত অভিযোগের জবাব এখানে দেওয়া আছে। মনোযোগ সহকারে পড়ার অনুরোধ করছি...


এই হাদীস গুলো পড়তে পড়তে এমন মনে হচ্ছে, আমি যেনো সরাসরি রাসুলুল্লাহ (সাঃ)কে প্রশ্ন করছি আর তিনি উত্তর দিচ্ছেন। সুবহানাল্লাহ। 

শাসকদের নিয়ে সাহাবাদের সাথে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর সাথে কথোপকথন...!!!

১) শাসক জালেম হলে আমরা কিভাবে তার থেকে রেহাই পাব??

> রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন: "যে তার শাসকের কাছে থেকে অপছন্দনীয় কিছু দেখে সে যেন ধৈর্য ধরে।" -(বুখারী/৩৮৭০) 

২) কিন্তু সে তো শরীয়ত মোতাবেক শাসন করে না!!

>রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন: "আমার পরে এমন কিছু শাসক হবে যারা না আমার হেদায়াত মানবে আর না আমার সুন্নাত। আর তাদের মধ্যে এমন কিছু লোক থাকবে যারা মানব দেহে শয়তানের অন্তর লালন করবে।" আমি বললাম: হে আল্লাহর রাসূল, এরকম সময়ে আমি কি করব?? রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেন: তুমি শাসকের কথা শুনবে ও মানবে, যদিও সে তোমাকে মেরে তোমার সম্পদ দখল করে নেয়। তথাপিও তুমি তার আনুগত্য করবে।" -(মুসলিম/১৮৪৭) 

৩) শাসক তো আমার সবকিছু নিয়ে নিল!!আমাকে সে কষ্ট দিচ্ছে!!

>রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেন: তুমি শাসকের কথা শুনবে ও মানবে, যদিও সে তোমাকে মেরে তোমার সম্পদ দখল করে নেয়। তথাপিও তুমি তার আনুগত্য করবে।" -(মুসলিম/১৮৪৭) 

৪) কিন্তু সে তো আমাদের সবকিছু নিয়ে জুলুম করছে, আমাদের বঞ্চিত করছে ?!!

> রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন: "তাদের হক তোমরা ঠিক ঠিক দাও আর তোমাদের হক আল্লাহর কাছে চাও!" -(বুখারী/৩৬০৩) 

Tuesday, 13 February 2024

প্রশ্ন: ইসলামী শরীয়তের দৃষ্টিকোন থেকে (১৪ই ফেব্রুয়ারি) বিশ্ব ভালোবাসা দিবস উদযাপন করার হুকুম কি? বিস্তারিত আলোচনাসহ।

 


▬▬▬▬▬▬▬✿◈✿▬▬▬▬▬▬▬

উত্তর: ইসলামী শরীয়তে ভালবাসা দিবস নামে কোন দিবস নেই। বিশ্ব ভালবাসা দিবস পালন একটি রোমান জাহেলি উৎসব। রোমানরা খ্রিস্টান ধর্ম গ্রহণ করার পরেও এ দিবস পালনের প্রথা অব্যাহত রাখে। ইতিহাস থেকে জানা যায় খ্রিষ্টানরা ফেব্রুয়ারি মাসের ১৪ তারিখে ‘ভ্যালেন্টাইন’স ডে’ উদযাপন করে। দিবসটির উৎপত্তি খ্রিষ্টীয় ও প্রাচীন প্রথা থেকে। খ্রিষ্টানদের কাছে এটি একটি মহৎ ও পবিত্র দিন। গির্জায় গির্জায় প্রার্থনার মধ্য দিয়ে এদিনে তারা তাদের যাজক ‘সেন্ট ভ্যালেন্টাইন’কে বিশেষভাবে স্মরণ করে। এ তারিখটি তাদের সংস্কৃতির অংশ। মধ্য ইংল্যান্ডের ডার্বিশায়ার কাউন্টির তরুণীরা এ দিনের মধ্যরাতে দলবেঁধে ৩ থেকে ১২ বার চার্চ প্রদক্ষিণ করত এবং সুর করে প্রেমগীতি আবৃত্তি করত। অর্থডক্স খ্রিষ্টানরা ‘ভ্যালেন্টাইন’স ডে’ উদযাপন করে ৭ জুলাই। তারাও এদিনে গির্জায় আনুষ্ঠানিকভাবে দিবসটি পালন করে। দিবসটির অপর নাম ‘ফিস্ট অব সেন্ট ভ্যালেন্টাইন’। ভ্যালেন্টাইন নামের ব্যক্তিটি নিজেই রহস্যাবৃত। তাকে নিয়ে স্বয়ং খ্রিষ্টসমাজ দ্বিধাবিভক্ত। এই ভ্যালেনটাইনকে নিয়ে যত কাহিনী প্রচলিত আছে সবগুলোর ভিত্তিই হলো পৌরাণিক ও খ্রিষ্টধর্মীয় উপকাহিনী। বর্তমানে প্রতি বছর ১৪ ফ্রেব্রুয়ারিতে অশ্লীলতা, বেহায়াপনা ও নির্লজ্জতার মাধ্যমে উদযাপিত হয়। এই দিন মানুষ তার ভালোবাসার মানুষকে চিঠি, কার্ড, ফুল, গহনা-সহ নানাবিধ উপহার সামগ্রী গিফট করে পাশ্চাত্য উচ্ছৃিংখলতা, নোংরামি, বেলেল্লাপনা ও বেহায়াপনার নোংরা স্রোতে গা ভাসিয়ে দেয়। বিভিন্ন মুসলিম ও অমুসলিম দেশে তথাকথিত মুসলিমরাও এই নোংরা খ্রিষ্টীয় উৎসবে নীতি-নৈতিকতা বিসর্জন দিয়ে প্রেম ও প্রণয়লীলার অবৈধ সরোবরে ডুব দেয়। তারাও উদযাপন করে কথিত ভালোবাসা দিবস নামের এই হারাম খ্রিষ্টীয় উৎসবটি।আল-ইয়াযু বিল্লাহ।আপনি কি জানেন?১৪ই ফেব্রুয়ারি উপলক্ষে নিজের বউকে ভালোবাসার শুভেচ্ছা জানালেও মূলত দিনটিকে উদযাপন করা হয়। সুতরাং এটা থেকে বিরত থাকুন। কারন অমুসলিমদের অনুকরণে যেসব দিবস পালিত হয়, তার সাথে ইসলামের কোনই সম্পর্ক নেই। এগুলি স্রেফ জাহেলিয়াত এবং বিজাতীয় সংস্কৃতি মাত্র।

.

সম্মানিত পাঠকবৃন্দ!আপনারা জেনে অবাক হবেন যে, আজ পর্যন্ত পৃথিবীতে জাতীয় কিংবা আন্তর্জাতিকভাবে ‘বিশ্ব ভালোবাসা দিবস’ নামে কোনো দিবস নেই। আমরা হুজুগে মাতালরা বেকুবের মতো ‘ভ্যালেন্টাইন’স ডে’কে ‘বিশ্ব ভালোবাসা দিবস’ হিসেবে চালিয়ে দিচ্ছি। এ দিবসটিতে ভালোবাসার নামে ‘মন্দবাসা’ ও কম হয় না। তরুণ-তরুণীদের পরস্পরকে আনন্দিত করতে নির্দ্বিধায় চলে নষ্টামি আর দেহপ্রদর্শনের নাটক। হাজার হাজার যুবক-যুবতী এ দিনে তার সতীত্ব ও চরিত্রকে বিসর্জন দিয়ে নিঃস্ব হয়ে ঘরে ফেরে। তাই অনেকে এ দিবসটিকে উল্লেখ করে থাকেন ‘বিশ্ব বেহায়া দিবস’, বিশ্ব নগ্নতা দিবস’, ‘বিশ্ব লুচ্চামি দিবস’ হিসেবে।অথচ ইসলামে সবধরনের অশ্লীলতা ও বেলাল্লাপনা নিষিদ্ধ। মহান আল্লাহ প্রকাশ্য ও গোপন সকল প্রকার অশ্লীলতা করা তো দূরে থাক অশ্লীলতার নিকটবর্তী হতেও নিষেধ করেছেন। (সূরা বনি-ইসরাইল; ৩২, আন‘আম; ১৫১)। রাসূল (ﷺ) বলেন, ‘যে ব্যক্তি কোন সম্প্রদায়ের সাদৃশ্য অবলম্বন করবে, সে ব্যক্তি (কিয়ামতের দিন) তাদের অন্তর্ভুক্ত হবে।’ (আবু দাঊদ হা/৪০৩১; মিশকাত হা/৪৩৪৭)। অপর বর্ণনায় রাসূল (ﷺ) স্বীয় উম্মতকে সাবধান করে বলেন, তোমরা ইহূদী-নাসারাদের পদাঙ্ক অনুসরণ করবে হাতে হাতে ও বিঘ’তে বিঘ’তে। তারা যদি গুই সাপের গর্তে ঢুকে পড়ে, তোমরাও সেখানে ঢুকবে।’(ইবনু মাজাহ হা/৩৯৯৪, সনদ হাসান) আব্দুল্লাহ বিন আমর রাদিয়াল্লাহু আনহুমা হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রসুলুল্লাহ ﷺ বলেছেন,ইসরাইল সম্প্রদায় যে অবস্থায় পতিত হয়েছিল, নিঃসন্দেহে আমার উম্মাহও সেই অবস্থার সম্মুখীন হবে, যেমন একজোড়া জুতোর একটি অপরটি মতো হয়ে থাকে। এমনকি তাদের মধ্যে কেউ যদি প্রকাশ্যে তার মায়ের সাথে ব্যভিচার করে থাকে, তবে আমার উম্মাহর মধ্যেও কেউ তাই করবে।” [তিরমিযি, হা/২৬৪১; সনদ: হাসান] কিন্তু অত্যন্ত পরিতাপের বিষয় এই যে, বর্তমানে ভালোবাসা দিবস উদ্‌যাপনের মাধ্যমে মুসলিম যুবক যুবতীরা খ্রিষ্টানদের অনুসরণ করছে। এমনকি তথাকথিত সুশীল সমাজের বয়োজ্যেষ্ঠরাও এ থেকে পিছিয়ে নেই।অথচ কোন মুসলমানের জন্য কাফেরদের কোন উৎসব পালন করা জায়েয নয়। কেননা উৎসব (ঈদ) ধর্মীয় বিষয়। এ ক্ষেত্রে শরয়ি নির্দেশনার এক চুল বাইরে যাওয়ার সুযোগ নেই। এমনকি 

ভ্যালেন্টাইনস ডে (তথাকথিত ভালোবাসা দিবস) উপলক্ষে নিজ স্ত্রীকে উইশ করাও জায়েয নেই। কারণ এর দ্বারা মূলত এই জঘন্য দিবসটিকে পালন করা হয় এবং বৈধতা দেওয়া হয়। স্ত্রীর প্রতি ভালোবাসা সারাবছর দেখান, বছরের যেকোনো দিন দেখান। 

.

▪️এবার ইতিহাস বিখ্যাত এবং যুগশ্রেষ্ঠ কয়েকজন ইমামের ফাতওয়া দেখুন:

________________________________________

(১).ভালোবাসা দিবস পালন সম্পর্কে হিজরী ৮ম শতাব্দীর মুজাদ্দিদ শাইখুল ইসলাম ইমাম তাক্বিউদ্দীন আবুল ‘আব্বাস আহমাদ বিন ‘আব্দুল হালীম বিন তাইমিয়্যাহ আল-হার্রানী আন-নুমাইরি, (রাহিমাহুল্লাহ) [মৃত: ৭২৮ হি.] বলেন: 

Download AsPDF

Print Friendly and PDFPrint Friendly and PDFPrint Friendly and PDF
Related Posts Plugin for WordPress, Blogger...