Monday, 11 August 2025

হামাছ-ইজ্রিল সিরিজ-৩


ইজ্রিলের সাথে কাতারের বোঝাপড়ার সম্পর্ক বহুকাল ধরে স্পষ্ট ছিল। ইজ্রিলের সহায়তায় কাতার ঐতিহাসিকভাবে হা/মাছকে অর্থায়ন করেছে। বিপরীতে, ইজ্রিলী সামরিক- বেসামরিক কর্মকর্তাগণ অবাধে দোহায় যাতায়াত ও অবস্থান করেছেন। অথচ, তারা কাতারকে “সন্ত্রাসবাদের অর্থায়নকারী” হিসেবে উল্লেখ করে এসেছে।

২০১৮ সালে ইজ্রিল সরকার কাতারের সাথে একটি চুক্তি করার সিদ্ধান্ত নেয় যার আওতায় গা/জায় নগদ তহবিল স্থানান্তর করা সম্ভব হয়। স্যুটকেস-ভর্তি ডলার কাতারি কর্মকর্তারা ইজ্রিল-নিয়ন্ত্রিত অঞ্চলের মধ্য দিয়ে পৌঁছে দিতেন। ২০২১ সাল পর্যন্ত এভাবে অর্থ স্থানান্তর হতে থাকে। এরপর সংঘাত শুরু হলে তা বন্ধ হয়।

এরপর ইয়ার ল্যাপিড ও নাফতালি বেনেট জোট ২ বছরের জন্য সরকার গঠন করে। পূর্বোক্ত চুক্তিতে অর্থ সরবরাহের বিষয়ে কোনো ধারা উল্লেখ ছিল না। তাই অসুবিধায় পড়ে স্যুটকেসের পরিবর্তে ত্রাণ সামগ্রীর মধ্যে করে নগদ অর্থ পৌছানো চলতে থাকে। ২০২৩ সালে নেতা#য়াহু আবারও ক্ষমতায় আসলে প্রত্যক্ষ অর্থপ্রবাহ শুরু হয়।

২০২৩ সালের সেপ্টেম্বরে $৩০ মিলিয়ন প্রেরণ করা হয় যার মধ্যে $৪ মিলিয়ন হা/মাছের কাসসাম ব্রিগেডের নেতা মোহাম্মাদ দেইফ স্বশরীরে তেলাবিবিতে গিয়ে নিয়ে আসেন। এটা ৭ অক্টোবর হামলায় তাদের শক্তিবৃদ্ধিতে সহায়তা করেছিল। সম্পূর্ণ বিষয়টি ইজ্রিলের সামরিক দপ্তর ও শিন বেট এর শীর্ষ কর্মকর্তারা জানত।

এখন নেতা/ইয়াহু দাবী করছেন- ঐ অর্থ কাতার থেকে আসেনি, ওটা আন্তর্জাতিক অনুদান থেকে দেওয়া হয়েছে। কিন্তু তার দাবীর পক্ষে কোনও প্রমাণ নেই। বরং শিন বেট এর রিপোর্টে আরও বলা হয়েছে যে, হা/মাছের উস্কানিমূলক কর্মকাণ্ডে কাতারি অর্থায়ন এবং অধিকৃত জেরুসালেমে নেতা#য়াহুর মিত্ররা অবদান রেখেছে।

এই কাতারগেট কেলেঙ্কারি ইজ্রিলের জনগণকে দেখিয়েছে যে, নেতা#য়াহু হা#মাছকে অর্থায়নের জন্য গোপন চুক্তি করেছিলেন যা ৭ অক্টোবর হামলাকে সম্ভব করেছিল। এমনকি, গোয়েন্দা সংস্থার কাছে পর্যাপ্ত আভাস থাকা সত্বেও সীমান্তবর্তী স্থানে নোভা মিউজিক ফেস্টিভ্যাল বাতিল করার বা সতর্কতার কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়নি।

এসব নিয়ে নেতা#য়াহু শিন বেটের তৎকালীন প্রধান রোনেন বারের সাথে দ্বন্দ্বে লিপ্ত হন, তাকে বরখাস্ত করতে গিয়ে অ্যাটর্নি জেনারেলের সাথে চরম দ্বন্দ্ব সৃষ্টি হয়। তিনি সেনাবাহিনী ও গোয়েন্দা সংস্থার প্রভাবশালী অংশের বিপরীতে নিজ মনোভাবের লোকদের ক্ষমতাবান করে চলেছেন। দেশে বিক্ষোভ এখন গণআন্দোলনে রূপ নিয়েছে।

সিরিজ-১: https://www.facebook.com/Salim.85/posts/pfbid02wF5Zq81B4t2Pn9GU2ytzAaVhgNwcwXoFn3YwEgRkqRyv5EudH83L8sBbypHJmPbfl

সিরিজ-২: ttps://www.facebook.com/Salim.85/posts/pfbid02qQXe1Kc2oSJu1r1hABesjMiM7CdwQmuKZcd1AFG9yDhQjfsH4YhoSMD2KD4ui9oHl

Mohammad Salimullah

Saturday, 9 August 2025

হামাছ-ইজ্রিল সিরিজ- ২

 

[শুধু শেষ প্যারাটি পড়লেও চলবে]

 ইজ্রিলের জনসংখ্যার ৪৫% হচ্ছে আশকেনাজি (পশ্চিম ইউরোপ থেকে আগত) ইয়াহু। দেশের ক্ষমতার সকল দিকে এদের আধিপত্য চলে। রাষ্ট্রের প্রতিটি উপাদান, যেমন- হাগানা (প্রতিরক্ষা), নেসেট (সংসদ), জুইশ এজেন্সি (দখলদারি) ও হিস্টাড্রুট (অর্থনীতি) এই ইয়াহু শ্রেণির সমন্বয়ে গঠিত।

 জনসংখ্যার অবশিষ্ট ৫৫% হলো সেফার্দি ও মিজরাহি ইয়াহু, যারা Filiস্তিন দখল করে ইজ্রিল প্রতিষ্ঠার পরে এসেছে। ততক্ষণে, আশকেনাজি আধিপত্য প্রতিষ্ঠিত হয়েছে; তাদের ভাষা রাষ্ট্রভাষা হয়েছে, ইকোনো-পলিটিক এস্টাবলিশমেন্টের পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ তাদের হাতে; তারা গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্তের সকল স্থানে বসে গেছে।

 অভিজাত আশকেনাজিদের দল হচ্ছে লেবার পার্টি। আর, নীচুজাত সেফার্ডিকদের দল হচ্ছে লিকুদ পার্টি। কিন্তু নীচুজাত হলেও তাদের সংখ্যা বেশি। তাই, ১৯৭৩ সালে দল গঠন করেই ১৯৭৭ সালে তারা বিজয়ী হয়ে সরকার গঠন করে। রাষ্ট্র গঠনে লিকুদের কোনো ভূমিকা ছিল না; শ্রেফ সংখ্যাগরিষ্ঠের জোরে ক্ষমতা পেয়ে গেল।

 ক্ষমতা উদ্ধারের লক্ষ্যে ১৯৮১ সালের নির্বাচনে লেবার পার্টি সর্বাত্মক প্রচেষ্টা চালায়। হাড্ডাহাড্ডি লড়াইয়ে শিমন পেরেস এর লেবার পার্টি ৪৭টি আসন লাভ করে কিন্তু মেনাকেম বেগিন এর লিকুদ পার্টি ৪৮টি আসন লাভ করে আবারও ক্ষমতায়। তখন থেকে উভয় দলের মধ্যেকার মনস্ত্বাত্বিক বিভেদ স্পষ্টতর হতে থাকে।

 লিকুদ পার্টি নোংরা রাজনীতি শুরু করে। ফিলি#তিনের নতুন নতুন এলাকা দখল ও অবৈধ বসতি স্থাপন করতে থাকে এবং কিন্তু সেখানকার ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানের সুযোগ-সুবিধা ও তহবিল বৃদ্ধি করা হতে থাকে। কিন্তু দেশের সেনাবাহিনী, পুলিশ, শিন বেট- এর উপর আশকেনাজি আধিপত্র একচেটিয়াভাবে অব্যাহত থাকে।

 কিন্তু তারপর ৩ নির্বাচনে (১৯৮৪, ১৯৮৮ ও ১৯৯২ সালে) লিকুদ পার্টি চরম ধরাশায়ী হয়। অবস্থাদৃষ্টে মনে হচ্ছিল- লিকুদের রাজনৈতিক ভবিষ্যৎ শেষ। এদিকে, ১৯৮৮ সালে পার্টিতে যোগদান করে ১৯৯৩ সালে পার্টির প্রধান হওয়া নেতা#য়াহু কঠিন এক খেলা নিয়ে আসেন। লিকুদের সহায়তায় গড়ে ওঠা হা/মাছ ভূমিকা পালন করে।

 ১৯৯৬ সালের নির্বাচনের পূর্বে হা/মাছ দেশজুড়ে লিকুদের অফিসসমূহে সিরিজ বোমা হামলা করতে থাকে। এতে করে দলটির পতিত জনপ্রিয়তা হু হু করে বাড়তে থাকে এবং ধুরন্দর নেতা/ইয়াহু অবিশ্বাস্যভাবে প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত হন। এভাবে, ক্ষমতায় আসতে তিনি প্রতিবার নির্বাচনে নতুন নতুন কৌশল হাজির করতে থাকেন।

 ২০২১-২০২২ সাল নাগাদ তিনি তিনি আশকেনাজি প্রভাব স্থায়ীভাবে খর্ব করার জন্য ডেসপারেট হয়ে ওঠেন। ২০২৩ সালের মার্চে তিনি সুপ্রিম কোর্টের বিরুদ্ধাচারণ করেন এবং প্রতিরক্ষা মন্ত্রী ইয়োভ গ্যালান্টকে বরখাস্ত করতে চেষ্টা করেন। তখন দেশজুড়ে ইতিহাসের সর্বোচ্চ বিক্ষোভ শুরু হয় এবং মাসের পর মাস তা চলতে থাকে।

 ৭ অক্টোবর যুদ্ধ শুরুর পর এই বিক্ষোভ হ্রাস পাবে বা স্থগিত হবে বলে ধারণা করা হয়েছিল। কিন্তু বিক্ষোভ চলতে থাকে। এতে নেতা/ইয়াহু উন্মাদ হয়ে ওঠেন। তিনি রাজনৈতিক প্রতিদ্বন্দ্বীদের নির্মূল করতে সচেষ্ট হন এবং হা/মাছকে নির্মূল করার মাধ্যমে রাজনৈতিক ক্যারিয়ার ফেরাবার ব্যার্থ চেষ্টা করে চলেছেন।

 নেতা/ইয়াহু এখনও বিচার বিভাগের ক্ষমতা খর্ব করার মাধ্যমে লিকুদ পার্টিকে রক্ষার শেষ চেষ্টা করে যাচ্ছেন। লেবার পার্টির রাজনৈতিক ক্ষমতা যদিও খর্ব হচ্ছে, কিন্তু দেশের অর্থনৈতিক এস্টাব্লিশমেন্ট মোটা দাগে এখনও আশকেনাজিদের হাতে রয়ে গেছে। আর, আশকেনাজি শক্তির সাথে নেতা/ইয়াহু আপোষরফার পথও বন্ধ।

 হা/মাছের হাতে আটক জিম্মিদের ফিরিয়ে আনা যাচ্ছে না। নেতা#য়াহু গা#যা দখলের ঘোষণা দিয়েছেন আর হা/মাছও জিম্মিদের মেরে ফেলার হুমকি দিয়েছে। তাই, দেশে বা বিদেশে নেতা/ইয়াহুর আপোষের পথ খোলা নেই। লিবারেল ও আশকেনাজি শক্তি তার বিরুদ্ধে একাট্টা। তার পতন মানে সেফার্ডিকদের রাজনীতির চরম পতন।

 তার সামনে যে অপশনগুলো রয়েছে তা হলো- ১. গৃহযুদ্ধ [কেননা, কোণঠাসা হলেও সেফার্দিকরা সংখ্যাগরিষ্ঠ]; ২. পদত্যাগ করা [তাহলে জাতির সাথে বিশ্বাসঘাতকতার কারণে আদালত তাকে মৃত্যুদণ্ড দেবে]; ৩. পালিয়ে যাওয়া [ইউক্রেন ছাড়া যাওয়ার জায়গা নেই]; ৪. স্বয়ং মালাকুল মউত (আঃ) তার সামনে হাজির হওয়া।

 ১৯৮২ সালে সিআইএ'র প্রণীত মার্কিন গোয়েন্দা প্রতিবেদন দেখতে পারেন- https://www.cia.gov/.../CIA-RDP06T00412R000200840001-6.pdf

 আগের পোস্টটি এখানে- https://www.facebook.com/Salim.85/posts/pfbid02wF5Zq81B4t2Pn9GU2ytzAaVhgNwcwXoFn3YwEgRkqRyv5EudH83L8sBbypHJmPbfl

Mohammad Salimullah

হামাছ সিরিজ-১


[শুধু শেষ প্যারাটি পড়লেও চলবে]

• PLO ছিল আরব জাতীয়তাবাদী সংগঠন। ১৯৯০ সালের অসলো চুক্তি অনুসারে ইজ্রিল-PLO একে অপরকে স্বীকৃতি প্রদানের কথা ছিল। কিন্তু ফিলি#তিনে নতুন সরকার গঠিত না হওয়া পর্যন্ত ইজ্রিল স্বীকৃতি দিতে অস্বীকৃতি জানায়। ইজ্রিল PLO-র বিরুদ্ধে দমন নীতি গ্রহণ করে। লিংক-১

• দমন নীতির উল্লেখযোগ্য উদাহরণ ছিল ৭০-৮০’র দশকে ফিলিস্তিনি ভিলেজ লীগ। এরা ইজ্রিলি অস্ত্র ও রশদ গ্রহণ করেছিল এবং ফিলি#তিনে নির্বাচিত স্থানীয় পরিষদগুলিকে জোরপূর্বক ভেঙে দিয়েছিল, যার যেগুলি বেশিরভাগই PLO-এর প্রতিনিধি ছিল। লিংক- ২, ৩, ৪, ৫ ও ৬

• ভিলেজ পার্টি ছাড়া ইজ্রিলের হাতে আরেকটি বিকল্প ছিল আহমেদ ইয়াসিন। এই ব্রাদারহুড মেম্বার গাজায় ক্লাব, মসজিদ ও মাদ্রাসার একটি নেটওয়ার্ক পরিচালনা করতেন। ৭০ ও ৮০’র দশকে ইজ্রিল তাকে নেটওয়ার্ক তৈরি ও সম্প্রসারণ করার লাইসেন্স ও সহায়তা প্রদান করে। লিংক- ৭ ও ৮

• মার্কিন গবেষক জনাথন শ্যানজার লিখেছেন- "৭০-এর দশকের শেষ দিকে ইজ্রিল ধারণা করে, তারা ফাতাহর ‘অ্যাকিলিস হিল’ খুঁজে পেয়েছে। ব্রাদারহুডের ক্রমবর্ধমান প্রভাবে ফাতাহ উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েছিল। ইজ্রিল ব্রাদারহুডকে অনুমোদন করার সিদ্ধান্ত নেয় যাতে তারা PLO-কে দুর্বল করে দেয়। লিংক- ৯

• ইজ্রিলি কর্মকর্তারা প্রকাশ্যে স্বীকার করেছেন- PLO-কে দুর্বল করার লক্ষ্যে ইয়াসিনের নেটওয়ার্ককে তহবিল ও সহায়তা প্রদান করা হয়েছিল [লিংক ১০]। ৮০’র দশকে গা#জার ইজ্রিলি গভর্নর ব্রিগেডিয়ার জেনারেল ইতজাক সেগেভ হা#মাসের পূর্বসূরী মুজামা ইসলামিয়াকে অর্থ প্রদান স্বীকার করেছেন। লিংক- ১১, ১২ ও ১৩

• ১৯৮৬-১৯৮৯ সময়কালে ইজ্রিল সাউথ কমান্ডের প্রধান ইতজাক মোর্দেচাই বলেন- "আমি যখন দায়িত্ব গ্রহণ করি, তখন গা#জায় নতুন নতুন মসজিদের পরিমাণ দেখে হতবাক হয়ে যাই। দেখা গেল, ইজ্রিলের আর্কিটেক্টরা শেখ আহমেদ ইয়াসিনের দাতব্য সংস্থার সহায়ক ছিলেন।" লিংক- ১৪

• ১৯৮৭ সালে প্রথম ইন্তিফাদা শুরুর পর ১৯৮৮ সালে ব্রাদারহুড সশস্ত্র সংগঠনে রূপান্তরিত হয়ে হা#মাস নাম গ্রহণ করে। [লিংক ১৫]। ১৯৮৯ সালে প্রথম হামলা চালানোর পূর্বে পর্যন্ত ইজ্রিল সরকার সহায়তা করতে থাকে। ইয়াহুদের বিষয়ে কঠোর সব বক্তব্যের পরও তাদেরকে স্পর্শ করা হয়নি। লিংক- ১৬

• ইজ্রিলের প্রতিরক্ষা দপ্তর PLO’র বিপক্ষে হামাসকে প্রভাবশালী হিসেবে গড়ে তুলতে অত্যন্ত আগ্রহী ছিল। [লিংক ১৭] ১৯৯৮ সালে তুর্কি প্রধানমন্ত্রী মেসুত ইলমাজ ইজ্রিল সফরে গেলে নেতা#য়াহু তাকে বলেছিলেন, "আমাদের ব্যাংকে হা#মাছের অ্যাকাউন্ট আছে, আমরা তাদের সাহায্য করি, আপনিও করতে পারেন।" লিংক- ১৮ ও ১৯ 

• ২০০১ নেতা#য়াহু অফরা বসতি পরিদর্শন করেন। সেখানে ভাষণে তিনি বলেন: "আমরা অবশ্যই ফিলি#নিদের উপর কঠোর আঘাত করব, কিন্তু বিশ্ব কিছুই বলবে না। বিশ্ব বলবে যে, আমরা আত্মরক্ষা করছি। আমরা এটি যুক্তরাষ্ট্রের সাহায্যে অর্জন করব জন্য। তারা সহজেই ন্যারেটিভ তৈরি করতে পারে। লিংক- ২০ ও ২১

• ২০১০ সালে উইকিলিকসের ফাঁসকৃত নথিতের দেখা যায় যে, ২০০৭ সালে ইজ্রিলি বিমান বাহিনীর জেনারেল আমোস ইয়াদলিন বলেন- “হা#মাছ গা#জা দখল করলে ইজ্রিল খুশি হবে এবং তাকে ইতিবাচক পদক্ষেপ হিসেবে বিবেচনা করবে, যাতে গা#জাকে শত্রু রাষ্ট্র হিসেবে বিবেচনা করা যায়। লিংক- ২২ ও ২৩

• ২০১২ সালের ডিসেম্বরে সাংবাদিক ড্যান মার্গালিটের সাথে সাক্ষাৎকারে নেতা#য়াহু বলেন- পশ্চিম তীরে ফিলি#নি কর্তৃপক্ষের প্রতিপক্ষ হিসেবে হা#মাছকে শক্তিশালী রাখা গুরুত্বপূর্ণ। দুটি শক্তিশালী প্রতিদ্বন্দ্বী থাকার ফলে ফিলি#ন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার আলোচনার জন্য চাপ কমিয়ে দেবে। লিংক- ২৪

• ২০১৫ সালে "টাস্ক ফোর্স হারপুন" নামে ইজ্রিলি আর্থিক তদন্তকারী দল হা#মাছের মালিকানাধীন ও নিয়ন্ত্রণাধীন ব্যবসা ও বিনিয়োগের একটি নেটওয়ার্ক আবিষ্কার করে। সন্ত্রাসবাদ অর্থায়ন টাস্ক ফোর্স সরকারকে অবহিত করে, কিন্তু পরবর্তী ৭ বছর পর পর্যন্ত ইজ্রিল বা অ্যামেরিকা পদক্ষেপ নেয়নি। লিংক-২৫ ও ২৬

• ২০১৮ সালের আগস্টে কাতারের সাথে ইজ্রিলের একটি বিতর্কিত চুক্তি হয়। চুক্তির আওতায় কাতার মাসিক ভিত্তিতে গা#জায় অর্থ পাঠানো শুরু করে। কাতারি প্রতিনিধি নগদ ১৫ মিলিয়ন ডলার ভর্তি স্যুটকেস নিয়ে বিমানে করে তেলাবিবিতে যেত এবং সেখান থেকে তা গা#জায় পৌছে দিত। লিংক- ২৭ ও ২৮

• সাবেক ইজ্রিলি প্রধানমন্ত্রী এহুদ ওলমার্ট বলেন- “ফিলি#ন কর্তৃপক্ষকে দূর্বল করা আর  হা#মাছকে শক্তিশালী করার জন্য ইজ্রিল সবকিছু করেছে। গা#জা পতনের দ্বারপ্রান্তে ছিল; তাদের সম্পদ ছিল না, অর্থ ছিল না। বিবি তাদের বাঁচিয়েছিল। বিবি কাতারের সাথে চুক্তি করে লক্ষ লক্ষ ডলার গা#জায় স্থানান্তর করেছে।" লিংক- ২৯

• ২০১৯ সালের আগস্টে ইজ্রিলি আর্মি রেডিওর সাথে এক সাক্ষাৎকারে, ১৯৯৯ থেকে ২০০১ সাল পর্যন্ত ইজ্রিলের প্রধানমন্ত্রী এহুদ বারাক বলেছিলেন- নেতা#য়াহুর প্রধান কৌশল হলো ফিলি#নি কর্তৃপক্ষকে দুর্বল রাখার জন্য হা#মাছকে জীবিত ও লাথির উপর রাখা। লিংক- ৩০

• ২০২০ সালের ফেব্রুয়ারিতে নেতা#য়াহুর নির্দেশে মো#ছাদ পরিচালক ইয়োসি কোহেন ও জেনারেল হার্জি হালেভি হামাসের জন্য অর্থ প্রদান বৃদ্ধির অনুরোধ করতে কাতারে যান [লিংক ৩১]। ব্যাপক সমালোচনা সত্ত্বেও নেতা#য়াহু ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী নাফতালি বেনেট গা#জায় লক্ষ লক্ষ ডলার স্থানান্তর অব্যাহত রাখেন। লিংক- ৩২

• ২০২৩ সালের সেপ্টেম্বরে মো#ছাদের পরিচালক ডেভিড বার্নিয়া একই উদ্দেশ্যে আবার কাতারে যান [লিংক ৩৩ ও ৩৪]। কিন্তু ৭ অক্টোবরের হামলার পর নেতা#য়াহু হা#মাছকে অর্থায়নের বিষয়টি অস্বীকার করে গা#জায় মানবিক বিপর্যয় এড়াতে তহবিল স্থানান্তর করেছিলেন বলে দাবী করেন। লিংক- ৩৫

• ইজ্রিলি গোয়েন্দারা অক্টোবর হামলার পেছনে নেতা#য়াহুর অর্থায়নকে দাবী করলে তার সাথে গোয়েন্দা সংস্থার চরম পরিস্থিতি সৃষ্ট হয় [লিংক ৩৬]। গোয়েন্দা তথ্য মতে- ইজ্রিলে গা#জার শ্রমিকদের জন্য ওয়ার্ক পারমিট বৃদ্ধির বিষয়ে আলোচনায় হা#মাছের কর্মকর্তারা অন্তর্ভুক্ত ছিলেন। এভাবে, গা#জায় অর্থ প্রবাহিত হতে থাকে। লিংক- ৩৭

• ইজ্রিলের ৭ম আর্মার্ড ব্রিগেডের সাবেক কমান্ডার ও নেতা#য়াহুর সহযোগী গেরশন হাকোহেন একটি সাক্ষাৎকারে বলেছিলেন: "নেতানিয়াহুর কৌশল হলো দ্বি-রাষ্ট্র প্রস্তাবকে রোধ করা, তাই তিনি হা#মাছকে তার নিকটতম অংশীদারে পরিণত করছেন। হা#মাছ প্রকাশ্যে শত্রু, গোপনে মিত্র।” লিংক- ৩৮ ও ৩৯

• ফাইনালঃ ২০১৯ সালে লিকুদ পার্টির সম্মেলনে নেতা#য়াহু স্পষ্ট মন্তব্য করেছিলেন: “কেউ ফিলি#ন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠাকে ব্যর্থ করতে চাইলে তার উচিৎ হা#মাছকে শক্তিশালী করা এবং হা#মাছের অর্থ স্থানান্তরকে সমর্থন করা। এটা আমাদের কৌশলের অংশ- গা#জার ফিলি#নিদের পশ্চিম তীরের ফিলি#নিদের থেকে বিচ্ছিন্ন করা। লিংক- ৪০

১] https://en.wikipedia.org/wiki/Oslo_Accords

২] https://en.globes.co.il/.../article-the-obsession-that...

3] www.memri.org/reports/story-palestinian-village-leagues

4] http://www.jta.org/.../west-bank-gaza-village-leagues...

5] https://paperspast.natlib.govt.nz/news.../CHP19820402.2.75.1

6] https://eresources.nlb.gov.sg/.../straitstimes19820327-1...

৭] https://theintercept.com/.../hamas-israel-palestine.../

৮] https://tribune.com.pk/.../how-and-why-israel-helped...

৯] https://www.jpost.com/.../1989-and-the-rise-of-hamas-611745

১০] https://www.upi.com/.../Israel-gave-major.../6023982990800/

১১] https://theintercept.com/.../hamas-israel-palestine.../

১২] https://washingtonmonthly.com/.../israels-failed-strategies/

১৩] https://www.mmegi.bw/ampArticle/110490

১৪] https://www.jpost.com/.../it-has-been-30-years-since-the...

১৫] https://www.spiegel.de/.../a-gaza-conundrum-the-story...

১৬] https://www.nytimes.com/.../islamic-fundamentalist-group...

১৭] https://www.jta.org/.../crackdown-on-hamas-movement-seen...

১৮] https://www.odatv.com/.../bu-iddia-cok-tartisilir...

১৯] https://politurco.com/revealing-israels-strategic-vision...

২০] https://web.archive.org/.../0000017f-dc84-d3a5-af7f...

২১] https://www.aljazeera.com/.../netanyahu-us-easily...

২২] https://www.ynet.co.il/article/4002043

২৩] https://www.jpost.com/.../yadlin-israel-would-be-happy-if...

২৪] https://www.nytimes.com/.../israel-qatar-money-prop-up...

২৫] https://www.nytimes.com/.../israel-hamas-money-finance...

২৬] https://www.timesofisrael.com/ny-times-israel-uncovered.../

২৭] https://edition.cnn.com/.../qatar-hamas-funds.../index.html

২৮] https://www.timesofisrael.com/hamas-leader-sinwar-sent-a.../

২৯] https://www.politico.eu/.../israel-border-troops-women.../

৩০] https://www.cbc.ca/.../netanyahu-israel-gaza-hamas-1.7010035

৩১] https://www.timesofisrael.com/mossad-chief-top-general.../

৩২] https://www.france24.com/.../20181111-netanyahu-defends...

৩৩] https://www.nytimes.com/.../israel-qatar-money-prop-up... 

৩৪] https://www.maariv.co.il/news/politics/article-1058689

৩৫] https://www.ynetnews.com/article/h1cqppnba

৩৬] https://www.nytimes.com/.../israel-qatar-money-prop-up...

৩৭] https://www.timesofisrael.com/for-years-netanyahu.../

৩৮] https://www.haaretz.com/.../0000018b-1e9f-d47b-a7fb...

৩৯] https://www.analystnews.org/.../how-israel-helped-prop-up...

৪০] https://www.theguardian.com/.../benjamin-netanyahu-hamas...

Mohammad Salimullah

Tuesday, 1 April 2025

মুসলমানদের উত্থান-পতনের ইতিহাস


৭১১ খৃষ্টাব্দে বীরসেনা তারেক্ব বিন যিয়াদের সেনাপতিত্বে মুসলিমগণ ইউরোপের 'স্পেন'  জয়লাভ করেন। ১৪৯২ খৃষ্টাব্দ পর্যন্ত এটি মুসলিম শাসনাধীন রাষ্ট্র ছিল। এই দীর্ঘ আটশত বছরে মুসলিমগণ ইউরোপকে ঢেলে সাজালেন। জ্ঞান-বিজ্ঞান, কলেজ, ইউনিভার্সিটি ইত্যাদিতে দেশকে নূতন রূপ দিয়েছিলেন।

মুসলমানদের যখন লক্ষ লক্ষ গ্রন্থরাজি, তখন রানী ইথাবিলার গ্রন্থাগারে মাত্র ২০১ খানা বই। ফ্রান্সের শাহী কুতুব-খানায় ৯০০ খানা বই ছিল। মুসলমানদের যেখানে বহু বিষয়ের বই ছিল, সেখানে খৃষ্টানদের কেবল ইনজীল ও তওরাতের বিভিন্ন সংস্করণ। (তথ্য সংগ্রহ, উর্দু তরজুমান, ১লা নভেম্বর ১৯৮২ খৃঃ সংখ্যা থেকে)

 এরপর পতনঃ

বিলাসিতা ও আপোষ-দ্বন্দ্বের জন্য খৃষ্টানরা মওকা পেয়ে গেল। রানী ইথাবিলা ও রাজা ফার্ডিন্যান্ড বৈবাহিকসূত্রে আবদ্ধ হয়ে মুসলিম নিধনে উঠে পড়ে লাগলেন। মুসলিমগণ পরাজিত হতে লাগলেন। শেষে তদানীন্তন স্পেনের রাজধানী গ্রানাডায় আশ্রয় নিলেন। রাজা ফার্ডিন্যান্ড বললেন, মুসলিম বাহিনী যদি নিরস্ত্র অবস্থায় মসজিদে মসজিদে অবস্থান করে, তবে তাদেরকে মুক্তি দেওয়া হবে। মুসলমানরা আল্লাহর উপর 'তাওয়াক্কুল' হারিয়ে রাজার কথায় বিশ্বাস করে মসজিদে মসজিদে নিরস্ত্র অবস্থায় প্রবেশ করলেন। অমনি রাজা নিজের সেনাদেরকে আদেশ করলেন যে, মসজিদগুলোতে শিকল তুলে আগুন ধরিয়ে দাও।

যেমনি আদেশ তেমনি কাজ। আগুন ধরিয়ে দেওয়া হল। মুসলিমদেরকে নির্মমভাবে মাছ পোড়া করে দিল। পতনোত্তর কালে বিদ্রোহীর নির্দেশে গ্রানাডায় ৮০ হাজার গ্রন্থ পুড়িয়ে ছাই করে দেওয়া হল। আর সারা দেশ থেকে আরাবী ক্লাসের লক্ষাধিক গ্রন্থ পুড়িয়ে নিশ্চিহ্ন করা হল!

এর দুঃখ কেবল মুসলমানদেরই নয় বরং ঐতিহাসিক 'স্কট' বলেছেন, 'এ এমন দুর্ভাগ্যজনক ঘটনা, এমন এক মুসীবত যার উপর শুধু বর্তমান যুগ নয়, বরং আগামী দিনের প্রত্যেক জ্ঞান-পিপাসু ব্যক্তিকে অশ্রু বিসর্জন করতে হবে। স্পেনের পতনের মত অত বড় পতন বুঝি মুসলিমদের আর হয়নি। এই পতনের তারীখ, ১৪৯২ খৃষ্টাব্দের ১লা এপ্রিল।

এই দিনে রাজা ফার্ডিন্যান্ড ব্যঙ্গ করে বলেছিলেন, হে মুসলিম! তোমরা 'এপ্রিল ফুল' Fool অর্থে বোকা। বোকা মুসলমান আজও পয়লা এপ্রিলে সেই রসিকতার খেলা খেলে থাকে। এই খেলাতে যে, মুসলমানদের অভিশাপ ও পতন লুকিয়ে আছে তা মুসলমানদের জানা নেই। এ ইতিহাস কান্নার ইতিহাস। এপ্রিল ফুলের রসিকতা খেলা খৃষ্টানদের পক্ষেই শোভা পায়। মুসলমানদের জন্য এটা মোটেই শোভা পায় না।

খৃষ্টানবাহিনী রাজত্ব করায়ত্ব করেই ক্ষান্ত হয়নি বরং তারা মুসলমানদের রচিত জ্ঞান-বিজ্ঞানের ধন ভান্ডার মূল্যবান গ্রন্থগুলি না পুড়িয়ে যত্ন করে গচ্ছিত করে নিজেদের করায়ত্ত করেছে। পরবর্তী কালে ল্যাটিন ইত্যাদি ভাষাতে অনুবাদ করে মুসলমানদের নাম উচ্ছেদ করে নিজেদের নাম বসিয়ে আমূল পরিবর্তন ঘটিয়েছে। আরবী কবি এরই শোক-কাহিনী বড় ব্যাথাতুর মনে গেয়েছেন। তার বাংলা অনুবাদটি এই রকমঃ-

                  রাজ্য গেছে, তাতে কান্না কেন?  সে তো ক্ষণেকের বস্তু!

                                  শাশ্বত আইন মেনে নিতে হয়

                                     নিষ্কৃতি নেই তা হতে;

                              কিন্তু ঐ বিদ্যাধন, মতিসম গ্রন্থরাজী

                                  নিয়ে গেছে ইংরেজ জাতি,

                                     দেখিলে কান্না আসে

                                      হৃদয় দগ্ধ হয় ক্ষতে।

(বিভিন্ন পত্র-পত্রিকা, 'এপ্রিল ফুলের বেড়াজালে মুসলিম সমাজ' থেকে সংগৃহীত)

বইঃ বক্তৃতাসম্ভার

উস্তায মওলানা আব্দুর রঊফ শামীম (রাহিমাহুল্লাহ)

(মতান্তরে এই প্রেক্ষাপট ঐতিহাসিকভাবে প্রমাণিত নয়। উক্ত করুণ ইতিহাসের সাথে ১লা এপ্রিলের যোগসূত্র নেই। আমি নিজে মদীনা ইউনিভার্সিটির ইতিহাসবিদ উস্তাযকে সরাসরি এপ্রিল ফুলের ইতিহাস সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করেছিলাম, তিনি মুসলিমদের দুর্ভাগ্যের ঐ ইতিহাসের সাথে ১লা এপ্রিলের কোন যোগ থাকার কথা পড়েননি বলে মন্তব্য করেছিলেন। আর আল্লাহই ভালো জানেন।)

---আব্দুল হামীদ আল-ফাইযী আল-মাদানী

Friday, 7 March 2025

হিজবুত তাহরীর এর ভয়ংকর আক্বীদাহ!



প্রতিষ্ঠাতা:

এই দলের প্রতিষ্ঠাতা ও প্রথম আমীর হচ্ছেন তকীউদ্দীন নাবাহানী। তিনি ১৯০৯ সালে বর্তমান ইসরাঈলের হাইফা শহরে জন্ম গ্রহণ করেন। তিনি ১৯৪৮ সালে বাইরুতে হিজবুত তাহরীর প্রতিষ্ঠা করেন। ১৯৭৭ সালে তিনি বাইরুতে ইন্তকাল করেন।

.

দলটির মূলনীতি:

এ দলের মূলনীতি ও মতাদর্শ 

'মু'তাযিলা ও আশআরী সম্প্রদায়ের সাথে মিলে যায়। তারা শরীয়তের দলীলের উপর মানবীয় বিবেক বুদ্ধিকে প্রাধান্য দিয়ে থাকে।

.

এই দলের কার্যকলাপ সম্পর্কে যতদূর জানা যায়:

তাদের একমাত্র দাবী হচ্ছে খেলাফত প্রতিষ্ঠা করা। এই দিকেই তারা আহবান করে। ঈমান, নামায, রোজা ও ইসলামের অন্যান্য বিষয় সম্পর্কে তাদের কোন তৎপরতা লক্ষ্য করা যায় না। তাদের অনেক নেতাই নিজ নিজ দেশ ছেড়ে পাশ্চাত্য দেশে গিয়ে স্থায়ীভাবে বসবাস করছে। তারা খেলাফত পুনরুদ্ধার করতে চায়। কিন্তু শির্ক, বিদআত, সুফীবাদ ও পাপ কাজে লিপ্ত হওয়ার কারণে যে উছমানী খেলাফতের পতন ঘটেছে, তা নিয়ে তাদের কোন মাথা ব্যাথা নেই। তারা নিজেদের অবস্থার পরিবর্তন ছাড়াই আল্লাহর কাছে ভাগ্যের পরিবর্তন চায়। তারা সবসময় রাজনীতি নিয়েই ভাষণ ও বক্তৃতা দেয়। ইসলামের অন্যান্য মৌলিক শিক্ষার দিকে কোন গুরুত্ব নেই। মুসলিম দেশের সেনাপতি অমুসলিম হলেও তাদের কোন অসুবিধা নেই। 

--- [ দেখুনঃ ৫/৬/১৯৭০ তারিখে এ দলের আমীর নাবহানী কর্তৃক প্রকাশিত একটি প্রশ্নোত্তর সম্বলিত লিফলেট ]

.

তাদের মতে, হারাম পথ অবলম্বন করে লক্ষ্য-উদ্দেশ্যে পৌঁছাতে কোন অসুবিধা নেই। আমরা যে অর্থে তাকদীরের প্রতি বিশ্বাস করি, তারা তা অস্বীকার করে। 

---- [ দেখুনঃ আদ্-দাওসীয়া, পৃষ্ঠা নং-১৮ ]

.

আক্বল তথা মানবীয় বিবেক হচ্ছে দ্বীনের অন্যতম মূলনীতি। তাদের এ নীতিটি মুতাযেলাদের কথার সাথে মিলে যায়। কর্মক্ষেত্রে নারী ও পুরুষের একত্রিত হওয়া এবং পরস্পর সহযোগিতা করা জরুরী।

শিয়া ও সুন্নীর মধ্যে কোন পার্থক্য নেই।

---- [ দেখুনঃ আল-ওয়াঈ আত্ তাহরীরিয়া, সংখ্য ৭৫, বর্ষ-১৯৯৩ ]

.

Sunday, 2 March 2025

আল্লামা বিন বায রাহ. কর্তৃক প্রদত্ব ছোট ছোট প্রশ্নের গুরুত্বপূর্ণ উত্তর (৫৪টি)

 


আল্লামা ইমাম আব্দুল আজিজ বিন বায রাহ.  রমজান, সিয়াম, তারাবিহ, কিয়ামুল্লায়, ইতিকাফ, সফর, কুরআন তিলাওয়াত, দুআ, উমরা ইত্যা বিষয়ে অত্যন্ত সংক্ষিপ্ত চমৎকার কিছু প্রশ্নোত্তর যেগুলো তিনি ‘ওয়াযায়েফে রমজান’ শীর্ষক কিতাবের ব্যাখ্যা কালীন তাঁর ছাত্রদের পক্ষ থেকে প্রদত্ব বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তরে বলেছিলেন।

নিম্নে পাঠকদের উপকার হবে এ আশায় মূল ব্যাখ্যা বাদ দিয়ে সেখান থেকে কেবল সংক্ষিপ্ত প্রশ্নোত্তরগুলোর অনুবাদ পেশ করা হলো। আল্লাহ তওফিক দাতা।

 মোট ৭টি পর্বে ৫৪টি প্রশ্নোত্তর পেশ করা হয়েছে।

❑ প্রশ্নোত্তর: পর্ব-১

১. প্রশ্ন: যে ব্যক্তি রমজান মাসে সুদ খায় তার রোজা গ্রহণযোগ্য হবে কি?

শাইখ: সুদ হারাম, তা রমজান হোক বা অন্য সময়। রমজানসহ সব সময় সুদ খাওয়া নিষিদ্ধ।

২. প্রশ্ন: তাহলে তার রোজা কবুল হবে?

শাইখ: তার রোজা কবুল হওয়ার আশা করা যায়। তবে সে গুনাহের ঝুঁকিতে থাকবে।

৩. প্রশ্ন: ইউরোপের কিছু দোকানে মুসলিম মালিকরা রমজানে মদ ও শুকরের মাংস বিক্রি করে। এ ব্যাপারে কী বলা যাবে?

শাইখ: তাদের সতর্ক করা উচিত এবং বোঝানো দরকার যে, এটি হারাম ও নিন্দনীয় কাজ যেন তারা শিখে ও সংশোধন হয়ে যায় এবং এসব কাজ ছেড়ে দেয়।

৪. প্রশ্ন: কিন্তু এতে কি তাদের রোজার কোনও প্রভাব পড়ে?

শাইখ: না, রোজা নষ্ট হয় না। তবে এতে দাগ পড়ে। রোজা শুধু তার ভঙ্গকারী বিষয়গুলো দ্বারা বাতিল হয়। কিন্তু গুনাহ করলে রোজার পূর্ণতা কমে যায়-সওয়াব ও প্রতিদান হ্রাস পায়।

৫. প্রশ্ন: কোনও নারী যদি মসজিদের কাছাকাছি বাস করে তাহলে কি সে ইমামের সাথে নামাজ পড়তে পারবে যদি সে ইমামের কণ্ঠ শুনতে পায়?

শাইখ: না, সে মসজিদে গিয়ে পড়বে অথবা একা বাসায় পড়বে। যদি সে মসজিদে না থাকে বা ইমাম ও জামাতকে না দেখে তাহলে সে তাদের অনুসরণ করতে পারবে না। তবে যদি সে মসজিদের ভেতরে থাকে বা ইমাম ও জামাতকে দেখতে পায় তাহলে কোনও সমস্যা নেই।

৬. প্রশ্ন: যদি বাড়িটি মসজিদের সাথে সংযুক্ত হয় যেমন মুয়াজ্জিন বা ইমামের বাসা?

শাইখ: তবুও, যদি সে ইমাম বা জামাতকে না দেখে তাহলে সে অনুসরণ করতে পারবে না। বরং একা নামাজ পড়বে।

৭. প্রশ্ন: নারীদের জন্য ঘরে নামাজ পড়াই কি উত্তম?

শাইখ: হ্যাঁ, নারীদের জন্য ঘরে নামাজ পড়াই উত্তম।

Tuesday, 4 February 2025

অদৃশ্য জগতের কথা

 অদৃশ্য জগতের কথা (পর্ব-১, ২)



(১) আল্লাহ তাআ’লা বলেন, “সমস্ত প্রশংসা আল্লাহর, যিনি আসমান ও যমীনের স্রষ্টা এবং ফেরেশতাগণকে করেছেন বার্তা বাহক। তারা দুই দুই, তিন তিন ও চার চার ডানা বিশিষ্ট হয়ে থাকে। তিনি সৃষ্টির মধ্যে যা ইচ্ছা তা যোগ করেন। আর নিশ্চয় আল্লাহ সর্ববিষয়ে সক্ষম।” 

আল্লাহ তাআ’লা তাঁর নিজের ও নবী-রসুলদের মাঝে যোগাযোগের মাধ্যম হিসেবে ফেরেশতাদেরকে বার্তাবাহক বা ‘দূত’ বানিয়েছেন। ফেরেশতাদের ডানা রয়েছে, যার সাহায্যে তাঁরা উড়তে পারেন, যাতে তাঁরা দ্রুত আল্লাহর বাণী নবী-রসুলদের কাছে পৌঁছে দিতে পারেন। তাঁদের মাঝে কারো দুইটি ডানা রয়েছে, কারো তিন তিনটি, কারো চার চারটি করে ডানা রয়েছে। কারো কারো এর চাইতে বেশি ডানা রয়েছে। যেমন মেরাজের রাতে আল্লাহর রসুল সাল্লাল্লাহু আ’লাইহি ওয়া সাল্লাম জিব্রাঈল আ’লাইহিস সালামকে দেখেছিলেন, এ সময় তাঁর ছয়শত ডানা ছিলো। তাঁর ডানাগুলো এতো বড় ছিলো যে, দুইটি ডানার মাঝখানে পূর্ব দিক ও পশ্চিম দিকের সমান দূরত্ব ছিলো। সুরা ফাতির, আয়াত ১-এর তর্জমা ও তাফসীর।

(২) কোন ব্যক্তি ‘বিসমিল্লাহ’ বলে কাপড় খুললে শয়তান আর তার লজ্জাস্থানের মাঝে আল্লাহ তাআ’লা একটা পর্দা‬ সৃষ্টি করে দেন, যে কারণে শয়তান তার লজ্জাস্থানের দিকে দৃষ্টিপাত করতে পারেনা। সুনানে তিরমিযীঃ ২/৫০৫, ইরওয়াউল গালীলঃ ৪৯, সহিহ আল-জামিঃ ৩/২০৩। 

(৩) নারীদের সম্পূর্ণ শরীর হচ্ছে ‘আওড়াহ’। আওড়াহ অর্থ হচ্ছেঃ গোপনীয় জিনিস, যা কাপড় দিয়ে ঢেকে রাখা ফরয। একারণে, নারীরা ঘর থেকে বের হলে শয়তান তাদের দিকে ‪‎চোখ তুলে তাকায়। তিরমিযীঃ ১১৭৩, সহীহ, শায়খ আলবানী, সহীহ তিরমিযীঃ ৯৩৬।

Download AsPDF

Print Friendly and PDFPrint Friendly and PDFPrint Friendly and PDF
Related Posts Plugin for WordPress, Blogger...