Friday 15 May 2015

প্রশ্নঃ আযানের জবাব কিভাবে দিতে হয়?


উত্তরঃ মুয়াজ্জিন আযানে যা যা বলবে তার সাথে সাথে তাই বলতে হবে, শুধুমাত্র হাইয়্যা আ’লাস সালাহ ও হাইয়্যা আ’লাল ফালাহ বললে জবাবে সেটা না বলে বলতে হবে “লা হাউলা ওয়ালা কুওয়্যাতা ইল্লা বিল্লাহ”।
لاَ حَوْلَ وَلاَ قُوَّةَ إِلاَّ بِاللَّهِ
এটা হচ্ছে আযানের জবাব দেওয়ার পদ্ধতি। আযানের জবাব দেওয়া গুরুত্বপূর্ণ একটি সুন্নাহ।
বিঃদ্রঃ ফযরের আযানে আস-সালাতু খায়রুম-মিনান-নাওম ও জামাতের ইকামাতের সময় ক্বাদকা মাতিস সালাহ – এই দুইটি বাক্যের জবাবে এইগুলোই বলতে হবে। অন্য কিছু বলতে এমন কোনো কিছু সহীহ হাদীসে নাই – তাই যা আছে তাই বলতে হবে।
“আস-সালাতু খায়রুম-মিনান-নাওম” এর জবাবে “সাদাক্বতা ওয়া বারারতা” বলার কোনো ভিত্তি নেই (জাল কথা)।
মিরআ’ত ২/৩৬৩, হা/৬৬২।

“ক্বাদকা মাতিস সালাহ” এর জবাবে “আক্বা-মাহাল্লা-হু ওয়া আদা-মাহা” বলা সম্পর্কে আবুদাউদে বর্ণিত হাদীছটি ‘যঈফ’।
আবু দাউদ হা/৫২৮, শায়খ আলবানী, ইরওয়াউল গালীল হা/২৪১।
প্রশ্নঃ আযানের জবাব দিলে কি প্রতিদান পাওয়া যাবে?
উত্তরঃ রাসুলুল্লাহ ﷺ বলেছেন,
“যে ব্যক্তি খালেস অন্তরে আযানের জবাব দেয়, তার জন্য জান্নাত ওয়াজিব হয়ে যায়”।
সহীহ মুসলিম, হাদীস ৩৮৫।
সুবহা’ন-আল্লাহ! জান্নাত ওয়াজিব হয়ে যায়!!
মাত্র ২-৩ মিনিটে এতো সহজে করা যায় এমন একটা আমল হেলাফেলা করে বাদ দেওয়া ঠিক হবেনা। আর এর জন্যতো আলাদা কোনো দুয়াও মুখস্থ করা লাগছেনা, শুধু মুয়াজ্জিনের সাথে সাথে অন্তরে বিশ্বাস ও খেয়াল রেখে কথাগুলো বলা।
আপনি চেষ্টা করলে আজকে থেকেই এই আমল করার অভ্যাস গড়ে তুলতে পারেন ইন শা’ আল্লাহ।
*******************
আযানের জবাব দেওয়ার পরে যে একবার দুরুদে ইব্রাহিম (নামাযে যেই দুরুদ পড়া হয় সেটা) পড়ে ও এর পরে আযানের যেই দুয়া আছে সেটা পড়ে তার জন্য রাসুলুল্লাহ ﷺ এর শাফায়াত করা জরুরী হয়ে পড়ে। কেউ আরো অতিরিক্ত করতে চাইলে এই আমল করতে পারেন।
اللَّهُمَّ رَبَّ هَذِهِ الدَّعْوَةِ التَّامَّةِ، وَالصَّلاَةِ الْقَائِمَةِ، آتِ مُحَمَّداً الْوَسِيلَةَ وَالْفَضِيلَةَ، وَابْعَثْهُ مَقَامَاً مَحمُوداً الَّذِي وَعَدْتَهُ،
উচ্চারণঃ আল্লা-হুম্মা রাব্বা হা-যিহিদ্ দা‘ওয়াতিত্ তা-ম্মাহ। ওয়াস সালা-তিল ক্বা-’ইমাহ। আ-তি মুহা’ম্মাদানিল ওয়াসীলাতা ওয়াল ফাদীলাহ। ওয়াব্‘আছহু মাক্বা-মাম মাহ’মূদানিল্লাযী ওয়া‘আদতাহ।
অর্থঃ “হে আল্লাহ! এই পরিপূর্ণ আহ্বান এবং প্রতিষ্ঠিত নামাযের তুমিই প্রভু! মুহাম্মাদ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) কে ওসীলা (জান্নাতের সর্বোচ্চ স্তর) এবং ফযীলত (সকল সৃষ্টির উপর অতিরিক্ত মর্যাদা দান করুন), আর তাঁকে মাকামে মাহমূদে (প্রশংসিত স্থানে) পৌঁছিয়ে দিন, যার প্রতিশ্রুতি আপনি তাঁকে দিয়েছেন।
রাসুলুল্লাহ ﷺ এর শাফায়াত পাওয়ার সহজ আমলঃ
আমরা আসলে অনেকেই জানিনা কোন কাজটা করলে কি লাভ। এইজন্য অনেক গুরুত্বপূর্ণ ইবাদতের ব্যাপারে আমরা উদাসীন থাকি। অথচ একটু মনোযোগী হলেই অনেক কম কষ্টে অনেক বেশি সওয়াব ও উপকার পাওয়া যেতে পারে বিভিন্ন সহজ আমলের মাধ্যমে। রাসুলুল্লাহ ﷺ বলেছেন, “আযান শুনে কেউ যদি আযানের দুয়া পড়ে কিয়ামতের দিন ঐ ব্যাক্তির জন্য সুপারিশ করা আমার জন্য অনিবার্য হয়ে যাবে”।
সহীহ আল-বুখারী ৬১৪, তিরমিযী ২১১১, নাসায়ী ৬৮০, আবু দাউদ ৫২৯, ইবনু মাজাহ ৭২২, আহমাদ ১৪৪০৩।
বিঃদ্রঃ আমাদের দেশের অনেক বই পুস্তক ও রেডিও টিভিতে যে দুয়া দেওয়া হয় তার মধ্যে কিছু অতিরিক্ত কথা ঢুকিয়ে দেওয়া হয়েছে যা কোনো সহীহ হাদীসে আসে নাই। অতিরিক্ত কথার মাঝে আছে "ইন্নাকালা তুখলিফুল মিয়াদ", ওয়াদ-দারাজাতার রাফীয়াতা" এইরকম কিছু কথা অতিতিক্ত আছে বায়হাকী কিতাবে যার সনদ সহীহ নয়। তাই এখানে দুয়াটা যেইভাবে দেয়া আছে এইভাবেই পড়া উত্তম। কারণ সবগুলো হাদীসের কিতাবে এইভাবেই এসেছে, এর বিপরীতে যে অতিরিক্ত কথাগুলো দেখা যায় এইগুলোর সনদ দুর্বল অর্থাৎ জাল অথবা জয়ীফ।

No comments:

Post a Comment

Download AsPDF

Print Friendly and PDFPrint Friendly and PDFPrint Friendly and PDF
Related Posts Plugin for WordPress, Blogger...