(ফতোয়া আরকানুল ইসলাম থেকে)
মূল: আল্লামা মুহাম্মদ বিন সালিহ আল উছাইমীন (রাহ:)
অনুবাদক: শাইখ মুহা: আব্দুল্লাহ আল কাফী
প্রশ্নঃ (৩৯২) ছিয়াম ফরয হওয়ার হিকমত কি?
উত্তরঃ পবিত্র কুরআনের নিম্ন লিখিত আয়াত পাঠ করলেই আমরা জানতে পারি ছিয়াম ফরয হওয়ার হিকমত কি? আর তা হচ্ছে তাক্বওয়া বা আল্লাহ্ ভীতি অর্জন করা ও আল্লাহ্র ইবাদত করা। আল্লাহ্ বলেন,
يَاأَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُوا كُتِبَ عَلَيْكُمْ الصِّيَامُ كَمَا كُتِبَ عَلَى الَّذِينَ مِنْ قَبْلِكُمْ لَعَلَّكُمْ تَتَّقُونَ
হে ঈমানদারগণ! তোমাদের উপর ছিয়াম ফরয করা হয়েছে, যেমন ফরয করা হয়েছিল তোমাদের পূর্ববর্তীদের উপর। যাতে করে তোমরা তাক্বওয়া অর্জন করতে পার।(সূরা বাক্বারাঃ ১৮৩)
তাক্বওয়া হচ্ছে হারাম কাজ পরিত্যাগ করা। ব্যাপক অর্থে তাক্বওয়া হচ্ছে, আল্লাহ্র নির্দেশিত বিষয় বাস্তবায়ন করা, তাঁর নিষেধ থেকে দূরে থাকা। নবী (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন,
তাক্বওয়া হচ্ছে হারাম কাজ পরিত্যাগ করা। ব্যাপক অর্থে তাক্বওয়া হচ্ছে, আল্লাহ্র নির্দেশিত বিষয় বাস্তবায়ন করা, তাঁর নিষেধ থেকে দূরে থাকা। নবী (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন,
مَنْ لَمْ يَدَعْ قَوْلَ الزُّورِ وَالْعَمَلَ بِهِ والْجَهْلَ فَلَيْسَ لِلَّهِ حَاجَةٌ فِي أَنْ يَدَعَ طَعَامَهُ وَشَرَابَهُ
যে ব্যক্তি (রোযা রেখে) মিথ্যা কথা, মিথ্যার কারবার ও মূর্খতা পরিত্যাগ করল না, তার খানা-পিনা পরিহার করার মাঝে আল্লাহর কোন দরকার নেই।[1]
অতএব এ কথা নিশ্চিত হয়ে গেল যে, রোযাদার যাবতীয় ওয়াজিব বিষয় বাস্তবায়ন করবে এবং সবধরণের হারাম থেকে দূরে থাকবে। মানুষের গীবত করবে না, মিথ্যা বলবে না, চুগলখোরী করবে না, হারাম বেচা-কেনা করবে না, ধোঁকাবাজী করবে না। মোটকথা চরিত্র ধ্বংসকারী অন্যায় ও অশ্লীলতা বলতে যা বুঝায় সকল প্রকার হারাম থেকে বিরত থাকবে। আর একমাস এভাবে চলতে পারলে বছরের অবশিষ্ট সময় সঠিক পথে পরিচালিত হবে ইনশাআল্লাহ্।
কিন্তু আফসোসের বিষয় অধিকাংশ রোযাদার রামাযানের সাথে অন্য মাসের কোন পার্থক্য করে না। অভ্যাস অনুযায়ী ফরয কাজে উদাসীনতা প্রদর্শন করে, হালাল-হারামে কোন পার্থক্য নেই। তাকে দেখলে বুঝা যাবে না তার মধ্যে ছিয়ামের মর্যাদার কোন মূল্য আছে। অবশ্য এ সমস্ত বিষয় ছিয়ামকে ভঙ্গ করে দিবে না। কিন্তু নিঃসন্দেহে তার ছওয়াব বিনষ্ট করে দিবে।
প্রশ্নঃ (৩৯৩) মুসলিম জাতির একতার লক্ষ্যে কেউ কেউ চাঁদ দেখার বিষয়টিকে মক্কার সাথে সংশ্লিষ্ট করতে চায়। তারা বলে মক্কায় যখন রামাযান মাস শুরু হবে তখন বিশ্বের সবাই রোযা রাখবে। এ ব্যাপারে আপনার মতামত কি?
উত্তরঃ বিষয়টি মহাকাশ গবেষণার দিক থেকে অসম্ভব। ইমাম ইবনু তায়মিয়া (রহঃ) বলেন, চন্দ্র উদয়ের স্থান বিভিন্ন হয়ে থাকে। এ বিষয়ে অভিজ্ঞ বিদ্বানগণ ঐকমত্য। আর এই বিভিন্নতার দাবী হচ্ছে প্রত্যেক এলাকায় ভিন্ন রকম বিধান হবে। একথার পক্ষে দলীল কুরআন হাদীছ ও সাধারণ যুক্তি।
আল্লাহ্ তাআলা বলেন,
যদি পৃথিবীর শেষ সীমান্তের লোকেরা এ মাসে উপস্থিত না হয় অর্থাৎ চাঁদ না দেখে আর মক্কার লোকেরা চাঁদ দেখে, তবে কিভাবে এই আয়াত তাদের ক্ষেত্রে প্রজোয্য হবে যারা কিনা চাঁদই দেখেনি। আর নবী (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন,
মক্কার অধিবাসীগণ যদি চাঁদ দেখে তবে পাকিস্তান এবং তার পূর্ববর্তী এলাকার অধিবাসীদের কিভাবে আমরা বাধ্য করতে পারি যে তারাও ছিয়াম পালন করবে? অথচ আমরা জানি যে, তাদের আকাশে চাঁদ দেখা যায়নি। আর নবী (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ছিয়ামের বিষয়টি চাঁদের সাথে সংশ্লিষ্ট করে দিয়েছেন।
সারাবিশ্বে একসাথে রামাযানের রোযা শুরু করা
প্রশ্নঃ (৩৯৩) মুসলিম জাতির একতার লক্ষ্যে কেউ কেউ চাঁদ দেখার বিষয়টিকে মক্কার সাথে সংশ্লিষ্ট করতে চায়। তারা বলে মক্কায় যখন রামাযান মাস শুরু হবে তখন বিশ্বের সবাই রোযা রাখবে। এ ব্যাপারে আপনার মতামত কি?
উত্তরঃ বিষয়টি মহাকাশ গবেষণার দিক থেকে অসম্ভব। ইমাম ইবনু তায়মিয়া (রহঃ) বলেন, চন্দ্র উদয়ের স্থান বিভিন্ন হয়ে থাকে। এ বিষয়ে অভিজ্ঞ বিদ্বানগণ ঐকমত্য। আর এই বিভিন্নতার দাবী হচ্ছে প্রত্যেক এলাকায় ভিন্ন রকম বিধান হবে। একথার পক্ষে দলীল কুরআন হাদীছ ও সাধারণ যুক্তি।
আল্লাহ্ তাআলা বলেন,
فَمَنْ شَهِدَ مِنْكُمْ الشَّهْرَ فَلْيَصُمْهُ
“অতএব তোমাদের মধ্যে যে ব্যক্তি এ মাসে উপস্থিত হবে, সে যেন ছিয়াম পালন করে।(সূরা বাক্বারাঃ ১৮৫) যদি পৃথিবীর শেষ সীমান্তের লোকেরা এ মাসে উপস্থিত না হয় অর্থাৎ চাঁদ না দেখে আর মক্কার লোকেরা চাঁদ দেখে, তবে কিভাবে এই আয়াত তাদের ক্ষেত্রে প্রজোয্য হবে যারা কিনা চাঁদই দেখেনি। আর নবী (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন,
صُومُوا لِرُؤْيَتِهِ وَأَفْطِرُوا لِرُؤْيَتِهِ
“তোমরা চাঁদ দেখে রোযা রাখ, চাঁদ দেখে রোযা ভঙ্গ কর।[2] মক্কার অধিবাসীগণ যদি চাঁদ দেখে তবে পাকিস্তান এবং তার পূর্ববর্তী এলাকার অধিবাসীদের কিভাবে আমরা বাধ্য করতে পারি যে তারাও ছিয়াম পালন করবে? অথচ আমরা জানি যে, তাদের আকাশে চাঁদ দেখা যায়নি। আর নবী (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ছিয়ামের বিষয়টি চাঁদের সাথে সংশ্লিষ্ট করে দিয়েছেন।