24 Temmuz 2014 Perşembe

কাউকে বন্ধু বা শত্রু হিসাবে গ্রহণ করার মূলনীতি কী?


বন্ধুত্ব তৈরী মানুষের স্বভাবজাত প্রবণতা। তাই বন্ধুত্বের ব্যাপারে ইসলামে যথেষ্ট গুরুত্ব এসেছে। বন্ধু তো বানাতে হবে তাই বলে তো যাকে তাকে  বন্ধু বানানো যায় না। কারণ, জীবনে বন্ধুর প্রভাব পড়ে। একজন ভাল বন্ধু একজন খারাপ মানুষকে ভাল বানাতে সাহায্য করতে পারে পক্ষান্তরে খারাপ বন্ধু একজন ভাল মানুষকে নিয়ে যেতে পারে অধ:পতনের অতল তলে। তাহলে বন্ধুত তৈরীর আগে অবশ্যই যাচাই-বাছাই করা আবশ্যক।
সুপ্রিয় সাথী, আমাদের এমন লোককেই বন্ধু বানানো উটিত যিনি আল্লাহ ও তার রাসূলকে ভালবাসেন। যিতি সততা ও নীতির প্রশ্নে অটুট। যিনি আপনাকে ভাল কাজে সাহায্য করতে পারবেন। পক্ষান্তরে এমন মানুষকে মনে প্রাণে বন্ধু হিসেবে গ্রহণ করা উটিত নয়, যে আল্লাহ ও তার রাসূলের সাথে দুশমনী মনোভাব পোষণ করে এবং সততা ও চরিত্রের প্রশ্নে উত্তীর্ণ নয়।
 যা হোক, এই পোস্টে একটা প্রশ্নোত্তর তুলে ধরা হল যেখানে আল্লামা শাইখ মুহাম্মাদ ইবন সালেহ উসাইমীন (রাহ:) কাফের-মুশরিকদের সাথে এবং মুসলমানদের সাথে বন্ধুত্ব তৈরীর বিষয়টি অত্যন্ত চমৎকার ভাবে কুরআন ও সুন্নাহরে আলোকে তুলে ধরেছেন।
প্রশ্নঃ কাউকে বন্ধু বা শত্রু হিসাবে গ্রহণ করার মূলনীতি কী? 
উত্তরঃ- আল্লাহ তাআ’লা যে সমস্ত ব্যক্তি বা বিষয় হতে নিজেকে মুক্ত ঘোষণা করেছেন, প্রত্যেক মুসলিমের উচিৎ তা থেকে নিজেকে মুক্ত ঘোষণা করা। আল্লাহ বলেন,
 
قَدْ كَانَتْ لَكُمْ أُسْوَةٌ حَسَنَةٌ فِي إِبْرَاهِيمَ وَالَّذِينَ مَعَهُ إِذْ قَالُوا لِقَوْمِهِمْ إِنَّا بُرَآءُ مِنْكُمْ وَمِمَّا تَعْبُدُونَ مِنْ دُونِ اللَّهِ كَفَرْنَا بِكُمْ وَبَدَا بَيْنَنَا وَبَيْنَكُمْ الْعَدَاوَةُ وَالْبَغْضَاءُ أَبَدًا
অর্থঃ “তোমাদের জন্যে ইবরাহীম ও তার সংঙ্গীগণের মধ্যে চমৎকার আদর্শ রয়েছে। তারা তাদের সম্প্রদায়কে বলেছিল, তোমাদের সাথে এবং তোমরা আল্লাহ ব্যাতীত যার এবাদত কর, তার সাথে আমাদের কোন সম্পর্ক নেই। আমরা তোমাদেরকে মানি না। তোমরা এক আল্লাহর প্রতি বিশ্বাস স্থাপন না করলে তোমাদের আমাদের মধ্যে চিরশত্রুতা থাকবে।” (সূরা মুমতাহানাহঃ ৪) আর এটা হবে মুশরিকদের সাথে। আল্লাহ বলেন,
 
وَأَذَانٌ مِنْ اللَّهِ وَرَسُولِهِ إِلَى النَّاسِ يَوْمَ الْحَجِّ الْأَكْبَرِ أَنَّ اللَّهَ بَرِيءٌ مِنْ الْمُشْرِكِينَ وَرَسُولُهُ
অর্থঃ “আর মহান হজ্জের দিনে আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের পক্ষ থেকে লোকদের প্রতি ঘোষণা দেয়া হচ্ছে যে, আল্লাহ মুশরিকদের থেকে দায়িত্ব মুক্ত এবং তাঁর রাসূলও।” (সূরা তাওবাঃ ৩) সুতরাং প্রতিটি মুমিনের উপর আবশ্যক হল কাফের-মুশরেকদের সাথে সকল প্রকার সম্পর্ক ছিন্ন করা। এমনিভাবে আল্লাহ ও আল্লাহর রাসূলের অপছন্দনীয় সকল কাজ থেকে বিরত থাকা প্রতিটি মুসলিমের উপর ওয়াজিব। যদিও তা কুফরীর পর্যায়ে না যায়। যেমন পাপাচারিতায় লিপ্ত হওয়া। আল্লাহ বলেন,
 
وَلَكِنَّ اللَّهَ حَبَّبَ إِلَيْكُمْ الْإِيمَانَ وَزَيَّنَهُ فِي قُلُوبِكُمْ وَكَرَّهَ إِلَيْكُمْ الْكُفْرَ وَالْفُسُوقَ وَالْعِصْيَانَ أُوْلَئِكَ هُمْ الرَّاشِدُونَ
অর্থঃ “কিন্তু আল্লাহ তোমাদের অন্তরে ঈমানের প্রতি মহব্বত সৃষ্টি করে দিয়েছেন এবং তা হৃদয়গ্রাহী করে দিয়েছেন। পক্ষান্তরে কুফর, পাপাচার ও নাফরমানীর প্রতি ঘৃণা সৃষ্টি করে দিয়েছেন। তারাই সৎপথ অবলম্বনকারী।” (সূরা হুজুরাতঃ ৭) 
 
যদি কোন মুমিনের কাছে ঈমানের সাথে সাথে পাপাচারিতা থাকে, তাহলে আমরা মুমিন হওয়ার কারণে তাকে ভালবাসব এবং পাপ কাজে লিপ্ত হওয়ার কারণে ঘৃণা করব। এধরণের সম্পর্ক রাখার ব্যাপারে দৃষ্টান্ত হল, যেমন আমরা অরুচীকর ঔষধ গ্রহণ করি, অনিচ্ছা সত্বেও তা পান করি। কারণ তাতে আরোগ্যের আশা করা যায়। 
কোন কোন মানুষ পাপী মুমিনকে কাফের-মুশরেকের চেয়েও ঘৃণা করে। এটি খুবই আশ্চর্য্যের বিষয় এবং বাস্তবতার বিপরীত। কাফের আল্লাহর শত্রু, রাসূলের শত্রু এবং সমস্ত মুমিনের শত্রু। তাদেরকে অন-র থেকে ঘৃণা করা ওয়াজিব।
 
يَاأَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُوا لَا تَتَّخِذُوا عَدُوِّي وَعَدُوَّكُمْ أَوْلِيَاءَ تُلْقُونَ إِلَيْهِمْ بِالْمَوَدَّةِ وَقَدْ كَفَرُوا بِمَا جَاءَكُمْ مِنْ الْحَقِّ يُخْرِجُونَ الرَّسُولَ وَإِيَّاكُمْ أَنْ تُؤْمِنُوا بِاللَّهِ رَبِّكُمْ إِنْ كُنتُمْ خَرَجْتُمْ جِهَادًا فِي سَبِيلِي وَابْتِغَاءَ مَرْضَاتِي تُسِرُّونَ إِلَيْهِمْ بِالْمَوَدَّةِ وَأَنَا أَعْلَمُ بِمَا أَخْفَيْتُمْ وَمَا أَعْلَنتُمْ وَمَنْ يَفْعَلْهُ مِنْكُمْ فَقَدْ ضَلَّ سَوَاءَ السَّبِيلِ
অর্থঃ “হে মুমিনগণ! তোমরা আমার ও তোমাদের শত্রুদেরকে বন্ধুরূপে গ্রহণ করো না। তোমরা তো তাদের প্রতি বন্ধুত্বের বার্তা পাঠাও, অথচ তোমাদের কাছে যে সত্য আগমণ করেছে, তারা তা অস্বীকার করছে। তারা রাসূলকে এবং তোমাদেরকে বহিস্কার করে, এই অপরাধে যে, তোমরা তোমাদের পালনকর্তার প্রতি বিশ্বাস রাখ। যদি তোমরা আমার সন্তুষ্টি লাভের জন্যে এবং আমার পথে জেহাদ করার জন্যে বের হয়ে থাক, তবে কেন তাদের প্রতি গোপনে বন্ধুত্বের পয়গাম প্রেরণ করছ? তোমরা যা গোপন কর এবং যা প্রকাশ কর, তা আমি খুব জানি। তোমাদের মধ্যে যে এটা করে, সে সরল পথ হতে বিচ্যুত হয়ে যায়।” (সূরা মুমতাহানাহঃ ১)
আল্লাহ বলেন,
 
يَاأَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُوا لَا تَتَّخِذُوا الْيَهُودَ وَالنَّصَارَى أَوْلِيَاءَ بَعْضُهُمْ أَوْلِيَاءُ بَعْضٍ وَمَنْ يَتَوَلَّهُمْ مِنْكُمْ فَإِنَّهُ مِنْهُمْ إِنَّ اللَّهَ لَا يَهْدِي الْقَوْمَ الظَّالِمِينَ
অর্থঃ “হে মুমিনগণ! তোমরা ইয়াহুদী ও নাসাদেরকে বন্ধু হিসাবে গ্রহণ করো না। তারা পরস্পরে বন্ধু। তোমাদের মধ্যে যে তাদের সাথে বন্ধুত্ব করবে, সে তাদেরই অন্তর্ভূক্ত হবে। আল্লাহ জালেমদেরকে পথ প্রদর্শন করেন না।” (সূরা মায়িদাহঃ ৫১) আল্লাহ বলেন,
 
وَلَنْ تَرْضَى عَنْكَ الْيَهُودُ وَلَا النَّصَارَى حَتَّى تَتَّبِعَ مِلَّتَهُمْ
অর্থঃ “ইহুদী ও খৃষ্টানরা কখনই আপনার উপর সন্তুষ্ট হবে না, যে পর্যন্তু আপনি তাদের ধর্মের অনুসরণ না করবেন।” (সূরা বাকারাঃ ১২০)
 আল্লাহ আরো বলেন,
وَدَّ كَثِيرٌ مِنْ أَهْلِ الْكِتَابِ لَوْ يَرُدُّونَكُمْ مِنْ بَعْدِ إِيمَانِكُمْ كُفَّارًا
অর্থঃ “আহ্ লে কিতাবদের অনেকেই প্রতিহিংসা বশতঃ কামনা করে যে, মুসলমান হওয়ার পর তোমাদেরকে কাফের বানিয়ে দেয়।” (সূরা বাকারাঃ ১০৯) 
এমনিভাবে প্রতিটি নিষিদ্ধ কাজ হতে বিরত থাকা আবশ্যক। আমাদের জন্যে হারাম কাজের প্রতি ভালবাসা রাখা বৈধ নয়। আমরা পাপী মুমিনের পাপকাজকে ঘৃণা করি এবং তা থেকে আমরা নিজেদেরকে দূরে রাখি। কিন্তু আমরা তাকে ঈমানের কারণে ভালবাসি।

Hiç yorum yok:

Yorum Gönder

Download AsPDF

Print Friendly and PDFPrint Friendly and PDFPrint Friendly and PDF
Related Posts Plugin for WordPress, Blogger...