15 Aralık 2015 Salı

‘বড়পীর’ আব্দুল ক্বাদীর জিলানি (রহঃ) কে ছিলেন? ‘কাদেরীয়া তরীকাহর’ অনুসরণ করা যাবে?


প্রশ্নঃ বড়পীর আব্দুল ক্বাদীর জিলানি (রহঃ) কে ছিলেন? কাদেরীয়া তরীকাহর অনুসরণ করা যাবে?
উত্তরঃ আব্দুল ক্বাদীর জিলানি (রহঃ) তাবারিস্থানেরজিলান নামক অঞ্চলে জন্মগ্রহণ করেছিলেন। তার জন্মভূমি জিলান-এ, এখান থেকে তিনিজিলানী নামে পরিচিত পান। তার জন্ম হয়েছিলো ৪৭১ হিজরীতে, এবং মৃত্যু ৫৬১ হিজরীতে। আক্বীদাহগত দিক থেকে তিনি আহলে সুন্নাত ওয়াল জামআত এর অনুসারী ছিলেন, এবং ফিকহের দিক থেকে তিনি হাম্বালি মাযহাব এর অনুসারী ছিলেন। প্রসংগক্রমে উল্লেখ্য, প্রচলিত চারটি মাযহাবের মাঝে ইমাম আহমাদ বিন হাম্বাল (রহঃ) এর ফিকহি মাসলা-মাসায়েলগুলো সুন্নতের সবচাইতে নিকটবর্তী।
ইমাম আয-যাহাবী (রহঃ) আব্দুল ক্বাদীর জিলানি (রহঃ) সম্পর্কে লিখেছেন, তিনি তার যুগের একজন বড় উস্তাদ, আলেম, যাহিদ (দুনিয়া বিমুখ ও পরকালমুখী), আরিফ (আল্লাহর জন্যে নিজেকে একনিষ্ঠভাবে উৎসর্গীকৃত বান্দা) এবং আলমে-আওলিয়া (আল্লাহর নৈকটশীল প্রিয় বন্ধুদের একজন) ছিলেন।
সিয়ার আলাম আন-নুবালাঃ ২০/৪৩৯।
স্বাভাবিকভাবেই চারিদিকে তার সুনাম ছড়িয়ে পড়েছিলো। তিনি বেশ কিছু বই লিখেছেন যার মাঝে গুনিয়াতুত-ত্বালিবিনও ফুতুহ আল-গায়েববিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য। কোন আলেমই ভুলের উর্ধে নন, তার কিতাবগুলোতে কিছু ভুল পাওয়া যায়, যেইগুলো মারাত্বক নয়, এবং দ্বীনের জন্যে তার খেদমতের তুলনায় সেইগুলো নগণ্য। এ কারণে আহলে সুন্নাত ওয়াল জামআতের কাছে তিনি একজন প্রসিদ্ধ ইমাম হিসেবেই বিবেচিত।
_______________________
শীয়ারা যেমন আলী (রাঃ) এর নামে অনেক মিথ্যা কাহিনী গড়ে নতুন মতবাদ শীয়া ধর্ম চালু করেছে, ঠিক তেমনি নিজেকে আহলে সুন্নাতদাবীদার একশ্রেণীর সূফী সাধক ও পীর-মুরিদেরা অসংখ্য শিরক ও বিদাত মিশ্রিত কাদেরিয়া তরীকাহনামে নতুন একটি তরীকাহ আবিষ্কার করে নিয়েছে। তারা দাবী করে, এই কাদেরীয়া তরীকাহ নাকি তারা আব্দুল ক্বাদীর জিলানি (রহঃ) এর কাছ থেকে নিয়েছে, যা সম্পূর্ণ বানোয়াট এবং মিথ্যা। আব্দুল ক্বাদীর জিলানি (রহঃ) ছিলেন ক্বুরান, সুন্নাহ ও সালফে সালেহীনদের অনুসারী একজন রব্বানী আলেম। কাদেরীয়া তরীকাহরঅনুসারী সূফী বিদআতীদের সাথে আব্দুল কাদীর জিলানীর কোন সম্পর্ক নেই। আসলে শয়তান তাদেরকে ধোকা দিয়ে শিরক বিদাতের গর্তে ফেলেছে, যেমনিভাবে শীয়াদেরকে ধোকা দিয়ে জাহান্নামের রাস্তায় নিয়েছে। আব্দুল ক্বাদীর জিলানি (রহঃ) কে বড়পীর ডাকা ঠিক নয়, কারণ পীর-মুরিদীর সিস্টেম ইসলামে নেই, বরং পীরের কাছে বায়াত করা সুস্পষ্ট বিদাত এবং গোমরাহী।
_______________________
ভারতীয় উপমহাদেশে অর্থাৎ পাকিস্থান, ভারত এবং বাংলাদেশের সূফীরা দুইটা বড় দলে বিভক্ত। এদের একটি দল নিজেদেরকে দেওবন্দী বলে পরিচয় দেয়, অপর দলটি নিজেদেরকে বেরেলুবীবা রিজভী নামে পরিচয় দেয়। দেওবন্দী এবং বেরেলুবী, এই উভয় দলের সূফীরা কাদেরীয়া তরীকাহ এর অনুসারী বলে দাবী করে, এবং কাদেরীয়া সিলসিলার পীরদের নিকট বায়াত করে তাদের মুরিদ হয়।
কাদেরীয়া তরীকাহর অনুসারী সূফীদের মাঝে প্রচলিত কিছু শিরক, বিদাত ও ভ্রান্ত বিশ্বাসের নমুনা দেওয়া হলোঃ
১. আব্দুল কাদীর জিলানীর কাছে দুয়া করা বা সাহায্য চাওয়াকে তারা জায়েজ মনে করে, অথচ এটা বড় শিরক। বিপদের পড়ে যারা আল্লাহ ছাড়া অন্য কারো কাছে কাছে, যেমন কোন নবী-রাসুল বা অলি-আওলিয়ার কাছে সাহায্যের জন্যে ডাকে বা দুয়া করে, তারা সুষ্পষ্ট মুশরেক।
২. সূফীরা আব্দুল কাদীর জিলানীকে গাউসুল আযম বা বিপদ থেকে সবচাইতে বড় উদ্ধারকারী বলে মনে করে। অথচ বান্দাদেরকে বিপদ থেকে উদ্ধার করেন একমাত্র আল্লাহ তাআলা, তিনিই হচ্ছেন সবচাইতে বড় বিপদ থেকে উদ্ধারকারী। আল্লাহ ছাড়া অন্য কাউকে সবচাইতে বড় উদ্ধারকারী মনে করে বা গাউসুল আযম ডাকা ডাহা শিরক। অনুরূপভাবে আব্দুল কাদীর জিলানীকে গাউসিয়া, গাউস, গাউসে পাক, দস্তগীর এই ধরণের নামে ডাকা, এবং তার কাছে বিপদ থেকে উদ্ধার পাওয়ার জনয়ে সাহায্য চাওয়া শিরক।
৩. আল্লাহ তাআলা একবার পা পিছলে পড়ে যান (নাউযুবিল্লাহি মিন যালিক, মুশরেকরা আল্লাহ সম্পর্কে যা বলে তা থেকে তিনি পবিত্র), তখন আব্দুল কাদীর জিলানী আল্লাহকে হাতে ধরে উঠিয়ে দেন!! এই ধরণের শিরকি আকীদাহ রাখে একশ্রেণীর সূফীরা এবং তাদের আলেমরা এইগুলো ওয়াজ করে শোনায় মূর্খ মুসলমানদের। হিন্দুদের রামায়ন মহাভারতের মতো এই ধরণের শিরকি কাহিনী যারা বলে ও বিশ্বাস করে, তারা মুশরেক।
৪. আব্দুল কাদীর জিলানীর সুপারিশ পাওয়ার জন্যে প্রতি বৃহস্পতিবার রাতে অমুক সুরা এতোবার পড়ে বা ক্বুরান তেলাওয়াত করে, অমুক বিদাতী দুরুদ এতোবার পড়ে তার সওয়াব আব্দুল কাদীর জিলানীকে বখশে দিতে হবে - এমন একটি বিদাতী আমল আমাদের দেশে অনেকেই করে থাকে।
৫. ওযু ছাড়া আব্দুল কাদীর জিলানীর নাম নিলে শরীর থেকে নাকি একটা করে লোম ঝড়ে পড়বে এইরকম মারাত্মক কুসংক্সারে বিশ্বাস করে একশ্রেণীর জাহেল লোকেরা। ওযু ছাড়া আল্লাহর নাম নেওয়া যায়, কিন্তু তাদের মতে ওযু ছাড়া আব্দুল কাদীর জিলানীর নাম নিলে নাকিবেয়াদবী হয়ে যাবে? এরা কি আল্লাহর ইবাদতকারী, নাকি এদেরকে জিলানী পূজারী বলা যাবে?
৬. আব্দুল কাদীর জিলানীর মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে তারা ফাতেহা ইয়াজদহম নামে একটা বিদাতী দিবস চালু করে। শিরক বিদাতের দেশ বাংলাদেশে এ উপলক্ষে সরকারী ছুটিও দিয়ে রেখেছে! এথেকে প্রমানিত হয় যে, বাংলাদেশ সরকারের উপর মাযার পূজারীদের প্রভাব রয়েছে।
৭. আব্দুল কাদীর জিলানী মায়ের পেট থেকে আঠারো পারা ক্বুরান মুখস্থ করে এসেছিলেন, এটা সম্পূর্ণ আজগুবী ও বানোয়াট কাহিনী।
_______________________
যাই হোক, এই সমস্ত শিরক বিদাতের সাথেআহলে সুন্নাতের কোন সম্পর্ক নেই, এবং যারা এইগুলোতে লিপ্ত আহলে সুন্নত তাদেরকে পথভ্রষ্ট বিদআতী বলেই মনে করে। স্বাভাবিকভাবেই, যারা মুখে আব্দুল ক্বাদীর জিলানি (রহঃ) এর অনুসারী হওয়ার দাবী করে, কিন্তু শিরক বিদাতে লিপ্ত, তাদের সমালোচনা করলে তারা আহলে সুন্নতের অনুসারী লোকদেরকে গালি-গালাজ করে এবং তাদের নামে মিথ্যা অপবাদ দেয়। এমন জাহেল ও বিদাতী লোক, যারা আহলে সুন্নতের লোকদেরকে গালিগালাজ করে তাদের সম্পর্কে জিলানী কি বলেছেন দেখুনঃ
আব্দুল ক্বাদীর জিলানি (রহঃ) নাজী ফের্কাঅর্থাৎ, মুসলমানদের মাঝে ৭৩টা দলের মাঝে একমাত্র নাজাতপ্রাপ্ত দল হিসাবে আহলে সুন্নাত ওয়াল জামআতের বর্ণনা দেওয়ার পর তাদের বিরুদ্ধে বিদআতীদের ক্রোধ বর্ণনা করতে গিয়ে বলেছেন,
বিদআতীদের লক্ষণ হচ্ছেঃ তারা আহলে হাদীসদের গালি দেয় এবং তাদেরকে বিভিন্নখারাপ নামে সম্বোধন করে। এগুলো সুন্নাতপন্থী লোকদের বিরুদ্ধে তাদের দলীয় বিদ্বেষ ও অন্তঃর্জ্বালার বহিঃপ্রকাশ ছাড়া আর কিছুই নয়। কেননা আহলে সুন্নাত ওয়াল জামাআতের অন্য কোন নাম নেই, একটি নাম ছাড়া। আর সেটি হচ্ছেআসহাবুল হাদীছ বা আহলে হাদীস।
[গুনিয়া-তুত্তালিবিনঃ ১ম খন্ড, পৃষ্ঠা-৯০]

Hiç yorum yok:

Yorum Gönder

Download AsPDF

Print Friendly and PDFPrint Friendly and PDFPrint Friendly and PDF
Related Posts Plugin for WordPress, Blogger...