3 Temmuz 2015 Cuma

কুরআনের সূরা/আয়াত এর ওয়ালম্যাট ঘরে ঝুলিয়ে রাখা যাবে কি



প্রশ্ন : আমাকে একজন “সুরা ইয়াসিন” লেখা একটা ওয়ালম্যাট গিফট দিসে। আমি কি ওই ওয়ালম্যাট টা আমার ঘরে টাঙ্গিয়ে রাখতে পারবো? কুরআন ও সহিহ হাদীসের আলোকে জানাবেন কি প্লিজ।

উত্তর : সমস্ত প্রশংসা আল্লাহ তায়ালার জন্য ।

কুরআনের কোন আয়াত বা সূরা লিখে ঘরের বা মসজিদের দেয়ালে ঝুলিয়ে রাখা বৈধ নয়। ঘরের বা মসজিদের সৌন্দর্য বৃদ্ধি অথবা অন্য যে কোন উদ্দেশ্যেই হোক। কারণ রাসূল (সাঃ), সাহাবী কিংবা তাবেয়ীদের যুগে মসজিদের দেয়ালে বা ঘরের দেয়ালে কুরআনের আয়াত ঝুলিয়ে রাখা হতনা। ঘরের আসবাব-পত্রের সাথে কিংবা দেয়ালে কুরআনের আয়াত লিখে ঝুলিয়ে রাখলে অন্যান্য জিনিষের মতই কুরআনের আয়াতের প্রতি অসম্মান প্রদর্শেনের সম্ভাবনা রয়েছে। শাইখ মুহাম্মাদ বিন সালেহ আল উছাইমীন এই কাজকে বিদআত বলেছেন।

বরকতের আশায় ঝুলিয়ে রাখার যুক্তি গ্রহণযোগ্য নয়। কেননা সহীহ হাদীছে কুরআন তিলাওয়াতের মাধ্যমে বরকত হাসিলের কথা এসেছে। রাসূল (সাঃ) বলেনঃ যে ঘরে সূরা বাকারা পাঠ করা হয়, সে ঘর থেকে শয়তান পালিয়ে যায়। (সহীহ মুসলিম, হাদীছ নং-২১২)

কুরআন নাযিলের উদ্দেশ্য হচ্ছে তা তিলাওয়াত করা হবে, তা নিয়ে গবেষণা করা হবে এবং তার বিধানগুলোর অনুসরণ করা হবে। ঝুলিয়ে রেখে ঘরের সৌন্দর্য বৃদ্ধির জন্য নয়।

তবে যে স্থানে কুরআনের আয়াতের প্রতি অমর্যাদা প্রদর্শনের সম্ভাবনা নেই, সেখানে স্মরণ রাখার জন্য, শিক্ষার জন্য এবং উপদেশ গ্রহণের জন্য কুরআনের আয়াত বা হাদীছ লিখে রাখলে সে ব্যাপারে আলেমদের দু’টি মত পাওয়া যায়। কেউ কেউ এটিকেও অপছন্দ করেছেন। কিন্তু লাজনায়ে দায়েমা (সৌদি আরবের ফতোয়া বিষয়ক স্থায়ী কমিটি) এটিকে জায়েয বলেছেন।

প্রশ্নকারী যেহেতু সূরা ইয়াসীন এর কথা উল্লেখ করেছেন, তাই এখানে আরেকটি কথা বলে রাখা দরকার। তা হচ্ছে, সূরা ইয়াসীনের ফজীলতে যত হাদীছ বর্ণিত হয়েছে, তার কোনটিই সহীহ নয়।

আল্লাহই ভাল জানেন।

আল্লামা মুহাম্মদ বিন সালিহ আল উসাইমীন (রাহ:) এর ফতোয়া:


প্রশ্ন: আসসালামু আলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহ। ‘আল্লাহ’ এবং ‘মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম’ লিখে ছবি আকারে দেয়ালে টাঙ্গীয়ে রাখার বিধান কি? আমরা অনেক সময় দেখি দেয়ালে ‘আল্লাহ’ শব্দ এবং তার পাশে ‘মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম’ লিখে টাঙ্গীয়ে রাখা হয়েছে। অথবা কাপড়ের টুকরা, বই-পুস্তক বা কুরআনের উপর এভাবে লিখে রাখা হয়েছে। এটা কি ঠিক?

উত্তর: না, এটা ঠিক নয়। কারণ এতে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে আল্লাহর সমকক্ষ বানানো হয়। আল্লাহ এবং তাঁর রাসূলকে চেনে না এমন কোন লোক যদি এই লেখা দেখে তবে নি:সন্দেহে ধারণা করবে এ দুটি নাম সমমর্যাদার অধিকারী। সুতরাং এ অবস্থায় রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর নাম মুছে ফেলা আবশ্যক।
এখন বাকি থাকল শুধু ‘আল্লাহ’ শব্দ। কিন্তু এখানেও সমস্যা হল, এটাও সুফীবাদীদের কথা। কারণ, সুফীবাদীরা (কুরআনের ও হাদীসের)  যিকির বাদ দিয়ে শুধু ‘আল্লাহ’ ‘আল্লাহ’ বলে যিকির করে। অত:এব, শুধু আল্লাহ শব্দও মুছে ফেলতে হবে। মোটকথা, ((আল্লাহ)) অথবা ((মুহাম্মাদ)) কোন দেয়ালে, কাপড়ের টুকরা বা অন্য কোথাও লেখা যাবে না। ফেতোয়াটি দেখতে এখানে ক্লিক করুন।

 এরকম লেখা থাকলে ঘরে বরকত নাযিল হবে এ ধারণা কুরআন-সুন্নাহ বিরোধী। কোথাও নাই যে, এভাবে আল্লাহ ও রাসূলের নাম ঘরে থাকলে বরকত নাযিল হবে। বরং প্রকৃত বরকত হল, আল্লাহ ও তাঁর রাসূল এর আদেশ এবং নিষেধকে মনে-প্রাণে গ্রহন করা এবং তদানুযায়ী আমল করা এবং কুরআন-সুন্নাহতে বর্ণিত দুআ ও যিকির সঠিক পদ্ধতিতে নিয়মিত পাঠ করা।  সাহাবায়ে কেরামও তাঁদের নাম কখনো ঝুলিয়ে রাখতেন না। বরং পরবর্তীতে মানুষের মাঝে মূর্খতা ছড়িয়ে পড়ার ফলে এভাবে মানুষ কুরআন-সুন্নাহ অনুযায়ী জীবন-যাপন বাদ দিয়ে নিজেদের ঘরে, দোকান পাটে এমন কি মসজিদের মধ্যেও বরকত লাভের আশায় এসব লিখে ঝুলিয়ে রাখা শুরু করে।

পরিশেষে বলব, মুসলমানদের জন্য আবশ্যক হল, সকল ধরণের শিরক, বিদআত, কুসংস্কার এবং ইসলামের নামে নিজেদের মনগড়া কার্যক্রম থেকে বের হয়ে আসা এবং জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে আল্লাহ এবং তাঁর রাসূলের দেখানো পথ ধরে চলা। তবেই দুনিয়ার জীবনে যেমন পাওয়া যাবে আল্লাহর রহমত, বরকত, সুখ-সমৃদ্ধি তেমনি পাওয়া যাবে জাহান্নামের কঠিন শস্তি থেকে পরিত্রাণ।

Hiç yorum yok:

Yorum Gönder

Download AsPDF

Print Friendly and PDFPrint Friendly and PDFPrint Friendly and PDF
Related Posts Plugin for WordPress, Blogger...